আন্তর্জাতিক
রাশিয়ার বড় বড় পোশাক কারখানা সরিয়ে আনা হতে পারে বাংলাদেশে
উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া ও শ্রমিক সংকটে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় পোশাক প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোতে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটি। এর মধ্যে রয়েছে গ্লোরিয়া জিনস নামের পোশাক কোম্পানি।
রাশিয়াজুড়ে গ্লোরিয়া জিনসের ১৮টি কারখানা রয়েছে। তারা মূলত পোশাক ও জুতা তৈরি করে।
সম্প্রতি রুশ গণমাধ্যম কমারসান্তকে উদ্ধৃত করে ইউক্রেনের অনলাইন সংবাদপত্র ইউক্রেইনস্কা প্রাভদা জানিয়েছে, রাশিয়ার পোশাকশিল্পে দক্ষ কর্মীর সংকট দিনে দিনে গভীর হচ্ছে। ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটিতে শ্রমিক-ঘাটতি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। শ্রমিক-সংকটের পাশাপাশি রাশিয়ায় তৈরি কাঁচামাল ও আনুষঙ্গিক উপকরণের মানও খারাপ। ফলে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের অন্য দেশ থেকে পণ্য জোগাড় করতে হচ্ছে।
এ ছাড়া পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এর ফলে বিদেশ থেকে সেলাই করার যন্ত্রপাতি আমদানি করা রুশ ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এসব আমদানির বিপরীতে দাম পরিশোধ করা যাচ্ছে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাশিয়ার সালস্কের একটি সেলাই কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে এবং সেখানকার কর্মীদের অন্য কারখানায় চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ঠিক এসব কারণে রস্তভ এলাকায় অবস্থিত কারখানাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গ্লোরিয়া জিনস কোম্পানিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ কার হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, একসময় চীন ছিল রাশিয়ার পোশাক প্রস্তুতকারকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। কিন্তু রুশ ব্র্যান্ডগুলো এখন আর চীনে যেতে খুব একটা আগ্রহী নয়। ফ্যাশনশিল্পের সঙ্গে জড়িত এক প্রতিনিধি বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, বর্তমানে চীনে শ্রমিক মজুরি বাংলাদেশ কিংবা উজবেকিস্তানের তুলনায় অনেক বেশি।
তাই কোম্পানিটি তাদের উৎপাদনব্যবস্থা ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ বা উজবেকিস্তানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। কারণ উজবেকিস্তানে তুলার উৎপাদন হয়, সে কারণে কাঁচামালের স্থিতিশীল সরবরাহ রয়েছে। এসব দেশে ভালো মানের শিল্পসুবিধা বিদ্যমান। ফলে কাঁচামালের সরবরাহ কিংবা উৎপাদন খরচ নিয়ে কোনো ঝামেলা পোহাতেও হয় না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতীয় পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, মার্কিন কিছু পণ্যের ওপর নয়াদিল্লি যে ‘উচ্চ শুল্ক’ আরোপ করেছে, তার জবাবে তিনিও দেশটির পণ্যের ওপর সমান শুল্ক আরোপ করবেন।
গত সোমবার ফ্লোরিডার পাম বিচে নিজ বাসভবন মার-এ লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই হুমকি দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বিষয়টি হলো—পারস্পরিকতা। তারা (ভারত) যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, আমরা তাদের ওপর ঠিক একই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করব। তারা আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে। আমরা তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করব। এবং তারা প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, কিন্তু আমরা তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করিনি।
চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, ভারত-ব্রাজিলসহ এমন কিছু দেশ আছে যারা মার্কিন কিছু পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে। এর আগেও একবার ট্রাম্প এই একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, পারস্পরিকতা কথাটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কেউ যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করে, ভারত যদি আমাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তাহলে আমরা কি তাদের জন্য শূন্য শুল্ক আরোপ করব? তারা একটি সাইকেল পাঠায় আর আমরা একটি সাইকেল পাঠাই। তারা আমাদের ওপর ১০০ থেকে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। ভারত অনেক শুল্ক আরোপ করে। ব্রাজিলও অনেক শুল্ক আরোপ করে। তারা যদি আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করতে চায়—সেটা ঠিক আছে, কিন্তু আমরাও তাদের ওপর একই শুল্ক আরোপ করব।
একই সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প মনোনীত বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, পারস্পরিক সম্পর্ক ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে। আপনারা আমাদের সঙ্গে যেমন আচরণ করবেন, আপনাদেরও তেমন আচরণের প্রত্যাশা রাখতে হবে।
এর আগে, গত অক্টোবরে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত বিদেশি পণ্য আমদানিকে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করে থাকে এবং তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ভারতীয় পণ্যেও ‘রেসিপ্রোকাল ট্যাক্স’ (পারস্পরিক সমানুপাতিক কর) চালু করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, আমার পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, আমেরিকাকে অত্যন্ত ধনী করে তোলা এবং এর মূল কথা হচ্ছে সমান-সমান আচরণ। আমরা সাধারণত শুল্ক আদায় করি না। আমি সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। চীন আমাদের পণ্যে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, ব্রাজিল বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী, আর সব থেকে বড় শুল্কারোপকারী হলো ভারত।
তিনি বলেন, ভারত খুব বড় ধরনের শুল্ক আরোপকারী দেশ। আমাদের ভারতের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির নেতা মোদির সঙ্গে, তিনি একজন মহান নেতা। সত্যিই তিনি একজন মহান ব্যক্তি। তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, চমৎকার কাজ করছেন। কিন্তু তারাও বেশ বড় শুল্ক আদায় করে।
ট্রাম্পের সম্ভাব্য এই শুল্কনীতি ভারতের আইটি, ওষুধ এবং টেক্সটাইল খাতে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এই খাতগুলো মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অপরদিকে, চীন থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ট্রাম্পের যে নীতি, তা ভারতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে। মার্কিন কোম্পানিগুলো যেহেতু তাদের সরবরাহ চেইন চীন থেকে সরিয়ে আনতে চায়, এর ফলে ভারত নিজেকে একটি উৎপাদন হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পেতে পারে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের কড়া অভিবাসন নীতিমালা, বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা নীতি ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। তাঁর প্রথম শাসনামলে বিদেশি কর্মীদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করেছিলেন। যা ভারতীয় আইটি পেশাজীবী এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন যদি আবার এই ধরনের পদক্ষেপ নেয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রভাবিত করবে, যেগুলো ভারতীয় কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সিরিয়ার ২৬ টন স্বর্ণের মজুত অক্ষত!
বিদ্রোহীদের তীব্র আক্রমণের মুখে সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ গত ৮ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়া চলে যান। তারপরও দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রায় ২৬ টন স্বর্ণর মজুত অক্ষত রয়েছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ শুরুর সময়ও ঠিক একই পরিমাণ স্বর্ণ ছিল।
এ বিষয়ে অবগত চারটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ খুবই কম।
সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যের বরাতে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলেছে, ২০১১ সালের জুনে দেশটিতে স্বর্ণের মজুত ছিল ২৫ দশমিক ৮ টন। রয়টার্সের হিসাবমতে, অর্থের অঙ্কে এটি ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের সমান।
সূত্রগুলোর একটি রয়টার্সকে বলেছে, নগদ অর্থে বর্তমানে সিরিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ২০০ মিলিয়ন (২০ কোটি) ডলারের মতো। অন্যদিকে আরেকটি সূত্র বলেছে, রিজার্ভের পরিমাণ ‘কয়েক শ মিলিয়ন ডলার’।
সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরুর বছর ২০১১ সালের শেষ নাগাদ সার্বিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর আগের বছর ২০১০ সালে আইএমএফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল আনুমানিক ১৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
