অর্থনীতি
মূল্যস্ফীতি না কমলেও বেড়েছে অনেক ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা

সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলে দফায় দফায় ঋণের সুদহার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতি সুদহার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদহারও সর্বোচ্চ ৯ থেকে বেড়ে এখন প্রায় ১৬ শতাংশে পৌছেছে। সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটির পরামর্শ মানতে গিয়ে দেশে বেড়ে গিয়েছে ‘কস্ট অব ডুইং বিজনেস’ বা ব্যবসা পরিচালনার ব্যয়। এতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না এসে উল্টো আরো বেড়েছে।
আইএমএফের পরামর্শ দেশের সাধারণ মানুষের কোনো কল্যাণে না এলেও এর সুফল বেশ ভালোভাবেই ঘরে তুলে নিয়েছে দেশের কিছু ব্যাংক। তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে আর্থিকভাবে সবল থাকা প্রায় সব ব্যাংকেরই পরিচালন মুনাফা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কোনো কোনো ব্যাংকের মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে শতভাগেরও বেশি।
বিদায়ী বছরের লাভ-ক্ষতির হিসাব গতকালের মধ্যেই চূড়ান্ত করেছে দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা পেয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির এ মুনাফা ছিল ১ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে সদ্য বিদায়ী বছর ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭২ দশমিক ২৯ শতাংশ।
গত বছর রেকর্ড ২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ সালে যা ছিল ১ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা। এ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংক দুটির মতো দেশের অন্যান্য সবল ব্যাংকেরও পরিচালন মুনাফায় বড় প্রবৃদ্ধির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আলী জানান, গত বছর দেশের ব্যাংক খাতে তারল্যের তীব্র সংকট থাকলেও পূবালীতে সেটি ছিল না। উল্টো আমাদের ব্যাংকে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। এ আমানত থেকে আমরা ৭ হাজার কোটি টাকা বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছি। ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ হিসাবে বিতরণ করা হয়েছে। পূবালী ব্যাংকের আমদানি-রফতানি ব্যবসার প্রবৃদ্ধিও হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় বড় প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এসবের ভূমিকা আছে।
দেশের ব্যাংকগুলো ঋণের সুদহার বৃদ্ধির সুফল ভোগ করছে কিনা জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংক এমডি বলেন, সেটি অন্য কোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে সত্য হতে পারে। কারণ সুদহার বাড়ানোর পরও পূবালী ব্যাংকের ৭০ শতাংশ ঋণের সুদ ১২ শতাংশের নিচে রয়েছে। ১৪ শতাংশের বেশি সুদ আছে, এমন ঋণ ১০ শতাংশও হবে না। গত ছয় মাস আমরা কোনো গ্রাহকের ঋণের সুদ বাড়াইনি।
আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে ৬৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছে সিটি ব্যাংক। ২০২৩ সালে প্রথম প্রজন্মের এ বেসরকারি ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ১ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা। কিন্তু গত বছর এ মুনাফা বেড়ে ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকায় ঠেকেছে। ব্যাংকটির ইতিহাসে এটিই পরিচালন মুনাফার সর্বোচ্চ রেকর্ড।
পরিচালন মুনাফায় ৬১ দশমিক ৭১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকও। গত বছর ব্যাংকটি ২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা পেয়েছে। যেখানে ২০২৩ সালে ডাচ্-বাংলার পরিচালন মুনাফা ছিল ১ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ব্যাংক এশিয়া ১ হাজার ৭০০ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংক ১ হাজার ৬৭৫ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ১ হাজার ৫০০ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি) ১ হাজার ১১০ কোটি, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ৫০ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৯৭৫ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৮৫০ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ৮৩০ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ৬৪৪ কোটি ও চতুর্থ প্রজন্মের মেঘনা ব্যাংক ২০৪ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা পেয়েছে।
