জাতীয়
পরিবর্তন আসছে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায়

২০২২ সালের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া তৈরি করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
খসড়া অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ যাচ্ছে। যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি তাদের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে রাখা হবে। এজন্য ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীর’ সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে সংশোধিত আইনে নির্ধারণ করা হচ্ছে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার’ সংজ্ঞা।
সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে এর আগে যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেয়েছেন তাদের সনদ বাতিল হয়ে যাবে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার ওপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মতামত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বর্তমান আইনে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা আছে, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়া যাঁহারা দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করিয়াছেন এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া দখলদার ও হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম ও মুসলিম লীগ এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, মুজাহিদ বাহিনী ও পিচ কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করিয়াছেন এইরূপ সকল বেসামরিক নাগরিক এবং সশস্ত্র বাহিনী, মুজিব বাহিনী, মুক্তি বাহিনী ও অন্যান্য স্বীকৃত বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ইপিআর নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার বাহিনীর সদস্য এবং নিম্নবর্ণিত বাংলাদেশের নাগরিকগণ, উক্ত সময়ে যাঁহাদের বয়স সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বয়সসীমার মধ্যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গণ্য হইবেন’।
বর্তমান সংজ্ঞায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি এমন আট ধরনের ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ভারতে গিয়ে যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, যারা বিদেশে থেকে যুদ্ধের ওপর জনমত গঠন করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী-দূত, মুজিবনগর সরকারে সম্পৃক্ত এমএনএ এবং যারা পরবর্তীতে গণপরিষেদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন, বীরাঙ্গনা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক; স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সব খেলোয়াড়, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া মেডিকেল দলের সব সদস্যদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।
সংশোধিত অধ্যাদেশের খসড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাহাদের এ দেশীয় সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন এমন সকল বেসামরিক নাগরিক ওই সময়ে যাদের বয়স সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে ছিল এবং সশস্ত্র বাহিনী, মুক্তি বাহিনী, বিএলএফ ও অন্যান্য স্বীকৃত বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্ট (ইপিআর), নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স ও আনসার সদস্য তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গণ্য হবেন। বেসামরিক নাগরিক বলতে যে সকল ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন; হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাহাদের সহযোগী কর্তৃক নির্যাতিতা সকল নারী (বীরাঙ্গনা); মুক্তিযুদ্ধকালে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া ফিল্ড হাসপাতালের সকল ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা-সহকারীকে বুঝাবে।
যারা বিদেশে থেকে যুদ্ধের পরে জনমত গঠন করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী-দূত; মুজিবনগর সরকারে সম্পৃক্ত এমএনএ এবং যারা পরবর্তীতে গণপরিষেদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলা বেতর কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সব খেলোয়াড়দের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে রাখা হয়েছে খসড়া অধ্যাদেশে।
মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞা থেকে শুধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের নতুন সংজ্ঞা বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খায় হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ’।
বর্তমান আইনে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ অর্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়া দখলদার ও হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম ও মুসলিম লীগ এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, মুজাহিদ বাহিনী ও পিচ কমিটির বিরুদ্ধে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধ।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা চূড়ান্ত হলে কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।
খসড়া অধ্যাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে বা প্রবাসে অবস্থান করে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দীপিত করা এবং মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করার প্রয়াসে সংগঠকের ভূমিকা পালন, বিশ্বজনমত গঠন, কূটনৈতিক সমর্থন অর্জন এবং মনস্তাত্বিক শক্তি অর্জনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের যেসব নাগরিক প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করেছেন।
সংশোধিত আইনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার’ সংজ্ঞা যুক্ত করা হচ্ছে। এতে বলা হয় ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ অর্থ ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গণপরিষদের পক্ষে মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত বাংলাদেশের জনগণের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতকল্পে যে চেতনা।

