টেলিকম ও প্রযুক্তি
মেট্রো রেল পাসের তথ্য জানাবে এমআরটি বাডি
![মেট্রো রেল পাসের তথ্য জানাবে এমআরটি বাডি গাজীপুরে](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2025/02/MRT-Rapid.webp)
মেট্রো রেল সেবা চালুর পর থেকেই যাত্রীরা দাবি জানাচ্ছে, র্যাপিড ও এমআরটি পাসের ব্যালান্স দেখা এবং রিচার্জ করার জন্য অ্যাপ বা ওয়েবসাইটভিত্তিক সেবার। বিষয়টি নিয়ে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। তবে শুধু ব্যালান্স দেখা এবং শেষ কয়েকটি যাত্রার তথ্য দেখার জন্য এর মধ্যেই একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন বাংলাদেশি কিছু স্বেচ্ছাসেবক অ্যাপ নির্মাতা। তাদের তৈরি অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘এমআরটি বাডি’।
সহজেই ‘এমআরটি’ বা র্যাপিড পাসের কার্ডটি স্ক্যান করে স্মার্টফোনেই দেখা যাবে তথ্য।
অ্যানড্রয়েড অথবা আইওএস—দুটি প্ল্যাটফরমেই অ্যাপটি পাওয়া যাবে। ব্যবহারের জন্য অবশ্যই ফোনে থাকতে হবে এনএফসি সুবিধা। বর্তমানে প্রায় সব আইফোন এবং মাঝারি বাজেটের অ্যানড্রয়েডেই প্রযুক্তিটি রয়েছে।
সরাসরি অ্যাপল অ্যাপ স্টোর অথবা গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। অ্যাপে প্রবেশ করলেই শুরুতে দেখা যাবে এনএফসি চালুর অনুরোধ। এনএফসি চালু করে এমআরটি অথবা র্যাপিড পাসের কার্ডটি ফোনের পেছনে থাকা এনএফসি সেন্সরে ছোঁয়ালেই বেশ কিছু তথ্য দেখা যাবে।
অ্যাপটিতে দেখা যাবে পাসে আর কত টাকা ব্যালান্স অবশিষ্ট রয়েছে।
সঙ্গে পাওয়া যাবে শেষ দশটি যাত্রার বিবরণ, কোন স্টেশন থেকে কোথায় যাত্রা করা হয়েছে এবং তার ভাড়া ছিল কত। যারা নিয়মিত অ্যাপটি ব্যবহার করবে তাদের জন্য রাখা হয়েছে যাত্রার ‘হিস্টোরি সেভ’ করার সুবিধাও। কেননা পাসের মধ্যে শেষ ১০টি যাত্রার বেশি তথ্য সেভ থাকে না। এ ছাড়াও যাত্রার আগেই সম্ভাব্য ভাড়া হিসাব করার অপশনও রয়েছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড বা ‘ডিএমটিসিএল’-এর সঙ্গে অ্যাপটির নির্মাতাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
অ্যাপের মাধ্যমে তাই ব্যালান্স রিচার্জ করা যাবে না। সরাসরি এমআরটি বা র্যাপিড পাস কার্ড স্ক্যান করার মাধ্যমেই অ্যাপটি কাজ করে, বাইরের কোনো সার্ভারের ওপর নির্ভরশীল নয়। অ্যাপটি তৈরিতে কাজ করেছেন ১০ জনেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী নির্মাতা, তবে প্রধান উদ্যেগটি নিয়েছেন অনিরুদ্ধ অধিকারী। তিনি জানান, শুধু যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনা করেই অ্যাপটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে ভবিষ্যতে অন্যরাও প্রজেক্টটি কাজে লাগাতে পারে সে জন্য পুরো কোডই রেখেছেন ওপেনসোর্স।
এমআরটি বাডি সম্পর্কে আরো জানতে বা ডাউনলোড লিংক পেতে mrtbuddz.com ভিজিট করলেই চলবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
![](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/02/Logo_OS_250_72.webp)
টেলিকম ও প্রযুক্তি
মনের মতো ইন্টারনেট সেবা পেতে চাইলে
![মনের মতো ইন্টারনেট সেবা পেতে চাইলে গাজীপুরে](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2025/02/Internet.webp)
স্পিডের একক নিয়ে জটিলতা
বেশির ভাগ ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের সংযোগের গতি ‘এমবিপিএস’ এককে লিখে থাকেন। সমস্যা হচ্ছে, তাঁদের লেখা ‘এমবিপিএস’-এর অর্থ প্রতি সেকেন্ডে কত মেগাবিট তথ্য স্থানান্তর হচ্ছে। অনেক ব্যবহারকারীই ‘এমবিপিএস’কে মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড ভেবে থাকেন। দুটি এককের মধ্যে সম্পর্ক, ৮ মেগাবিট সমান ১ মেগাবাইট। অর্থাৎ মেগাবাইটে গতি বের করতে চাইলে ইন্টারনেট সংযোগের গতিকে ৮ দিয়ে ভাগ দিতে হবে।
সংযোগের ধরন
রাজধানী ও মূল শহরগুলোর বেশির ভাগ ইন্টারনেট সেবাদানকারীই অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে সংযোগ দিয়ে থাকেন। তবে যেসব ইন্টারনেট সেবাদানকারী এখনো ল্যান ক্যাবল দিয়ে সংযোগ দিচ্ছেন, তাঁদের সেবা ব্যবহারের সময় লক্ষ রাখতে হবে মানসম্মত তার ব্যবহার হচ্ছে কি না। ল্যান ক্যাবলের ধরন রয়েছে বেশ কয়েকটি।
এর মধ্যে ন্যূনতম ধরা যেতে পারে CAT-5E। যদি সম্ভব হয়, তাইলে CAT-6 ব্যবহার করা উচিত। ল্যান ক্যাবল সময়ের সঙ্গে দূর্বল হয়ে যেতে পারে, তাই প্রতিবছরই সংযোগের তারটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনমাফিক পরিবর্তন করতে হবে। ল্যানের গতি দূরত্বের সঙ্গে কমতে থাকে, মূল সংযোগ বক্স যদি বাসা থেকে অনেক বেশি দূরে হয় সে ক্ষেত্রে স্পিডে তারতম্য থাকবেই।
অপটিক্যাল ফাইবারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তারটিতে কোনো বড়সড় বাঁক না থাকে, আর কোনো অবস্থাতেই গিট দেওয়া যাবে না। অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগের জন্য বাসায় ONU, ONT, XPON বা GPON নামের একটি ডিভাইস থাকবে, সেটি হতে হবে মানসম্মত। কমদামি ডিভাইসের কারণেও ইন্টারনেট সংযোগে সমস্যা হতে পারে।
সঠিক রাউটার কেনা
ওয়াই-ফাই রাউটার কেনাটা অনভিজ্ঞদের জন্য জটিল প্রক্রিয়া। রাউটার নির্মাতারা চটকদার সব বিজ্ঞাপনী শব্দ ও সংখ্যা ব্যবহার করে ডিভাইসটির প্রকৃত পারফরম্যান্স বুঝতেই দিতে চায় না। রাউটারের পারফরম্যান্স বুঝতে হলে কিছু টার্ম মাথায় রাখতে হবে।
ইন্টারনেটের সঙ্গে রাউটার সংযুক্ত হয় পেছনে থাকা ইথারনেট পোর্টের মাধ্যমে, WAN/LAN নামেও পরিচিত। সর্বোচ্চ কত গতিতে ফাইল আদান-প্রদান বা ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যাবে, তা সরাসরি ওয়্যান পোর্টের গতির ওপর নির্ভরশীল। বাজারে থাকা প্রচুর বাজেট রাউটারে ‘৩০০ মেগাবিট’ বা ‘১১৫০ মেগাবিট’ গতি লেখা থাকলেও খুঁটিয়ে দেখলে প্রথমেই চোখে পড়বে ইথারনেট পোর্টের গতি ১০/১০০ মেগাবিট। অর্থাৎ ওয়াই-ফাইয়ের সর্বোচ্চ গতি হয়তো ১১৫০ বা ১২০০ মেগাবিট হতে পারে, কিন্তু ইন্টারনেটের গতি ১০০ মেগাবিট বা ১১.৫ মেগাবাইটের বেশি হবে না। আজকাল প্রচুর ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান দেশের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক বা BDIX গতি দিচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ১০০০ মেগাবিট বা ১ গিগাবিট। তাই সম্ভব হলে অবশ্যই গিগাবিট ইথারনেট পোর্টসহ রাউটার কিনতে হবে।
এরপর আসছে ল্যান ক্যাবল। অপটিক্যাল ফাইবারের ONU ডিভাইস থেকে রাউটারের সংযোগ দেওয়ার ক্যাবল যেন অন্তত CAT-5E গিগাবিট গতির হয়, সেটা লক্ষ করতে হবে। যাঁরা রাউটারের সঙ্গে ডেস্কটপ ল্যানের মাধ্যমে সংযুক্ত করে থাকেন তাঁদের সেই ক্যাবলটিও গিগাবিট সমর্থিত কি না সেটা দেখতে হবে। বর্তমানে গিগাবিট সমর্থিত ক্যাবল আর কম গতির ক্যাবলের মূল্য সমান, তাই কম গতির ক্যাবল কেনার কোনো মানে নেই।
বাসার আকৃতি, রাউটার রাখার জায়গা এবং কী পরিমাণ ডিভাইস ব্যবহৃত হবে, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। চেষ্টা করতে হবে রাউটারে বাসার মধ্যভাগে রাখতে। আর ২০০০ স্কয়ার ফুট জায়গা কভার করতে পারে এমন রাউটার কিনতে হবে। যদি এক রুমের বাইরে ওয়াই-ফাইয়ের দরকার না হয়, যেমন মেস বা সাবলেট বাসায়, সে ক্ষেত্রে রেঞ্জ অতটা জরুরি নয়। সর্বোচ্চ কতটি ডিভাইস চলবে সেটা হিসাব করে রাউটারের বাজেট করা উচিত। সাধারণত বাজেট রাউটারগুলো ২০টি ডিভাইসের বেশি হলে ভালো স্পিড ধরে রাখতে পারে না। বেশ কিছু প্রযুক্তি যেমন MU-MIMO বা QoS থাকলে স্পিডের স্ট্যাবিলিটি বাড়বে।