ব্যাংকগুলোর মধ্যে কেবল প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। বাকি সবক’টি ব্যাংকেরই মুনাফা বাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে পরিচালন মুনাফার এসব তথ্য পরে কিছুটা বাড়তে বা কমতে পারে। কেননা কিছু ব্যাংক গতকালও ২০২৪ সালের হিসাব-নিকাশ চূড়ান্ত করতে পারেনি। এসব ব্যাংক থেকে পাওয়া সম্ভাব্য মুনাফার তথ্য এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে সেটিকেই বলা হয় পরিচালন মুনাফা। তবে এটি কোনো ব্যাংকেরই প্রকৃত মুনাফা নয়। পরিচালন মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়। প্রভিশন ও কর-পরবর্তী এ মুনাফাকেই বলা হয় ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা।
কিছু ব্যাংকের মুনাফায় অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে, হাতে নগদ তারল্য বেশি থাকা ব্যাংকগুলোই মুনাফার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ভালো করেছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের প্রধান খাত ছিল সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ড। ৫-৬ শতাংশ সুদে সংগৃহীত আমানত ১২-১৩ শতাংশ সুদের বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে। পর্ষদ ভেঙে দেয়া ব্যাংকগুলো থেকে বের হয়ে যাওয়া আমানত স্বল্প সুদে টেনে নিয়েছে সবল ব্যাংকগুলো। বিল-বন্ডের পাশাপাশি স্বল্প সুদে সংগৃহীত এ আমানত থেকে ১৫-১৬ শতাংশে সুদে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এ উচ্চ স্প্রেডের (ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান) প্রভাবেই সবল ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফায় অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেকর্ড পরিচালন মুনাফা পাওয়া সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিনও একই ধরনের পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকা এ ব্যাংকার জানান, ‘ভালো ব্যাংকগুলোর ভালো মুনাফা করারই কথা। কারণ তাদের সবার আমানত ব্যয় তুলনামূলক কম। আবার ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা উঠে যাওয়ার পর তাদের নিট সুদ আয় বেড়েছে। আপনি বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, ভালো ব্যাংকগুলোর মোট সুদ আয়ের ৬০-৭০ শতাংশ আসছে ঋণ খাত থেকে। আর ২০ শতাংশের মতো সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকে এবং বাকিটা অন্য ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট ইত্যাদি রেখে। সেই সঙ্গে এ গোত্রের সব ব্যাংকের মোট আয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ আসছে ফি, এলসি কমিশন ও মুদ্রা বিনিময় আয় থেকে।’
মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘দেশের ভালো ব্যাংকগুলো এখন তাদের আয়ের এক-চতুর্থাংশই সুদের বাইরে থেকে আয় করা শুরু করেছে। অর্থাৎ জনগণকে নানা সেবা দিয়ে তার বিনিময়ে সামান্য ফি-কমিশন চার্জ করে তারা আয় বাড়াতে পারছে। সুদনির্ভর ব্যালান্স শিট থেকে সেবা বাবদ অর্জিত ফি নির্ভর ব্যালান্স শিটে যেতে পারাটা সত্যিকারের আধুনিক ব্যাংকিং। আবার এটিও সত্যি যে এ বছর অনেক ব্যাংক পারফরম্যান্স খারাপ করার কারণে তুলনামূলক সুনামসম্পন্ন ব্যাংকগুলো আরো বেশি ভালো করেছে।’
প্রায় তিন বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এর মধ্যে গত দুই অর্থবছরজুড়েই দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের বেশি। বিবিএসের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস তথা জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ওই মাসে মূল্যস্ফীতির হার ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশে নেমে আসে বলে দাবি করে বিবিএস। এরপর সেপ্টেম্বরে আরো কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ দেখানো হয়। তবে অক্টোবর ও নভেম্বরে এ হার আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়। অক্টোবরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার দেখানো হয় ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আর নভেম্বরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ঠেকে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে। সরকারের দেয়া এ তথ্য আমলে নিলে গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখন সর্বোচ্চ।