Connect with us

জাতীয়

সেনাবাহিনীকে ধ্বংসের অভিপ্রায়ে পিলখানা হত্যাযজ্ঞ: মঈন ইউ আহমেদ

Published

on

ডিএসই

পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সে সময়ের সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘জাতির প্রত্যাশা পূরণে গঠিত কমিশনের তদন্তে (পিলখানা হত্যাকাণ্ডের) প্রকৃত তথ্য উদ্‌ঘাটিত হবে।

কারণ ওই হত্যাকাণ্ডে ভিকটিমরা ছিলেন বাংলাদেশের চৌকস অফিসারদের অন্যতম। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ধ্বংসের অভিপ্রায়ে ওই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। ’

গত ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ফ্লোরিডা থেকে টেলিফোনে নিউইয়র্কে এক সাক্ষাৎকারে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন সরকারের তদন্ত কমিশন গঠনের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় এসব কথা বলেন তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মইন বলেন, ‘চিকিৎসার প্রয়োজনে ফ্লোরিডায় থাকছি। এ নিয়েও নানাজনে নানা কথা রটাচ্ছেন। উদ্ভট কিছু মন্তব্যও পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো আমাকে ব্যথিত করে। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যিনি আগে গঠিত কমিশনের প্রধান ছিলেন তার সঙ্গে আমার ইতোমধ্যে কথা হয়েছে। ’

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্‌ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং কার মদতে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল তা এতদিন শুধু ক্ষমতাসীনদের মুখে একতরফা বয়ান হিসেবে উচ্চারিত হয়েছে। ভিকটিমরাও রহস্যময় কারণে সরব হননি। বিডিআরের কথিত ওই বিদ্রোহে ওই সময় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছে। সে কমিশনের প্রথম বৈঠক শেষে কমিশনের প্রধান এ এল এম ফজলুর রহমান বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে দেশিবিদেশি ষড়যন্ত্র যদি থেকে থাকে, তা চিহ্নিত করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। ’

সরকারের সেই তদন্ত কমিশন গঠনের ব্যাপারেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জেনারেল মইন।

জানা গেছে, বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে এই সাবেক সেনাপ্রধান ‘পিলখানায় পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন এবং তা শিগগিরই প্রকাশ হবে। সেখানেও অজানা অনেক তথ্য সন্নিবেশিত আছে বলে উল্লেখ করেন জেনারেল মইন।

এছাড়া বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ২৯ মিনিটের একটি ভিডিও-বক্তব্য সম্প্রতি ইউটিউবে আপলোড করেছেন জেনারেল মইন। সে ভিডিওর চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো।

জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ বলেছেন, তখন সেনাবাহিনী কী ভূমিকা নিয়েছিল এবং ঘটনা কী ছিল, সে সম্পর্কে মানুষের জানা উচিত।

সাবেক এই জেনারেল উল্লেখ করেন, সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত কিছু অস্ত্র (৮১ মিলিমিটার মর্টার, যেগুলো সেনাবাহিনী ব্যবহার করে না) বিডিআরকে দেওয়া নিয়ে বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের (হত্যাকাণ্ডে নিহত) সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে কথা হয়। তিনি অস্ত্রগুলো নিতে রাজি হন। তখন পর্যন্ত বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না বলেই সাবেক সেনাপ্রধানের বিশ্বাস। একটি বৈঠকে থাকার সময় ওইদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ সভাকক্ষে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, স্যার পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। ’

মইন ইউ আহমেদ বলেন, তখন ওই সভা স্থগিত করে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমার অফিসে এলাম। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। এডিসি ক্যাপ্টেন জুনায়েদকে নির্দেশ দিই টেলিফোনে যুক্ত করার জন্য। তাদের তাৎক্ষণিক সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি। সামরিক গোয়েন্দারা তখন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান।

পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে সময় বাঁচাতে কারও নির্দেশ ছাড়াই সেনাবাহিনীর ৪৬ ইনডিপেনডেন্ট পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিই। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রিস্টোর অর্ডার’। গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে পিএসও এফডি জেনারেল মবিনকে অবহিত করি। সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের ডিজিকে ফোনে পাওয়া গেল। আমি উনাকে বললাম- কী হয়েছে? তিনি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।

তিনি বলেন, দরবার চলাকালে দুজন সশস্ত্র সৈনিক দরবার হলে প্রবেশ করে। একজন আমার (ডিজির) পেছনে এসে দাঁড়ায় এবং অজ্ঞান হয়ে যায়। অপরজন দরবার হল ক্রস করে বাইরে চলে যায়। তার পরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরবার হলে উপস্থিত সৈনিকবৃন্দ গন্ডগোল শুরু করে দেয়।

মইন ইউ আহমেদ বলেন, মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। ডিজি আরও বলেন, আমি সেক্টর কমান্ডার এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডারকে পাঠিয়েছি তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য, যাতে করে পুনরায় দরবার শুরু করা যায়।

মইন ইউ আহমেদ উল্লেখ করেন, ওইদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মোবাইলফোনে পেলাম। এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।

৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন বলে জানান মইন উ আহমেদ।

ব্রিগেডটি এক ঘণ্টার মধ্যে যাত্রা করে উল্লেখ করে জেনারেল মইন বলেন, ৪৬ ব্রিগেডের তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা করে। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে। ওদিকে বিদ্রোহীরা বিডিআর গেটগুলোর সামনে আক্রমণ প্রতিহত করতে বিভিন্ন ভারী অস্ত্র মোতায়েন করে বলে উল্লেখ করেন মইন উ আহমেদ।

তিনি বলেন, বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়িটি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ করে রকেট হামলা চালায়। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, আমার নির্দেশ অনুযায়ী ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে আমার অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই বেশির ভাগ অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। তার মানে আমরা পৌঁছানোর আগেই বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড ওরা করে ফেলেছে।

মইন ইউ আহমেদ বলেন, ক্যাপ্টেন শফিকের নেতৃত্বে ৩৫৫ জন র‌্যাব সদস্য পিলখানায় পৌঁছান ১০টার আগেই। এ সময় তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পিলখানায় প্রবেশের অনুমতি চাইলেও তা পাননি। তাকে যদি অনুমতি দেওয়া হতো, (বিদ্রোহীরা তখনো পুরোপুরি সংঘটিত হতে পারেনি, কোনো ক্ষয়ক্ষতিও করতে পারেনি) তাহলে তিনি সহজেই ওদের কনটেন্ট করতে পারতেন।

সাবেক এই সেনাপ্রধান উল্লেখ করেন, ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাকে জানান, সরকার রাজনৈতিকভাবে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। বিদ্রোহীরা দাবি করেছে যে, কোনো আলোচনার আগে সেনাবাহিনীকে এ এলাকা থেকে চলে যেতে হবে। তাই সরকার আদেশ করেছিল, সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে হবে। অন্তত ২ কিলোমিটার উত্তরে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়।

আনুমানিক বেলা ১২টায় পিএসও ফোন করে জরুরি ভিত্তিতে আমাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যমুনায় যেতে বলেন। ওই সময় প্রতিটা ক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা হোক আমি যমুনায় রওনা হলাম। মইন উ আহমেদ বলেন, বেলা ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান। এরই মধ্যে সরকার থেকে বলা হলো, সেনাবাহিনী পিলখানার প্রধান ফটক এলাকায় থাকবে। র‌্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকায়। ডেইরি ফার্ম থাকা এলাকাটি অরক্ষিত ছিল।

মইন ইউ আহমেদ বলেন, যমুনায় গিয়ে অনেক লোককে দেখি, লোকে লোকারণ্য, হাঁটার জায়গা নেই। যাঁদের কোনো কাজ ছিল না। মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। আমি ভেবেছিলাম, সেখানে পৌঁছার সংবাদ জেনে তিনি আমাকে ভিতরে ডেকে নেবেন। কিন্তু তা করা হলো না। বেলা ২টার পর খবর এলো, পিলখানা থেকে একজন অফিসার পালিয়ে যমুনায় এসেছে। আমি তার কাছে ছুটে গেলাম। জানলাম যে বেশ কিছু অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ডিজি বিডিআর সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন। সে সময়ই নিশ্চিত হলাম যে বিডিআর বিদ্রোহীরা নিরপরাধ অফিসারদের হত্যা করেছে।