গত পাঁচ বছরে বাজারে আসা বেশির ভাগ ডিভাইস ৫ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাই সমর্থন করে। ডুয়াল ব্যান্ড রাউটার কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ। সাধারণ ২.৪ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাইয়ের চেয়ে ৫ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাইয়ের রেঞ্জ কম, কিন্তু স্পিড অনেক বেশি। অবশেষে অবশ্যই রাউটারের ওয়াই-ফাই কোন প্রজন্মের সেটা দেখতে হবে। যদি সম্ভব হয় অন্তত ওয়াই-ফাই ৬ সমর্থিত রাউটার কেনা উচিত। বাজেট থাকলে ওয়াই-ফাই ৭ সমর্থিত রাউটারও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু ওয়াই-ফাই রাউটার বহু বছর একটানা ব্যবহৃত হয়ে থাকে, তাই চেষ্টা করা উচিত সামর্থ্যের মধ্যে সেরাটা কেনার।
যত দূর সম্ভব ক্যাবল ব্যবহার করুন
ওয়াই-ফাই প্রযুক্তিটি চমৎকার, কিন্তু আজও ইথারনেট তথা ল্যানের চেয়ে নির্ভরযোগ্য নয়। ডেস্কটপ পিসি সব সময়ই ল্যানের মাধ্যমে সংযুক্ত করা উচিত। একাধিক রুমে ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্যও ল্যান ক্যাবল ব্যবহার করা সবচেয়ে সেরা উপায়। ওয়াই-ফাইয়ের সিগন্যালের মান দূরত্বের সঙ্গে দ্রুত কমতে থাকে, বিশেষ করে রাউটার ও ব্যবহারকারীর ডিভাইসের মধ্যে একাধিক ওয়াল থাকলে তার ওপর নির্ভর করাই উচিত নয়।
মেশ রাউটার
বড় এলাকা বা একাধিক তলায় ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক প্রয়োজন হলে মেশ রাউটার ব্যবহার করা উচিত। দুটি বা তিনটি রাউটারের প্যাকেজ কিনে সহজেই নেটওয়ার্কের রেঞ্জ বাড়ানো সম্ভব। আজকাল বেশির ভাগ রাউটারই মেশ নেটওয়ার্ক সমর্থন করে, তাই মূল রাউটারটি যদি মেশ রাউটার হয় তাহলে নেটওয়ার্কের পরিধি বাড়াতে পরবর্তী সময়ে সাধারণ রাউটার কিনলেও চলবে।
নেটওয়ার্ক সেটআপে করণীয়
ওয়াই-ফাই চ্যানেলভিত্তিক নেটওয়ার্ক। মাত্র ১১-১৩টি চ্যানেলে সেটি কাজ করে। রাউটার সেটআপ করার সময় আশপাশের ওয়াই-ফাইগুলো কোন চ্যানেলে কাজ করছে সেটা স্ক্যান করে, যে চ্যানেলটি কিছুটা ফাঁকা রয়েছে সেটা সেট করা উচিত। ওয়াউফাই চ্যানেল স্ক্যান করার জন্য অ্যানড্রয়েড ও আইওএসে বেশ কিছু অ্যাপ রয়েছে। এ ছাড়াও ইন্টারনেট সেবাদানকারীর নিজস্ব DNS সার্ভারের ঠিকানা বের করে সেটা বসাতে হবে। এ ছাড়া ইন্টারনেটের গতি কমবেশি হতে পারে, বিশেষ করে ইউটিউব ও ফেসবুকের ক্যাশ সার্ভার গতি সেই ডিএনএস ছাড়া পাওয়া যাবে না।
ওয়েব ব্রাউজিংয়ের অভিজ্ঞতা অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের কারণে ব্যাহত হতে পারে। অবশ্যই সবার অ্যাড ব্লক করার বিবিধ উপায়গুলো ব্যবহার করা উচিত। ওয়াইফাই রাউটার ও ওএনইউ ডিভাইস যাতে অতিরিক্ত গরম না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে ব্যবহার করতে হবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড। পাসওয়ার্ড যাতে বেহাত না হয় সেটাও খেয়াল করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
গুজব ছড়ানোর হাতিয়ার আবেগ
![গুজব ছড়ানোর হাতিয়ার আবেগ গাজীপুরে](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2025/02/Rumor.webp)
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া সংবাদ ও গুজব খুব দ্রুত ভাইরাল হয়। ক্ষোভের অনুভূতি তৈরি করা সংবাদ শিরোনাম মানুষের মনে দাগ কাটে। চটকদার ভাষায় লেখা মিথ্যা সংবাদ সবাই সহজেই বিশ্বাস করে, এর পর নিজ প্রফাইল থেকে দ্রুত শেয়ার দেয়। ক্লিকবেইট শিরোনাম দেখে সংবাদের সত্যতা যাচাই না করে শেয়ার করায় অবাঞ্ছিত ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে।
যারা মানসিক অবসাদ বা অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভুগছেন, তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করা তুলনামূলক সহজ। তাই নিষ্পেষিত জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করেই মিথ্যা সংবাদের পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুষ্কৃতকারীরা বুস্ট করছে।
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের তুলনায় গুজব কেন দ্রুত ছড়ায়, সে বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ-ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ গবেষণা করেছেন। তাদের আবিষ্কার—গুজব ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে মানুষের রাগ, ক্ষোভ ও আক্রোশ।
