আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আতঙ্কে নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরা, নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার ৪
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে আতঙ্কে আছেন নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীরা। নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরাও একইভাবে দুশ্চিন্তায়। কারণ, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ধারপাকড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
শপথ গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিবাসন–সংক্রান্ত শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিলসহ নতুন ৪৭টিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের শক্ত হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। নথিপত্রহীন সন্দেহভাজন অভিবাসীদের ব্যাপক মাত্রায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক বাংলাদেশি বলেন, ফুলটন এলাকায় আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। অতর্কিতে সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে আমাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন।
একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। তিনি এ কথা বলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে শপথ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অতিক্রম করে লাখ লাখ অনুপ্রবেশকারী নির্দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সীমান্তে প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করা হবে। তারপর বের করে দেওয়া হবে অপরাধীদের।
ইতিমধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রাখা হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এই আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজন বলেন, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যাঁরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার পথ ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকতেন, সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। সে হিসাবে অভিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যাপক সুযোগ পেয়েছেন। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সেসব নিয়োগ নির্ধারিত হবে। ফলে ছাটাই হতে পারেন অসংখ্য বাংলাদেশি।
সংবিধানের তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশ জারি করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের একটি বিধানও বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এতে এখন থেকে ৩০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানেরা দেশটির নাগরিকত্ব পাবে না। তবে ইতিমধ্যে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ২৪টি রাজ্য ও শহরে মামলা হয়েছে। যেহেতু এটা মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনের বিরুদ্ধে যায়, সে কারণে হাইকোর্ট এটি বাতিল করে দিতে পারে।
খাদিজা মুনতাহা বাংলাদেশিদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। অন্যের ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এই কঠিন সময়ে অহেতুক পুলিশি অথবা অন্য কোনো বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়ানো যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঙালি–অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় যেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যেত, এখন সেখানে লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ক্রিপ্টোকারেন্সিকে জাকাতের আওতাভুক্ত করলো মালয়েশিয়া
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ক্রিপ্টো কারেন্সিকে জাকাতের আওতাভুক্ত করেছে মালয়েশিয়া। দেশটির সরকারি ইসলামী সংস্থা দ্য ফেডারেল টেরিটোরিজ ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিলের অঙ্গসংগঠন জাকাত কালেকশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী দাতুক আবদুল হাকিম আমির ওসমান মঙ্গলবার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাতুক আবদুল হাকিম জানান, মালয়েশিয়ায় ক্রিপ্টো কারেন্সি একটি বিকাশমান খাত বর্তমানে দেশটির মোট বিনিয়োগকারীর ৫৪ দশমিক ২ শতাংশই এ খাতের। এই বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশেরই বয়স ১৮ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে এবং তাদের হাতে জমা রয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি রিংগিতের (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৩ হাজার ৫২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা) সমপরিমাণ সম্পদ।
