ব্যাংক
তথ্য গোপনে এনআরবিসি ব্যাংককে অর্থদন্ড, শাস্তির মুখে কর্মকর্তারা
এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের পরিচালক আবু বকর চৌধুরীর মিথ্যা ঘোষণায় উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার হওয়ার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তথ্য উদ্ঘাটন এবং বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের কারণে এখন সব পরিচালকের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ ধারায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে গঠিত ব্যাংকটির সব উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারের আইনানুগ আবাসিক মর্যাদার দলিল চাওয়া হয়েছে। এছাড়া অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য গোপন করায় ব্যাংকটিকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গত রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকটিতে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নানা অনিয়ম ও জালিয়াতিতে জড়িত ব্যাংকটি। একের পর এক অনিয়ম করেও তা গোপন রাখা হতো। আর এসব অনিয়ম আড়াল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও দেওয়া হতো মিথ্যা তথ্য। এতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বিভ্রান্ত করে আসছিল ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ চক্রটি। বিগত সরকারের প্রভাবশালী বলয়ের সহযোগিতায় এবং এনআরবিসি ব্যাংকের আলোচিত চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের নেতৃত্বে এসব অপকর্ম চলে আসছিল।
সূত্র জানায়, এনআরবিসি ব্যাংকের ওপর গত ফেব্রুয়ারিতে পরিচালিত বিশদ পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলোকে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাখ্যা তলব করে সন্তোষজনক জবাব পাওয়া যায়নি। এমন এক সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নিচ্ছে যখন ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমাম পলাতক। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তাদের আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, এনআরবিসি ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ার কেনার সময় ২০১২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণাপত্রে আবু বকর চৌধুরীর জাতীয় পরিচয়পত্র ‘নেই’ উল্লেখ করা হয়। অথচ পরিদর্শনে দেখা গেছে– ব্যাংকটির ওআর নিজাম রোড শাখায় আবু বকর চৌধুরীর মালিকানার বায়েজিদ স্টিল ইন্ডাস্ট্রির অ্যাকাউন্ট খোলার নথিতে ২০০৮ সালের ১৪ মে ইস্যু করা তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংরক্ষিত আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় আবু বকর চৌধুরীসহ সকল পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ ধারায় কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ১৪ দিনের মধ্যে পৃথক কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ধারার আওতায় পরিচালক অপসারণ করার ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ৬৮ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং সাধারণ শেয়ারধারীদের ৩১ দশমিক ৯৪ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ পরিদর্শন দল পেয়েছে ভিন্ন তথ্য। শেয়ার ধারণসংক্রান্ত অসামঞ্জস্য তথ্যের কারণে কেন ১০৯ ধারার আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ১৪ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে হবে। আর সকল অনিবাসী পরিচালকের আবাসিক মর্যাদা পুনরায় যাচাই করে ৩০ দিনের মধ্যে দলিলসহ প্রতিবেদন দিতে হবে। এছাড়া আগামী ৬ মাসের মধ্যে অনিবাসীদের শেয়ার ধারণ ৫০ শতাংশে নামিয়ে না আনলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে হুশিয়ারি করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের ওআর নিজাম রোড শাখার হিসাবধারী মো. রেজাউল বশির চৌধুরীর হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন চিহ্নিত হওয়ার পরও তা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হয়নি। এ কারণে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে এই জরিমানা পরিশোধ না করলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত হিসাব থেকে কেটে নেওয়া হবে। এছাড়া ২০২১ সালের ১৮ মে থেকে ২০২২ সালের ৭ এপ্রিলের এ ঘটনায় ব্যাংকটির তৎকালীন ক্যামেলকো ও বর্তমান ডিএমডি কবির আহমেদ, শাখাপ্রধান ও শাখার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ জড়িত সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ সময় ধরেই এনআরবিসি ব্যাংক অনিয়ম করেও তথ্য লুকিয়ে রেখেছিল। আমাদের পরিদর্শনে সেটি বেরিয়ে এসেছে। এসব অপরাধের জন্য ব্যাংকটিকে জরিমানা এবং জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল এবং ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের নতুন ডিএমডি আবু জাফর
এস এম আবু জাফর আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। ২০২১ সাল থেকে ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তরা মডেল টাউন শাখায় দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে যোগদানের পূর্বে তিনি এক্সিম ব্যাংক এবং ইউসিবিএল ব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন।
আজ (মঙ্গলবার) ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবু জাফর এক্সিম ব্যাংকে ২০০০ সালে ম্যানেজমেন্ট ট্র্রেইনি হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার ব্যাংকিং কর্মজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ ২৪ বছরের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে শাখা পর্যায়ে বৈদেশিক বাণিজ্য প্রধান, অপারেশন ম্যানেজার এবং তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট ও এডি শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সফলতার সাথে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি তিনবার “চেয়ারম্যানস্ গোল্ড মেডেল” অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। এ ছাড়াও ২০১৭ সালে তিনি শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বহু প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং দেশে ও বিদেশে অনুষ্ঠিত ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রথিতযশা এ ব্যাংকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুর্বল তিন ব্যাংককে আরও ২৬৫ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা
তারল্য ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোকে সচল করতে কাজ করছে সরকার। তাতে সবল ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সপ্তাহে বড় অঙ্কের তারল্য সহায়তার পর এবার দুর্বল তিন ব্যাংককে আরও ২৬৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল চার ব্যাংক।