মন্ত্রিসভার পর আরেকটি ছোট বৈঠক করে তিন বাহিনীর প্রধানদের শেখ হাসিনা ডাকেন বলে উল্লেখ করে মইন ইউ আহমেদ।
তিনি বলেন, আমি যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান যমুনায় এসেছিলেন। শেখ হাসিনা আমাদের বললেন যে, রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম এবং তাপস বিদ্রোহীদের একটি ডেলিগেশন নিয়ে যমুনায় আসছেন এবং তারা (বিদ্রোহীরা) চাচ্ছে সাধারণ ক্ষমা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে আমরা (তিন বাহিনীর প্রধান) যেন তাদের বলি।

মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তখন আমি তাকে (শেখ হাসিনা) বলি, অপারেশন রিস্টোর অর্ডারের শুরুতেই আমাদের একজন সৈনিক নিহত হয়েছেন এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এইমাত্র খবর পেলাম বিদ্রোহীরা অনেক অফিসারকে হত্যা করেছে। আমি আরও বলি, বিদ্রোহীদের কোনো শর্ত মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, অফিসার হত্যা এ মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। আর একটি প্রাণও যেন না হারায়। দ্বিতীয়ত, আটক সব অফিসার এবং তাদের পরিবারকে এক্ষুনি মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্র, গোলাবারুদসহ সব বিদ্রোহীকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। চতুর্থত, আমি জোর দিয়ে বলি যে, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ’

বিকাল ৩টা ৪৮ মিনিটে ডিএডি তৌহিদের নেতৃত্বে ১৪ জন বিদ্রোহী আলোচনার জন্য যমুনায় আসেন। তাদের একটি বড় রুমে রাখা হয়। আমি আমার এডিসিকে বললাম, দেখো তো এদের মধ্যে নেতা কে, ডেকে নিয়ে এসো। এডিসি জুনায়েদ তৌহিদকে নিয়ে এলো। তার কাছে সবিস্তার জানতে চাইলাম কতজনকে হত্যা করা হয়েছে, এখন কী অবস্থা।

তিনি (আমাকে) বললেন, ‘সকাল ৯টায় বিদ্রোহীরা আমাকে একটি কক্ষে তালা মেরে রেখেছিল। এখন তালা খুলে আমাকে এখানে এনেছে। আমি কিছুই জানি না। ’ এ সময় আমি তাকে বলি যে, ‘আপনার সঙ্গে যারা এসেছেন তাদের কাছে জেনে আমাকে জানান। ’ তিনি ভেতরে চলে গেলেন, আর আসেননি বাইরে।

শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বলে উল্লেখ করে মইন ইউ আহমেদ বলেন, বৈঠকে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ছিলেন। সেখানে গিয়ে দেখি ওই ১৪ জনকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বললেন, যেটি আমি শুনেছি যে, তোমরা অস্ত্র-গোলাবারুদ সারেন্ডার করো এবং সবাই ব্যারাকে চলে যাও। পরে উনি (শেখ হাসিনা) সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেন।

আলোচনা শেষে জনাব নানক অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জানালেন পরিস্থিতির সারাংশ এবং এটাও বললেন যে, প্রধানমন্ত্রী এই বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। তারা বলেছেন, এখন আত্মসমর্পণ করবেন এবং ব্যারাকে ফিরে যাবেন। বিদ্রোহীরা ৬টা ৩৭ মিনিটে যমুনা থেকে পিলখানার উদ্দেশে রওনা দেয়। সেখানে গিয়ে তারা ঘোষণা দেয় যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমার প্রজ্ঞাপন তাদের হাতে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা আত্মসমর্পণ করবে না। তারা পুনরায় গোলাগুলি শুরু করে এবং অফিসারদের খুঁজতে থাকে।

মইন ইউ আহমেদ বলেন, রাত ১২টায় তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি পিলখানায় যান আলোচনার জন্য এবং তাদের সঙ্গে বসেন। একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করে এবং আটটি পরিবারকে মুক্তি দেয়। এর মধ্যে শুধু তিনটি পরিবার ছিল সেনা অফিসারদের। পাঁচটি ছিল ডিএডি ফ্যামিলি।