“এ কারণে আমরা মনে করছি যে এই ক্রিপ্টো খাত জাকাতের একটি নতুন উৎস হতে পারে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য,” সংবাদ সম্মেলনে বলেন দাতুক আবদুল হাকিম।
৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬৪ হাজার মানুষ অধ্যুষিত মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। দেশটির ক্রিপ্টো খাতে বিনিয়োগকারীদেরও একটি বড় অংশ মুসলিম।
সম্প্রতি ফেডারেল টেরিটোরিজ ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিলের ১৩৪ তম সেশনে ডিজিটাল কারেন্সিকে ব্যবসায়যোগ্য পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে— উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “এখন ডিজিটালাইজেশনের যুগ। অর্থনীতি যেহেতু ডিজিটাল হচ্ছে, আমাদেরও পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।”
প্রসঙ্গত, জাকাত ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। ইসলাম ধর্মে প্রত্যেক সামর্থ্যবান নারী ও পুরুষের ওপর জাকাত ফরজ বা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেছেন সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ৯০ দিনের জন্য এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ নেওয়ার পর নির্বাহী এক আদেশ জারির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তবে বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের আদেশ মার্কিন তহবিলের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ দেশটির অনেক কর্মসূচি এরই মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসে তহবিল বরাদ্দ পেয়েছে। আর এসব অর্থ এরই মধ্যে বিতরণ অথবা ব্যয় করা হয়েছে।
সোমবার মার্কিন ক্যাপিটল ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। শপথ নেওয়ার পর নির্বাহী আদেশে সই করার ঝড় বইয়ে দেন তিনি। মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পুনরায় পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধিসহ কয়েক ডজন নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্যগুলোর সঙ্গে একেবারে মিল না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র কোনো বৈদেশিক সহায়তা দেবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে গত সপ্তাহে সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক কমিটিতে শুনানির সময় দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তিনটি মূল প্রশ্ন সামনে রেখে কর্মসূচির ন্যায্যতা দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
মার্কো রুবিওর তিনটি প্রশ্ন ছিল, এই সহায়তা কর্মসূচি কি যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ করে তোলে? এটি কি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও শক্তিশালী করে তোলে? এটি কি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করে তোলে?
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল (কেন্দ্রীয়) বাজেটের প্রায় এক শতাংশই যায় বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি তহবিলে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবে এই বিদেশি সহায়তার সমালোচনা করছেন। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধে কিয়েভে বিশাল পরিমাণের সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো সহায়তার পরিমাণ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বাইডেন প্রশাসনের সাম্প্রতিক বৈদেশিক সহায়তা বিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলে দুর্যোগ ত্রাণ, স্বাস্থ্য ও গণতন্ত্রপন্থি উদ্যোগসহ বিভিন্ন খাতে মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন এই সহায়তার প্রধান প্রাপক ইসরায়েল বার্ষিক ৩৩০ কোটি ডলার, মিশর বার্ষিক দেড় ১৫০ কোটি ডলার ও জর্ডান বার্ষিক ১৭০ কোটি ডলার পায়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এসব দেশের দীর্ঘস্থায়ী চুক্তির কারণে এই সহায়তায় উল্লেখযোগ্য কোনো কাটছাঁট ট্রাম্প করবেন না বলেই মনে করছেন অনেকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
