আইন-আদালত
প্রভাবশালী দেশের সংসদে বাংলাদেশকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং প্রভাবশালী দেশের শীর্ষ সংসদীয় শুনানিতে অন্যায্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি সেক্যুলার সংবাদপত্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে বাংলাদেশের কথিত ধর্মীয় সহিংসতার মামলাগুলো তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে শফিকুল আলম জানান, নেত্র নিউজ যখন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে হামলার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল, আমি আশা করেছিলাম যে ঐক্য পরিষদ এই বিষয়ে একটি বিবৃতি দেবে।’
তিনি আরও বলেন, নেত্র নিউজ এমন একটি শীর্ষস্থানীয় তদন্তমূলক ওয়েবসাইট, যা বাংলাদেশের বড় বড় দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করে সুনাম অর্জন করেছে।
ওই পোস্টে প্রেস সচিব আরও লিখেছেন, নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সংখ্যালঘু পরিষদ যে ৯ জন হিন্দুর মৃত্যুর কথা বলেছিল, তাদের প্রায় সব কটির সঙ্গে রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত বা অন্যান্য কারণ যুক্ত ছিল, যা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নয়। তিনি বলেন, আমাদের আশা ছিল যে ঐক্য পরিষদ নেত্র নিউজের প্রতিবেদনটির জবাব দেবে; কারণ, এটি পরিষদের তথ্য সংগ্রহ এবং প্রতিবেদন তৈরির পদ্ধতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
প্রেস সচিব আরও বলেন, ঐক্য পরিষদ এ বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে আরেকটি বিতর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। শফিকুল আলম বলেন, ‘তারা বলেছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (যা ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে) অন্তত ৪৫ জন সংখ্যালঘু (অধিকাংশ হিন্দু) নিহত হয়েছে। আবার প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সংবাদপত্রগুলোর প্রথম এবং শেষ পাতায় প্রকাশিত হয়েছিল। ঐক্য পরিষদের এমন দাবির সত্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও কোনো গণমাধ্যমই তা চ্যালেঞ্জ করেনি।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, দেশের বৃহত্তম মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)–এর মতে, ২০২৩ সালে সংখ্যালঘুবিরোধী সহিংসতায় কেউ নিহত হয়নি এবং এ বছর (জানুয়ারি থেকে অক্টোবর) মাত্র দুজন নিহত হয়েছে। আসক একটি সেক্যুলার (ধর্মনিরপেক্ষ) গ্রুপ, বছরের পর বছর ধরে যেটির নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের একজন অপরাধ স্বীকারকারী। এর বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন মানবাধিকারবাদী আইনজীবী জেড আই খান পান্না। যিনি স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন যে তিনি বিচারে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে আগ্রহী হবেন।
শফিকুল আলম বলেন, ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনগুলোর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। সম্প্রতি একজন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে কথা বলার সময় ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করেছিলেন। তিনি বলেন, হিন্দুদের ওপর বিপ্লব-পরবর্তী হামলার প্রতিবেদনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ১১ মিলিয়নেরও বেশি বার দেখা হয়েছে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আমাদের জানা মতে, শক্তিশালী এবং সম্পদশালী হিন্দু আমেরিকান গোষ্ঠী, ভারতীয় জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং শীর্ষ ভারতীয় বিশ্লেষকেরা এই প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা তুলে ধরেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংখ্যালঘুবিরোধী সহিংসতা নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনগুলোই সবচেয়ে বড় উৎস।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঘটে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে আমরা এখনো আদর্শ দেশ হতে পারিনি। ধর্মীয়ভাবে আপত্তিকর ফেসবুক পোস্টের কারণে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। কিছু প্রান্তিক গোষ্ঠী ও ব্যক্তি প্রায়শই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায়।’ তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় ধর্মীয়ভাবে সংঘটিত ঘটনার সময় মানুষকে শান্ত থাকতে অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সুশীল সমাজের নেতাদের দ্বারা বৃহত্তর প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এ সময় তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই ঘটনাগুলোয় অসাধারণ রাজনৈতিক পরিপক্বতা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনগুলো পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনাগুলো বাড়িয়ে দেখিয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, শীর্ষস্থানীয় সেক্যুলার ও উদারপন্থী সংবাদপত্রগুলো সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কথিত সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে তাদের নিজস্ব তদন্ত করবে। আমরা আশা করি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও, যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, একই ধরনের তদন্ত করবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০১৩ সালে হেফাজত কর্মীদের গণহত্যা নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চমৎকার একটি তদন্ত করেছিল। আশা করি, তারা এখানে একই ধরনের তদন্ত করবে।’ সরকার যদি এই গুজব খণ্ডনের কাজ করে, তবে তার প্রতিবেদনের প্রতি সন্দেহের দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন ‘স্বাধীন সংবাদপত্র ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনাগুলো তদন্ত করুক। এটি একটি গুরুতর ইস্যু; কারণ, বাংলাদেশের বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং প্রভাবশালী দেশগুলোর শীর্ষ সংসদীয় শুনানিতে অন্যায্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ তো বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানোর অথবা দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানায় এসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে। এ কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথিত ঘটনাগুলোর ন্যায্য তদন্ত চায়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ঘন কুয়াশায় ৩ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আরিচা-কাজিরহাট ও শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে তিন ঘাটে প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৩টা থেকে ওই তিন রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই তিনটি নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। রাত ৩টার দিকে কুয়াশার মাত্রা তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করতে থাকে। এতে ফেরি চলাচলের চ্যানেলের বিকনবাতি ও মার্কিং পয়েন্ট কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে তিনটি নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এতে মাঝ নদীতে ছোট-বড় ৪টি ফেরি আটকে পড়ে।
বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তীব্র কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে ফরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার মাত্রা কমে গেলে এ নৌরুটে ফের ফেরি চলাচল ফের স্বাভাবিক হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ভূমি সেবার গতি শিগগিরই বৃদ্ধি পাবে: মন্ত্রণালয়
জনগণের দোরগোড়ায় ভূমিসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নাগরিকবান্ধব সফটওয়্যারগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। সফটওয়্যারগুলোতে পুরাতন সংস্করণ থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য স্থানান্তর করতে হয়েছে। ফলে এ মুহূর্তে সিস্টেমগুলো একটু ধীর গতিতে চলছে। বর্তমানে সফটওয়্যারগুলো ধীর গতিসম্পন্ন হওয়ায় নাগরিকরা ই-নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর এবং খতিয়ান সেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। সেবা পাওয়ার এ গতি শিগগিরই বৃদ্ধি পাবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, জনবান্ধব ভূমিসেবা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। হয়রানিমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত ভূমিসেবা সহজীকরণের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ১টি নতুন সফটওয়্যার ও ৪টি সফটওয়্যারের ২য় ভার্সন গত ১ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে উদ্বোধন করেন। জনগণের দোরগোড়ায় ভূমিসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নাগরিকবান্ধব এ সফটওয়্যারগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। নতুন সংস্করণ ই-নামজারি, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর ও ই-পর্চা ও মৌজা ম্যাপ (খতিয়ান) প্রাপ্তির জন্য নাগরিককে প্রথমেই এলএসজির মাধ্যমে প্রোফাইল তৈরি করে নিবন্ধন করতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় নাগরিককে অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্বোধন করা সফটওয়্যারগুলোতে পুরাতন সংস্করণ থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য স্থানান্তর করতে হয়েছে। ফলে এ মুহূর্তে সিস্টেমগুলো একটু ধীর গতিতে চলছে। এ ছাড়া সেবা প্রদান এবং সেবা গ্রহণে কিছু কারিগরি জটিলতা ও ক্রটি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ বিষয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিনিয়ত প্রাপ্ত ফিডব্যাক অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ সব ত্রুটি সমাধানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় ও প্রকল্পের একটি শক্তিশালী কারিগরি টিম গঠন করা হয়েছে এবং এ টিম দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে সফটওয়্যারগুলো ধীর গতিসম্পন্ন হওয়ায় নাগরিকরা ই-নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর এবং খতিয়ান সেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। সেবা প্রাপ্তিতে এ গতি শিগগিরই বৃদ্ধি পাবে।
এতে বলা হয়, ভূমিসেবা দেওয়া মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে নাগরিকদের ধৈর্যসহকারে আন্তরিকতার সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেন সে বিষয়ে ৮টি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনলাইন ভূমিসেবা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল তৈরি করে সরবরাহ করা হয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ গত ১০ ডিসেম্বর, সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করে সমস্যা সমাধানের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। জনবান্ধব, হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার জন্য সফটওয়্যার সম্পর্কিত সমস্যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধানে ভূমি মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণ কাঙ্ক্ষিত ভূমিসেবা পেতে কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের সব ভূমি মালিকদের কাছ থেকে আমরা আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
অপুষ্টিতে ভুগছে দেশের ১১.৯ শতাংশ মানুষ
ক্ষুধা মোকাবিলায় বাংলাদেশে অগ্রগতি হলেও এখনও মাঝারি মাত্রার ক্ষুধা বিরাজ করছে এখানে। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) ২০২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টির শিকার।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪-এর প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ১১ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকিতে এবং ২৩ দশমিক ছয় শতাংশের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি বয়সের তুলনায় যথেষ্ট কম।
মূলত চারটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে ক্ষুধা সূচকের স্কোর নির্ধারিণ করা হয়েছে: এর মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা এবং শিশুমৃত্যুর হার। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ খর্বকায়। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ১১ শতাংশ শারীরিকভাবে দুর্বল। পাঁচ বছর বয়সের আগে প্রায় ৩ শতাংশ শিশু মারা যায়।
রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের যৌথ আয়োজনে ‘ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের পথে: বাধা এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে। ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ ও কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড মিলেই এই প্রতিবেদন তৈরি করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং খাদ্যব্যবস্থা রূপান্তরের অন্যতম অনুঘটক হিসেবে জেন্ডার ন্যায্যতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি অর্জন করতে হলে ব্যক্তিপর্যায় থেকে শুরু করে সামগ্রিক ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে আইনি অধিকার, আনুষ্ঠানিক শর্তাবলি এবং অনানুষ্ঠানিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক রীতিনীতি, যা প্রায়ই পরিবার ও সমাজে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে।
বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪-এর তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ক্ষুধা নিরসনে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও এখনও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২-এর প্রকৃত ক্ষুধামুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে অনেক দূরে আছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও লিঙ্গবৈষম্যের কারণে এখনও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহু মানুষ খাবারের তীব্র সংকটে থাকে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, অনিরাপদ কৃষি চর্চার ফলে আমরা নিরাপদ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে পারছি না। এতে পুষ্টিনিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে না।
মাছসহ বাংলাদেশে যে ধরনের প্রাকৃতিক খাদ্য বৈচিত্র্য আছে, তা রক্ষার ওপর জোর দেন তিনি। এ ছাড়া খাদ্যনিরাপত্তায় নারীর লোকজ জ্ঞানকেও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি। এ সময় অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও খাদ্যব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে উল্লেখ করেন ফরিদা আখতার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
চাকরিতে বয়স সর্বোচ্চ ৩২ করে বিধি সংশোধন
বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ও পরীক্ষার ফি কমিয়ে নীতিমালা সংশোধন করেছে সরকার। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪ সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি গত ২৭ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের সই করা এ প্রজ্ঞাপনই বুধবারই গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণে পরীক্ষার্থীর সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছরের স্থলে ৩২ বছর করা হয়েছিল। এর আগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর এবং একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ৪ বার বিসিএসে অংশ নিতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে সর্বোচ্চ ৪ বারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিদ্যমানের মতো যতখুশি ততবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিধান রাখার পক্ষে মত দেয়। পিএসসির ওই সুপারিশের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ ৪ বার বিসিএস-এ অংশগ্রহণের বিষয়টি বিধিতে যুক্ত হয়নি। এর অর্থ একজন প্রার্থী ২১ থেকে ৩২ বছর বয়সের সময়কালে যতবার ইচ্ছে বিসিএসে অংশ গ্রহণের সুযোগ পাবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মানসুর হোসেন বলেন, বিধিমালায় যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে সেটাই কার্যকর। চার বারের বেশি অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি যেহেতু বিধিমালায় নেই কাজেই ধরে নিতে হবে ওটা কার্যকর হচ্ছে না।
এদিকে বিধিমালায় আগে মুক্তিযোদ্ধার কোটা, প্রতিবন্ধী, স্বাস্থ্য ক্যাডার এবং অনগ্রসর নাগরিকদের ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষায় বয়স সীমা ৩২ বছর থাকলেও বিধি সংশোধন করে এ সংক্রান্ত দুটি উপধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ নতুন বিধি অনুযায়ী সবার ক্ষেত্রে ৩২ বছর করা হয়েছে।
বিধিমালায় বিসিএসে অংশগ্রহণে পরীক্ষার ফি ৭০০ টাকার স্থলে ২০০ টাকা এবং অনগ্রসর নাগরিকদের ১০০ টাকার স্থলে ৫০ টাকা করা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় বিদ্যমান ২০০ নম্বর থেকে কমিয়ে ১০০ নম্বর করা হয়েছে। এর ফলে মোট নম্বর ১১০০ এর স্থলে ১০০০ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
সাত দিনের মধ্যে সম্পদের হিসাব দেবেন দুদক চেয়ারম্যান
আগামী সাত দিনের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দেবেন এবং তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নব নিযুক্ত চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে কমিশনার ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ছিলেন।
এর আগে আজ এক সংবাদ বিবৃতিতে দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনার পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আয় ও সম্পদ বিবরণী, দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশের আহ্বান জানায় টিআইবি।
এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দেবো এবং এটি জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যেখান থেকে নবজাগরণের সৃষ্টি সেটা হচ্ছে বৈষম্য। বৈষম্য মানেই দুর্নীতি। আমরা যদি দুর্নীতিকে কাত করতে পারি, কমিয়ে আনতে পারি তাহলে বৈষম্য ক্রমাগত কমে যাবে। একেবারে নির্মূল হয়ত হবে না। যেসব বিষয়ে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে রাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো যারা ঘটিয়েছেন তারা যাতে শেষ পর্যন্ত ছাড় না পান আমরা সে বিষয়টিই চেষ্টা করব।
এর আগে বিকেল সাড়ে তিনটায় দুদক কার্যালয়ে আসেন নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার আজিজী। তারা দায়িত্ব বুঝে নেন।
গতকাল মঙ্গলবার সদ্য পদত্যাগ করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদকে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।