জাতীয়
শনিবার থেকে ৯ মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ

আগামী নয় মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে কক্সবাজারের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত। সরকারের বেঁধে দেয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলে আগামীকাল (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে কোনো পর্যটক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে দ্বীপে যেতে পারবেন না। দ্বীপের বাসিন্দা ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আরও এক মাস সময় বাড়ানোর আবেদন জানালেও কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১২ হাজার বাসিন্দার প্রধান আয়ের উৎস পর্যটন খাত। এক সময় সাগরে মাছ শিকার করেই চলতেন তারা। গত এক দশক ধরে পেশা পরিবর্তন করা মানুষগুলো এখন পড়েছেন বিপদে। এবার সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, নভেম্বর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে তা শুরু হয় এক মাস পর। এতে পর্যটন মৌসুমের দুই মাসের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ নিয়ে সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসেন ইসলাম বাহাদুর বলছেন, আরও এক মাস জাহাজ চলাচলের সুযোগ চাওয়া হয়েছিল সরকারে কাছে। এখন দ্বীপের মানুষের পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়বেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে তাঁরা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ।

জাতীয়
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ হাজি

পবিত্র হজপালন শেষে এ পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ জন হাজি। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ৬ জন আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩১ হাজার ৫৯৫ জন রয়েছেন।
শুক্রবার (২০ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৯৩টি ফিরতি হজ ফ্লাইটে দেশে ফেরা হাজিদের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিবহন করেছে ১৪ হাজার ১৮২ জন হাজি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১৫ হাজার ৪৫৮ জন ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের ৬ হাজার ৯৬১ জন হাজি দেশে ফিরেছেন।
এদিকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত হজে গিয়ে ৩২ বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও নারী ছয়জন। এরমধ্যে মক্কায় মারা গেছেন ২১ জন, মদিনায় ১০ জন ও আরাফায় ১ জন।
হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর শেষ ফ্লাইট ৩১ মে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় গত ১০ জুন। এদিন সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ‘এসভি-৩৮০৩’ ৩৭৭ হাজিকে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ১০ জুলাই হজযাত্রীদের শেষ ফিরতি ফ্লাইট।
জাতীয়
চট্টগ্রামে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগরের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে রাজস্ব আদায়ে মনোযোগী হতে হবে। তবে কর আদায়ের নামে কোনো নাগরিক যেন হয়রানির শিকার না হন, তা দেখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে চসিক পাবলিক লাইব্রেরির হলরুমে রাজস্ব বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোসহ নগরের সব উন্নয়ন কাজ এই রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। তাই রাজস্ব সংগ্রহে আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব ও সদাচরণ অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, চসিক হোল্ডিং ট্যাক্স ব্যবস্থাকে অটোমেশন করতে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। ভবিষ্যতে অনলাইনে কর পরিশোধের সুযোগ চালু হলে নাগরিক ভোগান্তি কমবে এবং স্বচ্ছতা বাড়বে।
রাজস্ব আদায়ে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে মেয়র বলেন, কারও প্রভাব দেখিয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা বরদাশত করা হবে না। আইন অনুযায়ী কাজ করুন, আমি আপনাদের পাশে আছি।
২৩ জুন চসিকের নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, হাতে আছে মাত্র ১০–১১ দিন। এই সময়ে সংগঠিতভাবে রাজস্ব আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে আমি নিজে বড় করদাতাদের সঙ্গে কথা বলব।
মেয়র বলেন, রাজস্ব আদায় কেবল একটি আর্থিক কাজ নয়, এটি আস্থার জায়গা। মানুষ বিশ্বাস করে কর দেয়, যেন তাদের সন্তান ভালো স্কুলে পড়তে পারে বা পাড়ার রাস্তাটি মেরামত হয়। সেই বিশ্বাস রক্ষা করতে হবে।
সভায় চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, কর কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, কর আদায়কারী ও অনুমতিপত্র পরিদর্শকরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকি হতে পারে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে দ্রুতই এই সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকির কারণ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর দারিদ্র্য, উন্নয়নঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন আর শুধু মানবিক বিষয় নয়; এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং ক্রমবর্ধমানভাবে একটি নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
তারুণ্যের গৌরবের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তরুণরা বারবার পরিবর্তনের অগ্রভাগে থেকেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং সম্প্রতি গঠিত পিস বিল্ডিং কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগগুলো বাস্তবভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও সুইডেন, উরুগুয়ে ও পূর্ব তিমুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
জাতীয়
হজে গিয়ে ৩৬ বাংলাদেশির মৃত্যু

চলতি বছর পবিত্র হজপালনে সৌদি আরবে গিয়ে ৩৬ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল ১৯ জুন মৃত্যুবরণ করেছেন গাজীপুরের গাছার মো. আফজাল হোসাইন (৬৮)। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃতদের মধ্যে ২৭ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। এর মধ্যে ২৩ জন মারা গেছেন মক্কায়, ১১ জন মদিনায়, একজন আরাফায় এবং একজন জেদ্দায়।
শুক্রবার (২০ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের মৃত্যু সংবাদে এসব তথ্য জানা গেছে।
এতে জানানো হয়, সৌদি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা প্রাপ্ত মোট হজযাত্রীর সংখ্যা ২৭০ জন এবং সৌদি সরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তিকৃত হজযাত্রীর সংখ্যা ২৫ জন।
এ বছর হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে ৫ জুন। মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন বাংলাদেশি হজ পালন করেছেন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাঁচ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন সৌদি আরবে যান।
জাতীয়
বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ

আজ ২০ জুন, বিশ্ব শরণার্থী দিবস। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর উদ্যোগে ২০০১ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য—‘শরণার্থীদের সঙ্গে সংহতি’— অর্থাৎ শুধু কথায় নয়, বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২২ দশমিক ১ মিলিয়ন, যা রেকর্ড পরিমাণ। এর মধ্যে ৪২ দশমিক ৭ মিলিয়ন মানুষ আন্তর্জাতিক শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃত, বাকিরা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ও আশ্রয়প্রার্থী। সুদান, মিয়ানমার, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলের সংকট পরিস্থিতি এ সংখ্যা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ইউএনএইচসিআর-এর হাই কমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি এক বার্তায় বলেছেন, শরণার্থীদের সম্মান জানানোর অর্থ শুধু তাদের সম্পর্কে কথা বলা নয়, বরং তাদের কথা শোনা, অধিকার রক্ষা করা এবং তাদের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি করা।
এছাড়া বাংলাদেশে বর্তমানে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি। কক্সবাজারের কুতুপালং এবং নয়াপাড়া ক্যাম্পে তাদের অধিকাংশের বসবাস। এছাড়া ভাসানচরে প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চলতি বছর মার্চে কক্সবাজার সফরে এসে বলেন, এই মানুষগুলো শুধু টিকে থাকার জন্য লড়ছে। আমরা যদি এখনই সাহায্য না করি, তাহলে তারা সত্যি সত্যিই অনাহারে মারা পড়বে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সহায়তার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু সহানুভূতি নয়, এখন দরকার বাস্তব সহায়তা।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনায় ২০২৫ সালের জন্য প্রায় ৯৩৪ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, যার অর্ধেকেরও কম এখনো জোগাড় হয়েছে। এই তহবিলের ঘাটতির কারণে খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো মৌলিক সেবাগুলো হুমকির মুখে।
বিশ্বজুড়ে যখন বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, তখন মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল সংকট প্রকট হচ্ছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, অনেক জরুরি প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও নারী শরণার্থীরা।