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলে দুই অর্থবছর ধরে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি প্রণয়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাজারে অর্থের প্রবাহ কমাতে নীতি সুদহার (রেপো রেট) ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদহারও সর্বোচ্চ ৯ থেকে বেড়ে এখন ১৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ চাহিদা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার যে লক্ষ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারণ করেছিল, সেটি কাজে আসেনি। সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার প্রেসক্রিপশন মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ)। বহুজাতিক সংস্থাটি থেকে ঋণ প্রাপ্তির শর্তের মধ্যেই সুদহার বাড়ানোর বিষয়টি জুড়ে দেয়া হয়েছিল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবে শিল্প, সেবাসহ সব খাতের পরিচালন ব্যয় বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে ডলারের বিনিময় হার। এ কারণে বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না। সুদহার কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আসতে বেশ কয়েকবার তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদনও জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের কথা শোনেনি। এ সুযোগে ব্যাংকগুলো দফায় দফায় সুদহার বাড়িয়ে নিজেদের মুনাফার পাল্লা ভারী করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে ব্যাংক ঋণের পাশাপাশি সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহারও গত দুই বছর ধরে বেশ চড়া। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহারও ১১ থেকে ১২ শতাংশ। এ কারণে ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতকে ঋণ না দিয়ে সরকারকে ঋণ দিতে বেশি উৎসাহ দেখাচ্ছে। বেসরকারি খাত ঋণবঞ্চিত হওয়ার চিত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যেও ফুটে উঠেছে।
সংস্থাটির তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪-এর অক্টোবর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে মাত্র ৮ দশমিক ৩০ শতাংশে, যা গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
সবল ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিল-বন্ডের ভূমিকা অনেক বেশি বলে মনে করেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘হাতে পর্যাপ্ত তারল্য থাকা ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফা পেয়েছে। বিল-বন্ডে এখন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকেরও প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা আছে। কিছু ব্যাংকের বিল-বন্ডে বিনিয়োগ আমাদের চেয়ে দুই-তিন গুণ বেশি। এ কারণে ওই ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।’
সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না এলেও ব্যাংকগুলো একচেটিয়া এর সুবিধা ঘরে তুলল কিনা জানতে চাইলে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা দেখছি সুদহার বাড়ানোর পরও মূল্যস্ফীতি কমেনি। তার মানে এ নয় যে সাধারণ মানুষ কোনো সুফলই পাবে না। ব্যাংকের লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ হয়। লভ্যাংশের একটি অংশ মূলধন বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। সে হিসাবে সাধারণ মানুষ পুরোপুরি বঞ্চিত হয়েছে, এটি বলা যায় না।’
অনিয়ম-দুর্নীতি ও সুশাসনের তীব্র ঘাটতির কারণে গত দেড় দশক ধরেই দেশের ব্যাংক খাত ধারাবাহিকভাবে দুর্বল হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ সময় গিয়েছে ২০২০ সাল থেকে। দেশের ব্যাংক খাত থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা লোপাট করেছেন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তৈরি হওয়া অলিগার্করা। বাছবিচারহীন লুটপাটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ দেশের প্রায় দুই ডজন ব্যাংকের ভিত নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের ব্যাংক খাত সংস্কারের উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেয়ার পর দেশের বেসরকারি খাতের ১২টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। পরিবর্তন আসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায়। নেতিবাচক ভাবমূর্তি, আস্থাহীনতা ও পর্ষদ ভেঙে দেয়ার প্রভাবে দুর্বল ব্যাংকগুলো থেকে আমানত তুলে নিতে গ্রাহকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তবে বেশির ভাগ ব্যাংকই গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী টাকা ফেরত দিতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে টাকা ধার দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পর্ষদ ভঙে দেয়া একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘২০২৪ ছিল দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে নাজুক বছর। কারণ বছরটিতে গত দেড় দশকের লুটপাটের তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও আমরা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা ফেরত দিতে পারিনি। দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসে এত খারাপ পরিস্থিতি অতীতে কখনই দেখিনি। আমাদের ব্যাংক থেকে টাকা তুলে গ্রাহকরা স্বল্প সুদে হলেও অন্য ব্যাংকে জমা করেছে। এ কারণে ওই ব্যাংকগুলোর মুনাফা বেড়েছে। আর আমাদের বিপর্যয় আরো গভীর হয়েছে। খেলাপি ঋণের হিসাবায়ন চূড়ান্ত না করতে পারায় গত বছরের মুনাফা পরিস্থিতিও বের করা সম্ভব হয়নি।’ সূত্র: বণিক বার্তা।