সিরিয়ার বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, দেশটির ডলারের রিজার্ভ প্রায় শূন্য হয়ে আসার পেছনে কারণ হলো আসাদ সরকার খাদ্য, জ্বালানি ও যুদ্ধ তৎপরতায় এখান থেকে বেহিসাবি খরচ করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ সম্পর্কে সিরিয়ায় বিদ্রোহী যোদ্ধাদের নেতৃত্বাধীন নতুন ক্ষমতাসীন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে এ বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
১ হাজার পয়েন্টের বড় পতন ভারতের শেয়ারবাজারে
ভারতের শেয়ারবাজারে হাজার পয়েন্টের বেশি পড়ল বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) সেনসেক্স সূচক। আর ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) নিফটি সূচকের অবস্থাও ভালো না। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আবারও ৮০ হাজারের ঘরে নেমে এসেছে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই)। এদিন লেনদেন শেষে সেনসেক্স সূচকটি নেমেছে ৮০৬৮৪ পয়েন্টে। এতে সূচকটি কমেছে ১০৬৪ পয়েন্ট। আর ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি সূচক কমেছে ৩৩২ পয়েন্ট।
ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) শেয়ার সূচকের দৌড় শেষ হয়েছে ২৪,৩৩৬ পয়েন্টে।
শেয়ার বাজারের এই পতনের নেপথ্যে দু’টি কারণের কথা বলেছেন স্টক বিশেষজ্ঞেরা। প্রথমত, কিছু দিনের মধ্যেই সুদের হারের ব্যাপারে বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই হার কমলে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর বেশি লাভ করার সম্ভাবনা বাড়বে। সেক্ষেত্রে আরও চাঙ্গা হবে আমেরিকার শেয়ার বাজার। আর সেই আশাতেই ভারতীয় শেয়ারবাজারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটা বড় অংশ।
অন্যদিকে নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ডলারের নিরিখে হু হু করে কমেছে ভারতীয় টাকার দাম। বর্তমানে রেকর্ড পতনের পর সেটি ৮৪.৯২-তে নেমে এসেছে। ফলে ভারতের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের লাভের অংক কমেছে। এর জেরে বম্বে ও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগের উৎসাহ হারাচ্ছেন তাঁরা।
ব্রোকারেজ হাউজগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ১৪৯৭টি শেয়ারের দাম বেড়েছে। দর কমেছে ২৩৬০টি স্টকের এবং ৮৫টি শেয়ার অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিন নিফটিতে সর্বাধিক লোকসান হয়েছে শ্রীরাম ফিন্যান্স, ভারতী এয়ারটেল, গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ়, হিরো মোটোকর্প এবং জেএসডব্লু স্টিলের স্টকে। অন্য দিকে লাভের মুখ দেখিয়েছে একমাত্র সিপলা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চীনে ১০ দিন পর্যন্ত ভিসা ছাড়া থাকতে পারবেন পর্যটকরা
বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে চীন ভিসামুক্ত অবস্থানের সময়সীমা তিনগুণ বাড়িয়েছে। দেশটির স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ইমিগ্রেশন জানিয়েছে, এখন থেকে পর্যটকরা চীনে ১০ দিন বা ১৪০ ঘণ্টা ভিসা ছাড়াই অবস্থান করতে পারবেন। খবর সিএনএনের।
আগে চীনে ৭২ ঘণ্টা (৩ দিন) বা ১৪৪ ঘণ্টা (৬ দিন) পর্যন্ত ভিসামুক্ত থাকার সুযোগ ছিল। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই সময়সীমা ১৪০ ঘণ্টায় উন্নীত করা হয়েছে। চীন আশা করছে, এ উদ্যোগ বিদেশি পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের বেশি করে দেশটিতে ভ্রমণে উৎসাহিত করবে, যা দেশটির পর্যটন খাত এবং অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করবে।
ভিসামুক্ত নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ব্রাজিল, কানাডাসহ ৫৪টি দেশের নাগরিকরা চীনে ভ্রমণ করতে পারবেন। এ সুবিধা ব্যবহার করে তারা চীনের ২৪টি প্রদেশ এবং ৬০টি আন্তর্জাতিক বন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে শর্ত হলো, এটি কেবল তৃতীয় কোনো দেশে বা অঞ্চলে ট্রানজিটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
বেইজিং, সাংহাই, চেংডু, গুয়াংজু প্রভৃতি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলো ভিসামুক্ত নীতির আওতায় পড়ছে। তবে তিব্বত ও জিনজিয়াং-এর মতো বিশেষ অঞ্চলে প্রবেশ করতে অতিরিক্ত অনুমতি নিতে হবে।
হংকং ও ম্যাকাও বর্তমানে ২৪০ ঘণ্টা ভিসামুক্ত ট্রানজিট সুবিধা দিচ্ছে। এ দুই অঞ্চল তৃতীয় গন্তব্য হিসেবে ব্যবহৃত হলে পর্যটকরা এ সুবিধা নিতে পারবেন।
চীনের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক পর্যটন খাতের সঙ্গে দেশের সংযোগ আরও দৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
১০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাব থেকে বাদ পড়লেন আদানি-আম্বানি
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, ভারতের দুই ধনকুবের গৌতম আদানি ও মুকেশ আম্বানি বিশ্বের অভিজাত এলিট সেন্টিবিলিয়নিয়ার্স ক্লাব বা ১০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাব থেকে ছিটকে পড়েছেন।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ওয়েবসাইটটিতে প্রকাশিত তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়।
চলতি বছরের শুরুতে ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির ছেলে অনন্তের বিয়ের উদযাপনের জমক দেখে মানুষের চোখ কপালে উঠেছিল। সাত মাস ধরে চলা এই বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিদের বিনোদন দিতে রিহানা থেকে জাস্টিন বিবার কাকে না আনা হয়েছিল।
এই অনুষ্ঠানের আনুমানিক ব্যয় ৬০০ মিলিয়ন ডলার, এই অনুষ্ঠান পৃথিবীবাসীর সামনে ভারতের সুপার ধনীদের আত্মবিশ্বাসের ছবি তুলে ধরেছিল। তবে ছয় মাস পর পরিস্থিতি হঠাৎ বদলে গেছে।
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি দুই ভারতীয় ধনকুবেরই কঠিন সময় পাড় করছেন। বর্তমানে তাদের ব্যবসা এবং ব্যক্তিগত সুনাম উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রিলায়েন্সের এনার্জি ও রিটেল ব্যবসা কিছুটা থমকে যাওয়ায় আম্বানির ব্যবসা তেমন ভাল যাচ্ছে না এবং সম্পত্তির পরিমাণ কমেছে।
অন্যদিকে, মার্কিন বিচার বিভাগের তদন্তের মুখে পড়ে আদানির সম্পত্তির পরিমাণ কমেছে।
গত বছর তার বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশের পর গৌতম আদানির সম্পদের মূল্য কমে যায়। সেই প্রথমবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো নড়েচড়ে বসে। সেই থেকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছেন আদানি।
এরপর তিনি যখন ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠছিলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায়ের জেরে বড় ধরনের সংকটে পড়েছেন।
গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতের রায়ের জেরে গৌতম আদানির সম্পদের মূল্য অনেকটাই কমে গেছে। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের তদন্তের আওতায় রয়েছেন।
তবে দুইবারই অভিযোগ অস্বীকার করে আদানি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে এগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মার্কিন অভিযোগের পরে তিনি বলেন, তার প্রতিষ্ঠান ‘বিশ্বমানের নিয়ন্ত্রক কমপ্লায়েন্স’ মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোম্পানির বিরুদ্ধে হওয়া প্রতিটি আক্রমণ ‘আমাদের আরও শক্তিশালী করে তোলে’।
সম্ভবত এগুলোর ফলে নতুন বছরে আদানির প্রতিষ্ঠান এবং তার শেয়ারের দামের ওপর চাপ পড়বে।
হিন্ডেনবার্গের আক্রমণের পর আদানি তার আর্থিক অবস্থান শক্তিশালী করতে জোর পদক্ষেপ নেওয়ার পর গত জুন মাসে তার সম্পদ রেকর্ড ১২২.৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।
তবে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, বর্তমানে তিনি ৮২.১ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তবে সম্প্রতি বিলিয়ন ডলারের ক্লাব থেকে ছিটকে পড়া একমাত্র ভারতীয় ধনী নন তিনি।
এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির সম্পদও কমেছে, তবে তার সম্পদ কমার হার আদানির চেয়ে কিছুটা কম।
জুলাই মাসে আম্বানির সম্পদ রেকর্ড প্রায় ১২০.৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।
তার প্রধান ব্যবসা রিলায়েন্স গ্রুপ ভালো আয় করতে না পারা থেকে শুরু করে, জ্বালানি ব্যবসায় সংকট এবং রিটেইল ব্যবসায় ভোক্তা চাহিদা কমে গেছে। গত ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৯৬.৭ বিলিয়ন ডলারে।
আম্বানি তার ব্যবসার উন্নতির জন্য একটি কৌশলগত পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন। তিনি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তার কনগ্লোমারেট প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা, খুচরা ব্র্যান্ড এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। তবে খুচরা ব্যবসায় বিক্রি ও মুনাফার হার কমে গেছে।
এছাড়া, ভারতের প্রধান শহরগুলোর মুদির দোকান এবং গৃহস্থালির পণ্য বাজারে ডিজিটাল ব্যবসায়ীরা তাদের অবস্থান শক্তিশালী করছে।