খালার আমলে মানুষ গুম করা হয়েছিল, এরপরও টিউলিপকে কেন মন্ত্রী করলেন স্টারমার
মীর আহমেদ বিন কাসেমকে যখন রাতে সশস্ত্র ব্যক্তিরা বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যান, তখন সেখানে তাঁর ৪ বছর বয়সী কন্যাও ছিল। কিন্তু সে এত ছোট ছিল যে, বুঝতেই পারেনি কী ঘটতে চলেছে।
‘তাঁরা আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল, আমি ছিলাম খালি পায়ে’, বলছিলেন আহমেদ বিন কাসেম। তিনি আরও বলেন, ‘ছোট মেয়েটা আমার জুতা হাতে নিয়ে পিছু পিছু দৌড়ে আসছিল। বলছিল, “নাও, বাবা।” মনে হয়, সে ভাবছিল, আমি বাইরে যাচ্ছি।’
মীর আহমেদকে আট বছর বিনা বিচারে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁর হাত ও চোখ থাকত বাঁধা। তিনি আজও জানেন না, কোথায় ছিলেন, কেনই–বা তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যে প্রশিক্ষিত এই ব্যারিস্টার (৪০) বাংলাদেশে ‘গুম’ হওয়া মানুষের একজন। শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম হওয়া এই ব্যক্তি ছিলেন তাঁর সমালোচক। গত আগস্টে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগপর্যন্ত ২০ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
১৯৭১–এর মুক্তিযুদ্ধের পর হাসিনার আমলেই সবচেয়ে বেশি সহিংসতা দেখেছে বাংলাদেশ। সহিংসতায় নিহত হয়েছেন শত শত মানুষ। তাঁর ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার শেষ দিনটিতেও অন্তত ৯০ জন নিহত হন।
বিতর্ককে সঙ্গী করা হাসিনা যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির আইনপ্রণেতা (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিকের খালাও। নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ ওঠার পর গত সপ্তাহে টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের দুর্নীতি প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি (টিউলিপ)।
অভিযোগগুলোর একটি হলো বাংলাদেশের অবকাঠামোগত ব্যয় থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন (৩৯০ কোটি) পাউন্ড পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছে টিউলিপের পরিবার। এ ছাড়া লন্ডনে তিনি তাঁর খালার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সম্পত্তি ব্যবহার করেছেন।
কিয়ার স্টারমার সরকারের তদন্তে মন্ত্রিত্বের আচরণগত নীতিমালা টিউলিপ ভাঙেননি বলে দেখা গেছে। তবে যেকোনোভাবেই হোক পদত্যাগ করেছেন তিনি।
যদিও বিষয়টির এখানেই শেষ হয়ে যাওয়া আবশ্যকীয় নয়।
কিয়ার স্টারমারের জন্য প্রশ্ন
এ ঘটনা কিয়ার স্টারমারের বিবেচনাবোধ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের ভোট আকর্ষণে লেবার পার্টির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যন্ত্রণাদায়ক নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ঘুরপাক খাওয়া প্রশ্নগুলোর একটি, কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া খালার সঙ্গে টিউলিপের যে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, সে বিষয়ে অনেক আগে থেকে জানার পরও লেবার পার্টি এখনকার ঘটনা আঁচ করতে পারল না কেন। কেননা, হাসিনার আমলে সেই ২০১৬ সালেই বিন কাসেমের ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল।
অনেক বছর আগেই এ নিয়ে (টিউলিপের ব্যাপারে) লেবার পার্টির কারও না কারও উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত ছিল। টিউলিপকে নিয়ে প্রথম অনাবিষ্কৃত উদ্বেগের ক্ষেত্র ছিল, বাংলাদেশে জোর করে গুমের ঘটনায় তাঁর সাড়া দেওয়ার ব্যর্থতার বিষয়টি। এরপরের ক্ষেত্রটি ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি।
—ডেভিড বার্গম্যান, অনুসন্ধানী সাংবাদিক
বিন কাসেম ও অন্য বাংলাদেশিদের ‘গুম’ হওয়ার ঘটনা মানবাধিকার বিষয়ে ওই সময় থেকে টিউলিপের সোচ্চার হওয়া নিয়ে একটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবনারও জন্ম দিয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, নিজ নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা নাজানিন জাঘারি–র্যাটক্লিফকে ইরান থেকে মুক্ত করার জন্য দীর্ঘ প্রচার চালিয়েছেন টিউলিপ। বিপরীতে বাংলাদেশে তাঁর খালার শাসনামলে লোকজনের দুঃখ–দুর্দশা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে জনসমক্ষে বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে টিউলিপের নির্লিপ্ততা ছিল উল্লেখ করার মতো।
অতীতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর খালার বৈঠকে টিউলিপকে পাশে দেখা গেছে। আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হয়ে বিবিসি টেলিভিশনেও হাজির হয়েছেন তিনি। ১৯৮১ সাল থেকে দলটির নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন হাসিনা।
যুক্তরাজ্যে লেবার দল থেকে ২০১৫ সালে এমপি নির্বাচিত হতে সহায়তা করায় আওয়ামী লীগের সদস্যদের ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন টিউলিপ। দলটির সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তিনি ২০০৮ ও ২০০৯ সালে তাঁর ওয়েবসাইটে দুই পৃষ্ঠাজুড়ে বর্ণনা দেন। পরে তা মুছে ফেলা হয়।
যদিও একসময় পার্লামেন্টে টিউলিপ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব খাটানোর কোনো সক্ষমতা বা আকাঙ্ক্ষা’ তাঁর নেই।
সব মিলিয়ে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে টিউলিপের সংশ্লিষ্টতা গোপন ছিল না। তবে সম্ভবত লেবার পার্টি এ সংশ্লিষ্টতাকে খারাপ হিসেবে দেখেনি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষণ খুব কমই দেখা গেছে।
তৎকালীন লেবার পার্টির এমপি জিম ফিজপ্যাট্রিক ২০১২ সালে কমন্স সভায় বলেছিলেন, তারা ‘সহযোগী সংগঠন’। একই রকম ধারণা পোষণ করতেন তাঁর অনেক সহকর্মীও।
২০১৫ সালে স্টারমারও টিউলিপের পাশের আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন। একাধিকবার হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
হাসিনার সঙ্গে স্টারমারের এমন এক সাক্ষাৎ ঘটেছিল ২০২২ সালে। বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ওই সময় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে লন্ডনে ছিলেন। ওই বৈঠককে ‘হৃদয়বিদারক ও মর্মন্তুদ’ বলে আখ্যায়িত করেন বিন কাসেম।
তবে স্টারমারের একজন সহযোগী যুক্তি দিয়ে বলেন, হাসিনার সঙ্গে স্টারমারের ওই সাক্ষাৎ করা ছিল ‘খুবই যৌক্তিক’। বৈঠকটি হাসিনার নীতির প্রতি তাঁর সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ ছিল না।
বাংলাদেশকে বছরের পর বছর লেবার পার্টির পাশে রাখার দৃশ্যত এমন চেষ্টা ছিল যুক্তরাজ্য, বিশেষ করে রাজধানী লন্ডনের অংশবিশেষের রাজনৈতিক বাস্তবতারই হয়তো প্রতিফলন।
লেবার পার্টির একজন বিশিষ্ট নেতা বিষয়টিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেন, ‘বাংলাদেশি ভোট না বুঝে পূর্ব লন্ডনে আপনি সফল হতে পারবেন না।’ অবশ্য তিনি বলেন, ‘আপনার কথা ও কাজের মধ্যে সতর্কভাবে ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত। আপনি যদি একটি দলের (বাংলাদেশি) ব্যাপারে অতিরিক্ত খোলামেলাভাব দেখান, তবে আপনার সমালোচনা হবেই।’
দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) এক বিশ্লেষণে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যুক্তরাজ্যের অন্তত ১৭টি আসনে ভোটার হওয়ার উপযুক্ত বয়সী বাংলাদেশিদের মধ্যে লেবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা বেশি।
স্টারমারের হলবর্ন ও সেন্ট প্যানক্রাস আসনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ৬ হাজার।
সম্ভাব্য অনাবিষ্কৃত উদ্বেগের ক্ষেত্র
গত জুলাইয়ে নির্বাচনে জেতার অল্প পরই স্টারমার যুক্তরাজ্যের দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিতে টিউলিপকে নিয়োগ দেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের প্রতি লেবার পার্টির সহানুভূতি ও লন্ডনের রাজনৈতিক বাস্তবতাই কি দুর্নীতি নিয়ে সম্ভাব্য ঝড়ের ব্যাপারে স্টারমারের বিচারবোধ ম্লান করে দিয়েছিল? উঠেছে এমন প্রশ্ন।
একটি লেবার সূত্র বলেছে, ‘নিজের বন্ধুবান্ধব ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের প্রতি স্টারমারের অন্ধভক্তি রয়েছে। এটা নতুন কিছু নয়।’
অনুসন্ধানী সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে টিউলিপের এক দশকের সংশ্লিষ্টতার ওপর আলোচনা করেছেন। এ ক্ষেত্রেও তিনি ‘পটভূমিই সবকিছু’ বলে ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘লেবার পার্টির ক্ষমতায় আসা ও টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রী হওয়া এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে এটি (টিউলিপকে নিয়ে হইচই, তাঁর সম্ভাব্য পদত্যাগ ও সরকারের ঝামেলায় পড়া) কোনো বড় গল্প ছিল না।’
