জাতীয়
অক্টোবরে ৪০৫ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭৭
দেশজুড়ে গত মাসে ৪০৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৭ জন নিহত হয়েছে। আর এতে আহত হয়েছে ৪১৫ জন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন স্বাক্ষরিত সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিআরটিএ’র বিভাগীয় অফিসের মাধ্যমে সারাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে ১১৫টি দুর্ঘটনায় ১১৪ জন নিহত এবং ১৪২ জন আহত হয়েছেন; চট্টগ্রাম বিভাগে ৬১টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত এবং ৮৬ জন আহত হয়েছেন; রাজশাহী বিভাগে ৪৫টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত এবং ২২ জন আহত হয়েছেন; খুলনা বিভাগে ৪০টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত এবং ৩৮ জন আহত হয়েছেন; বরিশাল বিভাগে ২৯টি দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়েছেন; সিলেট বিভাগে ২৪টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন; রংপুর বিভাগে ৫৪টি দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়েছেন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৭টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়েছেন।
সর্বমোট ৬৩০টি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে মোটরকার/জিপ ১৬টি, বাস/মিনিবাস ১০১টি, ট্রাক/কাভার্ডভ্যান ১৩১টি, পিকআপ ২৯টি, মাইক্রোবাস ১০টি, অ্যাম্বুলেন্স ৩টি, মোটরসাইকেল ১৩৬টি, ভ্যান ১৮টি, ট্রাক্টর ৫টি, ইজিবাইক ২১টি, ব্যাটারিচালিত রিকশা ১৬টি, অটোরিকশা ৩৩টি এবং অন্যান্য যানবাহন ছিল ১১১টি।
মোটরকার বা জিপ দুর্ঘটনায় ৯ জন, বাস/মিনিবাস দুর্ঘটনায় ৪২ জন, ট্রাক/কাভার্ডভ্যান দুর্ঘটনায় ৮২ জন, পিকআপ দুর্ঘটনায় ১২ জন, মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় ২ জন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১১০ জন, ভ্যান দুর্ঘটনায় ১২ জন, ট্রাক্টর দুর্ঘটনায় একজন, ইজিবাইক দুর্ঘটনায় ১৪ জন, ব্যাটারিচালিত রিকশা দুর্ঘটনায় ১৮ জন, অটোরিকশা দুর্ঘটনায় ৩৪ জন ও অন্যান্য যানের দুর্ঘটনায় ৭৯ জন নিহত হয়েছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করবে নতুন কমিশন: সিইসি
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের চাওয়া ছিল ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া। এই কমিশন সেই ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করবে। নিত্য নতুন অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। সেসব মোকাবিলা করে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। নতুন দায়িত্ব পেয়েই তিনি এ মন্তব্য করেন।
আজ বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। নিয়োগ পাওয়ার পর বিকেলে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান (সিইসি)।
নির্বাচন কমিশন রেফারির ভূমিকায় থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, সব দল সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কোথায় কী সমস্যা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট থেকে পরামর্শ আসবে। সবাই মিলে সব সংকট সমাধান করব। স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে উদাহরণ তৈরি করা হবে।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ বিশাল চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নাসির উদ্দীন বলেন, নির্বাচনকেন্দ্রীক সংস্কার শেষ করতে হবে। সংস্কার কমিশন যত তাড়াতাড়ি রিপোর্ট দেবে নির্বাচনের কাজ তত দ্রুত এগিয়ে নেওয়া যাবে।
তবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে এ সময় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার অন্য একটি প্রজ্ঞাপনে চার কমিশনারের নিয়োগের বিষয়টিও জানানো হয়েছে।
চার কমিশনার হলেন- ১. মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত)। ২. আবদুর রহমানেল মাসুদ, জেলা ও দায়রা জজ (অবসরপ্রাপ্ত)। ৩. বেগম তাহমিদা আহমেদ, যুগ্ম সচিব (অবসরপ্রাপ্ত)। ৪. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত)।
এর আগে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এই পদে যোগ্য ব্যক্তির নাম খুঁজতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে ছয় সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটির আহ্বায়ক হলেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
সার্চ কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক সদস্য হলেন- বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী পদাধিকারবলে সদস্য হিসেবে আছেন বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম এবং পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সেনাকুঞ্জে খালেদা-ইউনূসের কুশল বিনিময়
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুশল বিনিময় করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় তাদের পাশাপাশি চেয়ারে বসে কথা বলতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে তাদের দুজনের সাক্ষাৎ হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস প্রথমে বিএনপি চেয়ারপাসনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তখন খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূস দুজনে পাশাপাশি চেয়ারে বসেন।
এর আগে প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার জানান, বিকেল পৌনে ৪টায় সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে পৌঁছান খালেদা জিয়া। তখন তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ ২৬ নেতার নামে আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দাকার মোশাররফ, আব্দুল মঈন খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের ফজলে এলাহী আকবর, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এ কে এম শাসমুল ইসলাম প্রমুখ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নতুন সিইসি সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীন। আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একই সঙ্গে আরও চার কমিশনারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
কমিশনার হিসেবে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁরা হলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব তাহমিদা আহমদ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সিইসি হিসেবে বিএনপি যে দুজনের নাম প্রস্তাব করেছিল, তার মধ্যে এ এম এম নাসির উদ্দীনের নাম ছিল। তিনি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যান এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বিসিএস ১৯৭৯ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা।
সিইসি পদে বিএনপির দেওয়া তালিকায় আরেক নামটি ছিল- শফিকুল ইসলাম। বিএনপি চলতি মাসের শুরুতে অনুসন্ধান কমিটির কাছে এ তালিকা দিয়েছিল।
বিএনপির মিত্রদলগুলোর বেশির ভাগের তালিকাতেও এ দুই নাম ছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বাহারুল আলম
বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বাহারুল আলম। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।
বুধবার (২০ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে আইজিপি হিসেবে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বাহারুল আলমকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে আইজিপি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।
বাহারুল আলম ২০০৭-০৮ সালে এসবি প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। পরে পুলিশ সদরদপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সদরদপ্তরের শান্তিরক্ষা বিভাগে পুলিশ লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সিনিয়র পুলিশ অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেন। এর আগে ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, কসোভো ও সিয়েরা লিওনে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
দুই দফা পদোন্নতিবঞ্চিত বাহারুল আলম ২০২০ সালে অবসরে যান। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আমরা এক পরিবার, কেউ কারো শত্রু হবো না: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সব মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনের আবদ্ধ করা। কেউ কারও ওপরে না, আবার কেউ কারও নিচেও না; এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
আজ (বৃহস্পতিবার) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা সেনানিবাসের আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অকুতোভয় সদস্য এবং বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ সূচনা করে। সেই আক্রমণের ফলে আমাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয় এবং ফলশ্রুতিতে আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করি। আমি আজ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সকল বীর শহীদদের এবং মহান আল্লাহর দরবারে আমি তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আমি সকল শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য এবং সম্মানিত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের এই আয়োজনে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে যে সকল খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারী উপস্থিত আছেন তাদের জন্যেও রইল আমার বিনীত শ্ৰদ্ধা ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা, যার ফলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও পরিচিতি লাভ করেছে। দেশ স্বাধীন করার মহান ব্রত নিয়ে ৭১ এর ২৫ মার্চ রাত থেকে বাঙালি সেনারা সেনানিবাস ত্যাগ করে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একই সাথে এই দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র জনতা সাধারণ মানুষ সকলেই যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে; যা একটি জনযুদ্ধে রূপ নেয়। আমাদের মা বোনেরা মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণসহ বিভিন্নভাবে যুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধরত সকল বাহিনীকে ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’ নামে সাংগঠনিক রূপ দেয়া হয়। সমগ্ৰ বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। মাত্র ২টি গান বোট ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ’ নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জলপথে যুদ্ধ শুরু করে। এছাড়াও পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশি সাবমেরিনার এবং নাবিকদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা অকুতোভয় নৌ কমান্ডোদল ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক দুঃসাহসী আক্রমণ পরিচালনা করে বিভিন্ন নদী বন্দরে খাদ্য ও রসদ বোঝাই শত্রু জাহাজ ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হয়। এছাড়াও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘কিলো ফ্লাইট’ চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জের জ্বালানি ডিপোসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সফল আক্রমণ পরিচালনা করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর এই অবদানকে সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের সঙ্গে একীভূত করার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ২১ নভেম্বর পালিত হয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চলমান রয়েছে। সময়ের আবর্তে অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্যাপন কালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী যে উদ্যোগ প্রতিবছর নিচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সব মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। পরিবারে মতভেদ থাকবে বাকবিতণ্ডা হবে তবে আমরা কেউ কারও শত্রু হবো না, কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করবো না। কাউকে ধর্মের কারণে শত্রু মনে করবো না, আমরা সবাই সমান। আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। কেউ কারও ওপরে না, আবার কেউ কারও নিচে না এই ধারনা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যহীন শোষণহীন এবং কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের স্বপ্ন নিয়ে রাষ্ট্রকে স্বাধীন করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা আমি সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা এখন থেকে এই বাংলাদেশকে গড়তে চাই, যেন জনগণই এদেশের সকল ক্ষমতার উৎস হয়। বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়। বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায়ে রাখব, পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।