আন্তর্জাতিক
বিশ্বে সাংবাদিক হত্যার ৮৫ শতাংশ মামলায় শাস্তি হয় না: ইউনেস্কো

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংবাদিক হত্যা নিয়ে দায়ের করা মামলার ৮৫ শতাংশ এখনও অমীমাংসিত বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি হয়নি বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়মুক্তির অবসানের আন্তর্জাতিক দিবসে, সব রাষ্ট্রকে সাংবাদিক হত্যার দায়মুক্তির অবসানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে এই সংস্থাটি।
ইউনেস্কোর একটি নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, সাংবাদিক হত্যার দায়মুক্তির মাত্রা এখনও দুঃখজনকভাবে অত্যন্ত বেশি। ৮৫ শতাংশ। ছয় বছরে যা মাত্র ৪ পয়েন্ট কমেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে, সত্য ঘটনা খুঁজে বের করার পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রতি চারদিনে একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাউকে দায়ী করা সম্ভব হয়নি।
ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজৌলে বলেন, আমি আমাদের সব সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই যাতে এই অপরাধগুলো যারা ঘটিয়েছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এ জন্য যা কিছু করা দরকার তার সবকিছুই আপনাদের করা উচিত। ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের হামলা ঠেকাতে অপরাধীদের বিচার করা এবং দোষী সাব্যস্ত করা একটি প্রধান মানদণ্ড।
ইউনেস্কোর নতুন প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য হারে সাংবাদিক হত্যার দায়মুক্তি অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। শুধু তাই নয়, ২০০৬ সাল থেকে ইউনেস্কোর রেকর্ড করা এসব হত্যার ৮৫ শতাংশই অমীমাংসিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও ইউনেস্কো এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। কারণ ৬ বছর আগে এই হার ছিল ৮৯ শতাংশ এবং বারো বছর আগে ছিল আরও বেশি; যা ৯৫ শতাংশ। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমানোর বিষয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে তাদের প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে রাষ্ট্রগুলো, বলছে ইউনেস্কো।
ইউনেস্কোর (২০২২ -২০২৩) সালের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মোট ১৬২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। আগের দুই বছরের (২০২০-২১) তুলনায় প্রায় অর্ধেক মৃত্যু হয়েছে দেশগুলোতে সশস্ত্র সংঘাতের সময়।
অন্যান্য দেশে, বেশিরভাগ সাংবাদিক মারা গেছেন সংগঠিত অপরাধ, দুর্নীতি বা জনগণের বিক্ষোভের ঘটনা কভার করতে গিয়ে। প্রতিবেদনটিতে আরও উদ্বেগজনক তথ্য দেয়া হয়েছে যে, ২০১৭ সাল থেকে নারী সাংবাদিক হত্যার সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। যেখানে ১৪ জন নারী নিহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
সৌদি কি একদিন আগেই ঈদ উদযাপন করেছে?

সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের দিনক্ষণ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলেই পরদিন মাসটির শুরুর দিনে উদযাপিত হয় ঈদুল ফিতর। তবে এবার সৌদি আরবে শাওয়াল মাসের চাঁদ আদৌ দেখে ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত রবিবার প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সৌদি আরব চাঁদ দেখার আগেই ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা করেছে।
এক দিন আগেই ঈদ উদযাপন শুরু করেছে দেশটি। এমন বিতর্কের মধ্যে দেশটির পক্ষ থেকে কাফফারা দেওয়ার কথাও উঠছে। তবে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবার শনিবার চাঁদ দেখার কথা জানিয়ে রবিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। তাদের সঙ্গে আরো কয়েকটি দেশ রবিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করে। তবে অন্য দেশগুলো ঈদ উদযাপন করে সোমবার।
মিসর, জর্দান, সিরিয়াসহ বেশ কয়েকটি সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ সৌদি আরবের ঘোষণার পরও সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানও সোমবার ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন হিসেবে উদযাপনের ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি ওমানের ইবাদি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষও সোমবার ঈদ উদযাপন করে।
অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞ রবিবার ঈদুল ফিতর হতে পারে—এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন, আগের দিন শনিবার চাঁদ দেখা অসম্ভব।
আবুধাবিভিত্তিক আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র জানিয়েছে, যেকোনো ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে পূর্ব গোলার্ধ থেকে শনিবার চাঁদ দেখা অসম্ভব ছিল।
সৌদি জ্যোতির্বিদ বদর আল-ওমাইরা মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজকে বলেন, ‘শনিবার সূর্যগ্রহণের কারণে চাঁদ দেখা অসম্ভব ছিল। কারণ এর পর কয়েক ঘণ্টা ধরে চাঁদ দেখা সম্ভব হয় না।
যুক্তরাজ্যের মুসলিমদের চাঁদ দেখা সংক্রান্ত দল ‘নিউ ক্রিসেন্ট সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাতা ইমাদ আহমেদ গত সপ্তাহে দ্য নিউ আরবকে বলেছিলেন যে ‘ইসলামিক মাসগুলো চাঁদের নতুন পর্যায়ে শুরু হয়—এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে; এটি আসলে ভ্রান্ত ধারণা। বাস্তবে ইসলামিক মাস চাঁদের নতুন পর্যায়ের পরবর্তী পর্যায়ে শুরু হয়।’
কিছু আরব দেশের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ সৌদি আরবকে অনুসরণ করে। সৌদি আরবে ইসলামের দুটি পবিত্র স্থান মক্কা এবং মদিনা অবস্থিত। যার ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকেই মনে করছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কারণে লাখো মুসলমান এক দিন আগেই রোজা রাখা বন্ধ করেছেন।
২০১১ সালে এমন খবর বের হয়েছিল যে সৌদি আরবের চাঁদ পর্যবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ আকাশে শনি গ্রহকে চাঁদ ভেবেছিল। ২০১৯ সালে আবারও এমন ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ দুবারই এ ঘটনা প্রত্যাখ্যান করেছে।
চাঁদ দেখা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি বিষয়গুলো মাঝে মাঝে বিতর্ক এবং বিভিন্ন ব্যাখ্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু দেশ জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব-নিকাশ এবং টেলিস্কোপের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে। অন্যরা চাঁদ দেখতে খালি চোখ ব্যবহার করে।
ইসলামের অসংখ্য বিষয়ের মতো চাঁদ দেখা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহার মতো ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব শুরু হওয়ার দিনক্ষণের ঘোষণার সময় প্রায়ই বিতর্ক দেখা দেয়। কিছু দেশ জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত গণনা এবং টেলিস্কোপের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও অন্যরা জোর দিয়ে বলে যে এটি খালি চোখে দেখা উচিত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭১৯

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২৭১৯-এ পৌঁছেছে, জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন জান্তা প্রধান মিন অঙ হ্লাইং। তার মতে, এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আরও ৪৫২১ জন আহত হয়েছেন এবং ৪৪১ জন এখনও নিখোঁজ। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, মৃতের সংখ্যা ৩০০০ ছাড়াতে পারে।
গত শুক্রবার, স্থানীয় সময় দুপুরে, মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গত শতাব্দীর সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল। এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের বহু আধুনিক ভবন এবং বহু প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস হয়ে গেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এর অনুমান অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়াতে পারে।
মিয়ানমারের মান্দালয়ে উদ্ধার কাজ চলছে, যেখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ধসে দুই শিক্ষক ও ৫০ শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পে মিয়ানমারের সেতু, মহাসড়ক, বিমানবন্দর এবং রেলপথ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মানবিক সহায়তা পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটির অর্থনীতি আগে থেকেই বিপর্যস্ত ছিল, এখন এই ভূমিকম্প পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছাতে শুরু করেছে, যেখানে খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বাসিন্দারা পরিষ্কার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের মতো মৌলিক প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সংগ্রাম করছেন। একদিকে উদ্ধারকারী দলগুলো জীবিতদের খুঁজে বের করে সাহায্য পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।
এদিকে, মান্দালয়ের বাসিন্দারা পরাঘাতের শঙ্কায় রাতে খোলা মাঠে ছোট ছোট তাঁবুতে ঘুমাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, ভূমিকেন্দ্রের কাছাকাছি অঞ্চলে আশ্রয়, খাবার, পানি এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মিয়ানমারের ভূমিকম্পের প্রভাবে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩৩ তলা ভবন ধসে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। ভবনটির ধ্বংস্তূপে অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন, যাদের মধ্যে মিয়ানমারের নির্মাণ শ্রমিকরাও রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র

গাজার সার্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িত ‘সব পক্ষ’ যুদ্ধবিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে, এমনটি আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৫ জনের বিষয়ে দেশটি কোনো মূল্যায়ন করেছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে দেশটি।
নিহতদের মাঝে কেউ ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, কেউ আবার বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মী। একজন ছিলেন জাতিসংঘ কর্মকর্তা।
এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, এ মুহূর্তে গাজায় যা কিছু ঘটছে, সবকিছুর জন্যই হামাস দায়ী।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা জানায়, গত ২৩ মার্চ পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স, একটি অগ্নিনির্বাপক ট্রাক এবং একটি জাতিসংঘের গাড়ি একের পর এক হামলার শিকার হয়। এতে ১৫ জন নিহত হন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের সৈন্যরা এমন কিছু যানবাহনের ওপর গুলি চালায়, যেগুলো ‘সন্দেহজনকভাবে’ সামনে যাচ্ছিল।
যুদ্ধ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইনে বেসামরিক নাগরিকদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। একইসঙ্গে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্তদের বিষয়েও এ আইনে বিশেষ সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও তার নিজের আইনের কাছে বাঁধা। আইন অনুযায়ী, যুদ্ধবিষয়ক আইন লঙ্ঘন করে বিদেশি সামরিক বাহিনী এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে না।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার প্রধান জনাথন হুইটল এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা কখনোই হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারেন না।
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা স্থগিত হওয়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করে। সেই থেকে গাজায় এক হাজার জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ঈদের নামাজ পড়তে পারলেন না ইমরান খান

পাকিস্তান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে এবার পবিত্র ঈদের নামাজ আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়নি। তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা এই নেতা টানা তৃতীয়বারের মতো কারাগারে ঈদুল ফিতর কাটালেন।
দৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে কারা কক্ষ থেকে বের হওয়ার অনুমতি না মেলায় তিনি ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি। খবর জিও-টিভির।
ঈদের নামাজ ফরজ ইবাদত না হলেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে খুবই গুরুত্ববহ। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দী ইমরান খান। রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস করা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রিসহ নানাবিধ অভিযোগে ১০০টিরও বেশি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিছু মামলায় আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তিও দিয়েছেন।
কারা সূত্র জানায়, কারাগারের কেন্দ্রীয় মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হলেও নিরাপত্তার কারণে খান যোগ দিতে পারেননি। তার স্ত্রী বুশরা বিবিও কারাবন্দী। নামাজের সময় তিনি তার কক্ষেই ছিলেন।
ঈদ উপলক্ষ্যে হাই-প্রোফাইল কারাগারের চারপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিন দিনের একটি বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। সূত্রমতে, আদিয়ালা কারাগারে যাওয়ার রাস্তাগুলোতে আটটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে প্রায় ২০০ কর্মকর্তা ও কর্মী মোতায়েন করা হয়। পুলিশ সুপার সাদ্দার নাবিল খোখরের তত্ত্বাবধানে নিরাপত্তা কর্মীরা তিনটি শিফটে দায়িত্ব পালন করেন।
কারাগারের বাইরে পিটিআই সমর্থকদের যেকোনো সম্ভাব্য বিক্ষোভ মোকাবেলায় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা জোরদার করে। একটি রিজার্ভ ফোর্সও মোতায়েন করা ছিল। প্রস্তুত আছে দাঙ্গা-বিরোধী সরঞ্জামে সজ্জিত পুলিশ সদস্যদের একটি ইউনিট।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক মার্কিন পুরস্কার, যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

গত বছরের জুলাই-আগস্ট বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী সাহসী নারী শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী’ পুরস্কার পেয়েছেন। মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক এই মার্কিন পুরস্কারের নাম ‘ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড’। আর এই প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, সকলের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য কাজ করা নারীদের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীরা শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের সমর্থক।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩১ মার্চ) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস।
এদিনের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে উৎখাতে জীবন বাজি রেখে গণআন্দোলনে অংশ নেওয়া নারীদের কৃতিত্বের বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, আজ – আপনার উপস্থাপনার শুরুতে আপনি উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের গর্বিত মেয়েরা আগামীকালের পুরস্কার গ্রহণ করে সম্মানিত হচ্ছেন। বাংলাদেশি মেয়েরা এই পুরস্কার পাচ্ছেন, এই মঞ্চ থেকেই তারা সেটা গ্রহণ করবেন। ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের আন্দোলনের জন্য বাংলাদেশি মেয়েরা পুরস্কার পাচ্ছেন, এই বিষয়ে আপনার কি কোনও মন্তব্য আছে?
জবাবে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, তারা আগামীকাল পুরস্কার পাচ্ছেন। আমি এখানে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কারের বিষয়ে কথা বলব। বাংলাদেশের রাজনীতির প্রকৃতি সম্পর্কিত প্রশ্নের শেষ অংশ নিয়ে আমি কোনও অনুমান করব না।
তিনি আরও বলেন, আমি আবারও উল্লেখ করতে চাই যে- পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প আগামীকাল এখানে পররাষ্ট্র দপ্তরে ১৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। ২০২৫ সালের এই অনুষ্ঠানে আটজন অসাধারণ নারীকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং বিশ্বজুড়ে ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ আইডব্লিউওসি পুরস্কার প্রাপকদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে যারা সকলের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য কাজ করছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, বিশ্বজুড়ে সেইসব নারীদের স্বীকৃতি দেয় যারা ব্যতিক্রমী সাহস, শক্তি এবং নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীরা শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের সমর্থক। তাদের প্রচেষ্টার ফলে তারা প্রায়শই তাদের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের ব্যক্তিগত ঝুঁকির সম্মুখীন হন।
ট্যামি ব্রুস আরও বলেন, ২০০৭ সাল থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ৯০টিরও বেশি দেশের ২০০ জনেরও বেশি নারীকে আইডব্লিউওসি পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
তিনি বলেন, বিদেশে মার্কিন কূটনৈতিক মিশনগুলো তাদের নিজ নিজ অবস্থানের দেশ থেকে একজন সাহসী নারীকে মনোনীত করে এবং চূড়ান্ত প্রার্থীদের নির্বাচিত করে বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুমোদন করেন।
মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের পরে পুরস্কারপ্রাপ্তরা ওয়াশিংটন ডিসিতে আন্তর্জাতিক ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রাম এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে অতিরিক্ত প্রোগ্রামিংয়ে অংশগ্রহণ করবেন। সেখানে তারা বিশ্বব্যাপী নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য তাদের কাজকে আরও এগিয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়ে আমেরিকান নারীদের সাথে দেখা কর।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক “ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড” পেয়েছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারী শিক্ষার্থীরা। আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকা (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ বা আইডব্লিউওসি) পুরস্কারের পাশাপাশি এই পুরস্কার দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এই পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের আয়োজনে বিজয়ীদের এই পুরস্কার দেওয়া হবে।
মর্যাদাপূর্ণ এই অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নারী শিক্ষার্থীদের ইতোমধ্যেই অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।