সাহারা খাতুন জানতেন, অফিসার এবং পরিবারের সদস্যদের কোয়ার্টার গার্ডে বন্দি করে রাখা হয়েছে। কিন্তু তিনি তাদের মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি, খোঁজখবরও নেননি। ওই ৮টি পরিবার নিয়ে তিনি পিলখানা থেকে বের হয়ে আসেন।

পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার গোলাগুলি শুরু করে বিদ্রোহীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে ডেকে নেন জানিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, তাকে জানানো হয় বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চান। সেটা দেওয়া হয়। তিনি ট্যাংক রওনা দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেন। অন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা কোনো শর্ত ছাড়া আত্মসমর্পণে রাজি হয়। শেখ হাসিনা বেলা ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই পরামর্শ তিনিই (মইন) দিয়েছিলেন।

সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রস্তুতি দেখে বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণের জন্য উদ্গ্রীব হয় এবং সাদা পতাকা টানিয়ে দেয়। রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করে। এর মাধ্যমে ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান হয়। প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যারা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ছিলেন।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়

পলিথিন ব্যাগ বন্ধে অভিযান, ৪৩৮ প্রতিষ্ঠানকে ২৮ লাখ টাকা জরিমানা

Published

on

ডিএসই

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস বলেছেন, গত ৩ নভেম্বর থেকে দেশব্যাপী ২১৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ৪৩৮টি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২৮ লাখ ৭৩ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং ৫৯ হাজার ৯৫৯ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর হাতিরপুল ও পলাশী কাঁচাবাজারে পলিথিন ব্যবহার রোধে পরিচালিত মনিটরিং কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

অবৈধ পলিথিন শপিংব্যাগ উৎপাদন বন্ধে অভিযান জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি।

তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, এজন্য মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। অবৈধ পলিথিন পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, পলিথিনের কারণে পরিবেশ দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এটি নদী-খালের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে এবং মাটির উর্বরতা নষ্ট করছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে জনসচেতনতা বাড়ানো ও বিকল্প ব্যাগ ব্যবহারে অভ্যস্ততা গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, বাজারে গেলে নিজের ব্যাগ নিয়ে যেতে হবে। পাটের, কাপড়ের ব্যাগের পাশাপাশি মোমপালিশ করা কাগজের ব্যাগে মাছ-মাংস নেওয়া যায়।

গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, আমরা পলিথিন বন্ধে সফল হতে সবার সহযোগিতা চাই।

মনিটরিং কার্যক্রমে পরিবেশ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

মনিটরিং টিম বাজারের দোকানগুলোতে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করে। দোকানিদের পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহারে উৎসাহিত করতে প্রচারণাও চালানো হয়।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

জাতীয়

১২০ দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করে যেসব প্রস্তাবনা দিতে যাচ্ছে কমিশন

Published

on

ডিএসই

২৫ নয়, ২১ বছরেই করা যাবে নির্বাচন, সংসদ হবে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট, দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রিত্ব নয়, এককেন্দ্রিক ক্ষমতা ঠেকাতে নানা প্রস্তাবনা দিতে যাচ্ছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে কমিশন। স্বৈরাচারের অনুকূলে থাকা ৭০ অনুচ্ছেদসহ বিতর্কিত ধারা বাতিলও থাকছে তাদের প্রস্তাবে। তবে কাগজ-কলমের এসব সংস্কার বাস্তবে রূপ দিতে রাজনৈতিক ঐক্যের উপর জোর দিচ্ছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।

স্বাধীনতার পর থেকে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে বার বার সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করেছে বিভিন্ন সরকার। সংসদীয় ব্যবস্থা পাল্টে একদলীয় ব্যবস্থা কিংবা সমরিক শাসনকে বৈধতা দিতে ব্যবহার করা হয়েছে সংবিধানকে। সবশেষ ১৬ বছরে শেখ হাসিনা সরকার স্বৈরতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে পঞ্চদশ সংশোধনীসহ বেশ কয়েকবার সংবিধানে আনে পরিবর্তন। সবমিলিয়ে ‘৭২-এর সংবিধানে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ১৭ বার পরিবর্তন আনা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালানোর পর দাবি ওঠে সংবিধান পরিবর্তনের। সেই ক্ষেত্রে পুনর্লিখন নাকি সংস্কার, তা নিয়ে মতভেদ দেখা যায় বিভিন্ন শিবিরে। ৬ অক্টোবর গঠন করা হয় সংবিধান সংস্কার কমিশন। ৩ মাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের মতামত নিয়েছেন সদস্যরা।

কমিশন প্রধান ড. আলী রীয়াজ বলছেন, বিভিন্ন পক্ষের প্রস্তাবনা এবং ১২০টি দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করে প্রস্তুত করা হয়েছে সংস্কার প্রস্তাবনা। পুনর্লিখন না হলেও কার্যকর সংস্কারের মাধ্যমে জন-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের আশা তার।

এক সাক্ষাৎকারে ড. আলী রীয়াজ বলেন, গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। জবাবদিহির ব্যবস্থা করতে হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে অংশীজনদের একটা বড় অংশ কথা বলেছেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা ও চিন্তাগুলোকে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি।

একনায়কতন্ত্র ঠেকাতে ক্ষমতার ভারসম্য আনার লক্ষ্য কমিশনের। সেই আলোকেই দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থার প্রবর্তন, দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়াসহ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসম্য আনার প্রস্তাবনা দেয়ার কথা বলছেন ড. আলী রীয়াজ।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, অনেক ধরনের মতের প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের একটা ভূমিকা থাকে। তাই এটাকে একটা ইতিবাচক হিসেবে আমরা বিবেচনা করেছি। প্রধানমন্ত্রীর জায়গায় একটা জবাবদিহি তৈরি করতে হবে।

তরুণদের দেশ গঠনের সুযোগ দিতে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার বয়স ৪ বছর কমিয়ে করা হচ্ছে ২১। এ ছাড়াও সংবিধানের বিভিন্ন বিতর্কিত ধারা পরিবর্তনে রাখা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা।

আলী রীয়াজ বলেন, সংসদ সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান বয়স ২৫ আছে। সেটি কমিয়ে ২১ বিবেচনা করেছি। সংবিধান ১৯৭২ সাল থেকে যে ১৭টি সংশোধন হয়েছে, সেগুলো বিবেচনায় রেখেছি যে এগুলোর শেষ পর্যন্ত কী লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।

এদিকে এসব সংস্কার প্রস্তাবনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও তা কার্যকর হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ আহসানুল করিম। রাজনৈতিক ঐকের ওপর জোর তার।

আহসানুল করিম বলেন, কী সংস্কার হবে, সেটা প্রতিটি দল একমত হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনগণের কথা চিন্তা করে প্রতিটি দলকে এমনভাবে একমত হতে হবে, যাতে সংস্কারের বিষয়ে পরবর্তী বাংলাদেশে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের যেন একটা দায়বদ্ধতা থাকে।

প্রস্তাবনা শেষে সব অংশীজনের মতামত নিয়েই চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাবনা তৈরি করবে অন্তর্বর্তী সরকার।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

জাতীয়

প্রবাসীদের এনআইডির সেবায় চার্জ পর্যালোচনা করবে ইসি

Published

on

ডিএসই

প্রবাসে বসে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সেবা নিতে হলে বর্তমানে চার দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রবাসীদের এনআইডি সেবা দেওয়ার সংস্থান না থাকায় সার্ভিস চার্জ নেওয়া হচ্ছে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল বিগত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সার্ভিস চার্জ নেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকায় কমিশন সভায় বিষয়টি পর্যালোচনা করবে ইসি।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটির’ সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অব.)।

সভায় জানানো হয়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধনের জন্য সার্ভিস চার্জ বিষয়ে বিগত কমিশনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। আইনানুযায়ী, বিনামূল্যে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। তবে প্রবাসে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যথাসময়ে সেই পরিমাণ অর্থ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা না থাকায় সেবা কার্যক্রমে যাতে বিঘ্নের সৃষ্টি না ঘটে সে লক্ষ্যে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা কার্যক্রম চলমান আছে সে সব দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতরা অন্যান্য কনস্যুলার সেবার জন্য যে হারে সার্ভিস চার্জ গ্রহণ করে থাকেন। জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও ধারাবাহিকতায় সার্বিক বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণ সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ পূর্বক সেবা গ্রহীতাদের নিকট হতে গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এবং এ সার্ভিস চার্জ গ্রহণ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে পৃথক ব্যাংক হিসাব খুলে সব আয়-ব্যয় সম্পন্ন করবেন।

গত কমিশনের সিদ্ধান্তের আলোকে কতিপয় দেশে সার্ভিস চার্জ গ্রহণ করা হচ্ছে। যেমন-মালয়েশিয়া ৭৫ রিঙ্গিত, কুয়েত ৩ কুয়েতি দিনার, কাতার ৫৫ রিয়াল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ৫০ দিরহাম। যেহেতু এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের সম্মতি/মতামত গ্রহণ করা হয়নি, সেহেতু সেটি পর্যালোচনপূর্বক পুনরায় কমিশনে বিষয়টি উপস্থাপন করতে প্রবাসী ও নিবন্ধন অধিশাখার পরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছে কমিটি।

এছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশনে নির্বাচন কমিশনের জনবল পদায়নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রবাসী ও নিবন্ধন শাখা পরিচালককে নির্দেশনাও দিয়েছেন ইসি সানাউল্লাহ।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

জাতীয়

২০২৪ সালে সড়কে ঝরেছে ৮ হাজার ৫৪৩ প্রাণ

Published

on

ডিএসই

গেলো ২০২৪ বছরে ৬ হাজার ৩৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫৪৩ জন আর আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৬০৮ জন। ২০২৪ সালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘২০২৪ সালের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬ হাজার ৯৭৪টি দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ২৩৭ জন নিহত এবং ১৩ হাজার ১৯০ জন আহত হয়েছেন। রেলপথে ৪৯৭টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত, ৩১৫ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১১৮টি দুর্ঘটনায় ১৮২ জন নিহত, ২৬৭ জন আহত এবং ১৫৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এ সময়ে ২ হাজার ৩২৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৫৭০ জন নিহত ও ৩ হাজার ১৫১ জন আহত হয়েছে।

বিগত ১০ বছরে মোটরসাইকেল ১৫ থেকে ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে, নতুন করে ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় নামার পাশাপাশি ছোট যানবাহন অবাধে বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ভয়াবহভাবে বাড়ছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়কে ১.৫৪ শতাংশ দুর্ঘটনা, নিহত ৭.৫০ শতাংশ এবং আহত ১৭.৭৩ শতাংশ বেড়েছে।

২০২৪ সালে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ১৬৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১ হাজার ৯৫২ জন চালক, ১ হাজার ৮৭৯ জন পথচারী, ৬২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫৫ জন শিক্ষার্থী, ১২৬ জন শিক্ষক, ১ হাজার ২০৬ জন নারী, ৬৫৮ জন শিশু, ৪৮ জন সাংবাদিক, ১৭ জন চিকিৎসক, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন চিত্রনায়ক, ছয়জন আইনজীবী, ১২ জন প্রকৌশলী এবং ২১৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এর মধ্যে ৩৯ জন পুলিশ সদস্য, ২১ জন সেনা সদস্য, পাঁচজন আনসার সদস্য, একজন র‍্যাব সদস্য, একজন ফায়ারসার্ভিস সদস্য, একজন বিমানবাহিনীর সদস্য, ১২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২১ জন সাংবাদিক, ৭২৭ জন নারী, ৫৩৬ জন শিশু, ৪৩৪ জন শিক্ষার্থী, ৯৯ জন শিক্ষক, ১ হাজার ৩৭২ জন চালক, ২৬৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮ জন প্রকৌশলী, ৪ জন আইনজীবী, ১১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ১৫ জন চিকিৎসক ও এক হাজার ৯ জন পথচারী নিহত হয়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫০.৮৪ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা, ২৪.৩৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮.৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৪.৯৯ শতাংশ বিবিধ কারনে, ০.৩১ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং ০.৭৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বেপরোয়া গতি, বিপদজনক ওভারটেকিং, সড়ক নির্মাণে ত্রুটিসহ ২২টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মনে করেন, সরকার বদল হলেও পরিবহনের কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। তাই সড়ক দুর্ঘটনায় রোধে দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নসহ ১৩দফা সুপারিশ দিয়েছে সংগঠনটি।

