জাতীয়
জুলাই আন্দোলনে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা: জাতিসংঘ

বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই-অগাস্টে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।
এতে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীগুলোর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদনটি অনুযায়ী, বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলোর পাশাপাশি, গত বছরের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত ছিল।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে একটি সরকারি নীতি উঠে এসেছে যা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের এবং সমর্থকদের আক্রমণ ও সহিংসভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো উদ্বেগ উত্থাপনকারী এবং জরুরিভাবে আরও ফৌজদারি তদন্তের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত মৃত্যুর তথ্যের ভিত্তিতে, প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে যে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন এবং এদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীগুলোর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রতিবেদনটি নির্দেশ করেছে যে নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনকারী উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত থেকে। কিন্তু এর পেছনে ছিল ধ্বংসাত্মক ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এবং প্রশাসন থেকে সৃষ্ট বিস্তৃত ক্ষোভ, যা অর্থনৈতিক বৈষম্যের সৃষ্টি করেছিল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্ষমতায় থাকার জন্য সাবেক সরকার ক্রমাগত সহিংস পন্থা ব্যবহার করে এই বিক্ষোভগুলো দমনে পদ্ধতিগতভাবে চেষ্টা করেছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত এবং সমন্বিত কৌশল, যা জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল।
বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।

জাতীয়
ফুল গিয়ারে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে: সিইসি

নানান চ্যালেঞ্জের মুখেও ফুল গিয়ারে বা পুরোদমে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, চার নম্বর গিয়ারে যেভাবে গাড়ি চালানো হয়, আমরাও সেভাবেই ফুল গিয়ারে প্রস্তুতি নিচ্ছি। নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকার যখন চায় তখন যেন আমরা ইলেকশনটা করতে পারি।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
কদিন আগেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সিইসি। সেখানে আগামী জাতীয় নির্বাচনের তারিখ বা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো আলোচনা হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। আমি জানিয়েছি, পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে।
অন্য এক প্রশ্নে সিইসি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এই সময় ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যথাসময়ে নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের মনোভাব বিষয়ে এম নাসির উদ্দিন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা খুব আন্তরিক, নিরপেক্ষ যেন নির্বাচন হয়। উনার আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা একই ওয়েবলেন্থে আছি। প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষ, আমরাও নিরপেক্ষ।
জাতীয়
সারাদেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১ হাজার ২৯০

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ৮১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪৭৯ জন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৮১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় ৪৭৯ জন। মোট গ্রেফতার করা হয়েছে ১২৯০ জনকে। অভিযানে চাপাতি ১টি, দা ৩টি উদ্ধার করা হয়েছে।
বিশেষ এই অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা।
জাতীয়
২০৪০ শিক্ষার্থী পাচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি

দেশের ৭২৫টি প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৪০জন শিক্ষার্থীকে জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি প্রদান করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এর পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষাবৃত্তির চেক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বৃত্তির অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজ ও ইনস্টিটিউটে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রান্তিক ও সুবিধা বঞ্চিত ছাত্র-ছাত্রীদের এককালীন সহায়তা প্রদান করা হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ জন ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে আত্ম বলিদান করেছে বলেও এসময় উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয়
ইরান থেকে ঢাকায় ফিরেছেন ২৮ বাংলাদেশি

তেহরান থেকে প্রথম দফায় ২৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে তারা ঢাকা পৌঁছেছেন।
এদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ইরান থেকে দুবাই হয়ে ২৮ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। গত সোমবার তারা পাকিস্তানের করাচি থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। সেখান থেকে বিমানযোগে ঢাকায় আসেন।
সূত্র জানায়, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে তেহরান থেকে প্রথম দফায় গত ২৫ জুন সড়ক পথে ২৮ জন বাংলাদেশি রওয়ানা দেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী, শিশু ও সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগী। তারা তেহরান থেকে সড়ক পথে বেলুচিস্তানের তাফতান সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন।
ইরান থেকে সংঘাতের শুরুতে অনেক বাংলাদেশি দেশে ফেরার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে এখন সংঘাত থেমে যাওয়ায় অনেকেই ফিরতে আগ্রহী নন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরান থেকে দেশে ফেরার জন্য ইতোমধ্যেই ২৫০ জন বাংলাদেশি তেহরান দূতাবাসে নিবন্ধন করেছেন। এসব বাংলাদেশিকে ধাপে ধাপে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। তবে সংঘাত থেমে যাওয়ার পর পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আর ইরানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হলে নিজ উদ্যোগেই বাংলাদেশিরা ফিরতে পারবেন।
ইরানে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। এরমধ্যে তেহরানে ৪০০ বাংলাদেশি আছেন। ইরানে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ৬৭২ জন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী রয়েছেন ৬৬ জন।
জাতীয়
একমাসে করোনা ও ডেঙ্গুতে ৪১ জনের মৃত্যু

চলতি বছরের জুনে হঠাৎ করেই করোনা ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা উভয়ই দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে, যার ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে করোনায় ২২ জন এবং ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছরে এক মাসে সর্বোচ্চ।
ডেঙ্গুর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে ১০ জন মারা গেছেন ও ১ হাজার ১৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জনের মৃত্যু এবং ৩৭৪ জন ভর্তি, মার্চে কেউ মারা না গেলেও ৩৩৬ জন ভর্তি, এপ্রিল মাসে ৭ জনের মৃত্যু ও ৭০১ জন ভর্তি, মে মাসে ৩ জনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ৭৭৩ জন ভর্তি হন। তবে জুনে মৃত্যু বেড়ে ১৯ জন এবং ৫ হাজার ৯৫১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
মোট মিলিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ২৯৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ৯ হাজার ৮৭ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে, করোনার প্রকোপও হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পেছনে আইসিডিডিআরবি দ্বারা শনাক্ত দুইটি নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট এক্সএফজি ও এক্সএফসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
জুন মাসের প্রথম দশ দিনে ১৪টি নমুনায় জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হলে ১২টিতে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যা ওমিক্রন জেএন.১-এর একটি উপশাখা।
চলতি জুনে ১ হাজার ৪০৯ জনের করোনা পরীক্ষা করা হলে ১৩৪ জনের ফল পজিটিভ আসে এবং ২২ জন মারা যান, যা বছরের মোট মৃত্যুর পুরো অংশই।
করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৫২ হাজার ৯৩ জন এবং মোট মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৫২১ জনে পৌঁছেছে।
চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ ক্ষমতায় বেশি হলেও রোগের তীব্রতা কম। তবে অজানাকে অল্পস্বল্প গুরুত্ব দিলে রোগটি আবার শক্তিশালী রূপ নিতে পারে। তাই সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এবং সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাফি