অর্থনীতি
সবজিতে স্বস্তি থাকলেও চাল-মুরগির বাজারে অস্থিরতা

শীতের ভরা মৌসুমে প্রত্যাশার বেশি স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। তবে চাল ও মুরগির বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও নাখালপাড়া সমিতি বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
গত দুই সপ্তাহে কোনো কোনো চাল কেজিতেই বেড়েছে ১০ টাকা। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বাড়ার কথা বলে চালের দর বাড়াচ্ছেন মিলাররা। এভাবে অযাচিত দাম বাড়ার কারণে বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। ফলে সস্তায় শীতকালীন সবজি কিনে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও ক্রেতার সাশ্রয়ের সেই টাকা খেয়ে ফেলছে চালের বাজার।
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি করছেন ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর নাজিরশাইল বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়। ১৫ দিন আগেও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে দুই জাতের চালের কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ এবং ৮ থেকে ১০ টাকা।
বিআর-২৮ জাতের চালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। ২ থেকে ৫ টাকা দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া এ সময় মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। ১৫ দিন আগে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা চালের সরবরাহও দেখা গেছে। মিনিকেট জাতের এ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, মিলার ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার।
মিল পর্যায়ে দুর্বল তদারকির কারণে সরকারকে বিপদে ফেলতে মিলাররা কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন বলে মনে করেন মুক্তা রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. শাহাজান মিয়া। তিনি বলেন, ধানের দাম বাড়ছে এমন অজুহাতে মিলাররা চালের বাজার গরম করছেন। আসলে ধানের দর বাড়ছে কি না, জানি না।
সবজির দর কমে যাওয়ায় ডিমের দরও নেমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। তবে মুরগির দর আগের মতোই চড়া। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সরবরাহ বাড়ায় কয়েক দিন ধরে বেশ সস্তায় বিক্রি হচ্ছে সবজি। দু-তিনটি ছাড়া প্রায় সব সবজির দর ৬০ টাকার কমে মিলছে। বিশেষ করে প্রতি কেজি মুলা ও শালগম ১৫ থেকে ২০, শিম ২০ থেকে ৪০, গাজর ৫০ থেকে ৫৫, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৪০, উচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ এবং বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। তবে প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ৫০ থেকে ৭০, বরবটি ৫০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বড় আকারের প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। লাউয়ের পিস কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে
৫০ টাকায়।
আলুর বাজারেও স্বস্তির খবর রয়েছে। বাজার ভরে গেছে নতুন আলুতে। ফলে দর কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তবে পুরোনো আলুর কেজি কিনতে খরচ হবে ৫০ টাকা বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি।
অনেকটাই কমেছে পেঁয়াজের দর। প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ ও পুরোনো পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে। তবে কিছুটা বেড়ে দেশি রসুনের কেজি ২৩০ থেকে ২৩৫ এবং আমদানি রসুন ২২০ থেকে ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি কেনা যাচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। অপরিবর্তিত দেখা গেছে মাছের বাজার।
কাফি

অর্থনীতি
নতুন দামে সোনা বিক্রি শুরু

দেশের বাজারে নতুন করে সোনার দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বুধবার (২৫ জুন) থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হচ্ছে। নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আজ থেকে। এ হিসেবে ভরি প্রতি ১ হাজার ৬৬৮ টাকা কমেছে সোনার দাম।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, গত ১৪ জুন, ৬ জুন, ২২ মে ও ১৮ মে দেশের বাজারে চার দফা বেড়েছিল সোনার দাম। এর মধ্যে সবশেষ ১৪ জুন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১৮২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ১০০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৮০৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতনী প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৫২৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকা। গতকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত এই দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে দেশের বাজারে।
তবে, এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৬৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৫৯৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৩৭৬ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতনী প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২ টাকা।
এদিকে সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত আছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপা এখন দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতনী এক ভরি রূপার দাম ১ হাজার ৭২৬ টাকা।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ একসঙ্গে পেল বাংলাদেশ। চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় এটি তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এ অর্থ যোগ হয়েছে। ফলে মোট রিজার্ভ ফের ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দিন শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রোস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, ২২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এর বাহিরে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখন প্রায় ১৭ বিলিয়ন।
মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হলো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন ডলারে ঘরে আছে। প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়।
চলতি মাসের শুরুতে অর্থাৎ (৪ জুন) পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মোট বা গ্রোস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার আর ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ছিল ১৬ বিলিয়নের ঘরে।
এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় রাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় এবং তা অনুমোদন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নজিরবিহীন অর্থপাচার ও বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতিও বেড়েছিল বাংলাদেশের। ডলারের বিপরীতে টাকা দর অবনমন হতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে। সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে। ফলে আস্তে আস্তে তলানিতে নামে রিজার্ভ। ওই সময় রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা নিতে আইএমএফ এর কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়ে ২০২২ সালের জুলাইতে আবেদন করে বাংলাদেশ।
এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে ৩ বছর মেয়াদি এই ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ কর্মসূচি অনুমোদনের সময় আইএমএফ জানিয়েছিল, এই সহায়তা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে।
মূলত চলতি হিসাবে বড় ধরনের ঘাটতি, টাকার অবমূল্যায়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফের কাছে এই ঋণ সহায়তা চায়।
মোট ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ১৪০ কোটি ডলার অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখযোগ্যভাবে, আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই প্রথমবারের মতো ঋণ পেয়েছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ পেয়েছে। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। দুই কিস্তির প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার পর বাকি থাকবে ১২৯ কোটি ডলার, যা পাওয়া যাবে আরও দুই কিস্তিতে।
এদিকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগানের চেষ্টা করছে। ফলে আস্তে আস্তে আবার রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে।
অর্থনীতি
অবশেষে কমলো সোনার দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ এক হাজার ৬৬৮ টাকা কমানো হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭২ হাজার ৮৬৪ টাকা। আজ (মঙ্গলবার) প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা টাকা বেচাকেনা হয়েছে।
মঙ্গলবার ( ২৪ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বুধবার (২৫ জুন) থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি এক লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৭ হাজার ২ টাকা।
সোনার দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮১১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন।
অর্থনীতি
রোহিঙ্গাদের জন্য ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা দেবে এডিবি

বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য এবং তাদের আশ্রয়দাতা বাংলাদেশি সম্প্রদায়গুলোর জন্য অত্যাবশ্যকীয় অবকাঠামো ও পরিষেবা নিশ্চিত করতে ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এরমধ্যে রয়েছে ৭১৫ কোটি টাকা অনুদান এবং সহজ শর্তে ৩৪৩ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটি। এই অর্থায়ন এডিবির দরিদ্রতম ও সবচেয়ে অরক্ষিত সদস্য দেশগুলোর জন্য নির্ধারিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এডিএফ) থেকে দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) এডিবির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এডিবি জানায়, ‘ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিসেস অ্যান্ড লাইভলিহুড ফর ডিসপ্লেসড পিপল ফ্রম মিয়ানমার অ্যান্ড হোস্ট কমিউনিটিস ইমপ্রুভমেন্ট প্রোজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটির মাধ্যমে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি; রাস্তা ও সেতু; নিরাপত্তা ও সুরক্ষা; নিষ্কাশন ব্যবস্থা; খাদ্য নিরাপত্তা এবং দুর্যোগ সহনশীলতার মতো মৌলিক পরিষেবাগুলোর সুযোগ বাড়াতে কাজ করা হবে। কক্সবাজার ও ভাসানচর এলাকার রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা উভয় সম্প্রদায়ের নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে একটি বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। প্রকল্পটি অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাগুলোতে যোগাযোগ ও প্রবেশাধিকার বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতাও জোরদার করবে।
এই অর্থায়নের বিষয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইয়ুন জিয়ং বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত জনগণের সুরক্ষা ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে এবং ক্যাম্প ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক সংহতি প্রচারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। নতুন এই সহায়তা আমাদের পূর্ববর্তী সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। যেখানে জরুরি সহায়তা প্রকল্প এবং এর অতিরিক্ত অর্থায়নের অধীনে ২০১৮ সাল থেকে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়গুলোকে মোট ১৭১.৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান ও ঋণ দেওয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থনীতি
একনেকে ৯ হাজার কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একনেক সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মোট ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এ ছাড়া একনেক সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে ইতোমধ্যে অনুমোদিত ১৫টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প– ‘উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ এবং ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি এবং স্থানীয় জনসমাজের সমন্বিত সেবা ও জীবন-জীবিকা উন্নয়ন’ প্রকল্প। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘৭টি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদকাশক্তি নিরাময় ও পূনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ’। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘নবনির্মিত ৪টি মেরিন একাডেমিতে সিমুলেটর ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি’। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘অ্যাক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন : স্ট্রেংথেনিং কমিউনিটি ডিসপুট রিসল্যুশন অ্যান্ড ইম্প্রোভিং কেস ম্যানেজমেন্ট’। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিন)’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (৩য় সংশোধিত ৪র্থ বার বৃদ্ধি)’। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প– ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প ও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘টিভিইটি টিচারস ফর দ্য ফিউচার (টিটিএফ) প্রোগ্রাম’। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ৩য় সংশোধিত’ প্রকল্প।
এছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প– ‘কার্যক্রম বিভাগে একটি নতুন ডিজিটাল ডাটাবেজ সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি শক্তিশালীকরণ (৩য় সংশোধিত)’, ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইপিআইএমএস)’, ‘প্রকিউরমেন্ট মডারনাইজেশন টু ইম্প্রুভ পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি (পিএমআইপিএসডি) ও ‘স্ট্যাটিস্টিক্যাল ক্যাপাসিটি এনহেঞ্চমেন্ট অ্যান্ড মডারনাইজেশন প্রজেক্ট (এসসিইএমপি)। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প ‘স্ট্রেংথেনিং পাবলিক অডিট দ্রু ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি এনহেঞ্চমেন্ট (এসপিএডিটিইসি) এবং ‘স্ট্রেংথেনিং ডোমেস্টিক রেভিনিউ মোবিলাইজেশন প্রজেক্ট (এসডিআরএমপি) প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।