জাতীয়
দুদক সংস্কারে ৪৭ সুপারিশ কমিশনের
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও গতিশীল, স্বাধীন ও কার্যকর করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে ৪৭টি সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করেছে এ কমিশন।
এ বিষয়ে দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, দুদককে আরও গতিশীল করার জন্য আমরা স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে ৪৭টি সুপারিশ প্রস্তাব করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, স্বল্পমেয়াদি সুপারিশ বাস্তবায়নে ছয় মাস, মধ্যমেয়াদি সুপারিশ বাস্তবায়নে ১৮ মাস ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার বাস্তবায়নে ৪৮ মাস সময় লাগবে।
তিনি বলেন, দুদক বর্তমানে একটি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। তবে এটিকে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, আমরা চাই দুদক স্বাধীন ও কার্যকর হোক। তবে, এই স্বাধীনতারও সীমা থাকতে হবে। আমরা সংস্কার সুপারিশ করেছি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের সদস্য সংখ্যা তিন থেকে পাঁচে বৃদ্ধি করার সুপারিশ করা হয়েছে। যার মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। অতিরিক্তভাবে দুদকের কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিচারিক ও আর্থিক দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, সুপারিশের ভিত্তিতে একটি কার্যকর দুদক গড়ে তুলতে রাজনীতি ও আমলাতন্ত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে, না হলে দুদক কার্যকর হবে না।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পরে একই মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুর্বল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে এবং জনমালিকানা, জবাবদিহি ও জনকল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনী ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন এবং দুদকের সংস্কারের জন্য প্রথম ছয়টি কমিশন ৩ অক্টোবর গঠিত হয়।
এর মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
চীনা ঋণ পরিশোধের সময় ৩০ বছরে নিতে চায় সরকার
চীনা প্রকল্পের সুদের হার কমানোর পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের সীমা ৩০ বছরে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আগামী ২০ জানুয়ারি চীন সফরে যবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ২১ জানুয়ারি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে দ্বিক্ষীয় বৈঠকে বসবেন তিনি।
সফরকে সামনে রেখে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেক প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ আছে। বিনিয়োগগুলো মূলত ঋণ আকারে। তার মধ্যে কিছু প্রকল্প চলমান। আলাপ আলোচনার সময় প্রথমে ব্যবসায়িক বিষয়গুলো আসবে। অফিসিয়ালি চীন আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। আন-অফিসিয়ালি ভারতকেও বড় অংশীদার বলা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের প্রধানত আমদানির সম্পর্ক এবং এগুলো আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ আমাদের অনেক রপ্তানি সেই আমদানি পণ্যগুলোর ওপর নির্ভরশীল। কাজেই চীনের সঙ্গে আমাদের যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আরও অর্থনৈতিক আলোচনা আছে- যেমন আমরা ঋণের শর্তাবলী নিয়ে কথা বলব। এর মধ্যে সুদহার কমানো বা ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো।
তিনি আরও বলেন, চীনের কাছে এটাও চাইবো যেন যখন আমরা এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েট করব তখন ইউরোপের মতো তারাও যেন আমাদের জন্য তিন বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রাখে। এখনো চীন আমাদের অধিকাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু গ্রাজুয়েশনের পরে এটা পরিবর্তন হতে পারে, তাই এটি আমাদের আলোচনার মাধ্যমে আগেই ঠিক করে নিতে হবে।
বাংলাদেশে চীনে ঋণের পরিমাণ জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রতিটি ঋণের সুদের হার এক না। আমরা মোটাদাগে সুদের হার কমানোর কথা বলব। ঋণ পরিশোধ সীমা চেষ্টা করব ৩০ বছরে নিয়ে যেতে; যেন আমাদের অর্থনীতির ওপর চাপ কম আসে এবং পরিশোধ করতে সহজ হয়। পরিশোধের সময় বাড়ানোর কথা বলব।
সফরে নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের করা সমঝোতা স্মারকের নবায়নের তথ্য জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, তিস্তা প্রকল্পের চেয়ে বড় কথা হলো আমাদের নদী নিয়ে যে এমওইউ আছে ওটা শেষ হয়ে গেছে। আমাদের সেটা নবায়ন করার সিদ্ধান্ত আছে। স্পেসিফিক প্রকল্পের বিষয়ে আরও অনেক বিস্তারিত আলোচনা লাগবে। তবে বাংলাদেশ অবশ্যই তার নিজের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে এটা আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের সহায়তা চাওয়ার কথা জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করব। আমরা চাইব চীন আমাদের সহায়তা করুক। চীনের ওখানে যথেষ্ট প্রভাব আছে। রোহিঙ্গা সমস্যা এক দিনে সমাধানের বিষয় না। এখন যে পরিস্থিতি মিয়ানমারে সেখানে স্থিতিশীলতা না ফিরলে কিন্তু প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না, এটা মেনে নিতে হবে। তাদের জোর করে পাঠাতে পারবেন? একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, আমরা সেই পরিবেশ সৃষ্টিতে চীনের সহায়তা চাইব। আমরা চাইব রাখাইনে একটা স্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হোক।
চীনের বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগে (জিডিআই) বিগত সরকারের সময় থেকে বাংলাদেমকে যুক্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বেইজিং। উপদেষ্টার সফরে জিডিআই সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক কিংবা সরকারের অবস্থান কি?