শুধু তা-ই নয়, তাদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল পোস্টের মধ্যে মিথ্যা সংবাদের পরিমাণ বস্তুনিষ্ঠ খবরের চেয়ে অন্তত আট গুণ বেশি। যে খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মনে ক্ষোভ তৈরি করে, অথবা তাদের মতাদর্শের বিপরীতে যায়, সেসব পোস্ট কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়া দ্রুত শেয়ার করে অনেকে। বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারলেই মিথ্যা সংবাদ হয়ে যায় ভাইরাল।
২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়ে ফেসবুক ও এক্সে যেসব গুজব ও মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছিল, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে গবেষণাটিতে।
নির্বাচনের সময় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ফেসবুক ও এক্স থেকে চারটি করে পোস্ট নিয়ে ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল তা নিয়ে চালানো হয় গবেষণা। সেসব পোস্ট ফেসবুকে রাগান্বিত প্রতিক্রিয়া এবং এক্সে নৈতিক ক্ষোভে ভরা হ্যাশট্যাগের ঝড় তুলেছিল। ক্ষোভ বা বিক্ষুব্ধতাকে ধ্রুবক হিসেবে ধরে তা পরিমাপে ব্যবহৃত হয়েছে ‘ডিজিটাল আউটরেজ ক্লাসিফায়ার’ নামের একটি এআই টুল। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফরমের পোস্ট বিশ্লেষণ করে ক্ষোভ বা ক্রোধের অভিব্যক্তির পরিমাণ বের করা এবং তা শ্রেণীবদ্ধ করায় কাজ করেছে এটি। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এবং মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমের মাধ্যমে এই টুল কাজ করে।
ডিজিটাল আউটরেজ ক্লাসিফায়ার সরাসরি ফেসবুক ও এক্স থেকে তথ্য ইনপুট নিতে সক্ষম। তথ্যগুলো বিশ্লেষণের মাধমে গবেষকদলটি প্রমাণ করেছে, মানুষের নৈতিক আক্রোশ সৃষ্টিই হচ্ছে মিথ্যা সব পোস্ট ভাইরাল করার মূলমন্ত্র। গুজবের পোস্ট শেয়ার করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ করেন।
গুজব ও মিথ্যা তথ্য পুরো বিশ্বের নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি মানুষের সহজাত নৈতিকতা ও আক্রোশকে পুঁজি করে মিথ্যা সংবাদ ও গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লুটছে বিশেষ কিছু মহল। প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, দুঃখ বা খুশির উপলক্ষ তৈরি করা গুজবের চেয়ে ক্ষোভ কিংবা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি করা গুজব বেশি শেয়ার করা হয়েছে। রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতি আনুগত্য বা কোনও বিষয় শক্ত নৈতিক অবস্থান থাকলে খবরের নির্ভুলতা যাচাই না করেই পোস্ট শেয়ার করেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
যেভাবে হবেন পেশাদার কনটেন্ট ক্রিয়েটর
![যেভাবে হবেন পেশাদার কনটেন্ট ক্রিয়েটর গাজীপুরে](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2025/02/Content-Creator.webp)
প্রতিটি মানুষেরই কিছু সহজাত প্রতিভা থাকে। ভাইরাল হতে চাইলে আপনার সেই প্রতিভা তুলে ধরতে পারেন আকর্ষণীয় ও মানসম্মত ভিডিও কনটেন্টের মাধ্যমে। অন্তর্জালে স্বল্পদৈর্ঘ্যের কনটেন্ট আজ সবচেয়ে জনপ্রিয়, তাই দীর্ঘ স্ক্রিপ্ট লেখারও প্রয়োজন নেই। শুধু চাই ভালো মানের ক্যামেরার সামনে সাবলীল উপস্থাপনা। মানসম্মত ফুটেজ ধারণ এবং সেটা আকর্ষণীয় ভিডিওতে রূপ দেয়া খুব কঠিন কিছু নয়, প্রয়োজন শুধু সঠিক ডিভাইস ও সফটওয়্যার।
স্ট্যাবিলাইজেশন সমৃদ্ধ ক্যামেরা
বেশিরভাগ কনটেন্ট নির্মাতা ক্যারিয়ারের শুরুতে স্মার্টফোনেই ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিও কনটেন্ট তৈরির জন্য ইলেকট্রনিক ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন এবং অন্তত ফুল এইচডি রেজল্যুশনে ভিডিও করতে পারে এমন একটি স্মার্টফোনই যথেষ্ট। স্ট্যাবিলাইজেশন ফিচারটি ভিডিওতে কাঁপাকাঁপি রোধ করবে। সঙ্গে যদি থাকে ফোর-কে রেজল্যুশনে ভিডিও ধারণের অপশন আর অপটিক্যাল স্ট্যাবিলাইজেশন, তাহলে তো কথাই নেই। বাজারে স্ট্যাবিলাইজেশনসমৃদ্ধ স্মার্টফোন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে।
ট্রাইপড বা ফোনস্ট্যান্ড
এক হাতে ফোন ধরে ভিডিও করা খুবই কঠিন কাজ। বাজারে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ট্রাইপড কিংবা ফোনস্ট্যান্ড পাওয়া যায়।
স্মার্টফোনটি স্ট্যান্ডে বসিয়ে নিলে পাওয়া যাবে মসৃণ ফুটেজ। তাছাড়া ক্যামেরার সামনে আরো সাবলীল পারফরম্যান্সও করা যায়। চলমান বিষয়বস্তুর ভিডিও করতে চাইলে বাজেট আরো কিছুটা বাড়িয়ে স্মার্টফোন গিম্বল কেনা যেতে পারে।
লাইটিং
ছবি ও ভিডিও আকর্ষণীয় করতে চাইলে আলোর দিকে খেয়াল রাখা সবচেয়ে জরুরি। শুধু ঘরের বাতির ওপর ভরসা না করে রিং লাইট কিংবা সফট লাইট বক্স কেনা শ্রেয়। বাজারে এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে মানসম্মত লাইট পাওয়া যায়। বিশেষ করে যারা সেলফি ক্যামেরা ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করেন তাদের জন্য রিং লাইট অত্যন্ত জরুরি।
মাইক্রোফোন
ভিডিও তৈরির সময় ছবির পাশাপাশি শব্দও হতে হবে মানসম্মত। আশপাশের কোলাহল অথবা অবাঞ্ছিত শব্দ থাকলে দর্শকের মনোযোগ নষ্ট হয়। বাজারে ৮০০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাইক্রোফোন পাওয়া যায়। সম্ভব হলে নয়েজ রিডাকশন ফিচারসহ তারবিহীন মাইক্রোফোন কেনা উচিত। সে ক্ষেত্রে বাজেট হতে হবে অন্তত তিন হাজার টাকা।
ভিডিওর ফরম্যাট
অনেকেই স্মুথ ভিডিওর আশায় ৬০ এফপিএস গতিতে ভিডিও রেকর্ড করেন। কনটেন্ট তৈরির জন্য ভিডিওর রেজল্যুশন হতে হবে ১০৮০পি অথবা ফোর-কে, গতি হবে ৩০ এফপিএস। মনে রাখতে হবে, সিনেমা আজও ২৪-২৫ এফপিএস গতিতে শুট করা হয়। শুধু এফপিএস বেশি হওয়ার কারণে অনেক ভিডিও মানসম্মত হয় না।
ভিডিও সম্পাদনা
ফুটেজ ধারণ করার পর অডিও ও ট্রানজিশন যোগ করে নিতে হয়। এর জন্য আছে হাজারো ভিডিও সম্পাদনার সফটওয়্যার। পিসি বা স্মার্টফোন—দুটি ডিভাইসেই ভিডিও সম্পাদনা সম্ভব। অনেকে এখন ট্যাবেও ভিডিও সম্পাদনা করছেন। এ কাজে আইপ্যাড সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে স্যামসাং-এর ট্যাব অ্যান্ড্রয়েডের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।
অ্যাডবি প্রিমিয়ার প্রো
ভিডিও সম্পাদনার সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যার অ্যাডবি প্রিমিয়ার প্রো। এর মাধ্যমে সহজেই মনমতো ইন্টারফেস বা টাইমলাইন সাজিয়ে নেওয়া যায়। ফুটেজ কাটাছেঁড়ার পাশাপাশি ইফেক্ট ও ট্রানজিশনের মাধ্যমে ভিডিও আকর্ষণীয় করা যায় সহজেই। প্রিমিয়ার প্রোর সঙ্গে আফটার ইফেক্টস ব্যবহার করে চমৎকার ভিজ্যুয়াল ইফেক্টসের কাজও সম্ভব।
দা ভিঞ্চি রিসলভ
প্রিমিয়ার প্রোর বদলে অনেক পেশাদার ভিডিও নির্মাতা বেছে নিচ্ছেন দা ভিঞ্চি রিসলভ। তার প্রধান কারণ এতে ভিডিওর প্রতি ফ্রেম ধরে ধরে আলাদা কালার গ্রেডিং করা যায়। যারা বৈধভাবে বিনা মূল্যে ভিডিও সম্পাদনার সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান তারা এটি ব্যবহার করতে পারেন। দা ভিঞ্চি রিসলভ ব্যবহার করে প্রিমিয়ার প্রোর বাকি কাজও সহজেই করা যায়।
ক্যাপকাট
স্মার্টফোনে ভিডিও সম্পাদনার অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ ক্যাপকাট। এর মাধ্যমে ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড মুছে ফেলা খুব সহজ। রয়ালটি ফ্রি মিউজিকও সরাসরি অ্যাপ থেকেই ভিডিওতে যুক্ত করা যায়। এ ছাড়া অটোক্যাপশনসহ প্রয়োজনীয় অনেক ফিচারও আছে এতে। তবে ফ্রি নয়, সব ফিচার পেতে প্রিমিয়াম সংস্করণ ব্যবহার করতে হবে।
ইনশট
