অর্থনীতি
ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ই-রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক

দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, গত ২২ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর মাধ্যমে জারিকৃত বিশেষ আদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিপালন নিশ্চিতে নির্দেশনা প্রদান করা হলো। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চার সিটি করপোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলের অধিভুক্ত সরকারি কর্মচারী, ব্যাংকার, মোবাইল প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও ছয়টি বড় কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে গত মঙ্গলবার এক বিশেষ আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে রিটার্ন দাখিলসংক্রান্ত এনবিআরের বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের আয়কর আইনের ক্ষমতাবলে এনবিআর চার ধরনের ব্যক্তি করদাতাদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর দাখিল বাধ্যতামূলক করলো।
তালিকার প্রথমে রয়েছেন ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলসমূহের অধিক্ষেত্রভুক্ত সব সরকারি কর্মচারী।
তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন সব তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তৃতীয়ত, সব মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরও অনলাইনে রিটার্ন দিতে হবে।
তাছাড়া ছয়টি বড় বিদেশি কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, বাটা শু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বোরোতে ৩৬ টাকায় ধান, ৪৯ টাকা চাল কিনবে সরকার

চলতি বছর বোরো মৌসুমে ৪ টাকা বেশি দরে সাড়ে ১৭ লাখ টন ধান, চাল সংগ্রহ করবে সরকার। এরমধ্যে ধান সাড়ে ৩ লাখ টন, চাল ১৪ লাখ টন রয়েছে। এবছর ৩৬ টাকা কেজি দরে ধান, ৪৯ টাকা কেজি দরে চাল এবং ৩৬ টাকা কেজি দরে গম কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি (এফপিএমসি) সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রসঙ্গত, গত বছর বোরো মৌসুমে ৫ লাখ টন ধান, ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল এবং এক লাখ টন আতপ চালসহ ১৭ লাখ টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতি কেজি বোরো ধান ৩২ টাকা, সেদ্ধ চাল ৪৫ টাকা এবং আতপ চাল ৪৪ টাকা দরে কেনে সরকার।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ধারাবাহিকভাবে বন্যা অতিবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও সরকার কিন্তু সার, চাল আমদানি করে মোটামুটি আমরা স্থিতিশীল ছিলাম। ফলে গতবছর ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আমাদের পরিপূর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, এবছরও আমরা ধান, চাল সংগ্রহ করবো। সেলক্ষ্যে আজকে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবছর ৩৬ টাকা কেজি দরে বোরো ধান, সেদ্ধ চাল ৪৯ টাকা, ৩৬ টাকা দরে গম কেনা হবে। এরমধ্যে ধান সাড়ে ৩ লাখ টন, সেদ্ধ চাল ১৪ লাখ টন এবং গমের জন্য কোন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি।
এবিষয়ে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানান, চলতি বোরো মৌসুমে আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৩৬ টাকা কেজি দরে ধান, চাল ৪৯ টাকা, ৩৬ টাকা দরে গম কেনা হবে। ধান সাড়ে ৩ লাখ টন, চাল ১৪ লাখ টন এবং গমের জন্য কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় যে উৎপাদন খরচ দিয়েছে তার সঙ্গে লাভ যুক্ত করে ধান, চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। পয়লা বৈশাখ থেকে পুরোদমে শুরু হবে। কৃষি উপদেষ্টা সেখানে যাবেন, উদ্বোধন করবেন। ২৪ এপ্রিল থেকে সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। উত্তরবঙ্গে একটু দেরিতে শুরু হবে।
কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, লক্ষ্যমাত্রা যেটি নির্ধারণ করা হয়েছে আশা করছি তার থেকে বেশি উৎপাদন হবে। আগামীকাল সুনামগঞ্জের ধান কাটার উৎসবে যাচ্ছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এস আলম পরিবারের ৯০ বিঘা জমি জব্দ

আলোচিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব জমি চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী, ডবলমুরিং, কোতোয়ালি, পটিয়া, বাকলিয়া, বায়েজিদ, সীতাকুণ্ড, শ্রীপুর ও হাটহাজারী থানায় রয়েছে। এছাড়াও কিছু জমি রয়েছে গাজীপুর জেলার সদর থানায়।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে উপপরিচালক তাহাসীন মুনাবিল হক এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগটি অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা স্থাবর সম্পত্তি অন্যত্র হস্তান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির আগে স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীকালে সেটি উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পড়বে। তাই মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের স্থাবর সম্পত্তিগুলো জরুরি ভিত্তিতে জব্দ করা প্রয়োজন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি এস আলমের ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত।
এছাড়াও গত ১২ ফেব্রুয়ারি এস আলমের ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুর্বল শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করা হবে: গভর্নর

