পুঁজিবাজার
গ্লোবাল হেভির লোকসান কমেছে

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেড গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর’২৪-ডিসেম্বর’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান কমেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে লোকসান হয়েছিল ০২ টাকা।
হিসাববছরের প্রথম দুই প্রান্তিক মিলিয়ে তথা ৬ মাসে (জুলাই’২৪-ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ১১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ০৪ টাকা।
গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৭২ টাকা ৯৭ পয়সা।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
এনসিসি ব্যাংকের আয় বেড়েছে ৬৬ শতাংশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক পিএলসি (এনসিসি ব্যাংক) গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে ৬৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
শনিবার (১০ মে) অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২৫ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ১৫ পয়সা আয় হয়েছিল।
প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশফ্লো ছিল ১২ টাকা ৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৪ পয়সা।
গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২২ টাকা ৬২ পয়সা।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
মাকসুদ কমিশনের ব্যর্থতা: সংস্কারে বিদেশি এক্সপার্টদের আনার নির্দেশ

দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের যোগ্যতা নিয়ে পুঁজিবাজারের সব মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। তাদের এই বাজার নিয়ে কোন জ্ঞান নেই বলে মনে করেন বিনিয়োগকারীরা। এরইমধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কারে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের এনে সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এছাড়া পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১১ মে) উপদেষ্টার বাসভবন যমুনাতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়) আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজ খুবই গুরুত্বপুর্ণ একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ পুরো মিটিংয়ে ব্রিফিং করেন মার্কেটের কি অবস্থা। গত ৯ মাসে কি ধরনের রিফর্ম করা হয়েছে। কোথায় কোথায় এখনো রিফর্ম চলমান আছে। সেগুলো নিয়ে উনি বিস্তারিত একটা পিকচার দেন এবং তার আলোকে খুবই প্রণবন্ত আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে কিছু কিছু গুরুত্বপুর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি প্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রথম নির্দেশনা হলো- বাংলাদেশে যেসব বিদেশি কোম্পানিতে সরকারের স্টেক (অংশীদারিত্ব) আছে, যেমন ইউনিলিভার, তাদেরকে দ্রুত শেয়ারবাজারে আইপিও-তে আনা।
দ্বিতীয় হলো- বাংলাদেশে অনেক প্রাইভেট কোম্পানি আছে যাদের টার্নওভার বিলিয়ন ডলার, অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে। বাংলাদেশ এখন আর ২০-৩০ বছর আগের বাংলাদেশ নেই। অনেক বড় বড় কোম্পানি হয়েছে তাদেরকে স্টক মার্কেটে আনার জন্য বলা হয়েছে। সেটার জন্য কি ধরনের প্রণোদনা দরকার, সেটা রাশেদ মাকসুদকে বলেছেন। যেমন সিটি, মেঘনা আরও অনেক কোম্পানি আছে, তাদেরকে কিভাবে আনা যায়।
তৃতীয় বিষয় হলো- স্টক মার্কেটে ভেস্টেড ইন্টারেস্টেড লোক অনেক। অনেক ধরনের ভেস্টেড ইন্টারেস্টেড লোক আছে। ফলে দেখা যায় আমরা রিফর্ম নিলেও, অনেক সময় রিফর্মগুলো ঠিকমত কাজ করতে চায় না বা এরা রিফর্মগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। এ জন্য স্টক মার্কেটে ডিপ রিফর্ম যাতে ক্যারি আউট করা যায়, এমন ব্যক্তি যাদের এখানে ইন্টারেস্ট নেই, এমন একটি রিফর্মের কথা প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। এক্ষেত্রে বিদেশী এক্সপার্টদের এনে ৩ মাসের মধ্যে রিফর্ম করার জন্য বলেছেন।
তিনি বলেন, চতুর্থ হলো- স্টক মার্কেট রেগুলেটর বা এই সমস্ত যেসব এজেন্সি বা অফিস আছে এখানে অনেকে ধরনের দুর্নীতির কথা শোনা যায়। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- যাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আছে খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। যাতে পুরো স্টক মার্কেটে এক ধনের বার্তা পৌছায় কোনো ধরনের কোনো অনিয়ম বরদাস করা হবে না।