যারা একেবারেই ভিডিও সম্পাদনায় নতুন তাদের জন্যই ইনশট। স্মার্টফোনে ভিডিও সম্পাদনার সব অ্যাপের মধ্যে ইনশটের ইন্টারফেস সবচেয়ে সহজবোধ্য। এর মাধ্যমে প্রি-কাস্টমাইজড কালার ইফেক্ট ব্যবহার করে দ্রুত আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করা যায়। ভিডিও কাটা বা জোড়া দেওয়ার ফিচার তো আছেই। গানও চট করে যোগ করা যাবে। তবে অ্যাডভান্সড ফিচার খুব একটা নেই।
কিনেমাস্টার
স্মার্টফোনে ভিডিও সম্পাদনার বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যার কিনেমাস্টার। ভিডিও সম্পাদনার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবই আছে এতে। বিশেষ করে ক্রোমা কি, ম্যাজিক রিমুভার, সুপার রেজল্যুশন, প্লেব্যাক স্পিড বাড়ানো-কমানো, বা স্লো মোশনের মতো বিভিন্ন বাড়তি ফিচার আছে।
আইমুভি
যাদের আইফোন আছে তাদের জন্য সেরা সফটওয়্যার এটি। অ্যাপলের নিজস্ব অ্যাপটি পাওয়া যাবে বিনা মূল্যে। অটো-এডিট করার টেমপ্লেটের জন্য বিখ্যাত এটি। প্রো-রেস বা অ্যাপল-র ফুটেজ কালার গ্রেডিং করার জন্য বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত আইমুভি।
রয়ালটি ফ্রি সাউন্ড
ভিডিও সম্পাদনায় বড় ভুল কপিরাইটযুক্ত গান ব্যবহার। এতে কপিরাইট ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফরম থেকে ভিডিওটি সরিয়ে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। কপিরাইটের ঝামেলা এড়াতে ইউটিউব অডিও লাইব্রেরি থেকে আবহসংগীত ব্যাবহার করতে হবে।
কোন ভিডিও কোথায় প্রকাশ করবেন
ভিডিও কনটেন্ট যদি এক থেকে তিন মিনিটের কম সময়ের হয়, তাহলে টিকটক, ফেসবুক রিলস ও ইউটিউব শর্টস আকারে প্রকাশ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ভিডিওটি হবে ৯ঃ১৬ অনুপাতের, যাতে ফোন লম্বালম্বি রেখেই দেখা যায়। যারা লম্বা দৈর্ঘ্যের ভিডিও নিয়ে কাজ করতে চান তাদের অবশ্যই ১৬ঃ৯ অনুপাতের ভিডিও তৈরি করতে হবে, ইউটিউব ও ফেসবুক দুটিই বর্তমানে লম্বা ভিডিও প্রকাশের জন্য আদর্শ। একই ভিডিও একাধিক প্ল্যাটফরমে প্রকাশ করা যাবে, এতে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণার সাত-সতের
![সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণার সাত-সতের গাজীপুরে](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2025/02/Social-media.webp)
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে প্রায়ই দেখা যায় বিভিন্ন পদে নিয়োগের পোস্ট। বেশির ভাগ পোস্ট হয়ে থাকে স্পন্সরকৃত, অর্থাৎ পোস্টদাতা ছাত্র-ছাত্রী ও বেকারদের প্রফাইলে পৌঁছানোর আশায় কিছু খরচাপাতিও করেছেন। অভিজ্ঞতা ছাড়াই অবিশ্বাস্য বেতনের আশ্বাস থাকে এসব পোস্টে। বিজ্ঞাপনের লিংকে থাকতে পারে প্রতারকদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা, ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ফিশিং পেজ, অথবা সরাসরি যোগাযোগের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিগ্রামের ঠিকানা। চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রথমে অল্প কিছু টাকা জয়েনিং ফি হিসেবে বিনিয়োগ করতে বলে, সেটাই তাদের লাভ।
ফ্রিল্যান্স কাজ শেখার কোর্স
‘ঘরে বসেই লাখ টাকা আয় করুন’ শিরোনামের পোস্টগুলোকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অপভ্রংশ বলা যায়। ফ্রিল্যান্সাররা আসলে কিভাবে কাজ করে, সে বিষয়ে অজ্ঞতার সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকচক্র। ‘সহজ কোর্স করে প্রতিদিন আয় করুন হাজার টাকা’, এমনটাই বিজ্ঞাপনে লেখা থাকে। কোর্সের এবং কাজ করার জন্য জয়েনিং ফি হিসেবে প্রতারকরা টাকা পাঠাতে বলে। টাকা পাওয়ার পর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
বেচাকেনার প্রতারণা