বার্গম্যানের যুক্তি, অনেক বছর আগেই এ নিয়ে (টিউলিপের ব্যাপারে) লেবার পার্টির কারও না কারও উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত ছিল। টিউলিপকে নিয়ে প্রথম অনাবিষ্কৃত উদ্বেগের ক্ষেত্র ছিল, বাংলাদেশে জোর করে গুমের ঘটনায় তাঁর সাড়া দেওয়ার ব্যর্থতার বিষয়টি। এরপরের ক্ষেত্রটি ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি।’
এ বিষয়ে লেবার পার্টির এমপিদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ব্রিটিশ গণমাধ্যমের পাশাপাশি লেবার পার্টির মধ্যে বাংলাদেশকে নিয়ে জানার ঘাটতি আছে। যুক্তরাজ্যে প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রয়েছেন। তাঁদের কথায়, এটি বিশ্বের অষ্টম বৃহৎ জনসংখ্যার দেশ। অথচ ৫ আগস্টের পর এখানকার গণমাধ্যমের কাছ থেকে বাংলাদেশকে নিয়ে আমরা কোনো খবর শুনিনি।
হাসিনার বিরুদ্ধে আরও কিছুদিন দুর্নীতির তদন্ত চলতে পারে। ফলে টিউলিপ লেবার পার্টির এমপি থাকতে পারবেন কি না, সামনের মাসগুলোয় সেটিও স্টারমারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের জন্য সম্ভাব্য আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর আহমেদ বিন কাসেমকে হঠাৎই তাঁর কক্ষ থেকে জাগিয়ে তোলা হয়। পরে একটি গাড়িতে উঠিয়ে খাদে ফেলে দেওয়া হয়। অবশেষে তিনি বাড়িতে তাঁর দুই মেয়ের কাছে ফিরতে পেরেছেন।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিন কাসেম যখন সন্তানদের দেখেছিলেন, তখন বয়সে তারা ছিল শিশু। এখন তারা কিশোরী। অশ্রুসিক্ত এই বাবা বলেন, ‘আসলেই আমি ওদের চিনতে পারিনি, আর তারাও আমাকে চিনতে পারেনি।’
মীর আহমেদ বিন কাসেম বলেন, ‘কখনো কখনো এটা মেনে নেওয়া কঠিন, আমার মেয়েরা কীভাবে বেড়ে উঠল, সেটি আমি কখনো দেখিনি। আমি জীবনের সেরা সময়টা হারিয়েছি। আমি তাদের শৈশবকে হারিয়েছি।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আমেরিকার শত্রুদের পরাজিত করাই মূল লক্ষ্য: ট্রাম্প
‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য আমেরিকার শত্রুদের পরাজিত করা’— এমনটাই বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কই নির্বাচনে তার জয়লাভের বড় কারণ ছিল বলেও দাবি করেছেন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট।
‘কমান্ডার-ইন-চিফ বল’ নামক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রম্প একথা বলেন। এই আয়োজনটি ছিল ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের একটি অংশ। এর আগে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নির্বাচনে জয়লাভের একটি বড় কারণ ছিল সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্ক বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘কমান্ডার-ইন-চিফ বল’ নামক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আমাকে বলতেই হবে, আমরা সত্যিই সামরিক বাহিনীর সহায়তায় জিতেছি।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেন, পিট হেগসেথের নেতৃত্বে আবার “বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী” পাবে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত হেগসেথ পরবর্তীতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা একটি মজবুত আয়রন ডোম গড়ে তুলব। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য আমেরিকার শত্রুদের পরাজিত করা। আমরা পরাজিত হবো না, অপমানিত হবো না। আমরা শুধু জিতবো, জিতবো এবং জিতবো।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্টভাবেই বলেছেন, তার প্রশাসন সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে, তবে “তা ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে না আমাদের”।
এর আগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথের পর ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ওয়ান অ্যারেনা মঞ্চে প্রথম ভাষণ দেন তিনি এবং এরপর প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার আদেশে স্বাক্ষর করেন। পরে বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন ট্রাম্প।
এছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পানামা খাল ফেরত নেওয়া, বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির মতো কয়েকটি ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘চুরি’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওভাল অফিসে বসে তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘চুরি’ করছে। আমাদের দেশের একটি সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ রয়েছে।
