অর্থনীতি
ডলারের দাম নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা
নতুন বছরের শুরু থেকে ডলারের দাম আরও বাজারমুখী করতে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে অনুমোদিত ব্যাংকের শাখাগুলো তাদের গ্রাহক ও ডিলাররা নিজেরা আলোচনার মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করতে পারবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, নতুন বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদিত শাখাগুলো (এডি শাখা) থেকে প্রতিদিন দুইবার বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঠাতে হবে। এক লাখ ডলারের বেশি কেনাবেচার তথ্য বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে জানাতে হবে। এছাড়া বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার পুরো তথ্য বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে জানাতে হবে। নির্ধারিত ছকে বাংলাদেশ ব্যাংককে এসব তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ১২ জানুয়ারি থেকে বৈদেশিক মুদ্রার কেনাবেচার তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিদিনের একটি ভিত্তিমূল্য বা রেফারেন্স প্রাইস প্রকাশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এ ভিত্তিমূল্য প্রকাশ করা হবে।
এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে হস্তক্ষেপ বিষয়ক একটি নীতিমালা প্রকাশের ঘোষণাও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সব বৈদেশিক মুদ্রার দাম বাজারভিত্তিক রাখতে এই নীতিমালা হয়েছে। যাতে বাজারভিত্তিক দামের সুবিধা নিয়ে মুদ্রা বাজারকে কেউ অস্থিতিশীল করতে না পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের মধ্যে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। চলতি বছরের মধ্যে ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে ডলারের দাম আরও কিছুটা বাজারমুখী করতে নতুন প্রজ্ঞাপন দেওয়া হলো।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অর্ধশত পণ্য-সেবায় ভ্যাট বাড়ানোর ব্যাখ্যা দিলো এনবিআর
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তানুযায়ী যেসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং আবগারি শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে সেসবের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, যেসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে তার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই। তাই সর্বসাধারণের ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে না এবং মূল্যস্ফীতিতেও এর প্রভাব পড়বে না। জনস্বার্থে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শুল্ক করহারে ব্যাপক ছাড় দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং জাতি হিসেবে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি ও হার যৌক্তিকীকরণের লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে এনবিআর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক বিষয়ক গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু সংবাদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে।
গত চার মাসে বাজারে নিত্যপণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে চাল, আলু, পেঁয়াজ, চিনি, ডিম, খেজুর, ভোজ্যতেল, ও কীটনাশকসহ আটটি পণ্যে আমদানি, স্থানীয় ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে জনস্বার্থে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর ছাড় দেওয়া হয়। এজন্য রাজস্ব আদায় ব্যাপকভাবে কমে যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্যান্য খাত থেকে রাজস্ব বাড়ানো না গেলে বিপুল পরিমাণ বাজেট ঘাটতি দেখা দেবে। তাই রাজস্ব বাড়াতে ভ্যাটের আওতা বাড়ানো হচ্ছে।২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যবর্তী সময়ে এনবিআরকে বিশেষ এ পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।
আইএমএফের চাপে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আইনে কিছু সংশোধন আনতে যাচ্ছে সরকার। যাতে ওষুধ, গুঁড়া দুধ, সিগারেট, বিমানের টিকিটসহ প্রায় অর্ধশত পণ্য ও সেবার ওপর বাড়তি মূসক ও শুল্ক আরোপ হতে পারে। এর ফলে বাজেটের আগেই এসব পণ্য ও সেবার দাম একদফা বাড়তে পারে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে। এসব সংশোধনীসহ মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধনী) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া সংসদবিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে গত বুধবার (১ জানুয়ারি) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও ছাড় কমেছে
রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি কমছে। এটা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ঋণের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি, একই সময়ে কমেছে অর্থ ছাড়ের পরিমাণও। বেড়েছে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইআরডির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সময়ে বিদেশি ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ৫২ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) একই সময়ে ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল ৫৮৫ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার। শতকরা হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে পাঁচ মাসে ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯১ শতাংশ। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে পাঁচ মাসে অনুদানের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৭ কোটি ৩৮ লাখ মার্কিন ডলার এবং ঋণের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৪ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এই সময়ে অনুদানের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৮ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। ঋণের প্রতিশ্রুতি ছিল ৫৫৭ কোটি ২৭ লাখ মার্কিন ডলার।