‘লাখ টাকার স্মার্টফোন মাত্র কয়েক হাজারে’, ‘বর্ডার ক্রস বাইক অর্ধেক মূল্যে’—এমন চটকদার বিজ্ঞাপন ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে দেখা যায়। স্বনামধন্য ই-কমার্স সেবার লোগো ও নাম নকল করেও ভুয়া বিজ্ঞাপনের নজির আছে। বিজ্ঞাপনের ফোন বা বাইকটি কিনতে চাইলে প্রতারকচক্র বলে অগ্রিম অর্থ পাঠাতে। সরাসরি দেখা করে লেনদেন করার জন্য ডেকে নিয়ে গিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে হরহামেশা।
অনলাইন ক্যাসিনো বা বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন
বাজি ধরে আয়, কিংবা স্পিন করলেই ডলার জেতার সুযোগ—ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে অহরহ এমন বিজ্ঞাপন দেখা যায়। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফরমে ক্রিপ্টোকারেন্সি বা শেয়ার লেনদেন করে আয় করুন লক্ষাধিক টাকা, এমনটাও হয়। কিছু বিজ্ঞাপনে দেখা যাবে কোনো তরুণ ইনফ্লুয়েন্সার বলছে, ‘আমি এই সাইটে বিনিয়োগ করে অল্প সময়ে গাড়ি কিনেছি’ অথবা ‘এই সাইটে বিনিয়োগ করে হয়েছি কোটিপতি’। তার সঙ্গে থাকবে সাইটটিতে বিনিয়োগ করার লিংক। দেশের কোনো সুপারস্টার বা জনপ্রতিনিধির ডিপফেকও একই কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। সরল বিশ্বাসে ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই হারিয়েছেন সর্বস্ব।
ভিডিও কলে ব্ল্যাকমেইল
হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ের মতো প্রতারণার কৌশল অপেক্ষাকৃত নতুন। শুরুতে প্রতারকরা ফেসবুকে আবেদনময়ী, সুন্দরী নারীর ছবিসহ ভুয়া আইডি থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর প্রতারকরা চাইবে সেই ব্যাক্তির হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিগ্রাম নম্বর। প্রতারকরা নম্বর পেয়ে ভিডিও কল করবে, যা রিসিভ করলে অন্য প্রান্ত থেকে দেখানো হবে অসামাজিক কার্যকলাপের দৃশ্য। কলটি রেকর্ড করে এবং স্ক্রিনশট নিয়ে সেটি ভুক্তভোগীর পরিচিতজনদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রতারকরা টাকা দাবি করে। একবার টাকা পাঠানো শুরু করলে ভবিষ্যতেও তারা চাইতেই থাকবে।
করণীয়
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, হুট করে বিনা কষ্টে টাকা আয় করা যায় না। তার জন্য প্রয়োজন দক্ষতা ও অধ্যবসায়। অনলাইন কেনাকাটায় কখনো অগ্রিম কোনো অর্থ প্রদান করবেন না। অর্থ পরিশোধের সময় সেটি যাতে ‘পেমেন্ট’ হিসেবে পরিশোধিত হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে কখনোই টাকা পাঠাবেন না। সরাসরি লেনদেন করার সময় নিরাপদ কোনো জনসমাগমের স্থান অবশ্যই বেছে নিতে হবে। ফেসবুকে বন্ধুত্বের আহবান এলে যাছাই-বাছাই করে সাড়া দিন। নিজের একান্ত ব্যক্তিগত কোনো তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করবেন না। কোনো লিংকে ক্লিক করার আগে নিশ্চিত হতে হবে সেটি নিরাপদ কি না। কখনোই অপরিচিত কারো ভিডিও কল গ্রহণ করবেন না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
এক পোর্টে সব চার্জিং
![এক পোর্টে সব চার্জিং গাজীপুরে](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2025/02/mobile-charging-port.webp)
প্রায় দুই বছর আগে সব ইলেকট্রনিক ডিভাইসে এক চার্জার ব্যবহারের বিষয়ে একটি অস্থায়ী চুক্তি করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশ। এবার ইইউ’র অধীনে থাকা সব দেশ ‘এক চার্জার, এক ইউনিয়ন’ শীর্ষক চুক্তিপত্রে সই করেছে। এখন থেকে মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, ডিজিটাল ক্যামেরা, হেডফোন, বহনযোগ্য ভিডিও গেম কনসোল, পোর্টেবল স্পিকার, কি-বোর্ড ও মাউসের চার্জ দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউএসবি সি চার্জার ব্যবহার নির্মাতাদের জন্য বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি সেসব চার্জার ইউএসবি পিডি চার্জিং প্রটোকল সমর্থিত হতে হবে।
তবে বর্তমানে ল্যাপটপ, ড্রোন ও ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম থাকছে এই নিয়মের বাইরে।