অর্থসংবাদ/

অর্থনীতি
৪৮ ঘণ্টা শাটডাউনের পর এনবিআরের আন্দোলন প্রত্যাহার

গত ৪৮ ঘণ্টা শাটডাউনের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রাত সাড়ে নয়টার দিকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এর ফলে গত কয়েক দিন ধরে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি আপাতত শেষ হলো।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এবং দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলের নেতারা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, দেশের শীর্ষস্থানীয় চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা প্রমুখ।
গত শনিবার থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের সার্বিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা শুরু হয়। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা এই কর্মসূচির কারণে ঢাকার এনবিআর ভবন থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর, ঢাকা কাস্টমস হাউস, বেনাপোল, সোনামসজিদ, আখাউড়া, বুড়িমারীসহ দেশের সব স্থলবন্দর শুল্কস্টেশনে শুল্ক-কর আদায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। স্থবির হয়ে যায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
অবশ্য গত দেড় মাস ধরে সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে এনবিআরের যৌক্তিক সংস্কারে দাবিতে আন্দোলন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অর্থনীতি
সহযোগী সংস্থাগুলোকে ১১ হাজার কোটি টাকা দেবে পিকেএসএফ

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সহযোগী সংস্থাগুলোকে ১১ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। এছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে পিকেএসএফ পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছে।
রবিবার (২৯ জুন) রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে অনুষ্ঠিত পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর পরিচালনা পর্ষদের ২৬০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের সুবিধাবঞ্চিত, নিম্ন-আয়ের মানুষের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে ‘পিকেএসএফ কৌশলগত পরিকল্পনা (২০২৫-২০৩০)’ অনুমোদন করেছে পিকেএসএফ-এর পরিচালনা পর্ষদ।
পিকেএসএফ জানায়, প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই পিকেএসএফ এর কার্যক্রমের মান ও কার্যকারিতা দেশে-বিদেশে সমাদৃত হলেও বর্তমানে আর্থ-সামাজিক, প্রাযুক্তিক, দারিদ্র্য পরিস্থিতি ও মানুষের চাহিদার বিবর্তন ঘটেছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশে টেকসইভাবে দারিদ্র্য নিরসন ও নিম্ন-আয়ের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পিকেএসএফ নতুন এই কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১১ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের প্রস্তাব উত্থাপন করে। পরিচালনা পর্ষদ প্রস্তাবটি গ্রহণ করে তা সাধারণ পর্ষদে অনুমোদনের লক্ষ্যে উপস্থাপনের পরামর্শ দেয়। বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পিকেএসএফ থেকে সহযোগী সংস্থা পর্যায়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। বর্ধিত এ অর্থায়নের ফলে সহযোগী সংস্থাগুলো তৃণমূলে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে অধিকতর কার্যকরভাবে পিকেএসএফ এর সেবাগুলো পৌঁছে দিতে পারবে।
সংস্থাটি জানায়, পিকেএসএফ এর সাধারণ পর্ষদের ১৪তম সভায় ‘পিকেএসএফ কৌশলগত পরিকল্পনা (২০২৫-২০৩০)’ এর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ১২ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়।
পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দু’টি সভাতেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের, পর্ষদ সদস্য ড. সহিদ আকতার হোসাইন, নূরুন নাহার, ফারজানা চৌধুরী, প্রফেসর ড. মো. তৌফিকুল ইসলাম এবং লীলা রশিদ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া সাধারণ পর্ষদের সভায় সব পর্ষদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনীতি
২০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে বেজা ও এডিবির চুক্তি

জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পিপিপি পদ্ধতিতে সর্বপ্রথম সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে বেজা ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ফেনী অংশে সোনাগাজী উপজেলায় ১০০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