পাঁচ হলো- বাংলাদেশে যারা বড় বড় কোম্পানি আছে তারা ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেয়। অনেক সময় সিন্ডিকেট ঋণ দেয়, অনেকগুলো ব্যাংক থেকে এক হাজার দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ নেন বড় ফান্ড সেটাপের জন্য। এটার জন্য বলা হয়েছে- এই ঋণটা কিভাবে নিরুৎসাহিত করে, কিভাবে তারা বন্ড ইস্যু করে বা স্টক মার্কেটের মাধ্যমে তাদের ফান্ড সংগ্রহ করতে পারেন- বলেন শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, আমি আবারও বলবো খুবই প্রণবন্ত আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা পুরোটা শুনেছেন, শোনার পর উনি নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত স্টক মার্কেটে ক্লিয়ার এবং মিনিংফুল রিফর্ম দেখতে পারবো।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, এটা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অফিসিয়াল মিটিং। আপনারা দেখবেন আমাদের কাজগুলো হলে যারা যারা স্টেকহোল্ডার সবাই বেনিফিটেড হবেন। সবাই একটা ভাইব্রেন্ট স্টক মার্কেট দেখতে পারবেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজার নিয়ে পাঁচ নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

পুঁজিবাজার নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা সব শুনেছেন এবং পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আশাকরি বাস্তব এবং অর্থপূর্ণ সংস্কার আমরা দেখতে পারবো বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, গত ৯ মাসে শেয়ারবাজারে কি সংস্কার করা হয়েছে। কোথায় কোথায় সংস্কার এখনো চলমান আছে, এসব নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও বিএসইসির চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠকে করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১১ মে) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া পাঁচ নির্দেশনাগুলো হলো- সরকারের মালিকানা রয়েছে এমন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে সরকারের শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; বেসরকারি খাতের দেশীয় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে প্রনোদনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজি রুখতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার করা; পুঁজিবাজারে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের প্রত্যকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং বড় ধরনের ঋণ প্রয়েজন এমন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজার থেক বন্ড ও ইক্যুইটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহে আগ্রহী করে তোলার ব্যবস্থা গ্রহণ।
অর্থসংবাদ/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
শেয়ার ব্যবসায় জড়িত বিএসইসির কমিশনার মোহসিন

দেশের শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারির নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। আইন লংঘন করে নিজ নামে শেয়ার ব্যবসা করছেন নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর দায়িত্বে আছেন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) আওতাধীন ‘জিরো ওয়ান লিমিটেড’ নামে একটি ব্রোকারেজ হাউসে তার সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্টের তথ্য মিলেছে। ওই বিও অ্যাকাউন্ট নম্বর ১২০৪১৫০০৭৪৫১৮৭৩৪। ট্রেডিং কোড (ব্রোকারেজ হাউসে লেনদেনের সংক্ষিপ্ত নম্বর) ৪৬৩। এতদিন বিএসইসির জুনিয়র পর্যায়ের কর্মকর্তাদের শেয়ার লেনদেন নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু কমিশনার পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার নিজ নামে সরাসরি শেয়ার লেনদেন করেছেন, এ ধরণের তথ্য এটিই প্রথম।
