আন্তর্জাতিক
শেখ হাসিনা দালাই লামা নন, ভারতের উচিত তাকে সমর্থন বন্ধ করা: দ্য প্রিন্ট

গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ১৮০তম দিনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে ভাষণ দেওয়ার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। তার এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে— অনেকেই ভাবতে শুরু করেন তার দল আওয়ামী লীগ হয়তো প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করছে। শুরুতে যা ছিল শেখ হাসিনার একটি সাধারণ ফেসবুক পোস্ট, বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণরা তা কার্যত লুফে নেয়। সেইসঙ্গে ঢাকার কেন্দ্রে প্রতিবাদীদের একটি বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনা যতক্ষণে তার বক্তৃতা শুরু করেন, ধানমন্ডি ৩২-এর ঐতিহাসিক ভবনটির সামনে আনা হয় কয়েকটি বুলডোজার, ততক্ষণে আগুনে জ্বলছিল ভবনটি। ঐতিহাসিক এই বাড়িতেই শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মুকুটহীন রাজা হিসেবে তার শেষ দিনগুলো কাটিয়েছিলেন। হলুদ বুলডোজারের বড় ধাতব ব্লেডগুলো ভবনের একের পর এক অংশ গুঁড়িয়ে দিতে শুরু করে। এই ভবন থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
ঘটনাটি অনেককে, এমনকি বাংলাদেশের এস্টাবলিস্টমেন্ট সদস্যদেরও বিস্মিত করেছে। প্রায় ৪০ জন সেনা সদস্য রাস্তার মুখে গিয়ে ওই বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তারা বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভের মুখে সেখান থেকে সরে যান।
পরদিন সূর্যোদয়ের সময় বাংলাদেশ যখন জেগে ওঠে তখন তার ল্যান্ডস্কেপে পরিবর্তন ঘটে গেছে— বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যা করতে পারেনি, তা ওই রাতের ৯ ঘণ্টায় ঘটেছিল। ৩২ নম্বর রোডের ভবনটিতে ইট ও ছাই- ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
কিন্তু ভুল বুঝবেন না। এরা বিক্ষুব্ধ জনতা বা ধর্মান্ধরা নয় যারা ইতিহাসকে নতুন করে লেখার চেষ্টা করছে বা বাংলাদেশকে ১৯৭১ সালের আগের দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে যখন দেশটি পাকিস্তানের অংশ ছিল। বাড়িটি ভাঙার সাথে সাথে যারা হাততালি, উল্লাস ও সেলফি তুলছিলেন তাদের মধ্যে দেশের ইংরেজি-শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং শহুরে মানুষও দাঁড়িয়েছিলেন।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হাসিনা ও তার দোসরদের হাতে তাদের ভোটাধিকার হরণ হতে দেখেছে তারা। বিক্ষোভেকারীদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন যারা হাসিনার শাসনামলে একের পর এক কারচুপির নির্বাচনের কারণে তাদের জীবনে কখনো ভোটই দিতে পারেননি।
অবশ্য ভোটে কারচুপি করলেও মানুষের সমর্থন পেতে হাসিনা তার বাবার উত্তরাধিকার এবং দেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করেছেন। এই কাজটা তিনি এতটাই করেছেন যে- সাধারণ বাংলাদেশিরা মুজিবকে হাসিনা থেকে আলাদা ভাবতে পারেননি। উভয়ই দুঃখজনকভাবে একে অন্যের সাথে মিলে গিয়েছেন। হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে এখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই আবহে ভারত এখন পররাষ্ট্রনীতির জালে আটকে পড়েছে। ঢাকায় এখন আবেগ তুঙ্গে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ এহতেশাম হক বলেছেন, লাখ লাখ ভুক্তভোগী মানুষ তাদের নিপীড়কের প্রতীককে সম্মান করবে বলে আপনি আশা করেন? যা কিনা ইট-বালি দিয়ে তৈরি একটি বাসা মাত্র- আপনি কি আমাদের কাছ থেকে চুরি করে নেওয়া সম্পদ ফিরিয়ে দিতে পারবেন? আমাদের দেশবাসীর কাছ থেকে নৃশংসভাবে কেড়ে নেওয়া চোখ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফিরিয়ে আনতে পারবেন? আজকে ভেঙে ফেলা প্রতিটি ইট ন্যায়বিচারের প্রতীক, যা নিপীড়ক শাসকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করছে। মুজিবকে গুম, অপশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতীকে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। ৩২ নম্বর রোডের বাড়িটি, যাকে একসময় বাংলাদেশিদের গর্বের স্মারক হিসেবে দেখতেন, তা এখন হাসিনা নামের সমার্থক হয়ে উঠেছে।
ভারতের আওয়ামী লীগের সমস্যা
শেখ মুজিবুর রহমান যখন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির সেন্ট্রাল জেল মিয়ানওয়ালিতে বন্দি ছিলেন তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর তাজউদ্দীন আহমেদসহ মোট চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। তাজউদ্দীনের বিধবা স্ত্রী ও সোহেল তাজের মা সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন করেন এবং ১৯৭৭ সালে দলটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, ৩২ নম্বর রোডের বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যাবার একদিন পরও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সোহেল তাজ কোনও সমালোচনা করেননি। কারও নাম না করে তিনি তার দলের দুঃখজনক অবস্থার জন্য ১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকা শেখ হাসিনার ওপরই দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, কেউ একজন এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে দেশের স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দলের সুনামই আজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
যতবারই মিডিয়ায় শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশিত হয় ততবারই তার প্রতি ভারতের নিরবচ্ছিন্ন এবং অটল সমর্থনের প্রশ্নটিও সামনে এসে যায়। কয়েকদিন আগে, শেখ হাসিনা তার দলের সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন- যারা তার বিরোধিতা করেন তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দিতে। একটি অডিও ক্লিপে তাকে বলতে শোনা যায়, “তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিন।”
এটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, শেখ হাসিনা কোনও দালাই লামা নন যে, তিনি বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতকে নৈতিক সংকটে ফেলবেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী ভারতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ হচ্ছে বাংলাদেশে ভারতের একমাত্র মিত্র। কিন্তু শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পুনর্বাসন করা এককথায় অসম্ভব, বিশেষ করে যখন সারাদেশে তার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি এখনও জনসাধারণের মনে টাটকা, সতেজ। ৩২ নম্বর রোডে মুজিবের বাড়ি ভাঙা তারই একটি বহিঃপ্রকাশ।
অবশ্য শেখ হাসিনা সেই দুর্ভাগ্যজনক বক্তৃতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার বিরোধীরা বিশৃঙ্খল অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল- হাসিনার বিরুদ্ধে বিপ্লবের দিকে পরিচালিত আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিতে শুরু করেছিল। কিন্তু, হাস্যকরভাবে, শেখ হাসিনা সফলভাবে তার বিরোধীদের আবার একত্রিত হওয়ার রসদ যুগিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি সক্ষম হয়েছেন। যে মুহূর্তে শেখ হাসিনার ছায়া দিগন্তে আবির্ভূত হয়েছিল, নিজেদের মধ্যে সব মতবিরোধ তারা দ্রুত ভুলে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) বেশ অস্বস্তিকর অবস্থানে ফেলেছে। ভারতকে খুশি করতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে দলটি। ভারতবিরোধী বক্তব্য না দেওয়ার ও ছড়ানোর ব্যাপারেও সতর্ক রয়েছে বিএনপি। কিন্তু দিনশেষে দলটির নেতাদের নির্বাচনের সম্মুখীন হতে হবে- আর তাই বিএনপি কতদিন তার কণ্ঠ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে।
এই মুহূর্তে ভারতকে দেশের তরুণ প্রজন্মের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখতে হবে, যারা বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনার হাতে নিজেদের মৌলিক মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হতে দেখেছে। হাসিনার হাতে কেবল দুটি অস্ত্র ছিল- তার বাবার উত্তরাধিকার এবং ভারতের সমর্থন। মুজিবের ঐতিহাসিক বাসা ধ্বংসকে এই আলোকে দেখা উচিত এবং বিপুলসংখ্যক জনগণের মধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে বিরাজমান ব্যাপক ক্ষোভকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝা উচিত। নয়া দিল্লিকে অবশ্যই তার গর্ব খর্ব করতে হবে এবং বুঝতে হবে যে, এটি এমন একটি দেশের স্বৈরশাসককে নির্লজ্জভাবে সমর্থন করেছে- যার সাথে রয়েছে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম স্থল সীমান্ত। শুধু প্রয়োজন সাবেক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর মতো বাস্তব বুদ্ধি। এমনকি অতীতে যখন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল তখনও তিনি বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিজের উদ্যোগে তার হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের লেনদেনের জগত
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বাস্তববাদী মানুষ। তিনি লেনদেনে বিশ্বাসী। যেখানে সর্বোচ্চ দরদাতা যা চায় সেটাই পায়। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত বাংলাদেশ বৈশ্বিক দুই পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরে কৌশলগতভাবে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশের অবস্থানকে প্রাণকেন্দ্রে হিসেবে দেখে চীন। যদি কখনও দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ-অবরোধের মুখে পড়তে হয় সে ক্ষেত্রে সমুদ্রপথে যাওয়ার জন্য বার্মা বা বাংলাদেশ অথবা উভয়েরই প্রয়োজন হবে চীনের। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। বর্ষা বিপ্লব বাংলাদেশকে উভয় পরাশক্তির সাথে সঠিক দর কষাকষির সুযোগ করে দিয়েছে। যেখানে ভারতের সাউথ ব্লক বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার কল্পনায় অটল বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে চীন ঢাকায় নতুন শাসন ব্যবস্থার প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব দেখাচ্ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতকে অবশ্যই বাংলাদেশে নতুন বন্ধু তৈরি করতে হবে। সাধারণ বাংলাদেশিদের পাকিস্তানের ছায়ামূর্তি হিসেবে চিত্রিত করা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য ভালো হতে পারে এবং পশ্চিমবঙ্গে কিছু ভোট জিততে সাহায্য করতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদী এই কৌশল ক্ষতিকারক হিসেবে প্রতিভাত হবে।
বাংলাদেশের বিষয়ে চীন বরাবরের মতোই বাস্তবতা দেখিয়েছে। তবে ভারতের বাংলাদেশ নীতি ৭৭ বছর বয়সী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, শেখ হাসিনা দেশের মাটিতে একাধিক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছেন। ভারতের এই অবাস্তববাদী নীতির প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও উদ্বেগজনক। কারণ চীনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ওপর নির্ভরশীল ওয়াশিংটন।
সূত্র: দ্য প্রিন্ট

আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ভারত: জয়সওয়াল

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘উপযুক্ত পরিবেশে’ বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়েই আলোচনা করতে প্রস্তুত ভারত।
শুক্রবার (২৭ জুন) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক মোকাবিলা করা যায়।