সড়ক পরিবহন সেক্টরে অনিয়ম-দুর্নীতির ও সড়কে চাদাবাজি বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

জাতীয়

ঢাকা ওয়াসায় প্রবেশে লাগবে পাস

Published

on

ডিএসই

নিরাপত্তা জোরদারে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। এখন থেকে পাস ব্যতীত প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না বহিরাগত কোনো ব্যক্তি।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। এর আগে ঢাকা ওয়াসার সচিব মশিউর রহমান খান অফিস আদেশ জারি করে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন।

আদেশে ঢাকা ওয়াসার সচিব মশিউর রহমান খান উল্লেখ করেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা ওয়াসায় নিরাপত্তা কার্যক্রম জোরদার এবং অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, এ উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে– ঢাকা ওয়াসার কোনো প্রতিষ্ঠানে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি ওয়াসার পাস ব্যতীত প্রবেশ করতে পারবে না; সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইডি কার্ড ব্যতীত প্রবেশ করতে পারবে না; আগত ভিজিটরদের অস্থায়ী আইডি কার্ড নিতে হবে, যা দৃশ্যমান রাখতে হবে; ওয়াসা ভবনে আধুনিক অগ্নিনিরাপত্তা সিস্টেম চালু করতে হবে; ঢাকা ওয়াসার সব স্থাপনার নিরাপত্তা কার্যক্রম দিনরাত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে জোরদার করতে হবে।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার3 hours ago

ডিএসইতে পিই রেশিও বেড়েছে ০.৭৪ শতাংশ

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন বিদায়ী সপ্তাহে (২৯ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার4 hours ago

সপ্তাহজুড়ে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ দরপতন

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন বিদায়ী সপ্তাহে (২৯ ডিসেম্বর থেকে ০২ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহজুড়ে...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার4 hours ago

সপ্তাহের ব্যবধানে ওয়েস্টার্ন মেরিনের শেয়ারদর বেড়েছে ৪৪ শতাংশ

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন বিদায়ী সপ্তাহে (২৯ ডিসেম্বর থেকে ০২ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক...

Orion Infusion Orion Infusion
পুঁজিবাজার5 hours ago

সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে ওরিয়ন ইনফিউশন

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন বিদায়ী সপ্তাহে (২৯ ডিসেম্বর থেকে ০২ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার22 hours ago

ডিএসইর লেনদেনের সঙ্গে বাজার মূলধন বাড়ল ২৭৯১ কোটি টাকা

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন বিদায়ী সপ্তাহে (২৯ ডিসেম্বর থেকে ০২ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

ব্লকে ৮ কোটি টাকার লেনদেন

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন সপ্তাহের শেষ ও বছরের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে মোট ১৯টি কোম্পানির শেয়ার...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ দরপতন

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮টি কোম্পানির...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

দরবৃদ্ধির শীর্ষে রূপালী ব্যাংক

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

লেনদেনের শীর্ষে রবি আজিয়াটা

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

সূচকের পতনে লেনদেন কমেছে পুঁজিবাজারে

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচকের নেতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শেষ...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

সূচকের পতনে দুই ঘণ্টায় লেনদেন ১২৯ কোটি টাকা

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের নেতিবাচক প্রবণতায় চলছে লেনদেন।...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধির খবরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে রুপালী ব্যাংকের শেয়ার

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরুর দুই ঘন্টার মধ্যে বিক্রেতা উধাও হয়ে...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার2 days ago

দুই কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার3 days ago

লোকসান কাটাতে পারেনি স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড গত ৩০ সেপ্টেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪)...

ডিএসই ডিএসই
পুঁজিবাজার3 days ago

লোকসানে এইচ আর টেক্সটাইল

অর্থসংবাদ whatsapp চ্যানেল ফলো করুন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এইচ আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড গত ৩০ সেপ্টেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের...

Advertisement
Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়া

২০১৮ সাল থেকে ২০২৩

অর্থসংবাদ আর্কাইভ

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১