বর্তমানে তার ওই অ্যাকাউন্টে বাজারে সবচেয়ে বিতর্কিত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার আছে। এক্ষেত্রে বাজারে তালিকাভুক্ত সবগুলোর কোম্পানির শেয়ার থেকে ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার নিন্ম সীমা) প্রত্যাহার করা হলেও বেক্সিমকোর ক্ষেত্রে তা বহাল আছে। অর্থাৎ বেক্সিমকোর শেয়ারের দাম কমতে পারবে না। বেক্সিমকো ছাড়াও আরও ৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন তিনি। আর তিনি যেসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন সবগুলোই ছিল বিতর্কিত গেম্বলারদের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনাধীন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেড়িয়ে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরণের কাজ আইন, বিধিমালা এবং নৈতিকতার সম্পূর্ণ পরিপন্থি। এদিকে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি নিয়ে আজ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিএসইসির কর্মকর্তারা শেয়ার লেনদেন করতে পারেন না। ঘটনা সত্য হলে তা গর্হিত কাজ। বিষয়টি তদন্ত করে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সিডিবিএলের তথ্য অনুসারে মোহসিন চৌধুরীর বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে সিএসইর ব্রোকারেজ হাউস ‘জিরো ওয়ান লিমিটেডে’। রহিমস প্লাজা, স্মার্ট হাব ষষ্ঠ তলা, জাকির হোসেন রোড, খুলশি চট্টগ্রাম। ব্রোকারেজ হাউসের রেজিস্ট্রেশন নম্বর-৩.২ সিএসই-১০৪/২০২০/৩৩২। এই হাউসে মোহসিন চৌধুরীর বিও অ্যাকাউন্ট নম্বর ১২০৪১৫০০৭৪৫১৮৭৩৪। ট্রেডিং কোড ৪৬৩। বিও অ্যাকাউন্টে মোহসিন চৌধুরীর তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, জন্ম তারিখ ৬ জুলাই ১৯৬৪, পেশা: সার্ভিস, পিতা: নুরুল আলম চৌধুরী, মাতা খালেদা বেগম ঠিকানা ১০৭, গরিবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটি, খুলশি চট্টগ্রাম। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৭৭৭১৫১৫৩৫৫। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ডাচবাংলা ব্যাংক, শান্তিনগর শাখা, অ্যাকাউন্ট নম্বর ১০৮১৫১০০২৬২৯৯। তবে টিআইএনের (করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর) জায়গা ফাকা রাখা হয়েছে। মোহসিন চৌধুরীর শেয়ার লেনদেনের ব্যাপারে বিস্তারিত অনুসন্ধান করেছে অর্থসংবাদ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে তার অ্যাকাউন্টে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার রয়েছে। অপরদিকে ৫ আগষ্টের সবগুলো কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলেও বেক্সিমকো এখনো আছে ফ্লোর প্রাইস। বেক্সিমকো ছাড়াও তার এই অ্যাকাউন্টে তিনি আরও ৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে তিনি যেসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন সবই বিতর্কিত গেম্বলারদের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। কোম্পানিগুলো হলো: নাভানা ফার্মা, জেএমআই হাসপাতাল অ্যান্ড মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, চাটার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিকদার ইন্স্যুরেন্স এবং ট্রাস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন করেছেন। তবে বর্তমানে এসব শেয়ার তার একাউন্টে নেই।
বর্তমানে চেয়ারম্যান ও ৩জন কমিশনারের মধ্যে মোহসিন চৌধুরী বিএসইসির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো তার আওতায়। ২০২৪ সালের ৮ মে মোহসিন চৌধুরীকে ৪ বছরের জন্য কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয় তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার। হিসেবে ২০২৮ সালের ৭ মে পর্যন্ত তার মেয়াদ। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি কর্মচারি কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মুসলিম চৌধুরীর আপন ছোট ভাই। ৫ আগষ্টের পর অন্যান্য কমিশনারদের বিদায় নিতে হলেও অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে স্বপদে বহাল আছেন মোহসিন চৌধুরী। ২০২৪ সালের ১১ আগষ্ট বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম পদত্যাগ করলে ১৭ আগষ্ট পর্যন্ত মোহসিন চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
জানা গেছে ২০১১ সালের ১১ এপ্রিল, বিএসইসি থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘কমিশনের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারি নিজ বা স্বামী/স্ত্রী, পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে ও পোষ্যদের নামে প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি মার্কেটে সিকিউরিটিজ লেনদেন করতে কিংবা উক্ত প্রকার লেনদেনে কোনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না। পরবর্তীতে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশে ১৯৯৩’ (সংশোধিত) ইনসাইডার ট্রেডিং আওতায় আনা হয়। কিন্তু কোনো কিছুই আমলে নেননি তিনি।
