অর্থনীতি
অর্থনীতির ‘শ্বেতপত্র’ রোববার জমা দেওয়া হবে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর “শ্বেতপত্র” তৈরির জন্য গঠিত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আগামী রোববার (১ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং অর্থনীতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) অর্থনৈতিক প্রতিবেদক ফোরাম (ইআরএফ) এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত “বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ওপেন বাজেট সার্ভে ২০২৩-এর ফলাফল” বিষয়ক সেমিনারে এ তথ্য জানিয়েছেন ড. দেবপ্রিয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও জানান, প্রতিবেদনটির ফলাফল ২ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হবে।
সেমিনারে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ এখনো কেন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি।
তিনি বলেন, “যদি আমরা দুর্নীতির পাহাড় থেকে জনগণের সম্পদ ফিরিয়ে দিতে না পারি, তবে আমরা কেমন বিপ্লব করেছি?”
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারলে কর সংগ্রহে ইতিবাচক পদক্ষেপ আসবে ।
দাতা সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের সন্দেহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অনেক বড় প্রকল্পে দাতা সংস্থা ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অর্থায়ন করেছেন। তারা উদ্বিগ্ন, এই প্রকল্পগুলো চলবে কি না। তারা জানতে চান, আগামী দিনে বাংলাদেশ কীভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।”
জানুয়ারিতে দাতা সংস্থা ও সরকারের মধ্যে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে দেবপ্রিয় আগামী দুই মাসের মধ্যে “ফোরাম ফর ইনক্লুসিভ অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট” নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির সুপারিশ করেন।
তিনি বলেন, “এই ফোরাম তৈরি করে দাতা ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পাঁচটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যার প্রথমটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। অন্য বিষয়গুলো হলো– ব্যক্তিগত বিনিয়োগের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা, জ্বালানি সংকট সমাধান, সরকারি অর্থায়নের প্রতিবন্ধকতা দূর করে দ্রুত প্রকল্প সম্পন্ন করা এবং সঠিকভাবে কর সংগ্রহ নিশ্চিত করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।”
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দেওয়া হলো সাড়ে ২২ হাজার কোটি
নতুন টাকা ছাপিয়ে দেশের দুর্বল ছয়টি ব্যাংকে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেছেন, বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে এসব টাকা তুলে নেবো। আমাদের টাইট পলিসি থাকবে। এক হাতে দেবো, অন্য হাতে তুলে নেবো। এতে বাজারেও অস্থিরতা তৈরি হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলো তারল্য সহযোগিতা দিচ্ছি। আমানতকারীদের সুরক্ষার জন্য এটি দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে শাখাগুলোয় যে অস্থিরতা ছিল সেটি থেকে বেরিয়ে এসেছি। শাখাগুলোয় রোববার থেকে সবাই (গ্রাহক) নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাবেন।
আমানতকারীদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, আমানতকারীদের টাকা নিরাপদে আছে, আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আপনারা যে ব্যাংকেই টাকা রেখে থাকুন নিরাপদে থাকবে, সমস্যা হবে না। আপনাদের যতটুকু টাকা প্রয়োজন ততটুকুই তুলুন। আমানতকারীর টাকা নিয়ে সমস্যা নেই, এ নিয়ে মাথাব্যথা আমাদের। আমানতকারীর টাকা সুরক্ষিত থাকবে। তবে একবারে একসঙ্গে সবাই টাকা উত্তোলন করতে গেলে কোনো ব্যাংকই টিকবে না।
নতুন টাকা ছাপানো নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে টাকা সরবরাহ করেছি। এখানে টাকার ফ্লো বাজারে বাড়বে না, আবার মূল্যস্ফীতিও বাড়বে না। কারণ, আমরা এক হাতে টাকা দিচ্ছি, বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমে সেসব টাকা অন্য হাতে তুলেও নিচ্ছি।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, মনিটরিং পলিসি আগের মতোই টাইট থাকবে। বাজারকে অস্থিতিশীল করবো না। রোববার থেকে ব্যাংকের শাখায় যাবেন, দেখবেন সব শাখায় টাকা নিতে পারছেন গ্রাহকরা। তবে সব গ্রাহক একবারে নিলে টাকা থাকবে না। আবার এটাও বলবো, কেউ যেন একসঙ্গে ১০০ কোটি টাকা তুলতে না যায়।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৩ আগস্ট আহসান এইচ মনসুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩তম গভর্নরের দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি জানিয়েছিলেন, নতুন করে টাকা ছাপিয়ে আর কোনো দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে না।
তিনি জানিয়েছিলেন, আন্তঃব্যাংকের মাধ্যমে সমস্যায় থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে এবং সেখানে গ্যারান্টার হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করবে। তারল্য সংকট কাটাতে পুরো সাপোর্ট দিতে হলে দুই লাখ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে বহুগুণ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ বন্ধ হচ্ছে
খেলাপি হলেও বিশেষ বিবেচনায় নিয়মিত দেখানোর যে সুযোগ ছিল, তা অবশেষে বন্ধ হচ্ছে। আগামী এপ্রিল থেকে চলতি বা মেয়াদি সব ঋণের কিস্তি পরিশোধের তারিখ পার হলেই তা মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে ধরা হবে। ২০১৯ সাল থেকে মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে কিস্তি পরিশোধের তারিখের ছয় মাস পর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ বিবেচনা হয়ে আসছে।
নতুন নিয়মে তিন থেকে ছয় মাস কিস্তি না দিলেই খেলাপি ঋণের প্রথম পর্যায় তথা ‘সাব-স্ট্যান্ডার্ড’ বিবেচিত হবে, যা বর্তমানে ৯ মাস পর্যন্ত। এ ছাড়া সব ধরনের ঋণের প্রভিশন সংরক্ষণের হার অভিন্ন করা হচ্ছে। গতকাল এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কোনো ঋণ ছয় মাস মেয়াদোত্তীর্ণ হলেই তা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হয়। এই আইনে কোনো পরিবর্তন না এনে ২০১৯ সালের এপ্রিলে এক নির্দেশনার মাধ্যমে কৌশলে খেলাপি কম দেখানোর সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পরামর্শে জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, মেয়াদি ঋণ বকেয়া হিসাবের ক্ষেত্রে বাড়তি ছয় মাস সময় পাবে। এর মানে, কিস্তি পরিশোধের শেষ তারিখের ছয় মাস পর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ গণনা করা হবে। এই নিয়মে প্রকৃতপক্ষে এক বছর পর খেলাপি হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক থেকে তিন মাস পর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ গণনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আগের মতো নির্দিষ্ট আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতে গেলেই স্থগিতাদেশ পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঢালাওভাবে কোনো বিশেষ সুযোগ দিচ্ছে না। নিয়ম কঠোর করার কারণে খেলাপি ঋণ এক লাফে অনেক বেড়ে গত সেপ্টেম্বর শেষে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায় ঠেকেছে। গত ডিসেম্বরে যেখানে খেলাপি ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে সব ধরনের ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে হয়। যত বেশি মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, ততবেশি প্রভিশন রাখার নিয়ম রয়েছে। এ ক্ষেত্রেও বিভিন্ন শিথিলতা ছিল। আর ঋণ বিতরণের সময়ও প্রভিশন রাখতে হয়, যা সাধারণ প্রভিশন হিসেবে বিবেচিত। বর্তমানে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ প্রভিশন রাখার বিধান আছে। আগামী এপ্রিল থেকে সব ধরনের নিয়মিত ঋণের প্রভিশন রাখতে হবে ১ শতাংশ। ভিন্ন ভিন্ন প্রভিশনিংয়ের কারণে এক খাতের ঋণ বিতরণ করে আরেক খাতে দেখানোর নজির রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ঋণ বকেয়া হওয়ার তিন মাস আগ পর্যন্ত শ্রেণীকৃত হওয়ার আগের অবস্থা তথা স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্ট (এসএমএ) হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে প্রভিশন রাখতে হবে এখনকার মতোই ৫ শতাংশ। এ ছাড়া তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদোত্তীর্ণ হলে এখন থেকে একটি ঋণ সাব-স্ট্যান্ডার্ড বিবেচিত হবে। এ ধরনের ঋণে প্রভিশন রাখতে হবে ২০ শতাংশ। ছয় মাসের পর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ ডাউটফুল বা সন্দেহজনক ঋণে ৫০ শতাংশ। ১২ মাসের বেশি মেয়াদোত্তীর্ণ মন্দ বা ক্ষতিজনক মানের ঋণে প্রভিশন রাখতে হবে শতভাগ। ব্যাংকগুলোর অর্জিত মুনাফা বা উদ্যোক্তাদের জোগান দেওয়া মূলধন থেকে এই প্রভিশন রাখতে হয়। ঋণ আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত এই প্রভিশন আয় খাতে নেওয়া যায় না।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এডিবির নতুন প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্ডা
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাসাতো কান্ডা। ২০২৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়ার স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এডিবির ঢাকা অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এডিবি জানায়, বোর্ড অব গভর্নরস সর্বসম্মতিক্রমে মাসাতো কান্ডাকে এডিবির ১১তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে। কান্ডা বর্তমানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ২০২৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এডিবির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়ার স্থলাভিষিক্ত হবেন। এডিবির বর্তমান প্রেসিডেন্টের মেয়াদ আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।
বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ার এবং ব্যাংক অব ইতালির গভর্নর ফ্যাবিও প্যানেটা জানান, কান্ডা আন্তর্জাতিক অর্থায়নের বিস্তৃত অভিজ্ঞতা এবং বহুপাক্ষিক নেতৃত্বের মাধ্যমে এডিবিকে কঠিন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভালোভাবে কাজ করবেন। এডিবির বোর্ড অব গভর্নরস কান্ডার সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন।
এডিবি জানায়, প্রায় ৪ দশকের অভিজ্ঞতার সঙ্গে কান্ডা জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রধান নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন। যার মধ্যে আন্তর্জাতিক বিষয়ক অর্থমন্ত্রীর সহ-সভাপতি তিনি। আর্থিক খাতের নীতি এবং সামষ্টিক-অর্থনীতিতে তার ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি আর্থিক পরিষেবা সংস্থায় ডেপুটি কমিশনার, বাজেট ব্যুরোর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল এবং নীতি পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষা ও বিজ্ঞান নীতির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের একজন নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞ তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংককে পাশে চায় বিএসইসি
শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। গতকাল বুধবার বিকেলে গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ সহায়তা চান। বাংলাদেশ ব্যাংকে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ও আকার বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয় গর্ভনরের কাছে। ২০০ কোটি টাকার বিশেষ এই তহবিলের মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এ মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর পাশাপাশি তহবিলের আকার বৃদ্ধির কথা বলা হয় বিএসইসির পক্ষ থেকে।
এ ছাড়া বহুজাতিক ও ভালো মৌল ভিত্তির কোম্পানি বাজারে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে বিএসইসি। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিগুলো যাতে ব্যাংকের পাশাপাশি পুঁজিবাজারকেও বেছে নেয়, সেই ব্যবস্থা করার জন্য গভর্নরকে অনুরোধ জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংকের পাশাপাশি একটি অংশ যাতে শেয়ারবাজারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়, সে জন্য আইনি কোনো বিধান করা যায় কি না, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চাওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৈঠক বিএসইসির পক্ষ থেকে যেসব সহায়তা চাওয়া হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি গভর্নর। তবে তিনি শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক থেকে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ সহায়তার আশ্বাস দেন বিএসইসির চেয়ারম্যানকে। সেই সঙ্গে নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে দুই সংস্থা মিলে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়েও আশ্বস্ত করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৯০ ও ১৮০ দিন মেয়াদি বিল চালু করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক
দুর্বল ব্যাংকগুলোকে নিজ ভল্ট থেকে টাকা দেওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই টাকা যাতে বাজারে মূল্যস্ফীতি উসকে না দেয়, সে জন্য নতুন করে ৯০ ও ১৮০ দিন মেয়াদি বিলের মাধ্যমের টাকা তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আজ এক প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন ও তারল্য ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে প্রচলিত ৭, ১৪ ও ৩০ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের পাশাপাশি ৯০ ও ১৮০ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিল প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এদিকে গতকাল ৩০ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে ৪৫২ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে অংশ নিয়েছে ১১টি ব্যাংক। এতে গড় সুদের হার ছিল ১১ দশমিক ১০।
এর আগে দুর্বল পাঁচটি ব্যাংককে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা তারল্য–সহায়তা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতে পরিচালিত ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককে এ তারল্য–সহায়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে গ্যারান্টির বিপরীতে দুর্বল ব্যাংকগুলো টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংককে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়। তবে দুর্বল ব্যাংকগুলো অভিযোগ করছে, এ ব্যবস্থায় তারা চাহিদামতো টাকা পায়নি। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজের ভল্ট থেকে টাকা ধার দেওয়া শুরু করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, একদিকে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাজারে অতিরিক্ত টাকা সরবরাহের ঝুঁকি রোধ করা যাচ্ছে। বাজার থেকে টাকা না তুলে শুধু ধার দিলে তা মূল্যস্ফীতি উসকে দেওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। এ জন্য সতর্কতার সঙ্গে এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।