তা জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, কিছু জিনিস আছে যেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলমান। এটা বহাল থাকবে এবং আমরা ইতিবাচকভাবে দেখব। এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখনই সমঝোতা স্মারকে যাব কিনা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
বিগত সরকারের সময়ে চীনের সঙ্গে ৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি ছিল এবং বাজেট সহায়তা নিয়েও আলোচনা ছিল। বর্তমান সরকারের এ বিষয়ে প্রদক্ষেপ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা কোনো কিছু বাদ রাখব নাম, সবকিছু নিয়ে আলাপ-আলোচনা করব। সেই আলোচনা আছে এবং থাকবে। যেহেতু আমাদের সমস্যা আছে আমরা বাজেট সহায়তা নিয়ে কথা বলব। দেখি তারা কতটুকু সহায়তা দিতে পারে।
চীন সফরের লক্ষ্য জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ইস্যুগুলো আপনারা জানেন কোনটা এক মাসের বা এক বছরের ইস্যু না। ইস্যুগুলো অনেক দিনের, অনেক পেছন থেকে হয়ে আসছে। বিগত সরকারের সময়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা কি সেগুলো সব বাদ দিয়ে দেব? কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা দেখব যে, সেটা আমাদের দেশের স্বার্থ ঠিক মতো রক্ষা করা হচ্ছে কি না।
তিনি আরও বলেন, কিছু সাংস্কৃতিক আলোচনা আছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ উপলক্ষে দুই দেশেই কিছু উৎসব আছে। সেগুলো নিয়েও আমরা কথাবার্তা বলব।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিন কারামুক্ত
১২ বছর পর কারামুক্ত হলেন ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি বের হন।
এ সময় রফিকুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। এগুলো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সুসংগঠিত হয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করবে ডেসটিনি গ্রুপ।’
এর আগে বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের রায়ে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের মামলায় রফিকুল আমিনসহ ১৯ জনকে ১২ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
তবে রফিকুল আমিন গত ১২ বছর ধরে কারাগারে আছেন। রায়ে আদালত বলেছেন, কারাগারে থাকার বয়স সাজা থেকে বাদ যাবে। এ হিসেবে এমডি রফিকুল আমিনের সাজা খাটা হয়ে গেছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় সম্মেলন বৃহস্পতিবার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আগামীকাল (১৬ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে একটি সর্বদলীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ১৫ জানুয়ারি (বুধবার) এ তথ্য জানান।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনর্নির্বাচনের সুপারিশ
জাতীয় অথবা স্থানীয় সরকার যেকোনো নির্বাচনেই ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে আবারও ভোটগ্রহণ করার সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এছাড়াও সরকারের সামনে আরও একগুচ্ছ সুপারিশ রাখা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ সংবলিত ৯ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ড. বদিউল আলম মজুমদার নেতৃত্বাধীন এ কমিশন।
প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
নির্বাচন ব্যবস্থা:
(ক) নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধান বাতিল করা।
(খ) নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা ।
(গ) কোনো আসনে মোট ভোটারের ৪০% ভোট না পড়লে পুন:নির্বাচন করা।
(ঘ) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন বন্ধ করা, রাজনৈতিক দলগুলোকে সৎ, যোগ্য এবং ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দেওয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচনে ‘না-ভোটের’ বিধান প্রবর্তন করা। নির্বাচনে না-ভোট বিজয়ী হলে সেই নির্বাচন বাতিল করা এবং পুন:নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাতিলকৃত নির্বাচনের কোনো প্রার্থী নতুন নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারার বিধান করা।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন:
(ক) ঋণ-বিল খেলাপিদের প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা।
(খ) কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি আসামি হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা।
(গ) বেসরকারি সংস্থার কার্যনির্বাহী পদে আসীন ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ওই পদ থেকে তিন বছর আগে অবসর গ্রহণ সংক্রান্ত আরপিওর ধারা বাতিল করা।