এবিষয়ে জানতে বিএসইসির কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরীকে একাধিকবার মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক: ৫ আগষ্টের পর অর্থনীতির অন্যান্যখাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়লেও ব্যাতিক্রম শেয়ারবাজার। এখানে টানা দরপতন চলছে। গত সাড়ে ৮ মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজারমূলধন প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা কমেছে। বৃহস্পতিবার বিনিয়োগকারীরা কাফনের কাপড় নিয়ে মিছিল করেছে। ফলে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি নিয়ে আজ রোববার দুপুর ১২টায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক এবং বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তবে বর্তমান রাশেদ মাকসুদ কমিশনের ব্যর্থতার কারণে দেশের শেয়ারবাজার তলানিতে রয়েছে। দীর্ঘদিন বিনিয়োগকারীরা রাশেদ মাকসুদের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করলেও এখনো বহাল তবিয়তেই রয়েছেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
কাজের ব্যাখা দেন, অন্যথায় এখনই অপসারণ চাইবো: রাশেদ মাকসুদকে এনসিপি নেতা

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, আপনি শেয়ারবাজারের জন্য কি কাজ করছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। অন্যথায়, আপনার অপসারণ এখনই চাইব। আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিএসইসির চেয়ারম্যান হয়েছেন, অথচ আপনার উপরে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই।
আজ শনিবার (১০ মে) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর এসোসিয়েশনের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কাউকে পাত্তা দেবেন না, তা হবে না।”
এনসিপির যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানের যোগাযোগ দক্ষতা (কমিউনিকেশন স্কিল) খুবই বাজে। তাকে এই বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ও বিডার নির্বাহি চেয়ারম্যান নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং আপডেট জানাচ্ছেন। তারা দেশের উন্নয়নে সংবাদ সম্মেলন করে বলছেন। অথচ বিএসইসির চেয়ারম্যান কোন আপডেট দেন না। তিনি কি কাজ করছেন এবং তার প্রতিফলন কি, সেগুলো বিনিয়োগকারীদেরকে জানাতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে, রপ্তানি আয়ের ধারা আবার গতি পাচ্ছে এবং বৈদেশিক লেনদেনে ঘাটতি কমে এসে মাত্র ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। এছাড়া জ্বালানির অপরিশোধিত অর্থ পরিশোধ করার পর রিজার্ভ এখনও ২০ বিলিয়নের বেশি, মুদ্রার মান তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল, আমদানি নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার ফলে উৎপাদন ও বাণিজ্যে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে বাহ্যিক খাতে আমাদের অর্থনীতি বর্তমানে একটি নিরাপদ জায়গায় অবস্থান করছে।”
এদিকে, শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থার চিত্র তুলে ধরে ফয়সাল বলেন, “বর্তমানে ডিএসই সূচক ৪,৯০০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এই পতনের পেছনে রয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, চলমান উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং পাঁচ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ডে ১২.৩৯% সুদের হার। যা বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার থেকে সরকারি বন্ডে টেনে নিচ্ছে।” তবে, তিনি বলেন, “তবুও, শেয়ারবাজার এখন ঐতিহাসিকভাবে সস্তা। পিই রেশিও মাত্র ৯.৪১, যা ইঙ্গিত দেয়—এটা ভ্যালু ইনভেস্টমেন্টের জন্য দুর্দান্ত সুযোগ।”
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, “বিএসইসি’র উদ্যোগ প্রশংসনীয় কিন্তু অসম্পূর্ণ। আমরা স্বীকার করি, গত ৮ মাসে বিএসইসি কিছু প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে, ইতিমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যা আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।”
এনসিপি নেতা বলেন, “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বর্তমান সংকটময় সময়ে পুঁজিবাজারে আস্থ্য ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারকে নিম্নোক্ত বাস্তবমুখী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে।”