তুলনামূলক দ্রুত তথ্য ও বিদ্যুৎ বহন করতে সক্ষম ইউএসবি সি পোর্ট। নষ্ট হওয়ার প্রবণতাও অপেক্ষামূলক কম। পোর্টটি সর্বজনীন ব্যবহারের জন্য বেছে নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যাতে সব ডিভাইসের জন্য এক চার্জার ব্যবহার করা যায়।
সে জন্য ইউএসবি পাওয়ার ডেলিভারি সিস্টেম সমর্থিত হতে হবে সব ডিভাইস ও চার্জার। এতে ব্যবহারকারীদের একাধিক চার্জার ও কেবল বহনের ঝামেলা কমবে এবং ই-বর্জ্য তৈরি হবে না।
ই-বর্জ্য কমানোর পাশাপাশি আলাদা চার্জার কেনার পেছনে ব্যবহারকারীদের খরচ বাঁচানোও ছিল সিদ্ধান্তটির পেছনে বড় কারণ। প্রযুক্তি নির্মাতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ভোক্তাদের যাতে তারা ডিভাইসের চার্জিং সম্পর্কে বিস্তারিত লিখিত তথ্য প্রদান করে।
নতুন চার্জার উৎপাদন কমিয়ে বার্ষিক ৯৮০ টন ইলেকট্রনিক বর্জ্যের পরিমাণ কমানো যাবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। পাশাপাশি প্রতিবছর সাশ্রয় হবে ২৫০ মিলিয়ন ইউরো। অপ্রয়োজনীয় চার্জার উৎপাদন বন্ধ হলে কাঁচামাল, যেমন—প্লাস্টিক, ধাতু ইত্যাদির ব্যবহারও কমে আসবে। এতে কমবে পরিবেশের ওপর চাপ। চার্জার রিসাইক্লিংয়ের ওপরও বাড়তি নজর দেওয়া হবে বলে বিবৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউএসবি সি নীতিমালার বড় প্রভাব পড়েছে স্মার্টফোন নির্মাতাদের ওপর। বেশির ভাগ অ্যানড্রয়েড স্মার্টফোন এখনই ইউএসবি সি ব্যবহার করলেও কিছু স্মার্টফোনে এখনও রয়ে গেছে মাইক্রোইউএসবি চার্জিং পোর্ট। ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বাজারেও বেশির ভাগ ডিভাইস নয় ইউএসবি সি সংবলিত।
অনেক ডিভাইস ইউএসবি সি পোর্ট সমর্থিত হলেও ইউএসবি-পিডি চার্জিং সমর্থিত নয়। প্রচুর স্মার্টফোন শুধু নির্মাতার নিজস্ব চার্জিং সিস্টেম সমর্থন করে। ইউরোপে স্মার্টফোন রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে আছে চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর। তারা ইউরোপের নতুন নীতিমালা কতটুকু মেনে চলবে, তা সময়েই বলবে। আগামী দিনে নীতিমালার প্রভাব পড়বে ল্যাপটপেও। বর্তমানে বেশির ভাগ ল্যাপটপেই নেই ইউএসবি সি পোর্ট চার্জিং। ল্যাপটপের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা কার্যকর হবে ২০২৬ সালের ২৮ এপ্রিলের পর। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশে এই নীতিমালা কার্যকর করা এখন সদস্য দেশগুলোর দায়িত্ব।
ইউএসবি সি নীতিমালা প্রণয়নে বিপাকে পড়েছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। যেহেতু তাদের বেশির ভাগ আইফোন ইউএসবি সি সমর্থিত নয়। সম্প্রতি অ্যাপল তাদের আইফোন ১৫ সিরিজে লাইটনিং পোর্ট ছেড়ে ইউএসবি সি পোর্ট ব্যবহার শুরু করেছে। কিন্তু আইফোন ১৪ সিরিজ নতুন নিয়ম অনুযায়ী ইউরোপের বাজার থেকে সরিয়ে নিতে হবে। এর মধ্যেই সুইজারল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বাজার থেকে আইফোন ১৪ মডেলটি সরিয়ে নিয়েছে তারা। অ্যাপল শুরু থেকেই নীতির বিরোধিতা করে আসছিল। তাদের মতে, এই নিয়ম নতুন উদ্ভাবনকে নিরুৎসাহিত করবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় স্মার্টফোনের বিশাল বাজার আছে ভারতে। সে দেশের নীতিনির্ধারকরাও ২০২৬ সালের মধ্যে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপে ইউএসবি সি পোর্টকে সর্বজনীন হিসেবে নীতিমালা প্রয়োগ করতে যাচ্ছেন। ইউএসবি সি পোর্ট বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তটি ভারতের নীতিনির্ধারকদের সামনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্তের পরপরই উপস্থাপন করা হয়েছে। চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত স্মার্টফোন নির্মাতারা সময় পাবে প্রস্তুতি নেওয়ার। এরপর ২০২৬ সাল থেকে ইউএসবি সি পোর্ট বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার অথবা তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত আসেনি।