পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি কমেছে
দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে দরপতনের ফলে অনেক শেয়ারের মূল্য প্রকৃত দামের নিচে নেমে গেছে। এ ক্ষেত্রে মৌল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের মূল্য অনেক কমেছে। ফলে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই) আরও কমেছে। এতে বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি কমেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বিদায়ী সপ্তাহে (১ ডিসেম্বর-৫ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে ০ দশমিক ৭৩ শতাংশ বা ০ দশমিক ০৭ পয়েন্ট।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ারবাজারে পিই রেশিও যত কম বিনিয়োগ ঝুঁকিও ততো কমে। পাশাপাশি পিই রেশিও বাড়লে বিনিয়োগ ঝুঁকি বাড়ে। তবে বিদায়ী সপ্তাহে পিই রেশিও আরো কমেছে, পিই রেশিও কমায় শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকি মুক্ত অবস্থানে আছে।
দেশের শেয়ারবাজারের শেয়ারদর এখন এমনিতেই সর্বনিম্ন তলানিতে অবস্থান করছে। যে কারণে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ শেয়ারই এখন বিনিয়োগের জন্য এমনিতেই ঝুঁকিমুক্ত।
আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯ দশমিক ৫১ পয়েন্ট।
খাতভিত্তিক হিসাবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত ৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ৫ দশমিক ০৮ পয়েন্ট, ব্যাংক ৬.৩৮ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাত ১০.৭৩ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাত ১০.৮১ পয়েন্ট, বস্ত্র খাত ১০.৮৯ পয়েন্ট, ওষুধ ও রসায়ন খাত ১১.২৩ পয়েন্ট, টেলিযোগাযোগ খাত ১২.৫৬ পয়েন্ট, আর্থিক খাত ১২.৬৩ পয়েন্ট, বীমা খাত ১৩.২৫ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাত ১৪.৩১ পয়েন্ট, বিবিধ খাত ১৬.৯ পয়েন্ট, তথ্যপ্রযুক্তি খাত ১৮.৬৪ পয়েন্ট, পেপার ও প্রিন্টিং খাত ২৬.৬২ পয়েন্ট, চামড়া খাত ৩৫.৮৬ পয়েন্ট, পাট খাত ৪০.৪১ পয়েন্ট, ভ্রমণ ও আবাসন খাত ৬০.১১ পয়েন্ট এবং সিরামিক খাত ৮৯.২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
জুট স্পিনার্সের লোকসান বেড়েছে ৪৮ শতাংশ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জুট স্পিনার্স লিমিটেড ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে হিসাববছরের সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১০ টাকা ৬৩ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে লোকসান হয়েছিল ৫ টাকা ৫০ পয়সা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো হয়েছে মাইনাস ১ টাকা ৫২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩৬ পয়সা।
সমাপ্ত সময়ে শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে মাইনাস ৫৯৮ টাকা ৫০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল মাইনাস ৫২৭ টাকা ৬৯ পয়সা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেনের ক্যাটাগরি পরিবর্তন
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন লিমিটেডের ক্যাটাগরির উন্নতি হয়েছে। কোম্পানিটিকে ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, গত ৩০ জুন, ২০২২ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে। যে কারণে কোম্পানিটিকে ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) থেকে কোম্পানিটি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করবে।
উল্লেখ্য, বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী ক্যাটাগরি পরিবর্তনের ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানিটি কোনো ঋণ সুবিধা পাবেনা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের এজিএমে লভ্যাংশ অনুমোদন
পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিভিও পেট্রোক্যামিকেল রিফাইনারী পিএলসির ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সমাপ্ত ২০২৪ হিসাববছরের জন্য ঘোষিত ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) হাইব্রিড প্ল্যাটফর্মে দ্যা কিং অব চিটাগাং-এ এবং অনলাইনে লাইভ ওয়েবকাস্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম শামীম।
বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম হাবিব উল্লাহ, পরিচালকবৃন্দ মো. আলী মরতুজা, মো. এমরানুল হক, জোবেদা খানম শাফী, মোহাম্মদ মহসিন সাকি এবং নুরে হাবিব নোমান, স্বতন্ত্র পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আ ফ ম ইসহাক ও ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মিজবাহুর রহমান, কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক ও চীফ অডিটর আহমদুল হক হাসান, এক্সটার্ণাল অডিটর মোসার্স কেএম হাসান এন্ড কোং এর প্রতিনিধি মো. আমিরুল ইসলাম এফ. সি. এ, প্রধান হিসাব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তালেব। উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিব খাজা মঈন উদ্দিন হোসেন উক্ত সভা সঞ্চালনা করেন এবং তিনি সভার আলোচ্যসূচী সমূহ উপস্থাপনের পাশাপাশি আলোচ্যসূচী সমূহের উপর প্রাপ্ত ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন।
হাইব্রিড প্রোগ্রামে বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশগ্রহণকারী সাধারণ শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ এজিএম লিংকে প্রবেশের মাধ্যমে সভা শুরুর ২৪ ঘন্টা পূর্ব থেকে সভা চলাকালীন সময় পর্যন্ত কোম্পানির সার্বিক বিষয়ে তাঁদের মূল্যবান প্রশ্ন ও মতামত পেশ করেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের মূল্যবান ভোট প্রদানের মাধ্যমে কোম্পানির ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভার আলোচ্যসূচী সমূহের অনুমোদন করেন। বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারবৃন্দের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ব্যাপারে কোম্পানির পরিচালকমণ্ডলীর প্রস্তাব অনুমোদনের মাধ্যমে কোম্পানির ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভার অন্যান্য আলোচ্যসূচী সমূহ অনুমোদিত হয় ।
শেয়ারহোল্ডারবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্ন ও মতামতের ভিত্তিতে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম হাবিব উল্ল্যাহ তার মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন। পরিশেষে কোম্পানির চেয়ারম্যান শামসুল আলম শামীম জ্বালানী মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনসহ সরকারের দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং অংশগ্রহণকারী সকল শেয়ারহোল্ডারদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও কল্যাণ কামনা করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো ঢাকা ডাইং
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা ডাইং অ্যান্ড ম্যানুফেকচারিং কোম্পানি লিমিটেড গত ৩০ জুন,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানিয়েছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারকে কোন লভ্যাংশ দেবে না।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৫৮ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৫৮ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
আগামী ৩০ জানুয়ারি কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ০৭ জানুয়ারি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
জরিমানার হিড়িক, ইতিবাচক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় নেতিবাচক গুঞ্জনে অস্থির পুঁজিবাজার
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত, বর্তমানে বিভিন্ন অনিয়ম ও শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার আরোপিত জরিমানার কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জরিমানার ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। তবে, এ ধরনের জরিমানার অর্থনৈতিক প্রভাব এবং এর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার অভাব অনেক প্রশ্ন তৈরি করেছে। বিনিয়োগকারীরা একদিকে নিয়ম ভঙ্গকারীদের শাস্তি দেওয়ার পক্ষে থাকলেও, অন্যদিকে বাজারের সামগ্রিক উন্নতি নিশ্চিত করার আগে এ ধরনের পদক্ষেপকে তারা অযৌক্তিক বলে মনে করছেন।
পুঁজিবাজারে জরিমানা আরোপের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শেয়ার লেনদেন ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আর্থিক প্রতিবেদনে গরমিল, শেয়ার কারসাজি এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার মত অনিয়মের ক্ষেত্রে জরিমানা আরোপ একটি প্রচলিত পদ্ধতি। সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু লিস্টেড কোম্পানি সময়মতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় কিংবা ভুল তথ্য প্রদান করাসহ নানাবিধ অনিয়মের কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের জরিমানা করেছে। এছাড়াও অনিয়ম, শেয়ার কারসাজি ও বাজার নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগে বেশ কিছু বিনিয়োগকারী এবং ব্রোকার হাউজকে জরিমানা করেছে, যা চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।
পুঁজিবাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার সৎ প্রচেষ্টায় প্রতিনিয়ত জরিমানা করার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিশেষভাবে লক্ষণীয়। অনেকে মনে করছে, এটি বাজারে শৃঙ্খলা আনতে একটি কার্যকর উপায়, কারণ এটি অনিয়মকারী কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের সতর্কবার্তা প্রদান করছে এবং দীর্ঘমেয়াদে এর ভালো ফল পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের জরিমানার অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করেন, জরিমানা করার আগে বাজারের বুনিয়াদী অবস্থা উন্নত করা জরুরি এবং বর্তমানের নিয়মিত জরিমানা বিধান প্রয়োগের ফলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যার ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তবে, অনিয়মে নিমজ্জিত কোম্পানিগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মত তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, তারা জরিমানার বিপক্ষে আপীল করার সুযোগ পাচ্ছে।
কঠোর হস্তে জরিমানা আরোপের ফলে যেমন দীর্ঘমেয়াদী শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব, তেমনি পুঁজিবাজারে একধরনের আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেক বিনিয়োগকারী তাদের অর্থ বাজারে বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন, কারণ তারা মনে করছে অনিয়মকারী কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। একই সঙ্গে, বাজারে তারল্য সংকটও দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
জরিমানার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর অর্থ কোথায় এবং কীভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি নিয়ে এখনও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে সাধারণতঃ এই টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয় বলেই আমরা জানি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দাবি উঠেছে যে, এই জরিমানার অর্থ যদি একটি ‘বিনিয়োগকারী সুরক্ষা ফান্ড’ গঠনে ব্যবহৃত হয় তাহলে এটি পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই ফান্ড থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পূরণ বা প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে, শেয়ার মূল্যের পতনে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় এই ফান্ড ব্যবহার করার প্রস্তাব অনেক ইতিবাচক বিশ্লেষকের কাছ থেকে এসেছে।
পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায়, জরিমানা আরোপের পাশাপাশি বাজার উন্নয়নে আরও কিছু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। যেমন: (ক) স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণ- বিএসইসি এবং সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং উন্মুক্ত তথ্য বাতায়ন থাকতে হবে। (খ) বাজারের বুনিয়াদি অবস্থা উন্নয়ন- বাজারের বুনিয়াদি সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে, যেমন কোম্পানির আর্থিক স্থিতিশীলতা, শেয়ার বাজারের তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। (গ) প্রণোদনা ব্যবস্থা চালু- বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বাজারে একটি প্রণোদনা তহবিল গঠন করা যেতে পারে, এতে নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসতে উৎসাহিত হবে। (ঘ) শাস্তি আরোপের বিকল্প ব্যবস্থা- শুধুমাত্র জরিমানা নয় বরং অনিয়মকারী কোম্পানি বা ব্যক্তিকে বাজার থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে তাদের কার্যক্রম সীমিত করার মতো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে এবং অভিযুক্তকে জেল প্রদানও করা যেতে পারে।
পুঁজিবাজারে জরিমানা একটি শৃঙ্খলা রক্ষার হাতিয়ার হলেও এর প্রয়োগ ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা জরুরি। বাজারের বুনিয়াদি সমস্যাগুলোর সমাধান এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো ছাড়া এ ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হলে স্বল্প মেয়াদে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। বিনিয়োগকারী সুরক্ষা ফান্ড গঠন এবং প্রণোদনা তহবিল চালুর মতো উদ্যোগ বাজারকে নতুন উদ্যম প্রদান ও আরও শক্তিশালী করতে পারে। পুঁজিবাজারের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উৎকৃষ্ট অবদান রাখার লক্ষ্যেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে।
মো. সাইফুল ইসলাম (পিপন)
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী।