অর্থনীতি
উচ্চ সুদ ও জ্বালানি সংকটে চাপে শিল্প খাত
দেশের অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, উচ্চ সুদহার, জ্বালানি সংকট, ডলার সংকট, তারল্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে টানা দরপতনে সর্বস্ব হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। আবার অনেক ব্যাংকে আমানতের টাকাও ফেরত না পেয়ে শাখায় তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছেন গ্রাহকরা। আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ ও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটে শিল্পের চাকা থমকে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কঠিন সংকটের মুখোমুখি ব্যবসায়ীরা।
অর্থনীতিতে এখন সম্ভাবনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এসব অনিশ্চয়তা সামলানো। কিন্তু শ্রম অসন্তোষ, জ্বালানি সংকট, মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি ঋণের উচ্চ সুদ ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তুলছে। ইতিমধ্যেই উৎপাদনমুখী অনেক শিল্প লোকসানে পড়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে তারল্য কমানোর পাশাপাশি সুদহার বাড়ানো হলেও তা কাজে আসছে না। বরং তা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সংকট আরও বাড়িয়ে তুলছে। এমন পরিস্থিতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আরও কমিয়ে দিচ্ছে।
জুন শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি তলানিতে পৌঁছেছে বলে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যুরো (বিবিএস)। গত সোমবার সংস্থাটি জিডিপির তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে দেশের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯১ শতাংশে। এ প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও দুই দফা বন্যায় চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি আরও কমবে।
বিবিএসের তথ্য বলছে, শেষ প্রান্তিকে দেশের শিল্প খাত ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল তলানিতে। চলতি বছর জুন শেষে দেশের শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশে, অথচ আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ। শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে সেবা খাতেও। সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি কমে এ সময়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশে, এটি আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ।
২০২০ সালের এপ্রিলে সরকারের পরামর্শে ব্যাংকঋণের সুদ সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে মেয়াদি আমানতের সুদহারও বেঁধে দেওয়া হয়, সে হার ছিল ৬ শতাংশ। এরপর দীর্ঘদিন ব্যাংক খাতে ঋণ ও আমানতের ক্ষেত্রে সুদহার ৯-৬-এ সীমাবদ্ধ ছিল। উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতি নানা সংকটে পড়লে গত বছর জুলাই থেকে সুদের হার বাড়তে শুরু করে।
গত আগস্টে আহসান এইচ মনসুর গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে নীতি সুদহার আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরই অংশ হিসেবে গত দুই মাসে দুই দফা নীতি সুদহার বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার নীতি সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানোর ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে ওভারনাইট রেপো সুদহার ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। ফলে ঋণসহ সব ধরনের ব্যাংকিং পণ্যের সুদের হার বাড়বে। বাজারে অর্থের সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নীতি সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব পড়ে বাণিজ্যিক ঋণের সুদহারেও। এক বছরে ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ঋণের সুদ হার দাঁড়িয়েছে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশে। ফলে শিল্পে আর্থিক ব্যয় বেড়ে গিয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এমনিতে গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে কারখানাগুলো পূর্ণ উৎপাদনে নেই। এর মধ্যে সুদব্যয় বাড়ায় কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমে গেছে, কোনো কোনোটি পড়েছে লোকসানে।
উচ্চ সুদহারের পাশাপাশি তারল্য সংকোচনের প্রভাবে ব্যবসায়ীরা ঋণও পাচ্ছেন না। আবার অনেক ব্যবসায়ী বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা সম্প্রসারণে যাচ্ছেন না। এতে করে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমে গেছে। গত আগস্ট পর্যন্ত মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ৪১ শতাংশ। এ সময় মধ্যবর্তী পণ্য আমদানিও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। ডলার সংকটের কারণে এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় আগামীতে গ্যাসের সরবরাহ পরিস্থিতির যে উন্নতি হবে না, তা বলা যায়। আমদানি সীমিত থাকার মধ্যেই চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সামগ্রিক আমদানির পরিমাণ প্রায় ৭ শতাংশ কমে গেছে।