সহায়তা দেওয়া ব্যাংকগুলো হলো- ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সহায়তার পাশাপাশি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব কৌশল থাকা উচিত। কারণ গ্যারান্টি সহায়তা দিয়ে যে কোনো ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। ঋণ আদায়ে তাদের নিজস্ব কৌশল থাকতে হবে। যদিও কিছু ব্যাংক ঋণ আদায়ে খুব ভালো করছে। তাদের মতো অন্যদেরও উদ্যোগী হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তার আশাই সব ঠিক হবে না।
এর আগে গত সপ্তাহে তারল্য ঘাটতি মেটাতে দুর্বল সাত ব্যাংকে ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল ১০ ব্যাংক। ওই সময় এসব ব্যাংক থেকে চাওয়া হয়েছিল ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক। সাতটি থেকে ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক পেয়েছিল ২ হাজার ৯৫ কোটি টাকা।
সহায়তা পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে ছিল- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ছয় ব্যাংক থেকে পেয়েছে ১ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ছয় ব্যাংক থেকে ১ হাজার কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯২০ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৭০০ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ৪০০ কোটি এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ২৯৫ কোটি টাকা। আর যেসব ব্যাংক তারল্য সহায়তা দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক, বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক।
এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ১৭টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে সভা করেন। সভায় দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তা অব্যাহত রাখতে শক্তিশালী ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করেন গভর্নর।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব
এস আলম গ্রুপ ও তার সহযোগীদের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বরাবর অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক ইয়াছির আরাফাত সই করা তলবি চিঠিতে তাদেরকে আগামী ২০ ও ২১ নভেম্বর দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চিঠিতে কর্মকর্তাদের হাজির হওয়ার পাশাপাশি তাদের পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। এছাড়া চিঠিতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ, জুবিলি রোড শাখার গ্রাহক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস নামীয় ঋণ পরিদর্শন ও মনিটরিং সংক্রান্ত কর্মকর্তা ভূমিকার বিষয়ের বিস্তারিত তথ্যসহ হাজির হতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে ২০ নভেম্বর যাদের তলব করা হয়েছে- বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের যুগ্মপরিচালক সুনির্বাণ বড়ুয়া, অনিক তালুকদার, অতিরিক্ত পরিচালক শংকর কান্তি ঘোষ, ছলিমা বেগম, উপপরিচালক মো. জুবাইর হোসেন ও রুবেল চৌধুরী।
২১ নভেম্বর যাদের তলব করা হয়েছে- বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক সৈয়দ মু. আরিফ-উন-নবী, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মো. শোয়েব চৌধুরী, মো. মঞ্জুর হোসেন খান ও মো. আব্দুর রউফ, উপ-পরিচালক লেনিন আজাদ পলাশ এবং পরিচালক মো. সরোয়ার হোসাইন।
একই ঘটনায় এর আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল সংস্থাটি।
অভিযোগ রয়েছে, মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম সারওয়ার চৌধুরী, জুবিলি রোড শাখার গ্রাহক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টসসহ অন্যান্যরা ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ইসলামী ব্যাংকে থেকে আত্মসাৎ করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার কোটি টাকা
গত তিন মাসে (জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৭৩ হাজার কোটি টাকা। আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি। সেই হিসাবে খেলাপি মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। শুধু তাই নয় গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যের প্রতিবেদন থেকে এ বিষয়টি জানা গেছে।
তথ্য বলছে, গত বছরের জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এতদিন যা স্বার্থান্বেষী মহলগুলোর কারসাজিতে চাপা পড়েছিল।
এর আগে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। সেদিন গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। মূলত তার পদত্যাগের পর ব্যাংক খাতের প্রকৃত তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০০৮ সালের নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে তখন ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। এরপর থেকে আওয়ামী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও কেলেঙ্কারি বাড়তে থাকে। ফলে খেলাপি ঋণও ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। এদিকে সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। কারণ তারা ধারণা করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরা একাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ঋণ মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এই প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
প্রকাশিত সংবাদে এনআরবিসি ব্যাংকের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জনপ্রিয় অনলাইন বিজনেস পোর্টাল অর্থসংবাদে প্রকাশিত ‘এনআরবিসি ব্যাংকের তমাল-আদনানের ব্যাংক হিসাব জব্দ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংক পিএলসি। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনের কিছু অংশে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য পরিবেশিত হয়েছে।
প্রতিবাদলিপিতে এনআরবিসি ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশন ডিভিশন মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ব্যাংকের চেয়ারম্যার পারভেজ তমাল ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের বিরুদ্ধে অনিয়ম, ঋণ জালিয়াতি, অর্থপাচার, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বজনপ্রীতি, কমিশন বাণিজ্য, কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়ম, শেয়ার কারসাজি, গ্রাহকের কোম্পানি দখল, লুটপাটসহ যেসব অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। ব্যাংকের কর্মকতা জাফর ইকবাল হাওলাদার এবং কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: সংবাদটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) চিঠির তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এছাড়াও, গত ১০ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা পৃথক দুটি চিঠিতে পারভেজ তমাল ও আদনান ইমামের অনিয়ম, ঋণ জালিয়াতি, অর্থপাচার, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বজনপ্রীতি, কমিশন বাণিজ্য, কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়ম, শেয়ার কারসাজি, গ্রাহকের কোম্পানি দখল ও লুটপাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলো। যার তথ্য প্রমাণ অর্থসংবাদের নিকট আছে।
সুতরাং প্রতিবেদনটিকে বানোয়াট বা ভিত্তিহীন বলার সুযোগ নেই।
এসএম