খেলাধুলা
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫

জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার উত্তাল আন্দোলন আর দেড় হাজারেরও বেশি অকুতোভয় মুক্তিকামী মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে নতুন স্বাধীনতা। পরাজিত ও ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকার। ছাত্র-জনতার সেই সফল আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে দেশের তরুণ সমাজ।
সেই তরুণদের লড়াই-সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ও পরিকল্পনায় তারুণ্যের উৎসব করার পরিকল্পনা নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ নামকরণের এক বড়সড় যজ্ঞ শুরু হতে যাচ্ছে চলতি ডিসেম্বর মাস থেকেই। আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিপিএল দিয়ে শুরু হবে সেই ‘তারুন্যের উৎসব ২০২৫।’
যুব, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আজ রোববার স্থানীয় এক পাঁচ তারকা হোটেলে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়সহ ১২টির বেশি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রায় দুই মাস ধরে চলবে তরুণদের উৎসব।
ক্রিকেট ছাড়াও ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স ও বাস্কেটবলের বিভিন্ন ইভেন্ট থাকবে সে উৎসবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে সে তারুণ্যের উৎসব। পুরো আয়োজনে জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থানের বিভিন্ন ছাপ রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআন তেলোয়াত, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠ দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ হিরুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তারপর পর্দায় প্রদর্শিত হয় জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদদের নিয়ে মর্মস্পর্শী প্রামাণ্যচিত্র। পরে আন্দোলনে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।
ওই তারুণ্যের উৎসব ‘২০২৫’-এর মিডিয়া লঞ্চিং উপলক্ষে আজ রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বসেছিল তারার মেলা। ক্রিকেটার, ফুটবলার, বিভিন্ন মহাদেশীয় পর্যায় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনা একঝাঁক ক্রীড়াবীদ উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।
দেশের ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি কায়সার হামিদ, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান, টেবিল টেনিসের রানী জোবেরা রহমান লিনুর পাশে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, জাতীয় ফুটবল অধিনায়ক তপু বর্মণ, নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জোতি, সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন, দেশীয় টেবিল টেনিসের রানী জোবেরা রহমান লিনু, এসএ গেমসে ভারোত্তোলনে স্বর্ণপদক বিজয়ী মাবিয়া আক্তাররা আলো ছড়িয়েছেন আজকের এ অনুষ্ঠানে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এই তারুণ্যের উৎসবের মাধ্যমে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘খেলাধুলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। বিশেষ করে ক্রিকেট আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। ভিন্ন ক্ষেত্রে যত মতবিরোধই থাকুক, খেলার ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাই। জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে এগিয়ে যাওয়াই এই তারুণ্যের উৎসব ২০২৫এর অন্যতম উদ্দেশ্য।’
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হিসেবে একদম শেষে উন্মোচন করা হয় ছেলেদের বিপিএলের ১১তম আসরের মাসকট ও থিম সং। দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের আগের ১০টি আসরে ‘থিম সং থাকলেও কোন মাসকট ছিল না।
নতুন আসরে গত জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্মৃতিকে ধারণ করে মাসকটের নাম রাখা হয়েছে ‘ডানা ৩৬।’ যা মূলত ডানা প্রসারিত করা একটি সাদা পায়রা।
মাসকটের নামের ডানা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে। গত জুলাই-অগাস্টের গণ আন্দোলনের স্মরণীয় ৩৬ দিনের জন্য মাসকটের দুই পাশে ১৮টি করে রাখা হয়েছে মোট ৩৬টি রঙিন পালক। যা প্রতিটি স্বপ্নবাজ, উদ্যমী, অপ্রতিরোধ্য তরুণের নতুন বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা জোগায়।
বিসিবি সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূসের উচ্চারিত শব্দমালা ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ সামনে রেখেই এই থিম সং তৈরি করা হয়েছে। তারুণ্যের উৎসবের প্রতিপাদ্যও এই শব্দমালা।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ পুরো আয়োজন সম্পর্কে একটা ধারণা দেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিপিএল দিয়ে শুরু হলেও ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার, অ্যাথলেটিকস ও বাস্কেটবলের নানান খেলাও থাকবে ঐ তারুণ্যের উৎসবে।

খেলাধুলা
কাবাডি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা বাংলাদেশের

দীর্ঘ ১৩ বছর পর ভারতের হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারী কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরের। এই আসরকে সামনে রেখে ১৫ সদস্যদের শক্তিশালী দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন।
শনিবার (২৬ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এই স্কোয়াড ঘোষণা করেছে ফেডারেশন। আগামী ৩ আগস্ট মাঠে গড়াবে নারী বিশ্বকাপ। ১ তারিখ হায়দরাবাদের বিমান ধরবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবেন রুপালি আক্তার সিনিয়র। দীর্ঘদিন ধরে দেশকে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এই বিশ্বকাপ দিয়ে ক্যারিয়ারের ইতিটানবেন রুপালি।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কঠিন প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেই সঙ্গে নেপালের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলেছে তারা।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল: শ্রাবনী মল্লিক, বৃষ্টি বিশ্বাস, রুপালি সিনিয়র, স্মৃতি আক্তার,রেখা আক্তার, মেবি চাকমা, রুপালি আক্তার জুনিয়র, দিশা মিন সরকার, সুচরিতা চাকমা, খাদিজা খাতুন, লোবা আক্তার, লোবা আক্তার, তাহরিম, ইসরাত জাহান সাদিকা, আঞ্জুআরা রাত্রী।
স্ট্যান্ড বাই প্লেয়ার: লাকি আক্তার
কাফি
খেলাধুলা
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়লো টাইগাররা

জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। তাদের হাতে ছিল এক উইকেট। মুস্তাফিজের করা ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমীকরণ সহজ করেন দানিয়েল। পরের বলেও উড়িয়ে মেরেছিলেন এই ব্যাটার, তবে এবার বল যায় সরাসরি মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা শামীমের হাতে। তাতে ৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে খেলতে নেমে ১৯ ওভার ২ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৫ রানের বেশি করতে পারেনি পাকিস্তান।
নতুন বলে আরো একবার শেখ মেহেদির ওপর ভরসা রাখেন লিটন। ইনিংসের প্রথম ওভার করতে এসে ভালো লাইন-লেংথে বোলিং করেছেন তিনি। তার ওভারেই উইকেটের দেখাও পেয়েছে দল। ওভারের শেষ বলে রান আউটের শিকার হয়েছেন সায়িম আইয়ুব।
এক প্রান্তে স্পিন দিয়ে শুরু করলেও আরেক প্রান্তে পেস আক্রমণে যান লিটন। নতুন বল তুলে দেন শরিফুলের হাতে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। লেগ বিফোরের শিকার হয়েছেন গোল্ডেন ডাক খাওয়া মোহাম্মদ হারিস। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অভিজ্ঞ ফখর জামানও। লিটনের ক্যাচ বানিয়ে এই ওপেনারকে ফিরিয়েছেন শরিফুল। সাজঘরে ফেরার আগে ৮ বলে ৮ রান করেছেন ফখর।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে আসেন তানজিম সাকিব। আক্রমণে এসেই উইকেট পার্টিতে যোগ দেন এই পেসার। তৃতীয় বলটি খানিকটা খাটো লেংথে করেছিলেন সাকিব, অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের হয়ে যাওয়া বলে আউট সাইড এজে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন হাসান নাওয়াজ। পরের বলেই ফিরেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজও। তাতে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
দলের এমন বিপদে হাল ধরার চেষ্টা করেন সালমান আলি আগা। তবে অধিনায়ক উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। উল্টো প্রচুর ডট খেলে দলের চাপ বাড়িয়েছেন। ২৩ বলে ৯ রান করা এই ব্যাটারকে দশক ওভারে ফিরিয়েছেন মেহেদি। সালমানের পথেই হেঁটেছেন খুশদিল শাহও।
দলীয় ফিফটির আগে ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান ফাহিম আশরাফ ও আব্বাস আফ্রিদি। দুজনে মিলে অষ্টম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৪১ রান। ১৩ বলে ১৯ রান করেন আব্বাস। এরপর আহমেদ দানিয়েলকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন ফাহিম। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ফাহিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৩২ বলে ৫১ রান।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। ইনফর্ম তানজিদ তামিমকে বিশ্রাম দিয়ে আজ সুযোগ দেওয়া হয়েছিল নাঈম শেখকে। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না এই ওপেনার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফাহিম আশরাফকে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৭ বল খেলে ৩ রান করেছেন নাঈম।