তার এ মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারতের পার্লামেন্টে পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলোচনার জন্য ৪ জন বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানিয়েছে, এই বিশেষজ্ঞরা হলেন- সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম হাশনাইন, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই ভারতে সংশোধিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগেও বহুবার গঠনমূলক বৈঠকে আলোচনা করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।
নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত, যদি তা পারস্পরিক উপকারে উপযোগী পরিবেশে হয়। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৯ জুন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। চীনের কুনমিংয়ে ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপজিশন অ্যান্ড দ্যা সিক্সথ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ শীর্ষক বৈঠকের সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারতীয় সংসদীয় কমিটির বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ আলোচনার প্রাথমিক প্রস্তুতিপত্র অনুযায়ী, আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যে বিষয়গুলোতে মতামত চাওয়া হবে তা হলো- ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান, বাংলাদেশের অস্থিরতা থেকে ভারতের নিরাপত্তা হুমকি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ-চীনের ‘কৌশলগত সখ্যতা’ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ।
আন্তর্জাতিক
ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে মুখ থুবড়ে পড়া আলোচনার টেবিলে ইরানকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ইরানকে কোটি কোটি ডলার ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে খুশি করতে চায় দেশটি। আলোচনায় ফিরতে রাজি হলে দেওয়া হতে পারে আরও নানান সুযোগ সুবিধা।
ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের লোকজন বিষয়টি নিয়ে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে। তারা গোপনে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। খবর সিএনএনের।
খবর অনুসারে, পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক শক্তি ব্যব্হার করা হলে ইরানকে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে। এছাড়া শিথিল করা হবে দেশটির উপর বিদ্যমান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন দেশে ফ্রিজ করে রাখা ইরানের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সম্পদের একাংশ ছাড় করা হবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বেশ কিছুদিন ধরেই দেশটির সঙ্গে আলোচনায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকের ঠিক একদিন আগে ইসরায়েল একতরফাভাবে ইরানে হামলা চালায়। তারা ইরানের বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার কোনো প্রতিবাদ করেনি। বরং তারা নিজেরাও ইসরায়েলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে। এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ ইরান তখনই ঘোষণা করেছিল তারা আর আলোচনার টেবিলে ফিরবে না। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রস্থানীয় কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের মাধ্যমে গোপনে এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে আগানোর চেষ্টা করছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিদেশে আটক সম্পদ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার অবমুক্ত করার মতো বিষয় রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে সরাসরি ইরানকে কোনো আর্থিক বা বিনিয়োগ সুবিধা দেবে না; মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এই অর্থের যোগান দেবে। তা দিয়ে ফরডো পারমাণবিক স্থাপনা পুর্নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে গত শুক্রবার অর্থাৎ ইরানে মার্কিন হামলার ঠিক আগের দিন মধ্য প্রাচ্যের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত উইটকফ।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবে ইরান সম্মতি দেবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ দু’দিন আগে ট্রাম্প ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র আবার আলোচনার টেবিলে ফিরছে বলে ঘোসণা দিলেও উরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা নাকচ করে দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে আরও কমলো স্বর্ণের দাম

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে কমছে স্বর্ণের দাম। মূলত ইরান ও ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ও মার্কিন-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা কমেছে। পাশাপাশি, মার্কিন মূল্যস্ফীতির নতুন তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৭ জুন) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৮৮ দশমিক ৫৫ ডলারে। এই সপ্তাহে স্বর্ণের দাম মোট ২.৩ শতাংশ কমেছে। আর ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। বেচাকেনা হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ দশমিক ৪০ ডলারে।
এএনজেড কমোডিটি স্ট্র্যাটেজিস্ট সোনি কুমারী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বাজারের ইতিবাচক মনোভাবের কারণে স্বর্ণের দাম কমেছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি এবং মার্কিন-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির ফলে বাজারের অনিশ্চয়তা কমেছে, যা স্বর্ণের দাম কমার বড় কারণ।
ইরান ও ইসরাইল ১২ দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার (২৪ জুন) থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। অন্যদিকে, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ করার চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ দ্রুত সরবরাহের জন্য চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ধারণা নিতে বিনিয়োগকারীরা শুক্রবার মার্কিন ব্যক্তিগত খরচ ব্যয়ের তথ্যের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। রয়টার্সের জরিপে অংশ নেয়া বিশ্লেষকরা এই খাতে মাসিক ০.১ শতাংশ এবং বার্ষিক ২.৬ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন।
বাজার মনে করছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সুদের হার ৬৩ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমানো হতে পারে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফেডকে এখনই সুদের হার কমানো উচিত। তবে জুলাইয়ের সভায় মাত্র দুজন নীতিনির্ধারক সুদের হার কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
এদিকে, স্পট সিলভারের দাম শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৪ ডলার। প্লাটিনামের দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৭৮ দশমিক ১৮ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে, প্যালাডিয়ামের দাম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৩৫ দশমিক ৩৬ ডলারে উঠেছে, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ইরানি সেনাসহ গ্রেপ্তার ১৩০ জন

একের পর এক অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানি নাগরিকদের গ্রেপ্তার করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস পুলিশ (ইউ এস ইমিগ্রেশন অ্যান্ট কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসিই)। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে মোট ১৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ইরানের একজন সাবেক সেনাসদস্যও রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-ডিএইচএস) সূত্রে জানা গেছে- গ্রেপ্তার ওই ইরানি সেনার নাম রিদওয়ার কারিমি। মার্কিন নাগরিকের বাগদত্ত সঙ্গী হিসেবে একটি বিশেষ ভিসায় গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ করেছিলেন রিদওয়ার। যুক্তরাষ্ট্রে এসে ওই নাগরিককে বিয়েও করেছিলেন, কিন্তু তারপর আর নিজের ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস হালনাগাদ করেননি। অর্থাৎ তিনি যে বিয়ে করেছেন- তা স্থানীয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি।
গত ২২ জুন যেদিন ইরানের তিন পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বিমান বাহিনী, তার পরের দিন তাকে আলবামা অঙ্গরাজ্য গ্রেপ্তার করে কাস্টমস পুলিশ।
বর্তমানে আলবামায় মার্কিন কাস্টমস পুলিশের বন্দিশালায় আছেন রিদওয়ার। তার অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রী মরগান কারিমি স্বামীর বুধবার মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকে স্বামীর মুক্তির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
রিদওয়ার কারিমিসহ ১৩০ জন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত সপ্তাহে। তাদের সবার বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসন এবং কয়েক জনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
কাস্টমস পুলিশসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আইসিই বন্দিশালায় ৬৭০ জন অনুপ্রবেশকারী ইরানি নাগরিক আছেন।
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত আরও ৭১ ফিলিস্তিনি

গাজায় বিতর্কিত মানবিক প্রকল্পের আড়ালে পরিচালিত খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রগুলো এখন ‘জল্লাদখানা’য় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন খাবারের লাইনে অপেক্ষারত সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাজুড়ে অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা সিটি থেকে দির আল-বালাহ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এসব হামলায় হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রও রেহাই পায়নি। হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিহতদের বড় অংশ নারী ও শিশু।
বিশেষ করে, নেতজারিম করিডোরে অবস্থিত খাদ্য সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষারত অবস্থায় গুলিতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে অন্তত ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চার সপ্তাহ আগে মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থিত জিএইচএফ-এর বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে এসব ত্রাণ কেন্দ্রকে ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে এসব ঘটনায় এখনও ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বৃহস্পতিবার আবারও গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এই সহায়তা কার্যক্রমকে ইসরায়েলের জন্য ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর প্রতি সহানুভূতির কোনো স্থান নেই।
আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের হাতে সহায়তা যাওয়ার আশঙ্কায় ইসরায়েল গাজায় দুই দিনের জন্য সহায়তা সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এরইমধ্যে উত্তর গাজাগামী সহায়তা করিডোরগুলো বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য সরাসরি সহায়তা প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে তাদের পরিবার জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি সরকারের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থে জিম্মিদের বলি দেওয়া হচ্ছে।