জাতীয়
সোয়া এক ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
সিগন্যাল সিস্টেমে ত্রুটির কারণে সোয়া এক ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। উত্তরা উত্তর স্টেশনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাময়িকভাবে মেট্রোরেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৩২ মিনিট থেকে ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ঢাকায় মেট্রোরেল চলাচলে বিঘ্ন দেখা দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ।
তিনি জানান, শনিবার দুপুর ১টা ৩২ মিনিট থেকে ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাময়িকভাবে মেট্রোরেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। ৪০ মিনিট বন্ধ থাকার পর পল্লবী স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কিছুটা পথে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। পরে ২টা ৫০ মিনিট থেকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
আব্দুর রউফ বলেন, ওই সিগন্যাল সিস্টেমে পাওয়ার সাপ্লাই হয় দুটি ট্রান্সফর্মার থেকে। এর মধ্যে একটিতে সমস্যা হয়েছিল।
এর আগে দুপুর সোয়া ১টার পর থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাময়িকভাবে মেট্রোরেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তখন কোনো স্টেশন থেকেই যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে উঠতে পারেননি। সকালেও এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ কারণে ওই স্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশি ছিল। যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল ট্রেনগুলো। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে সকালে ট্রেনের দরজা বন্ধ হয়নি। ফলে বেশি সময় দরজা আটকে থাকায় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের পর থেকে ১০ মিনিট মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল। পরে আবার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এরপর সোয়া ১টার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচলে ফের বিঘ্ন ঘটে। ঘণ্টাখানেকের মতো বন্ধ থাকার পর আড়াইটার দিকে মতিঝিল থেকে পল্লবী পর্যন্ত আবারও মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। পরে ২টা ৫০ মিনিট থেকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে মেট্রোরেল চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী আমিরাতের শীর্ষ দুই কোম্পানি
বাংলাদেশের বন্দর উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা এবং লজিস্টিকস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুটি বড় কোম্পানি আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ ও মাসদার।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের সিইও আহমাদ ইব্রাহিম আল মুতাওয়া এবং মাসদারের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ প্রধান ফাতিমা আলমাধলুম আলসুওয়াইদি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ বিনিয়োগ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
বিনিয়োগ প্রস্তাবের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা আপনার দল নিয়ে আসুন এবং যতগুলো প্ল্যান্ট স্থাপন করতে চান করুন।’
আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড, ডেনমার্কের এপি মোলার মায়ারস্ক এবং সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের পর বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় আগ্রহ প্রকাশ করা চতুর্থ বৃহৎ পোর্ট হ্যান্ডলার এবং লজিস্টিকস কোম্পানি।
আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অর্থায়ন, পরিচালনা এবং কনটেইনার এবং মাল্টিপারপাস টার্মিনাল ও সুবিধাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তাবিত তিনটি বে টার্মিনালের একটিতে উন্নয়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গ্রুপ সিইও আল মুতাওয়া বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের স্বাগত মনোভাবের প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে তাদের বিনিয়োগ বাংলাদেশের বন্দরে জাহাজ চলাচল বাড়াতে সহায়ক হবে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি কোম্পানি মাসদার উপকূলের পুনরুদ্ধারকৃত জমিতে ২৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে।
মাসদারের আঞ্চলিক বিনিয়োগ প্রধান ফাতিমা আলমাধলুম আলসুওয়াইদি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে নতুন ধারণা প্রদর্শনে সমর্থন জানাতে আগ্রহী।’
সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আলহুমুদি, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান এবং এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুরশেদ।
আবদুল্লাহ আলি আলহুমুদি প্রধান উপদেষ্টাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশ্ব সরকার সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য দুবাইয়ের শাসকের আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
হাসিনা সরাসরি গুম ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন: এইচআরডাব্লিউ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই আন্দোলন নিয়ে একটি প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। যেখানে তারা বলেছে যে কর্মকর্তারা তাদের জানিয়েছেন- ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশি একনায়ক শেখ হাসিনা ‘সরাসরি গুম ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন’।
সংগঠনটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ইলাইন পিয়ারসনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং বাংলাদেশের অধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় গুলি করে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে।
এছাড়া গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম গুমের অভিযোগ করেন এনামুল কবির নামে এক ব্যবসায়ী। ২০১৮ সালে তিনি ১০ দিন গুম ছিলেন বলে দাবি করেন।
২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সকল গুমের অভিযোগ তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন ওই ব্যবসায়ী।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জরুরি সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
সাত কলেজের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জরুরি এ সভায় শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত রয়েছেন।
এদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিউ মার্কেট থানা ঘেরাও এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বন্ধ করার কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে দাবিগুলো বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মেনে নেওয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠকের পর সাত কলেজ শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র) মো. খোদা বখস চৌধুরী, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ, ইডেন মহিলা কলেজের সাদিয়া আফরিন মৌ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কোনো আপস নয়: সিইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কোনো আপস করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করতে আসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, গণতান্ত্রিক যাত্রায় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সব রকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করার সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হবে। ইসির স্বাধীনতা খর্ব হয় এমন কিছুতে আপত্তি জানানো হয়েছে আমাদের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতেও একতম ইইউ। সংস্কারকে গুরুত্ব দিয়েছে ইইউ। ইইউ মনে করে সংস্কারের সময়টা কম হয়েছে।
সিইসি বলেন, আমরা অবশ্যই সংস্কার চাই। তবে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে এবং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা খর্ব হবে এমন কোনো সংস্কার গ্রহণযোগ্য হবে না।
এদিকে, ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক। আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ
বেতনের সঙ্গে অবসর ভাতা দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতিতে গেল বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে রাত ১২টা পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে উঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি।
রানিং স্টাফের মধ্যে ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা রয়েছেন।
রাত ১২টার পরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা রেল ভবন থেকে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারিনি। রেল চলাচল বন্ধ রাখার বিষয়ে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছি।
স্টেশনের দায়িত্বশীল একজন জানিয়েছেন, রাত ১২টার আগের যেসব ট্রেন ছেড়ে যায়নি সেগুলো ছেড়ে যাচ্ছে এখন। তবে রাত ১২টার পরে শিডিউলের কোনো ট্রেন যাচ্ছে না।
রানিং স্টাফরা জানিয়েছেন, রানিং স্টাফদের কর্ম বিরতির ফলে যেসব ট্রেন রাত ১২টার পর প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেসব ট্রেন ছেড়ে যায়নি। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওইসব ট্রেনের যাত্রীরা।
রেলপথ মন্ত্রণালয় ট্রেন চলাচল বন্ধের কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানালেও দাবি আদায়ে অনড় রয়েছে কর্মসূচি ঘোষণা করা বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।
রেলওয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী একজন রানিং স্টাফ (চালক, সহকারী চালক, গার্ড, টিকিট চেকার) ট্রেনে দায়িত্ব পালন শেষে তার নিয়োগপ্রাপ্ত এলাকায় (হেডকোয়ার্টার) হলে ১২ ঘণ্টা এবং এলাকার বাইরে (আউটার স্টেশন) হলে ৮ ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ পান। রেলওয়ের স্বার্থে কোনো রানিং স্টাফকে তার বিশ্রামের সময়ে কাজে যুক্ত করলে বাড়তি ভাতা-সুবিধা দেওয়া হয়। যা রেলওয়েতে ‘মাইলেজ’ সুবিধা হিসেবে পরিচিত।
২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় মাইলেজ সুবিধা সীমিত করতে রেল মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে আনলিমিটেড মাইলেজ সুবিধা বাদ দিয়ে তা সর্বোচ্চ ৩০ কর্মদিবসের সমপরিমাণ করার কথা জানানো হয়। এ ছাড়া বেসামরিক কর্মচারী হিসেবে রানিং স্টাফদের পেনশন ও আনুতোষিক ভাতায় মূল বেতনের সঙ্গে পাওয়া ভাতা যোগ করার বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়। এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন রানিং স্টাফরা।
মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। কয়েক দফায় অতিরিক্ত কাজ থেকে বিরত থাকাসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। তবে বিভিন্ন সময়ে তৎকালীন রেলওয়ের মহাপরিচালক, রেলসচিব, রেলমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা আন্দোলন থেকে সরে আসেন।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে আবারও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাইলে সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে জানায়, ২০২২ সালের ২১ আগস্ট অর্থ বিভাগের ৯১নং স্মারকে জারি করা পত্রের (খ) অনুচ্ছেদটি অপরিবর্তিত রাখা হলো এবং (ক) অনুচ্ছেদটি নিম্নরূপে সংশোধন করা হলো।
সংশোধনে বলা হয়, রানিং স্টাফ হিসেবে চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভ্রমণ ভাতা বা দৈনিক ভাতার পরিবর্তে রেলওয়ে এস্টাবিলিশমেন্ট কোডের বিধান অনুযায়ী রানিং অ্যালাউন্স প্রাপ্য হবেন। চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা প্রাপ্য হবেন না এবং মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ প্রাপ্য মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ মত জানার পর আরও ফুঁসে ওঠেন রানিং স্টাফরা। তারা বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৮ ঘণ্টার বেশি আমরা কাজ করব। আমরা তো সবাই টাকার জন্যই কাজ করি। ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে যদি টাকাই না দেয়, তাহলে আমরা কাজ করব কেন?
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি জানিয়েছে, কর্মচারীদের অবসরোত্তর ৭৫ শতাংশ মাইলেজ মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান প্রায় ১৬০ বছর ধরে চলমান ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে রেলওয়ের কোডিফাইড রুল অমান্য করে রানিং স্টাফদের পার্ট অব পে হিসেবে গণ্য মাইলেজ, যা যুগ যুগ ধরে বেতন খাতের অংশ ছিল, সেখান থেকে সরিয়ে টিএ খাতে নেওয়ার ফলে জটিলতা তৈরি হয়। এরপর ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়।
কর্মচারী সমিতি আরও জানিয়েছে, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১০ এপ্রিল রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে অর্থ মন্ত্রণালয় ১৩ এপ্রিল চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেয়। পরে তৎকালীন রেলমন্ত্রী ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১১ জুন তৎকালীন রেলওয়ের মহাপরিচালক স্পষ্ট করে রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই বছর ১৮ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আবারও আপত্তি জানায়। ফলে রানিং স্টাফদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।