ইআরডি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই সময়ে উন্নয়ন সহযোগী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঋণ ছাড় করেছে চলতি অর্থবছরের ৫ মাসে ১৫৪ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে যা ছিল ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে অর্থ ছাড় কমেছে ২৭ শতাংশ।
ঋণ প্রতিশ্রুতি ও ছাড় কমে গেলেও এই সময়ে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জুলাই-অক্টোবরে যেখানে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল এক হাজার ৪৬৪ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার (এর মধ্যে মূল ঋণ পরিশোধে ব্যয় ৮৪৬ কোটি ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার এবং সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল ৬১৮ কোটি ১১ লাখ ডলার)। সেখানে চলতি অর্থবছরের ৫ মাসে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৪২ কোটি ৬৪ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ২৫৯ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার এবং সুদ খাতে ব্যয় হয়েছে ৭৮২ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার।
ইআরডি সূত্র জানায়, জুলাই এবং আগস্ট মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে, ফলে বিতরণ কমেছে। অনেক বৈদেশিক ঋণ দ্বারা তহবিলপ্রাপ্ত প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেছে, কারণ বিদেশি পরামর্শক এবং কর্মীরা অনুপস্থিত ছিলেন। সরকার বর্তমানে ঋণ প্রস্তাবগুলোর পর্যালোচনা করছে, যা নতুন ঋণ চুক্তির জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত হয়েছে। পর্যালোচনা শেষ হলে সরকার ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করার পরিকল্পনা করছে এবং তার লক্ষ্য পূরণের জন্য চেষ্টা করবে।তাছাড়া বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ (এডিবি) উন্নয়ন অংশীদাররা বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এদিকে, বর্তমান সরকার বৈদেশিক অর্থায়নে প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বন্ধ করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। ইআরডি সংস্থাগুলোকে বৈদেশিক ঋণ বরাদ্দের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলির একটি তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
শীতের প্রভাব বাণিজ্যমেলায়, ছুটির দিনেও উপস্থিতি কম ক্রেতা-দর্শনার্থীদের
চলছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা (ডিআইটিএফ)- ২০২৫। রাজধানীর উপকণ্ঠ পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অবস্থিত এ মেলার আজ তৃতীয় দিন। এদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম।
আয়োজক ও বিক্রেতারা বলছেন, বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে মেলায় মানুষ আসছে কম। এছাড়া মাসের শুরুতে অনেকের বেতন-ভাতা না হওয়ার কারণে তাদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। এসব কারণে ক্রেতা বাড়েনি সেভাবে। মেলায় কিছু ক্রেতা-দর্শনার্থী আসলেও তা আশানুরূপ নয়।
বিস্ক ক্লাবের ইনচার্জ মোহাম্মদ আদনান বলেন, ঠান্ডা বেশি। সচারাচর আমাদের স্টলে প্রচুর ভিড় থাকে প্রতিবছর, এখনও আছে। তবে অন্য বছরের মতো এখনো জমেনি।
মেলায় অংশ নেওয়া দিল্লি অ্যালুমেনিয়াম ফ্যাক্টরির ম্যানেজার ইসমাইল হোসেন বলেন, অন্য বছর শুক্রবারে মেলায় প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থী পাওয়া যেত। তবে এই শুক্রবার একবারে মাসের শুরুতে হওয়া ও শীতের কারণে ক্রেতা-দর্শনার্থী সমাগম কম। ফলে সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না।
মেলায় এখনো চলছে বেশিরভাগ স্টল, প্যাভিলিয়নের নির্মাণকাজ। নির্মাণসামগ্রী আনা নেওয়া এবং কাজের শব্দে বিরক্ত হচ্ছেন অনেক ক্রেতা-দর্শনার্থী। তবে স্টলের নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ থাকলেও অনেক স্টলে শুরু হয়েছে বেচাবিক্রি। মেলায় অনেক স্টলের কর্মীদের হাকডাক করে ক্রেতা ডাকতে দেখা গেছে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, অনেক স্টলে ভিড় থাকলেও কিছু কিছু স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থী একেবারেই কম।
কাশ্মির কার্পেটের এজাজুল হক বলেন, সকাল থেকে একটিও কার্পেট বিক্রি হয়নি। এমনকি মানুষ দেখতেও আসছে কম। যদিও এখন শীত বেশি বলে ভালো বিক্রির আশা করেছিলাম।
ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অলস সময় পার করতে দেখা যায়। তবে বিকেলের দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছু বাড়লেও তা আশানুরূপ নয়।
মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন স্টলে দায়িত্ব পালনকারীরা জানিয়েছেন, প্রথম দিকে সাধারণত বাণিজ্যমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকে। যে কারণে বিক্রি হয় কম। তবে এবার অন্যবারের তুলনায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরও কম।
শুরুতে ক্রেতা-দর্শনার্থী খরা দেখা দিলেও সামনে বাড়বে বলে আশা করছে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের অভিমত, আগামী সপ্তাহ থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে বাণিজ্যমেলা জমজমাট হয়ে উঠবে।
মেলার লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬১টি প্যাভিলিয়ন/স্টল/রেস্টুরেন্ট দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল, টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রি হবে।
বাংলাদেশ ছাড়াও সাত দেশের মোট ১১ প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।
এবারের বাণিজ্যমেলা সাজানো হয়েছে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান থিমে। এক্সিবিশন সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কালচারাল সেন্টার, টেকনোলজি কর্নার, রিক্রিয়েশন কর্নার এবং উত্তর-পূর্ব (৬ একর) পাশে শিশু পার্ক এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে ছত্রিশ চত্বর ও নামাজ ঘর রয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সবজিতে স্বস্তি থাকলেও চাল-মুরগির বাজারে অস্থিরতা
শীতের ভরা মৌসুমে প্রত্যাশার বেশি স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। তবে চাল ও মুরগির বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও নাখালপাড়া সমিতি বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
গত দুই সপ্তাহে কোনো কোনো চাল কেজিতেই বেড়েছে ১০ টাকা। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বাড়ার কথা বলে চালের দর বাড়াচ্ছেন মিলাররা। এভাবে অযাচিত দাম বাড়ার কারণে বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। ফলে সস্তায় শীতকালীন সবজি কিনে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও ক্রেতার সাশ্রয়ের সেই টাকা খেয়ে ফেলছে চালের বাজার।
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি করছেন ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর নাজিরশাইল বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়। ১৫ দিন আগেও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে দুই জাতের চালের কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ এবং ৮ থেকে ১০ টাকা।
বিআর-২৮ জাতের চালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। ২ থেকে ৫ টাকা দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া এ সময় মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। ১৫ দিন আগে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা চালের সরবরাহও দেখা গেছে। মিনিকেট জাতের এ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, মিলার ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার।
মিল পর্যায়ে দুর্বল তদারকির কারণে সরকারকে বিপদে ফেলতে মিলাররা কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন বলে মনে করেন মুক্তা রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. শাহাজান মিয়া। তিনি বলেন, ধানের দাম বাড়ছে এমন অজুহাতে মিলাররা চালের বাজার গরম করছেন। আসলে ধানের দর বাড়ছে কি না, জানি না।
সবজির দর কমে যাওয়ায় ডিমের দরও নেমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। তবে মুরগির দর আগের মতোই চড়া। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সরবরাহ বাড়ায় কয়েক দিন ধরে বেশ সস্তায় বিক্রি হচ্ছে সবজি। দু-তিনটি ছাড়া প্রায় সব সবজির দর ৬০ টাকার কমে মিলছে। বিশেষ করে প্রতি কেজি মুলা ও শালগম ১৫ থেকে ২০, শিম ২০ থেকে ৪০, গাজর ৫০ থেকে ৫৫, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৪০, উচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ এবং বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। তবে প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ৫০ থেকে ৭০, বরবটি ৫০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বড় আকারের প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। লাউয়ের পিস কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে
৫০ টাকায়।
আলুর বাজারেও স্বস্তির খবর রয়েছে। বাজার ভরে গেছে নতুন আলুতে। ফলে দর কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তবে পুরোনো আলুর কেজি কিনতে খরচ হবে ৫০ টাকা বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি।
অনেকটাই কমেছে পেঁয়াজের দর। প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ ও পুরোনো পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে। তবে কিছুটা বেড়ে দেশি রসুনের কেজি ২৩০ থেকে ২৩৫ এবং আমদানি রসুন ২২০ থেকে ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি কেনা যাচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। অপরিবর্তিত দেখা গেছে মাছের বাজার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মার্চ থেকে আমদানি-রপ্তানির সব কাজ অনলাইনে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন আগামী মার্চ মাস থেকে আমদানি ও রপ্তানির সকল কার্যক্রম পেপারলেস বা অনলাইনে হবে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) আংশিকভাবে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) চালু হয়েছে।
আমদানি ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগের অধীনে সাতটি কাস্টমস এজেন্সিকে একক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে।
রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে বিএসডব্লিউ-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম সহজতর করার কথা জানান।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির পর থেকে আমদানি ও রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ১৯টি ডিপার্টমেন্টের যত ধরনের লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয় আছে এতে কোনো ম্যানুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না, সব অনলাইনে করতে হবে। অন্যথায় আমাদের হাতেও ইন্সট্রুমেন্ট আছে। আমাদের অর্থসচিব অনলাইনে আবেদন না হলে সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের বরাদ্দ আটকে দেবেন।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, গত ১৫ বছরে ডিজিটাল করতে অনেক টাকা ব্যয় করা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। আমাদেরকে ডিজিটালের গল্প শোনানো হয়েছে শুধু। যাত্রাবাড়ী থানা পুড়ে গেল, কোনো ব্যাকআপ ডকুমেন্ট রইলো না। আমরা কার্যকর ডিজিটাল দেশ গড়তে অর্থায়ন করব।
এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের উপলব্ধি হয়েছে ডিজিটালের গুরুত্ব। সব নথিপত্র পুড়ে গেল কোনো ব্যাকআপ থাকলো না। অথচ বলা হয়েছিল দেশ ডিজিটাল হয়ে গেছে। স্মার্ট হয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে এসেছি স্মার্ট বাংলাদেশ হয়েছে, আমরা উন্নয়নের হাইওয়েতে প্রবেশ করেছি। এ ধরনের অনেক নেগেটিভ তৈরি হয়েছে। অথচ একটি থানার কাগজ পুড়ে গেলে অনলাইন না থাকায় তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে বিএসডব্লিউ-এর আওতায় এসেছে সাতটি সংস্থা। সেগুলো হলো পরিবেশ অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি ১২টি সংস্থাকে বিএসডব্লিউ-এর আওতায় আনা হবে। এর ফলে পুরো সিস্টেমটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।
আরও জানানো হয়, ওই সাতটি সংস্থা ইতোমধ্যে তাদের অটোমেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইনে আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত সকল প্রকার শংসাপত্র, লাইসেন্স এবং পারমিট পেতে পারবেন। ফলে, কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য আর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।
কাফি