শুল্ক বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে (সম্পদ) নিয়ে যাচ্ছে। তার ভাষায়, তারা আমাদের দেশে আসে এবং এসে আমাদের সম্পদ চুরি করছে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভকারীরা নতুন এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের অভিষেকের সাথে সাথে নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, লস অ্যাঞ্জেলেসে সমবেত হন এবং বিক্ষোভ করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ইঙ্গিতে এশিয়ার পুঁজিবাজারে সতর্কতা
আজ মঙ্গলবার সকালে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পুঁজিবাজার চাঙা হলেও কিছুক্ষণ পরেই তা গতি হারায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন, এমন খবর চাউর হওয়ায় গতি হারায় শেয়ারবাজার।
সোমবার শপথ নেওয়ার পর ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দ্বিতীয় দফায় তাঁর এই শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সোনালি যুগ শুরু হচ্ছে। তাঁর এ কথায় বাজারে আশাবাদ তৈরি হয়।
নির্বাচনী প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব অঙ্গীকার করেছিলেন, সেগুলো বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের করপোরেট মুনাফা বাড়বে। তাঁর অঙ্গীকারের মধ্যে আছে বাণিজ্য সংস্কার, কর হ্রাস ও সরকারি বিধিবিধানের রাশ আলগা করা। যদিও অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন, ট্রাম্পের এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হলে মূল্যস্ফীতির হার উল্টো বেড়ে যেতে পারে। তখন ফেডারেল রিজার্ভ আবার নীতি সুদহার বাড়াতে বাধ্য হতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছিল, প্রথম দিনেই ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করতে পারেন, কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি। সম্ভবত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ট্রাম্প কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপ করবেন। একই সঙ্গে সোমবার ওভাল অফিসে বসেই কোন কোন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কে অন্যায্যতা আছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কানাডা ও মেক্সিকো থেকে বিপুল পরিমাণ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন। সে জন্য ওভাল কার্যালয়ে ঢুকেই ট্রাম্প বলেছেন, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের চিন্তা আছে। বিশেষ করে কানাডার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, কানাডা অনেক সুযোগের অপব্যবহার করে।
এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণার সময় যুক্তরাষ্ট্রের সব আমদানি পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে চীনের পণ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, আমদানি পণ্যে শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক লাভ হবে। যদিও সমালোচকেরা মনে করেন, এসব শুল্কের ভার শেষমেশ ভোক্তাদের ঘারেই বর্তাবে। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকে রাজস্ব আহরণে ট্রাম্প এক্সটার্নাল রেভিনিউ সার্ভিস নামের একটি বিভাগ স্থাপন করবেন।
আজ এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শেয়ার সূচকগুলোর মধ্যে জাপানের নিক্কিই এশিয়া সূচকের তেমন পরিবর্তন হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচকের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ, যদিও অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ সূচকের উত্থান হয়েছে প্রায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। এ ছাড়া পাউন্ড ও ইউরোর মতো শক্তিশালী মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ওভাল অফিসে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে সই করার সময় বাজারের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা চিড় ধরেছে। বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের শুল্ক এজেন্ডা সম্পর্কে এত কিছু শুনেছেন যে তাতে বাজারের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা চিড় ধরেছে।
এদিকে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে ছিল মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র দিবস। সে কারণে এদিন শেয়ারবাজার বন্ধ ছিল।