খনি ও খনন, শিল্পের উৎপাদন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সরবরাহ, অবকাঠামো এ কয়েকটি উপ-খাত রয়েছে শিল্প খাতে। জুন শেষে শুধু বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ উপ-খাতেই প্রবৃদ্ধি ভালো দেখা গেছে। গত বছর জুনে এই উপ-খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক ২ দশমিক ৬ শতাংশ, যা এবার ১০ দশমিক ১১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। গত বছর জুন শেষে উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৩৪, এবার তা কমে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশে নেমেছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোয় টাকা না থাকায় এখন বড় ভোগান্তি রপ্তানিকারকদের। একসময় নামিদামি ব্যাংকগুলো এখন মুখ থুবড়ে পড়ায় এলসি খোলার মতো অর্থও নেই অনেক ব্যাংকের। বিশেষ করে ১৫টি ব্যাংকের তারল্যসংকট রয়েছে।
আবার অর্থসংকটের কারণে অন্তর্বর্তী সরকার উন্নয়ন ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। অতি প্রয়োজনীয় না হলে কোনো প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে না। অনেক মেগা প্রকল্প বন্ধ রাখা হয়েছে। তারল্যসংকটের কারণে বেসরকারি খাতের ঋণও নেমেছে তলানিতে। গত আগস্টে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি নেমেছে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে, যা ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
অবকাঠামোতে অর্থনীতির কার্যক্রম কমে ৬৯ হাজার ৫১৮ কোটি টাকায় নেমেছে জুন শেষে। আগের প্রান্তিকেও তা ছিল ৯২ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। তবে শেষ প্রান্তিকে উৎপাদনের কার্যক্রম কমলেও তা অতটা কমেনি। জুন শেষে উৎপাদনের কার্যক্রম কমে ২ লাখ ৬ হাজার ১৪০ কোটি টাকায় নেমেছে, আগের প্রান্তিকেও তা ছিল ২ লাখ ১৫ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।
এদিকে উচ্চ সুদহারের প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। ব্যাংকে আমানতের সুদ বেশি থাকায় ব্যক্তিশ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে ব্যাংকে আমানত রাখছেন। এতে করে পুঁজিবাজারে ক্রেতাসংকট তৈরি হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট এসইসিতে নতুন কমিশন যোগ দেওয়ার পর থেকে আড়াই মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচকটি প্রায় ১৬ শতাংশ কমে যায়। টানা পতনে ট্রিগার সেলের কারণে বিনিয়োগকারীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পুঁজির সর্বস্ব হারিয়েছেন।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধকলে আছে। একই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে গেলেও এক বছরের মাথায় প্রায় প্রতিটি দেশ তাদের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও ভারতের মতো দেশও এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে রয়েছে। সর্বশেষ সেপ্টেম্বরেও বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে রয়েছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি রয়েছে ১০ শতাংশের ওপর।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব
ঋণের নামে ইসলামী ব্যাংকের ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাতের সই করা এক চিঠিতে এ তলব করেন।
চট্টগ্রামের মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. গোলাম সরওয়ার চৌধুরী ও অন্য ব্যবসায়ী গ্রুপ জাল-জালিয়াতি করে ওই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়। দুদক সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে। ১৭ কর্মকর্তার বিষয়ে ও অভিযোগ সম্পর্কে তথ্য চেয়ে উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত স্বাক্ষরিত চিঠি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে ওইসব কর্মকর্তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি পাঠাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ, জুবিলী রোড শাখার গ্রাহক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টসের ঋণ পরিদর্শন বা মনিটরিং নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভূমিকার যৌক্তিকতা সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত ১১ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওইসব কর্মকর্তাদেরকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিলো। তারা ওইদিন হাজির না হওয়ায় তাদেরেক দুদকে হাজির হয়ে ঋণ-সংক্রান্ত পরিদর্শন রেকর্ডপত্র ও লিখিত বক্তব্য জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ওই ১৭ কর্মকর্তা হলেন- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের উপপরিচালক মে. জুবাইর যেসেন, উপপরিচালক খোরশেদুল আলম, রুবেল চৌধুরী, দেবাশীষ বিশ্বাস, মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বাবলু, যুগ্ম পরিচালক সুনির্বাণ বড়ুয়া, অনিক তালুকদার, কোল হোসেন, সৈয়দ মু আরিফ-উন-নবী, অতিরিক্ত পরিচালক ছলিমা বেগম, শংকর কান্তি ঘোষ, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও মো. সোয়াইব চৌধুরী।
বাংলাদেশ ব্যাংক ঢাকা অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আব্দুর রউফ, উপপরিচালক লেনিন আজাদ পলাশ, পরিদর্শন দলের নেতা ও অতিরিক্ত পরিচালক মো. মঞ্জুর হোসেন খান।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
খেজুরের আমদানিতে কমলো শুল্ক, থাকছে না অগ্রিম কর
রমজানে দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে খেজুর আমদানিতে আমদানি শুল্ক ও সমুদয় অগ্রিম কর কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নতুন ওই সুবিধা ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পবিত্র রমজান মাসে খেজুরকে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য খেজুর আমদানির ওপর বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৩ শতাংশ এবং বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে অর্থাৎ মোট করভার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ হতে হ্রাস করে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।
এর আগে ১৭ নভেম্বর খেজুর আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) কমানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুর আমদানিতে আগাম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ, আগাম কর ৫ শতাংশ পুরোপুরি বাতিল এবং আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করে ট্যারিফ কমিশন।
এনবিআর মনে করে, খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক-কর হ্রাস করার ফলে মানভেদে প্রতি কেজি খেজুরের আমদানি ব্যয় প্রায় ৬০ টাকা হতে ১০০ টাকা হ্রাস পেতে পারে। আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর হ্রাসের ফলে খেজুরের আমদানি বৃদ্ধি পাবে, বাজারে খেজুরের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং খেজুরের বিক্রয় মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
দেশের বাজারে আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে এবার সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দাম বাড়ানোর ফলে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে এক লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীকাল (২২ নভেম্বর) থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জুস-ড্রিংকস রপ্তানিতে মিলবে নগদ প্রণোদনা
কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তার জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে দেশে উৎপাদিত ফলজাত পাল্প থেকে প্রস্তুত করা জুস ফ্রুটবার, ড্রিংকস জাতীয় পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারকরা। বর্তমানে এ খাতের রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয় সরকার।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, কৃষিপণ্য (শাক-সবজি ও ফলমূল) এবং প্রক্রিয়াজাত (অ্যাগ্রো প্রসেসিং) কৃষিপণ্য রপ্তানিতে রপ্তানি প্রণোদনা নগদ সহায়তা প্রদান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে জারি করা এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলারে ফল ও সবজি থেকে উৎপাদিত সব ধরনের পেস্ট, ফ্রুটবার, টিনজাত সামগ্রী, ডিহাইড্রেটেড সামগ্রী, জুস, ড্রিংকস রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। এর সঙ্গে সরকারি সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করা বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত সহযোগী বা ভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলজাত পাল্প থেকে প্রস্তুত করা জুস এবং ড্রিংক্স ইত্যাদি রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পাবে।
কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত আগের জারি করা অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ডলার
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার বেড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ ছয় কোটি ১০ লাখ বেড়ে এক হাজার ৮৪৯ কোটি কোটি ৪০ লাখ ডলারে দাঁড়াল। বর্তমানে বিভিন্ন তহবিলসহ গঠিত মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৪২৭ কোটি ডলার।
আগের সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দুই মাসের বিল পরিশোধের পর নভেম্বরের মাঝামাঝি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।
আকু হলো আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। এর সদস্যদেশ হলো বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সম্প্রতি এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা।
আকুর বিল পরিশোধ ছাড়াও রিজার্ভ থেকে দৈনন্দিন ভিত্তিতে বিদেশি ঋণ ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। সরকারের জরুরি আমদানি ব্যয় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিও করতে হয়।
অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ, অনুদান, প্রবাসী আয়ের নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ হিসেবে জমা হয়।
কাফি