আইন-আদালত
বৈষম্যবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি

তৃণমূল পর্যায়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার বাস্তবায়ন ও জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষায় বৈষম্যবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) ভবনে সিটি ও পৌর কাউন্সিলর সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান সিটি করপোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশন ও পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। উভয় সংগঠন যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
কাউন্সিলরদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, সরকার বুদ্ধিমান হলে আপনাদের অপসারণ না করে ডেকে নিতেন। সরকার আপনাদের সহযোগিতা পেত। আপনার সরকারকে সহযোগিতা করতেন। জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ না করে সরাসরি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।
সমাবেশ কাউন্সিলদের দাবির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করে এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমলাদের পরামর্শে জনপ্রতিনিদিদের অপসারণ করা হচ্ছে। যে আমলারা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের দালালি করেছে তাদের আবার নতুন করে দালালির ঠিকাদারি কেন দেওয়া হলো?
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বিগত ১৬ বছরে যেসব আমলা আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের দালালি করেছে তাদের কেন অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলো? তারা নিজের দায়িত্বই ভালোভাবে পালন করে না, আবার জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব নিয়েছে। এটা তো ভালো সমাধান হলো না।
সমাবেশ সিটি ও পৌর কাউন্সিলররা বলেন, আমরা কোনো দলের মনোনীত প্রার্থী নই। কোনো দলের প্রতীকে ভোট করিনি। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে কাউন্সিলর হয়েছি। জাতীয় নির্বাচনের মত রাতের ভোটে নির্বাচিত হইনি। আমরা আওয়ামী লীগের সিলেক্টেড লোকদের হারিয়ে জিতে এসেছি।
কাউন্সিলররা আরও বলেন, আমরা ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বিভিন্নভাবে আমরা ছাত্রদের সঙ্গে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমাদের ছেলে-মেয়ে, আমাদের ভাই-বোন অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। আমরা এই সরকারের সঙ্গে আছি। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই।
তারা আরও বলেন, রাষ্ট্র যখন সুষম বন্টনের কথা বলছে, তখন আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। যখন সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী কাউন্সিলরদের সংস্কারের বাহিরে রাখা হচ্ছে। আমরা সংস্কারের অংশীজন হতে চাই। রাষ্ট্র সংস্কারে সরকারের সহযোগি হতে চাই। সরকারের হাত শক্তিশালী করতে চাই। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে তৃণমূলে যেতে হবে। তৃণমূল জনসাধারণের প্রতিনিধি কাউন্সিলররা। জনপ্রতিনিধির কাজ একজন অফিসার করতে পারবে না।
আওয়ামী আমলাদের কুবুদ্ধিতে কাউন্সিলরদের অপসারণ করা হয়েছে দাবি করে তারা আরও বলেন, আমলারা সরকারকে অস্বস্তিতে রাখতে এ ধরণের কুবুদ্ধি দিয়েছে। কাউন্সিলর না থাকায় জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাউন্সিলররা এলাকায় অভিভাবক। কাউন্সিলরা অপসারণ হওয়ায় পতিত স্বৈরাচার সরকারের লোকেরা এলাকায় এলকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। তারা নতুন করে অভিভাবক সাজার চেষ্টা করছে। আমরা পুনর্বহাল চাই। অবিলম্বে আমাদের পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যারা নৌকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করছে, তাদের বহাল রেখেছেন। তাহলে আমরা কেন পারবো না।
বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন মাদারীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাওসার মাহমুদ।
কাফি

আইন-আদালত
মুন্নি সাহার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাংবাদিক মুন্নি সাহার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার মা আপেল রানী সাহা, স্বামী কবির হোসেন, দুই ভাই তপন কুমার সাহা ও প্রণব কুমার সাহাকেও একই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুদকের পক্ষে সংস্থার উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তা গ্রহণ করেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, সাংবাদিক মুন্নি সাহা, পরিবারের সদস্যরা এবং তার স্বামী এস এম প্রমোশনসের স্বত্বাধিকারী কবির হোসেন তাদের ব্যাংক হিসাবে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।
অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। এর ফলে অনুসন্ধান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন বলে তুলে ধরা হয়।
এর আগে সাংবাদিক মুন্নি সাহা এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। ব্যাংক হিসাবগুলোতে মোট ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকা আছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া, ব্যাংক হিসাবগুলোতে সন্দেহজনক ১৮৬ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৮ টাকা লেনদেনের তথ্যও আছে সিআইডির কাছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান।
তিনি জানান, মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন সাংবাদিকতা পেশাকে ব্যবহার করে বিধিবহির্ভূতভাবে প্রভাব খাটিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেছেন। তারা অবৈধভাবে উপার্জিত এই অর্থ নিজ এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে লেনদেন করে আসছেন মর্মে সিআইডির কাছে অভিযোগ আসে। উল্লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ অনুযায়ী সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান শুরু করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য পর্যালোচনা দেখতে পান যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৪৬টি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩৫টি ব্যাংক হিসাব চালু রয়েছে। হিসাব খোলার তারিখ থেকে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক হিসাবগুলোতে সন্দেহজনক মোট ১৮৬ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৮ টাকা লেনদেন করা হয়েছে এবং বর্তমানে ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকা স্থিতি রয়েছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন সন্দেহজনক মনে হলে সেগুলো অবরুদ্ধ করার আবেদন করা হয়।
অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর দায়রা জজ, ঢাকা উপরোল্লিখিত সন্দেহভাজন মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন এবং তাদের স্বার্থ সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকাসহ ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ প্রদান করেন। আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ৩৫টি ব্যাংক হিসাবসহ মোট ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকা অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা হয়।
সন্দেহভাজন মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন এবং তাদের স্বার্থ সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ অনুযায়ী অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান।
আইন-আদালত
একযোগে ৩০ জেলা জজসহ ২৫২ বিচারককে বদলি

৩০ জেলা ও দায়রা জজ, ৩৮ অতিরিক্ত জেলা জজ, ১৬৩ সহকারী ও সিনিয়র সহকারী জজ এবং ২১ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজকে বদলি করেছে সরকার। এছাড়া আরও ১৩ জনকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব (প্রশাসন-১) এ এফ এস গোলজার রহমানের সই করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় এসব কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন জেলার ৩০ জন জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ও সম পদমর্যাদার ৩৮ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ও সম পদমর্যাদার ২২ জন বিচারক এবং সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ এবং সম পদমর্যাদার ১৬২ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে জেলা ও দায়রা জজ/মহানগর দায়রা জজ/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/পরবর্তী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা/দপ্তর প্রধান কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তার কাছে আগামী ৩ জুন বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে অবিলম্বে বদলি কর্মস্থলে যোগদানের জন্য অনুরোধ করা হয়। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
এদিকে অপর এক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের ১৩ জন বিচারককে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৬ সালের বেতন স্কেলের তৃতীয় গ্রেডে সিনিয়র সহকারী জজ পদ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের বর্ণিত পদে ও কর্মস্থলে নিয়োগ/বদলি করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, এসব বিচারককে জেলা ও দায়রা জজ/চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/দপ্তর প্রধান কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তার কাছে মঙ্গলবার (৩ জুন) বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে অবিলম্বে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
তবে তাদের মধ্যে একজন বিচারককে মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে জেলা ও দায়রা জজ কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তার কাছে বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে অবিলম্বে বদলি কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কাফি
আইন-আদালত
ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে রাশেদ খান মেনন

জুলাই আন্দোলনের সময় শাহবাগে জুট ব্যবসায়ী মো. মনির হত্যা মামলায় সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন রাশেদ খানকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলাম খান পুলক ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আজিজুল হক দিদার। রাশেদ খান মেননের আইনজীবী তানভীর আহমেদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। গত ২২ আগস্ট রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে রাশেদ খান মেননকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী গত ১৪ মার্চ শাহবাগ হত্যা মামলা করেন।
আইন-আদালত
মেজর সিনহা হত্যায় প্রদীপ-লিয়াকতের ফাঁসির রায় বহাল

বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৬ আসামির যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকার জরিমানার আদেশ বহাল রাখা হয়েছে রায়ে।
এর আগে গত ২৯ মে বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেছিলেন।
ওইদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও শামীমা দিপ্তি। আর আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহাজাহান।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনার ৫ দিন পর ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় র্যাব। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল ওই মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
আর যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এক উপ-পরিদর্শকসহ তিন পুলিশ সদস্য ও পুলিশের তিন সোর্স (তথ্যদাতা)। সাত আসামি খালাস পান।
পরে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা আপিল করেন।
আইন-আদালত
শেখ হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গণহত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
রোববার (১ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এর আগে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
একই সঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অপর আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।
এদিন সকালে জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। এই বিচারকাজ বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে নির্বিচারে হত্যা চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। এতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারান।
কাফি