জাতীয়
ভ্যাট বাড়ালে একসময় শুধু প্যাকেট থাকবে, বিস্কুট-রুটি নয়

চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রস্তাবিত বাজেটে বিস্কুট ও পাউরুটির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে এই ভ্যাট প্রত্যাহার করা না হলে বিস্কুট-পাউরুটির দাম বাড়ানোসহ প্যাকেট আরও ছোট করার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বিস্কুট-পাউরুটির কাঁচামাল গম, তেল ও চিনির দাম বাড়লেও আমরা পণ্যের দাম বাড়াইনি। কিন্তু সরকার ভ্যাট বাড়িয়ে আমাদের ওপর বোঝা চাপিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত বিস্কুট-পাউরুটি দিয়ে নাশতা করে। এগুলোকে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে ঘোষণা করে ভ্যাট শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনে কোম্পানির ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি করা হোক, কিন্তু বিস্কুট-পাউরুটির ওপর নয়।
তিনি বলেন, আমাদের লজ্জা লাগে আরও কত প্যাকেট ছোট করবো। ভ্যাটের কারণে একদিন দেখা যাবে, শুধু প্যাকেট থাকবে কিন্তু বিস্কুট ও পাউরুটি থাকবে না।
শফিকুর রহমান বলেন, আগে যাকে আমরা ফ্যাসিস্ট বলতাম, তারাও পাউরুটি-বিস্কুটের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে গেছে। তাহলে এখন কেন ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট করা হলো? আমার প্রশ্ন তাহলে ফ্যাসিস্ট কারা? ভ্যাট প্রত্যাহার না হলে দাম বাড়বে তখন আমাদের দায়ী করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবাদ-সমালোচনা উপেক্ষা করে শ্রমজীবী, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের খাবার রুটি-বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাট চাপিয়ে সরকার প্রমাণ করছে, তারা পূর্ববর্তী সরকারের চেয়েও বৈষম্যমূলক ও পশ্চাৎপদ করনীতির দিকে যাচ্ছে, যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার সরাসরি পরিপন্থি।
শফিকুর রহমান বলেন, সরকার সুপারশপগুলো থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে, অথচ গরিবের নিত্যখাদ্যে ভ্যাট বাড়িয়েছে। ধনীদের জন্য ছাড়, আর গরিবের খাবারে কর কেন? এটা কেবল বৈষম্যমূলক নয়, বরং অনৈতিক এবং জাতিকে অপমান করার শামিল।
অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন মামুন বলেন, গবেষণা প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, শ্রমজীবী মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিদিন রুটি ও বিস্কুট খেয়ে তাদের ক্ষুধা নিবারণ করে। আবার বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, খাদ্যনিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশ ‘রেড জোনে’। এ পরিস্থিতির মধ্যে গরিবকে শোষণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের অনৈতিক ও পশ্চাৎপদ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
তিনি বলেন, আমরা অনেকবার বলেছি, যদি রাজস্ব সংগ্রহ করতে চান, তাহলে আমাদের শিল্পের চেয়ারম্যান ও ধনী ব্যবসায়ীদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করুন। কিন্তু ভ্যাট কেন? সরকার আসলে বিস্কুট-রুটি কোম্পানিকে ব্যবহার করছে গরিব শোষণের হাতিয়ার হিসেবে। আমরা এই ভূমিকায় যেতে চাই না। এ ভ্যাট পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে।
শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা মনে করি চাল-ডালের মতোই বিস্কুট রুটি নিত্যপ্রয়োজনীয়। তাহলে রুটি বিস্কুটে ভ্যাট কেন থাকবে?
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড মেনুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রজিৎ সরকার, কিষওয়ান ফুড ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আবদুর রহমান প্রমুখ।
জাতীয়
ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে সাড়ে ৬ লাখ আনসার

নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সারাদেশের ভোটকেন্দ্রে সাড়ে ৬ লাখ আনসার মোতায়েন থাকবে। এর জন্য নতুন করে এক লাখ ৮০ হাজার আনসার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে গাজীপুরের আনসার একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচনে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকবে। নাশকতার চেষ্টা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আনসার বাহিনীকে শক্তিশালী করতে সব সদস্যের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণে যারা টিকে থাকবে তারাই আনসার বাহিনীতে সেবা দেওয়ার উপযোগী বলে বিবেচিত হবে।
এসময় আনসারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপ-মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলাম, একাডেমি কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ নুরুল আবছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
নদী দূষণের সঙ্গে জড়িত কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা: রিজওয়ানা হাসান

নদী দূষণের সঙ্গে জড়িত শিল্প-কারখানার (ডায়িং ফ্যাক্টরি) বিরুদ্ধে শিগগির কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘রাজধানী ঢাকার টেকসই উন্নয়নে বিকেন্দ্রীকরণ ও পরিবেশ সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নদীগুলোকে শিল্প বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। ব্যবসায়িক লাভের জন্য বর্জ্য শোধন না করে সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। নদী সৃষ্টি করা সম্ভব নয়, তাই এর ধ্বংসও বরদাস্ত করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে সাভারে নেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল আসেনি। পরিবেশ রক্ষায় শুধু সরকার নয়, সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। নদী দূষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।
নদী দূষণে জড়িত ডায়িং ও ট্যানারি শিল্পের বিরুদ্ধে শিগগির অভিযান শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীকে দূষণমুক্ত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর অংশ হিসেবেই এসব শিল্পকারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাথর ও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের চলমান অভিযানে অনেকে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এখানে পাথর হলো খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের আর বালুর বিষয়টা ভূমি মন্ত্রনালয়ের। অথচ পরিবেশ বিষয়ক দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের মানুষও এর প্রতি সমর্থন দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যে উন্নয়ন নদী, কৃষি এবং মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, সেটি উন্নয়ন নয়। উন্নয়নের নামে এমন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না। পরিবেশ দূষণে শুধু সরকারের দায় নয়, শিল্প উদ্যোক্তাদেরও সমান দায়িত্ব রয়েছে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলামসহ বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
জাতীয়
কোনো ষড়যন্ত্র নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণা কিংবা কোনো ষড়যন্ত্রই নির্বাচনকে বানচাল করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের বিএডিসি হিমাগার পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নির্বাচনের আগে সব অস্ত্রই উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
সীমান্ত নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্র প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।
বাজার পরিস্থিতি নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বৃষ্টির কারণেই বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। বৃষ্টি কমলে সবজির দামও কমে আসবে। তবে আলুর দাম বাজারে অতিরিক্ত কমে যাওয়ার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জাতীয়
ঢাকায় পৌঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার

তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। শনিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। এর মধ্য দিয়ে ১৩ বছর পর পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকায় সরকারি সফরে এলেন।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে গত দুই দশকের শীতল সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালোচ গত এপ্রিলেই ঢাকা সফর করেন। সেই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় এবার ইসহাক দার এসেছেন।
তিনি দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক সম্পর্ককে পুনরায় সক্রিয় করার পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক যোগাযোগের বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই সফর পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, কারণ প্রায় ১৩ বছর পর কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ২৩-২৪ আগস্ট বাংলাদেশে একটি সরকারি সফর করবেন। ঢাকায় উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন।
এই বৈঠকগুলোতে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের সম্পূর্ণ পরিসর এবং বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ঢাকা সফরকালে ইসহাক দার বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তারই অংশ হিসেবে দার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের বাসায় দেখা করতে যাবেন। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাতের কথা রয়েছে দারের।