রাজনীতি
আমরা বাংলাদেশে অযোগ্য শাসক চাই না: হাসনাত

আমরা বাংলাদেশে অযোগ্য শাসক আর চাই না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী দরবার শরীফের দুই দিনব্যাপী ৭৭তম ঈসালে সওয়াব মাহফিলের প্রথম দিনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশের মধ্যে দুর্নীতি রাহাজানি গুম, খুন, হত্যা থাকবে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে প্রত্যেকটা ধর্মের মানুষ, তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, আমরা এমন দেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে আলেম ওলামাদের সামনে থেকে মাইক কেড়ে নেয়া হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে দাড়ি ধরে ধরে আলেম-ওলামাদেরকে জেলে ঢোকানো হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে কোরআন থেকে হাদিস থেকে আলোচনা করার কারণে সেই মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই যে বাংলাদেশে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আমরা সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বাস করতে পারবো।
হাসনাত বলেন, আমাদের রাষ্ট্র কখনো আমাদের ঠিক করতে পারবে না। প্রশাসন আমাদের কে কখনো ঠিক করতে পারবে না। পুলিশ আমাদেরকে কখনো ঠিক করতে পারবে না। যদি না আমরা নিজেরা নিজের থেকে ঠিক না হই। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, আমি ইসলামের অনেক বেশি কিছু জানি না, এখানে যেই আলেমরা রয়েছেন তারা ইসলাম সম্পর্কে অনেক জ্ঞান রয়েছে। আমার ভুল হলে আপনারা মাফ করবেন, আমার যেই বাস্তবিক অভিজ্ঞতা থেকে বলবো, আপনারা ঘুস থেকে দূরে থাকবেন।
তিনি বলেন, তদবির ভালো জিনিস না। আপনি যদি মনে করেন আপনার পরিচিত লোক ক্ষমতার কাছাকাছি রয়েছে, তার থেকে আপনি বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নিবেন, সেটাও এক ধরনের অপরাধ। এই ঘুস থেকে আপনাদের দূরে থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনাদের যারা প্রতিনিধিত্ব করছে, তারা আপনাদের কর্মচারী। আপনাদের কর্মচারী থেকে যদি একটা বিশেষ দিনের আগে দুই হাজার এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে যান, তাহলে আপনাদের যে আমানত রয়েছে, এই আমানতের খেয়ানত আপনারা করবেন। আমরা সারাবছর, পাঁচ বছর দশ বছর আমরা নেতাকে গালাগালি করতে পারব। কিন্তু আপনাদের আপনার হাতে যে একদিনের ক্ষমতা ছিল, ওই একদিনের ক্ষমতা যদি আপনি অপব্যবহার করে থাকেন, তাহলে পাঁচ বছরের অপ শাসনের জন্য, দশ বছরের অপশাসনের জন্য এর দায়ভার আপনাকে নিতে হবে। এজন্য আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা নেতাকে দোষ দেয়ার আগে, আমরা নিজের কাছে আগে প্রশ্নবিদ্ধ হব। আমরা নিজের কাছে আগে দায়বদ্ধ হবো। আপনাদের কাছে করজোড় অনুরোধ করব, আপনারা কর্মচারীর কাছে কখনো বিক্রি হইয়েন না।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আপনারা অত্যাচারীর কাছে কখনো মাথানত কইরেন না, আপনারা কখনো সুদের কাছে মাথানত কইরেন না। আমরা ছোট ছোট মানুষ আমাদের বয়স ২৫ বছর ২৭ বছর, এই বয়সের ছেলেরা এখন পর্যন্ত হয়তো পরিবারের হাল ধরেনি। এখনো পর্যন্ত বাসা থেকে ৫০০ টাকা ১০০০ টাকা নিয়ে চলে, এই বয়সে আমাদেরকে দেশ সংস্কার করতে হচ্ছে। আমাদের ভুল হচ্ছে, আমরা ভুল করছি, আমরা দেখছি, আমরা শিখছি, আমাদের ভুল হলে আপনারা দেখবেন আমরা সেটা থেকে শিখব, এবং আপনাদের দেখানো পথে বাংলাদেশটাকে এগিয়ে দেবো। এ সময় ধামতী দরবার শরীফের গজনীশিন পীর মাওলানা বাহাউদ্দিনসহ বিভিন্ন ওলামায়ে কেরাম এবং পীর মাশায়েখ উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি
জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি : চরমোনাই পীর