(ঘ) সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬(২)(ঘ) এর অধীনে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে বিচারিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।
(ঙ) আইসিটি আইনে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে) শাস্তি প্রাপ্তদের সংসদ নির্বাচনে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।
(চ) গুরুতর মানবাধিকার (বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, অমানবিক নির্যাতন, সাংবাদিকদের/মানবাধিকারকর্মী ওপর হামলা, ইত্যাদি) এবং গুরুতর দুর্নীতি, অর্থপাচারের অভিযোগে গুম কমিশন বা দুর্নীতি দমন কমিশন বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কর্তৃক অভিযুক্ত হলে তাদেরকে সংবিধানের ৬৬(২)(ছ) অনুচ্ছেদের অধীনে একটি বিশেষ আইন প্রণয়ন করে সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা। (সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতার মাপকাঠি উচ্চতর হওয়া দরকার এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা দরকার। এ ক্ষেত্রে ‘ট্রানজিশান্যার জাস্টিসের’ যুক্তিও উত্থাপন করা যেতে পারে।)
(ছ) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পদত্যাগ না করে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।
(জ) তরুণ, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু, শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য শতকরা ১০ ভাগ মনোনয়নের সুযোগ তৈরির বিধান করা।
(ঝ) স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ১% শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দেওয়ার বিধানের পরিবর্তে ৫০০ ভোটারের সম্মতির বিধান করা এবং এ ক্ষেত্রে একক কিংবা যৌথ হলফনামার মাধ্যমে ভোটারদের সম্মতি জ্ঞাপনের বিধান করা।
(ঞ) একাধিক আসনে কোনো ব্যক্তির প্রার্থীর হওয়ার বিধান বাতিল করা।
(ট) হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রেক্ষাপটে আপিল প্রক্রিয়ায় অনুচ্ছেদ ১২৫(গ) বহাল রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা। কোনো আদালত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হইয়াছে এরূপ কোনো নির্বাচনের বিষয়ে, নির্বাচন কমিশনকে যুক্তিসংগত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ প্রদান না করিয়া, অন্তর্বর্তী বা অন্য কোনোরূপে কোনো আদেশ বা নির্দেশ প্রদান করিবেন না ।
(ঠ) হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কিংবা তথ্য গোপনের কারণে আদালত কর্তৃক কোনো নির্বাচিত ব্যক্তির নির্বাচন বাতিল করা হলে ভবিষ্যতে তাকে নির্বাচনে অযোগ্য করার বিধান করা।
মনোনয়নপত্র:
(ক) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আইনি হেফাজতে থাকা ব্যতীত সব প্রার্থীর সশরীরে মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি করা ।
(খ) নির্বাচনী তফসিলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় বৃদ্ধি করা, যাতে হলফনামা যাচাই-বাছাই করা ও আপিল নিষ্পত্তি জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় কমানো, যাতে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় সাশ্রয় হয়।
(গ) প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করা। এ লক্ষ্যে আদালতের হস্তক্ষেপের বিষয়টি শুধু ‘কোরাম নন জুডিস’ ও ‘ম্যালিস ইন ল’-এর ক্ষেত্রে সীমিত করা।
(ঘ) মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ৫ বছরের আয়কর রিটার্নের কপি জমা দেওয়ার বিধান করা।
(ঙ) নির্বাচনী তফসিলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় বৃদ্ধি করা, যাতে হলফনামা যাচাই-বাছাই করা ও আপিল নিষ্পত্তি জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় কমানো, যাতে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় সাশ্রয় হয়।
২.৩ হলফনামা:
(ক) প্রার্থী কর্তৃক মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রত্যেক দল তার প্রার্থীদের জন্য প্রত্যয়নপত্রের পরিবর্তে দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা অনুরূপ পদধারী ব্যক্তি কর্তৃক হলফনামা জমা দেয়ার বিধান করা, যাতে মনোনীত প্রার্থীর নামের পাশাপাশি মনোনয়ন বাণিজ্য না হওয়ার ও দলীয় প্যানেল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ থাকে।
(খ) পরবর্তী নির্বাচনের আগে যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশন নির্বাচিত ব্যক্তির হলফনামা যাচাই-বাছাই করতে এবং মিথ্যা তথ্য বা গোপন তথ্য পেলে তার নির্বাচন বাতিল করা।
নির্বাচনী ব্যয়:
(ক) সংসদীয় আসনের ভোটার প্রতি ১০ টাকা হিসেবে নির্বাচনী ব্যয় নির্ধারণের বিধান করা।
(খ) সব নির্বাচনী ব্যয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা বা আর্থিক প্রযুক্তির (যেমন, বিকাশ, রকেট) মাধ্যমে পরিচালনা করা।
(গ) নির্বাচনী আসনভিত্তিক নির্বাচনী ব্যয় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবিড়ভাবে নজরদারিত্ব করা।
(ঘ) প্রার্থী এবং দলের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাবের রিটার্নের নিরীক্ষা এবং হিসাবে অসঙ্গতির জন্য শাস্তির বিধান করা।
২.৬ নির্বাচনী অভিযোগ ব্যবস্থাপনা:
(ক) বিদ্যমান ‘নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি’কে অনুসন্ধান বা তদন্ত করার ক্ষমতা প্রদানের পাশাপাশি বিচার-নিষ্পত্তির ক্ষমতা প্রদান করে’ ‘নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি নামে একটি পূর্ণাঙ্গ বিচারিক সত্তা/বডি গঠন করা।’
(খ) নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটির আওতায় প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে সদস্য করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত কমিটিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ ধারা মতে বিচারার্থে অপরাধ আমলে নেওয়ার এবং সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতিতে অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা অর্পণ করা।
(গ) সংসদ নির্বাচন চলাকালে নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটিগুলোর কার্যাবলি তদারকি করার নিমিত্তে নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের ‘নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কার্যক্রম তদারকি কমিটি’ একজন নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে গঠন করা।
(ঘ) কার্যকালীন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটিগুলো প্রশাসনিকভাবে নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কার্যক্রম তদারকি কমিটির আওতায় আনা। বিচারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এগুলোকে স্বাধীন করা।
(ঙ) হাইকোর্ট বিভাগে নির্বাচনি মামলার চাপ কমাতে এবং শুধু নির্বাচনি বিরোধ সংশ্লিষ্ট মামলা (ইলেকশন পিটিশন) দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য জেলা পর্যায়ে ‘সংসদীয় নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল’ স্থাপন এবং ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলের সুযোগ রাখা।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার কাছে নিজেদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আরও তিনটি কমিশন। এগুলো হলো সংবিধান, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে কাজ করছে সরকার: আইজিপি
অন্তবর্তী সরকার পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে একটি নিরপেক্ষ সংস্থায় উন্নীত করতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি বাহারুল আলম।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম সাব-ইন্সপেক্টর ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আইজিপি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক সাব-ইন্সপেক্টরদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপরাধ দমন, জনগণের নিরাপত্তা ও সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা পুলিশের প্রধান কাজ। পাশাপাশি প্রবাসীদের জানমালের নিরাপত্তায়ও গুরুত্ব দিতে হবে।’ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুনদের সৃজনশীল প্রতিভার প্রতি আস্থা রাখতে চান বলে জানান আইজিপি।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন আইজিপি বাহারুল আলম। নবীন সাব-ইন্সপেক্টরদের অভিবাদন গ্রহণ করেন।
২০২৩ সালে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমিতে যোগ দেন ব্যাচের মোট ৮২১ জন এসআই। পরবর্তীতে বিভিন্ন অপরাধের দায়ে ২২ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ৫ আগস্টের পর চারধাপে বাদপড়েন ৩২১ জন এসআই।
ব্যাচেটির অবশিষ্ট ৪৮০ জন সাব-ইন্সপেক্টর ৮টি কন্টিনজেন্টে ভাগ হয়ে কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। এবার বেস্ট একাডেমিক হন ক্যাডেট বদিউজ্জামান, ইনফিল্ডে বেস্ট হন নজরুল ইসলাম ও সব বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন ক্যডেট আরিফুল ইসলাম। সকলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আইজিপি।
গত ২৬ নভেম্বর ৪০ তম এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা অনিবার্য কারণে বাতিল করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মাসুদুর রহমানস ভূঁঞা, রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলমগীর রহমান ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি