পুঁজিবাজার
মাথাপিছু আয় কমেছে ৪৬ ডলার

বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৭৩৮ মার্কিন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এই তথ্য দিয়েছে। এই হিসাবে সাময়িক হিসাব থেকে মাথাপিছু আয় ৪৬ ডলার কমে গেছে। সাময়িক হিসাবে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিবিএস ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মাথাপিছু আয়, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চূড়ান্ত হিসাব দিয়েছে। সেখানে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এই হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারও কমেছে। সাময়িক হিসাবের চেয়ে কমেছে ১ দশমিক ৬০ শতাংশীয় পয়েন্ট।
মাথাপিছু আয় ব্যক্তির একক আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরের আয়ের পাশাপাশি প্রবাসী আয়সহ যত আয় হয়, তা একটি দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে মাথাপিছু ভাগ করে এই হিসাব করা হয়।
বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, তিন বছর ধরে দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরের মাথাপিছু আয় কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৪৯ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা আরও কমল।
মূলত ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বিবিএসের হিসাবে মাথাপিছু আয় কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মার্কিন ডলারের গড় বিনিময় হার ১১১ টাকা ৬ পয়সা হিসেবে ধরা হয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে ডলারের বিনিময় হার বাড়ছে।
তবে টাকার হিসাবে মাথাপিছু আয় বেড়েছে, সেই হিসাবে মাথাপিছু আয় তিন লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ৩ লাখ ৪ হাজার ১০২ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নিচে
বিবিএসের চূড়ান্ত হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। কয়েক মাস আগে দেওয়া সাময়িক হিসাবে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। ফলে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
কাফি

পুঁজিবাজার
সায়হাম টেক্সটাইলের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি সায়হাম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করেছে ন্যাশনাল ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (এনসিআর)। কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদী ‘এএ-’ এবং স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-২’ রেটিং হয়েছে।
কোম্পানিটির গত ৩০ জুন,২০২৪ তারিখ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী এ রেটিং নির্ণয় করা হয়েছে।
এসএম
পুঁজিবাজার
আধুনিক এ–৪ কনভার্টিং মেশিন কিনবে সোনালী পেপার

আধুনিক এ-৪ পেপার কনভার্টিং মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড।
আজ (২৫ আগস্ট) বিকেল ৪টায় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৯০তম সভায় নতুন এ মেশিন কেনার সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেয়া হয়। এটি হবে কোম্পানির তৃতীয় ইউনিট, যা বিদ্যমান দুইটি অপারেশনাল ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত হবে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন এই যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান দেশব্যাপী এ–৪ কাগজের চাহিদা আরও কার্যকরভাবে পূরণ করা যাবে। এ–৪ কাগজ ও প্যাকেজিং খাতে কোম্পানির প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
পর্ষদ মনে করছে, এ সিদ্ধান্ত কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এর ফলে ভবিষ্যতে আর্থিক কার্যক্রম ও শেয়ারহোল্ডারদের মূল্য বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
পুঁজিবাজার
ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি পরিচালনা পর্ষদ সভার তারিখ ও সময়সূচি ঘোষণা করেছে। আগামী ৩১ আগস্ট, বিকাল ৩টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত সভায় গত ৩০ জুন,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল’২৫-জুন’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ ওই প্রতিবেদন অনুমোদন করলে কোম্পানিটি তা প্রকাশ করবে।
এসএম
পুঁজিবাজার
‘বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন ডিলিস্টিং আমরা চাই না’

বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন ডিলিস্টিং আমরা চাই না। বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে ডিলিস্টিং করতে হবে বলে জানিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সোমবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর এ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তারা।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন বিসিএমআইএ’র সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিলিস্টিং (তালিকাচ্যুত) করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন ডিলিস্টিং আমরা চাই না। আমরা এটা হতে দেবো না। যদি ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা না হয়, আমরা জীবন দিয়ে দেবো, তবু এই ডিলিস্টিং হতে দেবো না। অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে ডিলিস্টিং করতে হবে।
এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, পুঁজিবাজার রক্ষার দায়িত্ব যাদের, তাদের ভূমিকা আজ বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ এবং আমাদের জন্য যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ২০১০ সাল থেকে আমরা পুঁজিবাজারে শোষণ-নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়েছি। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর আমরা আশা করেছিলাম যে বিনিয়োগকারীদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে, তারা তাদের হারানো পুঁজি ফিরে পাবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ৫ আগস্ট পরবর্তীতে যে সরকার এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এসেছে, তাদের কর্মকাণ্ড অতীতের ১৫ বছরের চাইতে দ্রুত শেয়ারবাজারকে ধ্বংসের মুখে, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।
বিসিএমআইএ’র সভাপতি বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে যে, এই পুঁজিবাজার ধ্বংসের জন্যই যেন এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। স্বৈরাচারের পতন দেখেছি। কিন্তু আমরা বলতে পারি পুঁজিবাজারে নব্য স্বৈরাচারের উত্থান ঘটেছে। এই পুঁজিবাজারে রাশেদ মাকসুদ (বিএসইসি’র বর্তমান চেয়ারম্যান) কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের বিনিয়োগকারীর প্রত্যেক পোর্টফোলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উনি (বিএসইসি চেয়ারম্যান) দায়িত্ব নেওয়ার পর কী করেছেন? এই প্রশ্নটা কেন আমরা জাতিগতভাবে আমরা করি না? আমাকে অনেকেই বলে যে আপনি এত বড় বড় কথা বলেন কোন সাহসে? সাহস একটা সত্য কথা বলি’।
তিনি বলেন, লেনদেন শুরুর পর যদি সিকিউরিটির দাম কমে যায় লাল হয়ে যায়, আর দাম বেড়ে গেলে সবুজ। কিছুই যে জানে না, এটুকু তো সে বুঝে। আমার মনে হয় রাশেদ মাকসুদ সেটাও বোঝেন না। রাশেদ মাকসুদ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান উনি সেটাও বোঝেন না। এমন একটা লোককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর তার পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে অর্থ উপদেষ্টা সালাউদ্দিন আহমেদ। এই অর্থ উপদেষ্টার পৃষ্ঠপোষকতার কারণে এই শেয়ারবাজার ধ্বংসের মুখে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে না, ধ্বংসের শেষ হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীরা আত্মহত্যা থেকে শুরু করে তারা পাগল প্রায় হয়ে গেছেন। তারপরও কোনো পরিবর্তন আসে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবির মুখে প্রধান উপদেষ্টা পুঁজিবাজার বিষয়ে একটা মিটিং করেছেন। আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সেখানে আমরা যার অপসারণ চাই, যার কারণে পুঁজিবাজার ধ্বংস হয়ে গেলো সেই রাশেদ মাকসুদ, তিনি ছিলেন সেখানকার উপস্থাপক এবং তিনি ছিলেন প্রধান আকর্ষণ।
বিসিএমআইএ’র সভাপতি বলেন, সব বাদ দিলাম, যখন প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকে ঘোষণা আসলো ওই মিটিং থেকে যে ‘এ গ্রুপ অব এক্সপার্ট’ দিয়ে আমাদের পুঁজিবাজারের বিষয়গুলো সংস্কার করা হবে। কয় মাস হয়েছে, কত দিন হয়েছে? আমরা যমুনার সেই মিটিংয়ের খবর জানি। কোথায় সেই এক্সপার্ট? এক্সপার্ট আসলে তো রাশেদ মাকসুদের অপসারণ হওয়া উচিত ছিলো। তাকে দিয়ে হচ্ছে না যখন, বিদেশি আনবো আমরা। সেই বিদেশিরা কই? কি এক্সপার্ট এনেছে। কি উন্নতি করেছে পুঁজিবাজারের? এগুলো আমাদের জানার প্রয়োজন আছে। কিছুই হয় না। প্রধান উপদেষ্টার কথা যখন হয় না, তখন কার কথা কার্যকরী হবে?
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা কি প্রতিদিন তাদের জীবন দিয়ে শেষ হয়ে যাবে? নতুন করে কোনো কাজ নেই, কোনো উন্নয়ন নেই। আপনারা সবাই জানেন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করা হলে উনি বলেন- শেয়ারের দাম বাড়ানো বা কমানো তার কাজ না। ইন্ডেক্স বাড়ানো বা কমানো তার কাজ নয়। তাহলে একটা শেয়ার সাত দিন পরপর হল্ট হতে থাকলে কোয়ারি দেয় কেন? আবার কোনো শেয়ারের কোয়ারি দেয় না। নিশ্চয় বাড়লে পরে তার কোয়ারি দেওয়ার একটা দায়িত্ব আছে? সেটা বোঝার দায়িত্ব আছে। কারা অনিয়ম, দুর্নীতি করতেছে নিশ্চয়ই তাদের ধরার দায়িত্ব আছে। উনি এক কথায় বলে দিলেন ইন্ডেক্স বাড়লেও তার কিছু যায় আসে না, কমলেও যায় আসে না। তিনি কিসের জন্য এখানে আছেন? এটা তো আমাদের জানার, বলার অধিকার আছে।
বিসিএমআইএ’র সভাপতি আরও বলেন, হঠাৎ করে একটা মার্জিন রুল নিয়ে আসলেন। মার্জিন রুল মনে হচ্ছে বিশাল একটা গবেষণাপত্র, দুর্বোধ্য, এগুলো পড়তে পড়তেই মানুষের জীবন শেষ। এই চব্বিশ পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র এই দেশে মার্জিনের জন্য কোনো দরকার আছে? মার্জিন হবে সার্বজনীন, সবার জন্য। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য। উনি সিলিং করে দিয়েছেন ৫ লাখ টাকার নিচে যাদের বিনিয়োগ, তারা মার্জিন পাবেন না। ১০ লাখ টাকা বিনিনিয়োগ থাকলে মার্জিন পাবেন। তাহলে এক লাখ, দুই লাখ টাকা বিনিয়োগকারীরা কি মানুষ না? এরা কি বিনিয়োগকারী না?
এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল যদি এই সরকার হয়, তাহলে এই মার্জিন ঋণে কেন, কিসের জন্য এই বৈষম্য। কিসের জন্য এই ধরনের বৈষম্য নীতি প্রণয়ন করতে যাচ্ছেন? কার হুকুমে, কার ইশারায়, কার ইঙ্গিতে, কার স্বার্থে, কোন দেশের অণুঘটক এই দেশে প্রবেশ করে আমাদের দেশের পুঁজিবাজারকে ধ্বংস করে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে তাদের দিকে আমাদের ধাবিত করছে।
তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের কথা বলা হচ্ছে? মিউচুয়াল ফান্ড হলো পুঁজিবাজারকে তারা বাঁচিয়ে রাখবে, জীবন দান করবে। এটাই হবে তাদের ভূমিকা। কিন্তু সেই মিউচুয়াল ফান্ড এমনভাবে অপব্যবহার হয়েছে, এমনভাবে লুটতরাজ হয়েছে…। পুঁজিবাজারকে টিকিয়ে রাখা, বাঁচিয়ে রাখা, জীবন রক্ষা করা যাদের কাজ, তারা উল্টো কাজ করে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে, তাদেরকে শাস্তির আওতায় না এনে, উনি পুঁজিবাজার যাতে আরও খারাপ প্রভাব পড়ে সেই ধরনের সিদ্ধান্তের দিকে চলে যাচ্ছে। এটা কি?
বিসিএমআইএ’র সভাপতি বলেন, ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, যিনি বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার (মমিনুল ইসলাম) নিয়োগ অবৈধ। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি তিনি ঋণ খেলাপি, একজন জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপি বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে। তাকে দিয়ে দুই বন্ধু কৌশলে কিছু কোম্পানি ডিলিস্টিং করবে। ডিলিস্টিং করবে করা, যারা এই কোম্পানির শেয়ার ধরে আছে।
তিনি আরও বলেন, সিলেট থেকে একজন সাধারণ বিনিয়োগকারী কাল রাত ১টার সময় আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছেন, একটি ফিন্যান্স কোম্পানির শেয়ার তার বাবা কিনেছিলেন ৮ বছর আগে। বাবা মারা গেছে। এটাই তার সম্বল। সে এটা নিয়েই আছেন, ডিলিস্টিংয়ের বিষয়ে সেই কোম্পানির নাম বলেছেন মমিনুল ইসলাম।
পুঁজিবাজার
অল্প সময়ে পুঁজিবাজারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনেছে বিএসইসি: বিনিয়োগকারীরা

চব্বিশের ৫ আগস্ট পরবর্তীতে যে সরকার এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এসেছে তাদের কর্মকাণ্ড অতীতের ১৫ বছরের চাইতে অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত পুঁজিবাজারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। সোমবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর এ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন বিসিএমআইএ’র সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিলিস্টিং (তালিকাচ্যুত) করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন ডিলিস্টিং আমরা চাই না। আমরা এটা হতে দেবো না। যদি ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা না হয়, আমরা জীবন দিয়ে দেবো, তবু এই ডিলিস্টিং হতে দেবো না। অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে ডিলিস্টিং করতে হবে।
এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, পুঁজিবাজার রক্ষার দায়িত্ব যাদের, তাদের ভূমিকা আজ বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ এবং আমাদের জন্য যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ২০১০ সাল থেকে আমরা পুঁজিবাজারে শোষণ-নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়েছি। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর আমরা আশা করেছিলাম যে বিনিয়োগকারীদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে, তারা তাদের হারানো পুঁজি ফিরে পাবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ৫ আগস্ট পরবর্তীতে যে সরকার এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এসেছে, তাদের কর্মকাণ্ড অতীতের ১৫ বছরের চাইতে দ্রুত শেয়ারবাজারকে ধ্বংসের মুখে, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।
বিসিএমআইএ’র সভাপতি বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে যে, এই পুঁজিবাজার ধ্বংসের জন্যই যেন এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। স্বৈরাচারের পতন দেখেছি। কিন্তু আমরা বলতে পারি পুঁজিবাজারে নব্য স্বৈরাচারের উত্থান ঘটেছে। এই পুঁজিবাজারে রাশেদ মাকসুদ (বিএসইসি’র বর্তমান চেয়ারম্যান) কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের বিনিয়োগকারীর প্রত্যেক পোর্টফোলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উনি (বিএসইসি চেয়ারম্যান) দায়িত্ব নেওয়ার পর কী করেছেন? এই প্রশ্নটা কেন আমরা জাতিগতভাবে আমরা করি না? আমাকে অনেকেই বলে যে আপনি এত বড় বড় কথা বলেন কোন সাহসে? সাহস একটা সত্য কথা বলি’।
তিনি বলেন, লেনদেন শুরুর পর যদি সিকিউরিটির দাম কমে যায় লাল হয়ে যায়, আর দাম বেড়ে গেলে সবুজ। কিছুই যে জানে না, এটুকু তো সে বুঝে। আমার মনে হয় রাশেদ মাকসুদ সেটাও বোঝেন না। রাশেদ মাকসুদ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান উনি সেটাও বোঝেন না। এমন একটা লোককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর তার পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে অর্থ উপদেষ্টা সালাউদ্দিন আহমেদ। এই অর্থ উপদেষ্টার পৃষ্ঠপোষকতার কারণে এই শেয়ারবাজার ধ্বংসের মুখে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে না, ধ্বংসের শেষ হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীরা আত্মহত্যা থেকে শুরু করে তারা পাগল প্রায় হয়ে গেছেন। তারপরও কোনো পরিবর্তন আসে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবির মুখে প্রধান উপদেষ্টা পুঁজিবাজার বিষয়ে একটা মিটিং করেছেন। আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সেখানে আমরা যার অপসারণ চাই, যার কারণে পুঁজিবাজার ধ্বংস হয়ে গেলো সেই রাশেদ মাকসুদ, তিনি ছিলেন সেখানকার উপস্থাপক এবং তিনি ছিলেন প্রধান আকর্ষণ।
বিসিএমআইএ’র সভাপতি বলেন, সব বাদ দিলাম, যখন প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকে ঘোষণা আসলো ওই মিটিং থেকে যে ‘এ গ্রুপ অব এক্সপার্ট’ দিয়ে আমাদের পুঁজিবাজারের বিষয়গুলো সংস্কার করা হবে। কয় মাস হয়েছে, কত দিন হয়েছে? আমরা যমুনার সেই মিটিংয়ের খবর জানি। কোথায় সেই এক্সপার্ট? এক্সপার্ট আসলে তো রাশেদ মাকসুদের অপসারণ হওয়া উচিত ছিলো। তাকে দিয়ে হচ্ছে না যখন, বিদেশি আনবো আমরা। সেই বিদেশিরা কই? কি এক্সপার্ট এনেছে। কি উন্নতি করেছে পুঁজিবাজারের? এগুলো আমাদের জানার প্রয়োজন আছে। কিছুই হয় না। প্রধান উপদেষ্টার কথা যখন হয় না, তখন কার কথা কার্যকরী হবে?
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা কি প্রতিদিন তাদের জীবন দিয়ে শেষ হয়ে যাবে? নতুন করে কোনো কাজ নেই, কোনো উন্নয়ন নেই। আপনারা সবাই জানেন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করা হলে উনি বলেন- শেয়ারের দাম বাড়ানো বা কমানো তার কাজ না। ইন্ডেক্স বাড়ানো বা কমানো তার কাজ নয়। তাহলে একটা শেয়ার সাত দিন পরপর হল্ট হতে থাকলে কোয়ারি দেয় কেন? আবার কোনো শেয়ারের কোয়ারি দেয় না। নিশ্চয় বাড়লে পরে তার কোয়ারি দেওয়ার একটা দায়িত্ব আছে? সেটা বোঝার দায়িত্ব আছে। কারা অনিয়ম, দুর্নীতি করতেছে নিশ্চয়ই তাদের ধরার দায়িত্ব আছে। উনি এক কথায় বলে দিলেন ইন্ডেক্স বাড়লেও তার কিছু যায় আসে না, কমলেও যায় আসে না। তিনি কিসের জন্য এখানে আছেন? এটা তো আমাদের জানার, বলার অধিকার আছে।
বিসিএমআইএ’র সভাপতি আরও বলেন, হঠাৎ করে একটা মার্জিন রুল নিয়ে আসলেন। মার্জিন রুল মনে হচ্ছে বিশাল একটা গবেষণাপত্র, দুর্বোধ্য, এগুলো পড়তে পড়তেই মানুষের জীবন শেষ। এই চব্বিশ পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র এই দেশে মার্জিনের জন্য কোনো দরকার আছে? মার্জিন হবে সার্বজনীন, সবার জন্য। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য। উনি সিলিং করে দিয়েছেন ৫ লাখ টাকার নিচে যাদের বিনিয়োগ, তারা মার্জিন পাবেন না। ১০ লাখ টাকা বিনিনিয়োগ থাকলে মার্জিন পাবেন। তাহলে এক লাখ, দুই লাখ টাকা বিনিয়োগকারীরা কি মানুষ না? এরা কি বিনিয়োগকারী না?
এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল যদি এই সরকার হয়, তাহলে এই মার্জিন ঋণে কেন, কিসের জন্য এই বৈষম্য। কিসের জন্য এই ধরনের বৈষম্য নীতি প্রণয়ন করতে যাচ্ছেন? কার হুকুমে, কার ইশারায়, কার ইঙ্গিতে, কার স্বার্থে, কোন দেশের অণুঘটক এই দেশে প্রবেশ করে আমাদের দেশের পুঁজিবাজারকে ধ্বংস করে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে তাদের দিকে আমাদের ধাবিত করছে।
তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের কথা বলা হচ্ছে? মিউচুয়াল ফান্ড হলো পুঁজিবাজারকে তারা বাঁচিয়ে রাখবে, জীবন দান করবে। এটাই হবে তাদের ভূমিকা। কিন্তু সেই মিউচুয়াল ফান্ড এমনভাবে অপব্যবহার হয়েছে, এমনভাবে লুটতরাজ হয়েছে…। পুঁজিবাজারকে টিকিয়ে রাখা, বাঁচিয়ে রাখা, জীবন রক্ষা করা যাদের কাজ, তারা উল্টো কাজ করে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে, তাদেরকে শাস্তির আওতায় না এনে, উনি পুঁজিবাজার যাতে আরও খারাপ প্রভাব পড়ে সেই ধরনের সিদ্ধান্তের দিকে চলে যাচ্ছে। এটা কি?
বিসিএমআইএ’র সভাপতি বলেন, ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, যিনি বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার (মমিনুল ইসলাম) নিয়োগ অবৈধ। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি তিনি ঋণ খেলাপি, একজন জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপি বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে। তাকে দিয়ে দুই বন্ধু কৌশলে কিছু কোম্পানি ডিলিস্টিং করবে। ডিলিস্টিং করবে করা, যারা এই কোম্পানির শেয়ার ধরে আছে।
তিনি আরও বলেন, সিলেট থেকে একজন সাধারণ বিনিয়োগকারী কাল রাত ১টার সময় আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছেন, একটি ফিন্যান্স কোম্পানির শেয়ার তার বাবা কিনেছিলেন ৮ বছর আগে। বাবা মারা গেছে। এটাই তার সম্বল। সে এটা নিয়েই আছেন, ডিলিস্টিংয়ের বিষয়ে সেই কোম্পানির নাম বলেছেন মমিনুল ইসলাম।