ইসলামপন্থিদের ঐক্যের ব্যাপারে গণ-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাইর পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর পাশাপাশি দেশপ্রেমিক বিভিন্ন দল নিয়ে ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, এই ঐক্য গড়তে পারলে আগামী দিনে আমাদের হাতেই আসবে রাষ্ট্রক্ষমতা।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা বারবার রক্ত দিয়েছি, কিন্তু সফলতা পাই নাই।
কারণ, আমরা প্রতিবারই নেতা ও নীতি বাছাই করতে ভুল করেছি। আমরা ৫৪ বছরে অনেক দলকে দেশ শাসন করতে দেখেছি। কিন্তু ইসলামি দলকে এখনো ক্ষমতায় নিতে পারি নাই। এবার ইসলামপন্থীদের ঐক্যের ব্যাপারে গণপ্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই ইসলামপন্থী সব ভোট একবাক্সে আনার কথা বলে আসছি। আগামী নির্বাচনে শুধু ইসলামি দলই নয়, বরং দেশপ্রেমিক আরো অনেক রাজনৈতিক দলও একবাক্স নীতিতে আসতে পারে, ইনশাআল্লাহ। যদি আমরা একত্রে নির্বাচন করতে পারি, যদি কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে ইসলামপন্থীরাই হবে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের হাতেই আসবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। যে যত শতাংশ ভোট পাবে তাদের তত শতাংশ প্রতিনিধিত্ব থাকবে। এটা এখন জনগণের দাবি, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দাবি।’
এ সময় তিনি বিএনপিকেও পিআর সিস্টেমে নির্বাচনে আসা উচিত বলে মত দেন।
সংস্কারের প্রশ্নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অটল ও অবিচল জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারে কালক্ষেপণ ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেইমানির শামিল।
এ সময় ৭২-এর সংবিধান জন-আকাঙ্ক্ষার ব্যাপারে বধির ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজনীতি
পিআর সিস্টেম ছাড়া নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না : পরওয়ার

পিআর (প্রোপরশোনাল রিপ্রেজেন্টেশন) বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব সিস্টেম ছাড়া নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
এ সময় তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কিছু ভূমিকায় জনগণের মধ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তিনি নির্বাচনের আগে গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রচেষ্টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলেও মন্তব্য করেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এর আগে দুপুরে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল মহাসমাবেশে যোগ দেয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আকতার হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মহাসমাবেশে যোগ দেয়।
রাজনীতি
সংস্কার কমিশন দু’একটা দলের জন্য পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে: নুর

আনুপাতিক হারে (পিআর) নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নেই উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সংস্কার কমিশনকে বলতে চাই দু-একটি দলকে ভিত্তি করে সংস্কারের নকশা পরিবর্তন করা যাবে না। দু-একটি দলকে প্রাধান্য দিয়ে বেশিরভাগ জনগণের আকাঙ্খার বিপরীতে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন না। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নেই।
আজ শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের ডাকা মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরের বেশি না হলে সমস্যা কি। আমরা এ কথাগুলো দফায় দফায় বারবার বলেছি। সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশন কেন জানি দু’একটা দলের জন্য পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে।
তিনি আরও বলেন, যেমনিভাবে জাতীয় নির্বাচন হবে, একইভাবে আমরা স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি।
রাজনীতি
জুলাই স্পিরিট যতদিন থাকবে, কোনো ষড়যন্ত্র দেশকে পিছিয়ে দিতে পারবে না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম মন্তব্য করেছেন যে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনও নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তিকে সামনে রেখে কিছু হবে না। তিনি বলেছেন, “কারও অপপ্রচার বা প্রপাগাণ্ডায় কিছু যায়-আসে না। চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে সবাই ঐক্যবদ্ধ।”
শনিবার (২৮ জুন) বিকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের’ দাবিতে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত মহাসমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, বিগত দিনে পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিতদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আগামীতে দেশ, জনগণ ও খুনিদের বিচার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আমরা এক থাকলে হাসিনার মতো কেউ আর আসতে পারবে না। যত বড় খুনিই হোক তাদের প্রতিহত করা হবে।”
তিনি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন।
মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
রাজনীতি
জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং ৫ আগস্ট দেশজুড়ে গণমিছিল করা হবে।
এছাড়াও, পয়লা জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পর্যন্ত নানা কর্মসূচি থাকছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে রংপুরে দোয়া ও আলোচনা সভা
- ৬ থেকে ৮ আগস্ট সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনা
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জুলাই সনদ ঘোষণায় জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার।” তিনি আরও বলেন, “শহীদ আবু সাঈদ, যার দুঃসাহসে, অকুতোভয় চেতনা সারা দুনিয়াকে নাড়া দিয়েছিল। বাংলাদেশের সব মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে এসেছিল, তার সাহসিকতার স্মরণে আমরা রংপুরে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। ১৯ জুলাই জামায়াত ঘোষিত যে ৭ দফা, সেটা বাস্তবায়নের জন্য ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছি।”