আইন-আদালত
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে বলে মনে করেন ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। এছাড়া এই আমলে সংবাদ মাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মনে করে ৬১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ।
বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা। গণমাধ্যমটির করা এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই জরিপ ১৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের আট বিভাগে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী ১ হাজার মানুষের মধ্যে পরিচালিত হয়।
জরিপের ফল অনুযায়ী, ২৫ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মতোই রয়েছে, ১৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিছুটা কম। এ বিষয়ে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মন্তব্য করতে চাননি।
পুরুষদের মধ্যে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আগের চেয়ে বেশি।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৬৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ একমত হয়েছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বেশি।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬১ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। তবে এই দুই আমলের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা ভোগের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য দেখেন না বলে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ নাজিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলো কম স্বাধীন বলে মনে করেন ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা এ ব্যাপারে জানেন না বলেছেন। এছাড়া, শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আওয়ামী আমলের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা পাচ্ছে শহরের উত্তরদাতাদের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ এমনটি মনে করেন। গ্রামের উত্তরদাতাদের মধ্যে এমন মত পোষণ করেন ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা এবং ৩৫ ও তারচেয়ে বেশি বয়সী উত্তরদাতাদের ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করেন বর্তমান সরকারের আমলে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে।
পুরুষদের মধ্যে ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আগের আমলের চেয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মত দিয়েছে।
২০২৪ সালে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম, যা ২০০২ সাল থেকে মুক্ত গণমাধ্যম সূচক প্রকাশ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ৪৪ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। গণমাধ্যম সূচকের এই অবনতির পেছনে যেসব কারণগুলো বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করেছেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সরকারের বিভিন্ন নিপীড়নমূলক আইন, দলীয় বিবেচনায় গণমাধ্যমের লাইসেন্স প্রদান এবং গণমাধ্যমকে একটি ভীতির মধ্যে রাখা।
আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) তাদের প্রতিবেদনে বলে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা ডিএসএ সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে কঠোর আইনের মধ্যে অন্যতম। এই আইন কোনো পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার বা তল্লাশি এবং যে কোনো কারণে সাংবাদিকের সূত্রের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা অনুমোদন করে। গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এ আইনটিও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আইন প্রসঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট যেটা পাস হয়েছে— আমাদের মতে শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার সিকিউরিটি আইন-এর সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের, গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা— এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এই আইনে রয়ে গেছে।
এ আইনটি বাতিলের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসাথে ইতোমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করার পর প্রথম কয়েকদিন আওয়ামী লীগ আমলে সরকারের সুবিধাভোগী ও পতিত সরকারের প্রোপাগান্ডা প্রচার করতো বলে জনমনে পার্সেপশন থাকা কিছু টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট সংবাদমাধ্যম, যেমন এটিএন, একাত্তর টিভি, সময় টিভি হামলার শিকার হয়। তবে কিছুদিন পর থেকেই গণমাধ্যমগুলির কার্যালয়ে হামলার ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়।
পরে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া তার ভাষণে বলেন, আপনারা আমাদের সমালোচনা করুন। সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন।
এমআই

আইন-আদালত
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায় প্রদানের জন্য আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) খালাসপ্রাপ্তদের রায় কীভাবে বাতিল করা যায় সেই যুক্তিতে শুনানি শেষ করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর বুধবার (২০ আগস্ট) এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ দিন শুনানি শেষে রায়ের জন্য আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
এ বছরের ১২ জানুয়ারি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে আদালত বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিল অবৈধ। আইনে এ বিচার টেকে না।
রায়ে বলা হয়, যে অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।
এরপর এ মামলায় সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১ জুন রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবুকে (পলাতক) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে অনেকে হাত-পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে যান।
আইন-আদালত
তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি বুধবার

বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের শুনানি ফের বুধবার (২০ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ পরবর্তী শুনানির জন্য এদিন ধার্য করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। তারেক রহমান ও বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
এর আগে গত ৩১ জুলাই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়।
কাফি
আইন-আদালত
সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘অ্যান্টিভেনম’ রাখার নির্দেশ

দেশের সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের বিষের প্রতিষেধক ‘অ্যান্টিভেনম’ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) দ্রুত এই আদেশ বাস্তবায়ন করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) জনস্বার্থে দায়ের করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরন্নবী। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট ইসমাঈল হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান, তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
এর আগে রোববার (১৭ আগস্ট) অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরুন্নবী দেশের সকল উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম সরবরাহের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে এই রিটটি দায়ের করেন। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন এই রিটের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সাপের কামড়ে সারা দেশে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ৬১০ জন।
আইন-আদালত
মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসিরের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ আগস্ট) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান এ রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ এ বিষয়ে শুনানি হবে।
এর আগে রোববার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর গুলশান থেকে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু। ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটায় আসামিদের ছোঁড়া গুলি আসাদুলের বুকে ও ডান পাশে লাগে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
আইন-আদালত
ডা. নারায়ণ হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাইকে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া চারজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৭ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক রেজাউল করিম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কামরুল হাসান অরুন, মাসুম মিন্টু, সাইদ ব্যাপারী, বকুল মিয়া ও সাইদ মিজি। আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আবুল কালাম, সাইদুল, ফয়সাল এবং পেদা মাসুম। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন রফিকুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট আদালতের প্রসিকিউটর মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, রায় ঘোষণার সময় ১০ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই ছিলেন বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক। এছাড়া সে সময় তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের একজন নেতা ছিলেন। ২০১২ সালের ২৩ অগাস্ট রাতে মহাখালীতে হাসপাতালের আবাসিক এলাকায় নিজের বাসায় খুন হন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের রাতে দোতলা ওই বাড়িতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ডা. নিতাইয়ের সঙ্গে ছিলেন তার বৃদ্ধা মা। স্ত্রী লাকী চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রামে। হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিতাইয়ের বাবা বনানী থানার হত্যা মামলা দায়ের করেন।