রবিবার (২৯ জুন) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এ তথ্য জানায়। বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং। এছাড়া সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বেজা জানায়, জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পিপিপি পদ্ধতিতে গ্রাউন্ড মাউন্টেড সোলার (১০০-২০০ এমডব্লিউ) পিভি প্রকল্প স্থাপনের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের জন্য বাংলাদেশ বেজা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মধ্যে আজ একটি ট্রান্সসেকশন অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএএসএ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়াও এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সাথে উভয়পক্ষের একটি সারসংক্ষেপ স্বাক্ষরিত হয়। জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে একটি পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই ‘গ্রিন ইকোনমিক জোন’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই চুক্তির আওতায় জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ফেনী অংশে সোনাগাজী উপজেলায় ১০০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর ফটোভোল্টেইক (পিভি) এবং ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (ইএসএস) সমন্বিত একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
বেজা আরও জানায়, এই প্রকল্পটি হবে বাংলাদেশে বাস্তবায়িত প্রথম সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প, যা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কাঠামোতে পরিচালিত হবে। সম্প্রতি প্রকাশিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি-২০২৫ অনুসরণে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। যা দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, এই প্রকল্পটি বেজা তথা বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি মাইলফলক হতে যাচ্ছে। এটি পিপিপি কাঠামো অনুসরণে দেশের প্রথম সোলার প্রকল্প। যা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগকে সফলভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এডিবিকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জন্য বিশেষ কমিটি গঠিত হয়েছে। তিনি এডিবিকে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সমীক্ষা সমাপ্ত করে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগ সরকার ঘোষিত ‘জিরো নেট কার্বন এমিশন’ বাস্তবায়নে এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করেই শিল্পায়ন ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পথ তৈরির জন্য বেজা সচেষ্ট হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে। যেখানে এদেশে প্রথমবারের মত ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এটি বিদ্যুৎ গ্রিডে ক্লিন এনার্জি সরবরাহ করবে এবং সেই সাথে একটি স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করবে।
এর ফলে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অর্থনীতি
এনবিআর সংস্কারে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে সরকার।
আজ রবিবার (২৯ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিদ্যমান সংকট দ্রুত নিরসনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে এ কমিটির বিস্তারিত টার্মস অব রেফারেন্স সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, জনস্বার্থ রক্ষায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট ও শুল্ক স্টেশনগুলোর সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণার প্রস্তাব (মন্ত্রিসভায়) অনুমোদন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস ইউং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।’
অর্থনীতি
জুলাইয়ে অপরিবর্তিত থাকবে জ্বালানি তেলের দাম

জুলাই মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। জুন মাসের নির্ধারিত দামই থাকছে জুলাই মাসে।
রবিবার (২৯ জুলাই) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জুলাই মাসের জন্য ডিজেল প্রতি লিটার ১০২ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, পেট্রল ১১৮ টাকা ও অকটেন ১২২ টাকা অপরিবর্তিত রেখে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে জুন মাসের জন্য ডিজেলের বিক্রয়মূল্য প্রতি লিটার ১০২ টাকা, অকটেন ১২২ টাকা, পেট্রল ১১৮ টাকা ও কেরোসিনের দাম ১১৪ টাকায় সমন্বয় করা হয়েছিল। নির্ধারিত দাম ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় দাম নির্ধারণ গত বছরের মার্চ থেকে শুরু করা হয়। সে হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হচ্ছে।