রাজনীতি
আমরা মরতে চাই, দেখি কত লোক মারতে পারে: জিএম কাদের
দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, আমরা মরতে চাই, দেখি কত লোক মারতে পারে।
আগামীকাল শনিবার (২ নভেম্বর) জাতীয় পার্টি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ করবে বলেও জানান তিনি। জি এম কাদের বলেন, আমরা মরতে এসেছি, আমরা মরতে চাই, কত মারবে তোমরা আমরা দেখতে চাই।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে ‘জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের আরও বলেন, আল্লাহ আমাদের প্রটেকশন দিচ্ছেন বলে এখনো বেঁচে আছি, অন্য কারও প্রটেকশনে নয়। বিচারের জন্য যদি আল্লাহর সাহায্যের দিকে চেয়ে থাকতে হয় তাহলে দেশ কীভাবে চলবে। আমরা একদিনের ডেমোক্রেসি চাই না। সব সময়ের ডেমোক্রেসি চাই। আমরা চাই সরকার হবে- ‘অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল’।
তিনি বলেন, আমরা দেশের জনগণের পাশে ছিলাম, সবসময় থাকবো। আমার পরবর্তী প্রজন্ম এলেও জাতীয় পার্টি জনগণের পাশে থাকবে এবং একইভাবে এগিয়ে যাবে। আমাদের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের দুই তারিখের কর্মসূচি চলবে। আমাদের কর্মসূচি ও আন্দোলন সবই চলবে নিয়মতান্ত্রিক এবং অহিংসভাবে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশটা এখন ভালো অবস্থায় নেই। শেখ হাসিনা দেশটাকে যেভাবে বিভক্তি করেছিলেন এখন একইভাবে বিভক্তি করা হচ্ছে। এখন হাজার হাজার মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উনারা যা বলে তা-ই সঠিক, বাকি সবাই ভুল। উনারা এখন বিচারকার্যেও গিয়ে বাধা দেয়। উনাদের ইচ্ছা হলো আমাদের অফিস ভেঙে দিয়ে গেল। কারও যদি ভুল হয় সেখানে ব্যবস্থা নেওয়ার অনেক উপায় আছে, তাই বলে তাকে ধ্বংস করে দেবেন, এটা কেমন হবে।
জিএম কাদের বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা সবসময় সমর্থন জানিয়েছি। তাদের পক্ষে সে সময় অনেক কথা বলেছি, বিবৃতি দিয়েছি। যে কারণে আমার অনেক ক্ষতিও হতে পারতো। কিন্তু এসব কিছুর পরোয়া আমরা করিনি। তারপরও আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
‘আমি এখন বলছি, জাতীয় পার্টি একটি জনগণের রাজনৈতিক দল। হয়তো সারাদেশে আমাদের অবস্থান কিছুটা কম আছে, তবুও আমরা টিকে আছি। চাপে গর্তে ঢুকে গেলেও বারবার জাতীয় পার্টি উঠে দাঁড়ায়, এটাই অনেকের সহ্য হয় না। যে কারণে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়। জাতীয় পার্টি সবসময় জনবান্ধব দল ছিল, এখনো আছে এবং আগামীতেও থাকবে।’
তিনি বলেন, এরশাদ সাহেবকে যতই অপবাদ দেওয়া হোক না কেন জনগণ তার পাশে ছিল। অনেকে বলে এরশাদ সাহেবকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নামানো হয়েছে, এটা একদমই ভুল কথা। উনি জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়েছেন। তবে একানব্বই থেকে উনার (এরশাদ) এবং জাতীয় পার্টির ওপর নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
জিএম কাদের আরও বলেন, জাতীয় পার্টি কোনো সময় দলীয়করণ করেনি। জাতীয় পার্টি সবসময় বিভিন্ন দলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তবে একটি গোষ্ঠী জাতীয় পার্টির নামে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে নানা রকমের ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, সবাই বলে আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দোসর। কিন্তু কীভাবে দোসর হলাম। আমরা শেখ হাসিনার কোনো ধরনের জনবিরোধী কাজের সঙ্গে ছিলাম না। আমরা বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের জনবিরোধী ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আওয়ামী লীগের দলীয়করণের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, অনেকে বলেন ১৫ বছর অবৈধ শাসনামল ছিল। তবে আমরা বলি সেটি ছিল ১০ বছর, ২০১৪-২০২৪ পর্যন্ত সরকারকে আমরা অবৈধ শাসনামল হিসেবে দেখছি। ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত শাসন আমলকে অবৈধ বলা ঠিক নয়, তবে খারাপ শাসনামল বলতে পারেন।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে সব দল শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তখন কি সব দল শেখ হাসিনার সরকারকে বৈধতা দেয়নি। এটা কি একা জাতীয় পার্টি দিয়েছিল।
জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, যখন নির্বাচনে যেতে চাই না, তখন জোর করা হয়। কিন্তু যখন যেতে চাই, তখন বাধা আসে। জাতীয় পার্টি একটি রাজনৈতিক দল, আমাদের অধিকার আছে রাজনীতি করার, যে কোনো দলের সঙ্গে আমরা যেতে পারি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় গুলশানের বাসা থেকে সেনাকুঞ্জের উদ্দেশে রওনা হবেন খালেদা জিয়া।
বুধবার (২০ নভেম্বর) খালেদা জিয়ার একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী এ বি এম আব্দুস সাত্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৮ সালের পর খালেদা জিয়ার এটি প্রথম প্রকাশ্য কর্মসূচি, যেখানে তিনি অংশগ্রহণ করবেন। এর আগে, ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট সফরের মাধ্যমে খালেদা জিয়া শেষবারের মতো জনসমক্ষে হাজির হয়েছিলেন।
এবারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা ২০০৯ সালের পর তার প্রথম অংশগ্রহণ। সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে মোট ২৬ জন আমন্ত্রিত হয়েছেন, যার মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা রয়েছেন।
সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
কারাগারে থেকেও সালমানেরা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে: রিজভী
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ গ্রেফতারকৃতরা কারাগারের ভেতর থেকেও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য না থাকলে এবং কোনো ভাবে যদি শেখ হাসিনার পুনরুত্থান ঘটে তবে আমরা কেউ রেহাই পাবো না। সেই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে যাদের সঙ্গে ভিতরে সম্পর্ক রাখে এমন দু-একজন বাদে কেই রেহাই পাবে না। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকবে না। তাই এ সরকারের গভীর চিন্তাভাবনা করে কাজ করা উচিৎ এবং আরও উচিৎ ছিলো।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, কয়েকজন উপদেষ্টার পদক্ষেপ আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। এটা গোটা জাতিকে শঙ্কার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই সালমান এফ রহমানের মতো লোকরা কারাগারের ভেতর থেকেও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আর যারা এখনো গ্রেফতার হয়নি তারা বিপুল অংকের টাকা ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার পায়তারা করছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
‘খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলে রোগাক্রান্ত অবস্থাতেও বিজয়ী হবে’
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলে রোগাক্রান্ত অবস্থাতেও বিজয়ী হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
আমাকে দেশনায়ক-রাষ্ট্রনায়ক বলবেন না: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, দয়া করে আমার নামের সঙ্গে কেউ দেশনায়ক বা রাষ্ট্রনায়ক জাতীয় শব্দ ব্যবহার করবেন না। আজ মঙ্গলবার বিএনপি আয়োজিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এ কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি এমন একটি দল যারা অতীতে দেশের উন্নয়নের জন্য, মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে হয়নি। আমরা সবাই জানি, অনেকেই বলেছেন বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারলে, জনগণের চাওয়া অনুযায়ী কাজ করতে পারলে, আগামী দিনে বিএনপিই সরকার গঠন করবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করছে দলের নেতাকর্মীদের ওপর। আমাদের এই ৩১ দফা হলো ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে দেশ পরিচালনা করব, তার রূপরেখা। এটা প্রথমে ছিল ২৭ দফা। পরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমাদের যুগপৎ আন্দোলনে যেসব দল শরিক ছিল, তাদের সবার মতামতের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ, এটা শুধু বিএনপির নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সব দলের সম্মিলিত চিন্তার ফসল।’
ভার্চুয়াল বক্তব্যে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘এই ৩১ দফাকে দেশের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। জনসভা করে নয়, ছোট ছোট উঠান বৈঠক করে গ্রামে গ্রামে ইউনিয়নে ইউনিয়নে গিয়ে মানুষকে জানাব। আমি কয়েকদিন আগে এক বক্তব্যে বলেছিলাম, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি না হলে তাহলে যেই সংস্কার করি, কাজে লাগবে না,’ বলেন তিনি।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণেরর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এরজন্য ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পৃথিবীর যেকোন গণতান্ত্রিক দেশে, ভোটের মাধ্যমে জবাবদিহিতা তৈরি হয়।’
সবশেষে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সহকর্মী হিসাবে আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ ও নেতা হিসেবে আপনাদের কাছে নির্দেশ যে, আজকের পর থেকে দয়া করে আমার নাম যখন কেউ বলবেন, দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক এই কথাগুলো কথাগুলো দয়া করে কেউ ব্যবহার করবেন না।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
নির্বাচন দিলে দেশের অর্ধেক সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি কেন বার বার নির্বাচনের কথা বলছি। কারণ নির্বাচন দিলে অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
আজ সোমবার মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দেশ একটি ক্রান্তিকাল পার হচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল (রোববার) আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন, ভালো হয়েছে। অনেকে আশান্বিত হয়েছেন, আমি একটু আশাহত হয়েছি। আমি আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা তার সমস্ত প্রজ্ঞা দিয়ে সমস্যাটা চিহ্নিত করে নির্বাচনের একটি রূপরেখা দেবেন। আমি কেন বার বার নির্বাচনের কথা বলছি। কারণ নির্বাচন দিলে অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিএনপি ক্ষমতায় যাক, না যাক, সেটা বড় বিষয় নয়। কিন্তু আজকে যারা দেশের ক্ষতি করতে চাচ্ছে, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাচ্ছে, দেশকে সংঘাতে জড়াতে চাচ্ছে, তারা তখন পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবে। কারণ ওই সরকারের পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে। এটা চিন্তা করতে হবে।
তিনি বলেন, এখন যে পরিবর্তন এসেছে তা বুঝতে হবে। বুঝতে হবে, ছেলেরা কি বলছে। আমরা ১৫ বছর ধরে লড়াই-সংগ্রাম করেছি, যান দিয়েছি, প্রাণ দিয়েছি, মামলা খেয়েছি, জেলে গেছি। তারপরও শেষ লাথিটা গোলে কে মেরেছে? ছাত্ররা মেরেছে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমরা (বিএনপি) যখন সারা দেশে বিভাগীয় সমাবেশ করছি, তখন আমি আমার বক্তব্যে একটা কথা খুব জোর দিয়ে বলতাম। কোথায়, আমরা তো নবীনদের দেখতে পাচ্ছি না, তরুণদের দেখতে পাচ্ছি না, ছাত্রদের দেখতে পাচ্ছি না। ছাত্র-তরুণরা যদি সঙ্গে না আসে, তাহলে বুক পেতে গুলি নেবে কে? বুক পেতে গুলি নেয়ার প্রতীক ছাত্র, তরুণ, যুবক। যার পিছুটান নেই, যে ভ্যানগার্ড। আমরা মধ্য বয়সী, বয়স্করা পরিবারের কথা চিন্তা করি। আমরা ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করি। আমি যদি আজ গুলি খেয়ে পড়ে যাই, আমার পরিবারের কি হবে সেই চিন্তা করেছি- তাই না? কিন্তু বুক পেতে দাঁড়িয়ে থাকা, সাঈদ রংপুরে যেভাবে দাঁড়ালো, দ্যাট ওয়াজ দ্য টার্নিং পয়েন্ট অব মুভমেন্ট। এ বিষয়টি আমাদের চিন্তা করতে হবে। সুতরাং, ছাত্রদের সঙ্গে আমাদের কখনোই দূরত্ব সৃষ্টি করা যাবে না।
তিনি বলেন, দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য দ্রুত নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। কারণ এ ধরনের সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার) যতদিন বেশি থাকে, তত সমস্যা তৈরি হবে। কারণ এর তো ম্যান্ডেট নেই। এ তো নির্বাচিত সরকার নয়। এর পেছনে শক্তিটা কোথায়? এ জন্যই এই সরকারকে চিন্তা করতে হবে, যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব, প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে নির্বাচন দিতে হবে। আমরাও সংস্কার চাই, তবে তা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে করতে হবে। এমন সময় যেন না নেয়, যে সময় নিতে গেলে জনগণের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা হয়, যে আপনি (অন্তর্বর্তী সরকার) থেকে যেতে চাইছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, হাসিনা পালিয়ে গেছে কেন? হাসিনা পালিয়ে গেছে, তিনি চিন্তা করতে ভুল করেছেন। আমরা বার বার বলেছি, দেয়ালের লিখন পড়েন, মানুষের চোখের ভাষা বোঝেন। মানুষ এখন আর আপনাদের চায় না। আপনারা দেশটাকে ধ্বংস করেছেন। আমাদের কথা তারা শোনেনি। না শুনে উল্টো নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করেছে এবং শেষ পর্যন্ত পালিয়ে গেছে। আমরা কেউ যেন এমন কাজ না করি, যা দেশকে আবার অনিশ্চয়তা, অস্থিরতার দিকে নিয়ে যাবে।
মওলানা ভাসানীর স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, মওলানা ভাসানী আমাদের সেই পথ বার বার দেখিয়েছেন। তাকে বলা হতো প্রফেট অব ভায়োলেন্স। তিনি প্রথম পল্টন ময়দানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলেন আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে। একদিকে তিনি যেমন আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারতেন, আরেকদিকে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা করে নিয়ে আসতে পারতেন।
কাফি