তিনে নেমে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লিটন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন। তাতেই যেন বিপদ ডেকে আনেন। সালমান মির্জাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন তিনি।
ব্যর্থ হয়েছেন তাওহিদ হৃদয়ও। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে রান আউটে কাটা পড়েন তিনি। পারভেজ ইমনের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রানের খাতা খুলার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। হৃদয়ের আউটে কিছুটা হলেও দায় ছিল ইমনের, তাই বাড়তি দায়িত্ব ছিল তার ওপর। কিন্তু উল্টো দলের চাপ বাড়িয়ে পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ইমন। ১৪ বলে ১৩ রান করেছেন তিনি।
২৮ রানে চার উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন শেখ মেহেদি ও জাকের আলি। বিশেষ করে শেখ মেহেদি দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ধীরগতির ব্যাটিংয়ের জন্য সমালচিত হওয়া এই ব্যাটার আজ দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ২৫ বলে ৩৩ রান করে মেহেদি ফিরলে ভাঙে ৫৩ রানের জুটি।
এরপরস শামীম হোসেন, তানজিম সাকিব ও রিশাদ হোসেনরা দ্রুত ফিরলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিং করেছেন জাকের। ৪৬ বলে স্পর্শ করেছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। সবমিলিয়ে ৪৮ বলে করেছেন ৫৫ রান।
কাফি
খেলাধুলা
সাগরিকার ৪ গোলে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা ধরে রাখার জন্য শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে এক পয়েন্ট অর্থাৎ ড্র দরকার ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বাংলাদেশের মেয়েরা নেপালকে হারিয়েই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
২১ জুলাই ২০২৫-বাংলাদেশের ইতিহাসে একান্তই বিপরীতমুখী অনুভূতির দিন হয়ে থাকবে আজ। একদিকে মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার শোক। অপরদিকে ফুটবল মাঠে বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলাররা লিখেছেন গৌরবের এক নতুন অধ্যায়।
নেপালের বিপক্ষে ‘অলিখিত ফাইনালে’ ৪-০ গোলের বিশাল জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ম্যাচের নায়িকা একটিই নাম মোসাম্মৎ সাগরিকা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেই চার গোল করে নিজের জাত চেনালেন তিনি।
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের মেয়েরা মাঠে নামার আগে জানতো, ড্র করলেই হবে। কিন্তু তারা থামেনি। সাগরিকার অসাধারণ পারফরম্যান্সে বড় জয় নিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের পাঁচ ম্যাচে পাঁচ জয়, ১৮ পয়েন্ট, দুইবারের জয়ী নেপালকে দুইবার হারিয়ে ট্রফি ঘরে তোলে মেয়েরা।
নেপালের বিপক্ষে চারটি গোলই করেছেন সাগরিকা। এর আগে নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে লালকার্ড পেয়ে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ ছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের এই যুবতী। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফিরেই ঝলক দেখিয়েছেন গত আসরে সর্বাধিক গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা এই ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধের ৮ মিনিটেই সাগরিকা গোলের সূচনা করেন। দ্বিতীয়ার্ধে ৫২, ৫৭ এবং ৭৬ মিনিটে আরও তিন গোল করে হ্যাটট্রিক তো বটেই, চতুর্থ গোলও যুক্ত করেন নিজের ঝুলিতে। আজকের ম্যাচেই নয়, পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই ছিলেন দুর্দান্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছিলেন আরেকটি হ্যাটট্রিক। মাঝের তিন ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে না পারলেও শেষ ম্যাচে ফিরেই যেন লড়াইয়ের প্রতিশোধ নিলেন সাগরিকা।
আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের জালে বলই পাঠাতে পারেনি প্রতিপক্ষ। প্রথমার্ধে কয়েকটি সুযোগ পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে নেপালকে কোনো সুযোগই দেয়নি বাংলাদেশের মেয়েরা।
কাফি
খেলাধুলা
বড় জয়ে সমতা ফেরালো বাংলাদেশ

সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে ধারবাহিকভাবে ব্যর্থ বাংলাদেশি ব্যাটাররা। অবশেষে সেই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসলেন লিটন দাস-শামীম হোসেনরা। ফলে ১৭৭ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও লঙ্কানদের চেপে ধরে টাইগাররা। তাতে একশর আগেই অলআউট লঙ্কানরা। ৮৩ রানের জয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে বাংলাদেশ।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন লিটন। এ ছাড়া ৪৮ রান করেছেন শামীম। জবাবে খেলতে নেমে ১৫ ওভার ২ বলে ৯৪ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।
নতুন বলে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন দুই পেসার শরীফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পড়ে রান আউটের শিকার হয়েছেন কুশল মেন্ডিস। ৫ বলে ৮ রান করেছেন তিনি।
এরপরই যেন আগুন ঝরান বাংলাদেশি পেসাররা। পাওয়ার প্লের মধ্যেই তুলে নেন ৪ উইকেট। ৩০ রানের মধ্যেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে শুরুতেই বিপাকে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে একশর আগেই অলআউট হয়।
বাংলাদেশের হয়ে ১৮ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন রিশাদ হোসেন। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট পেয়েছেন সাইফউদ্দিন ও শরীফুল।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মোটেও ভালো শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমন। রানের খাতা খোলার আগেই তিন বলে শূন্য রানে বোল্ড হয়ে গেছেন ইমন।
পরের ওভারেই ফেরেন আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম। বিনুরা ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরের গুড লেংথের বলে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন তামিম। তবে তা তার ব্যাটে ঠিকঠাক লাগেনি। শর্ট থার্ডম্যানে দাঁড়ানো কুশাল পেরেরা দারুণ এক ক্যাচ নেন। ৮ বলে ৫ রান করেছেন এই ওপেনার।
চারে নেমে দলের হাল ধরেন হৃদয়। লিটনের সঙ্গে তার ৬৯ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ২৫ বলে ৩১ রান করে হৃদয় ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
সাম্প্রতিক সময়ে সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাট হাতে বেশ ভুগছেন লিটন দাস। ধারবাহিক ব্যর্থতায় অধিনায়কের একাদশে অন্তর্ভুক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল! অবশেষে রানের দেখা পেলেন তিনি। তিনে নেমে দলের হাল ধরেন। ৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পরও লিটন ইতিবাচক ব্যাটিং করেছেন। ৩৯ বলে পেয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটির দেখা। ১৩ ইনিংস পর এই সংস্করণে ফিফটি পেলেন তিনি। সবমিলিয়ে ৫০ বলে করেছেন ৭৬ রান।
পাঁচে নেমে ব্যর্থ মিরাজ। তবে লোয়ার মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন শামীম। ২৭ বলে করেছেন ৪৮ রান। তাতে বড় সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
খেলাধুলা
নারী ফুটবল দলের জন্য অর্ধকোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা

এএফসি নারী এশিয়ান কাপে প্রথমবারের মতো খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। এই ঐতিহাসিক অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ আগামী সোমবার (৭ জুলাই) নারী দলকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
গত শনিবার (৬ জুলাই) মধ্যরাতে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরে আসার পরপরই রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয় সাবিনা-কৃষ্ণাদের।
এর আগেও নারী দলের অসাধারণ পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন করেছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরদিনই তিনি বাফুফে ভবনে গিয়ে এক কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন, যা এক সপ্তাহের মধ্যেই পৌঁছে যায় খেলোয়াড়দের হাতে।
আসিফ মাহমুদ সজীব দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্য এলেই দ্রুত আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে আসছেন। এর মধ্যে রয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের এশিয়া কাপ জয়, অনূর্ধ্ব-২১ হকি দলের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন, নারী দলের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও সাফ অনূর্ধ্ব-২০ জয়ে পুরস্কারের ঘোষণা।
নারী ফুটবলের এই অর্জন আবারও প্রমাণ করল, দেশের নারী ক্রীড়াবিদরাও আন্তর্জাতিক মঞ্চে উজ্জ্বল হতে পারে – যদি থাকে পৃষ্ঠপোষকতা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।
কাফি