ইসলামী শরিয়াভিত্তিক যেসব দুর্বল ব্যাংক রয়েছে সেগুলো একীভূত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দশম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে তিনি বলেন, “ইসলামী ব্যাংকগুলোকে রিশেইপড করা হয়েছে। দেশের একটি বড় ইসলামী ব্যাংক আছে, সঙ্গে ছোট ছোট আরো কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক রয়েছে, যাদের অনেকে ঝামেলার মধ্যে রয়েছে। সমস্যাজর্জরিত ব্যাংকগুলোকে মার্জার করা হবে।”
ঢাকার মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এ আয়োজিত সম্মেলনে গর্ভনর বলেন, “ইসলামী ব্যাংক নিয়ে আমাদের প্রোপার রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক নেই। আন্তর্জাতিক মডেলে যেভাবে ইসলামী ব্যাংক তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে সেই বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি।”
ঋণ কেলেঙ্কারি, তারল্য সংকটে নাজুক দশায় পড়া আর্থিক খাতকে সঠিক পথে ফেরাতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বা মার্জারের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রথমে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
কথা ছিল, ব্যাংকের ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন দেখে পিসিএ বাস্তবায়ন করা হবে। সে হিসাবে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে দুর্বল ব্যাংকের তালিকা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
গত বছর মার্চে হুট করে শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে দুর্দশায় পড়া পদ্মা (সাবেক ফারর্মাস) ব্যাংক একীভূত হওয়ার ঘোষণা আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় একীভূত হতে দুটি ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ হয়। মার্জার প্রক্রিয়া কোন পথে হবে, তা নিয়ে আলোচনা উঠলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বাণিজ্যিক ব্যাংক চাইলে নিজেরা একীভূত হতে পারবে। নইলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একীভূত করে দেবে।
কিন্তু অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বছরই দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংক প্রয়োজনে একীভূত করা হবে বলে ইঙ্গিত দেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এবার তিনি স্পষ্ট করে শরিয়াভিত্তিক দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কথা বললেন।
গভর্নর বলেন, “মার্জার করার ক্ষেত্রে দুর্বল প্রত্যেকটি ব্যাংকের বোর্ড নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কোনো ব্যাংকের বোর্ড যদি কাজ না করে তাইলে আমানতকারীদের স্বার্থেই সেই ব্যাংকের বোর্ডে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করার অধিকার রয়েছে।”
তিনি বলেন, “বোর্ড ঠিক মত কাজ না করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে। এটি চলমান একটি প্রক্রিয়া। বোর্ডে সংস্কার এখনো শেষ হয়ে যাইনি। আমরা ইতোমধ্যে প্রথম রাউন্ডে ১১টি ব্যাংকে বোর্ড দিয়েছি। আর কয়েক সপ্তাহ আগে আরো দুইটি ব্যাংকে বোর্ড দেওয়া হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপের মুখে ইতোমধ্যে একটি ব্যাংক তাদের নিজের কার্যক্রম পরিবর্তন করেছে তুলে ধরে আহসান এইচ মনসুর বলেন, সঠিক নিয়মের মধ্যে থেকে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাতে হবে- কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এই বিষয় একদম স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের দেড় দশকে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়।
গভর্নর বলেন, দেশ থেকে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে নিরাপদ দেশে নিয়ে যাওয়ার উপায় বন্ধ করার পদ্ধতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। তারা চান, এটা যথেষ্ট পরিমাণে শক্তিশালী করা হোক।
ব্যাংকিং খাতে নানা রকম সংস্কার চলছে তুলে ধরে তিনি বলেন, পরবর্তী সময় যেই রাজনৈতিক দলেই ক্ষমতায় আসুক না কেন এ ইতিবাচক পরিবর্তনকে গ্রহণ করা উচিত।
ব্যাংকিং কোম্পানি আইন সংশোধন করা হচ্ছে তুলে ধরে আহসান মনসুর আশা প্রকাশ করেন যে তাতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিবর্তন আসবে যাতে ব্যাংক পরিচালনায় শাসনপদ্ধতিতে উন্নতি হবে। তাছাড়া ব্যাংকের বোর্ড সঠিকভাবে তাদের কার্যক্রম যদি পরিচালনা করে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বোর্ড সদস্য হওয়ার জন্য যোগ্যতা যাচাইয়ের নিয়মগুলো ঠিক করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বোর্ডে স্বতন্ত্র পরিচালক কতজন থাকবেন ও তাদের কী ধরনের যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন সে বিষয়গুলো এসব ব্যাংক কোম্পানি আইনে দেওয়া থাকবে। এটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ীই করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও নানা রকমের সমস্যা থাকার কথা তুলে ধরে গভর্নর বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নানা রকমের হস্তক্ষেপ হয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংকে আরো শক্তিশালী করা হচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নারীদের ৫০ শতাংশ থাকতে হবে।
“আমরা ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আবার কাজ করছি। ছোট ছোট ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কাজ করতে হবে। এমনকি নগদের প্রশাসক দেওয়ার পরেও গত মাসে রেকর্ড পরিমাণের লেনদেন হয়েছে।”
গভর্নর বলেন, এছাড়া মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) দুই থেকে তিনটি কোম্পানি চালাচ্ছে। তবে এটি সাফল্যজনক গল্প। এখন প্রতিদিন ৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। সামনে ৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৯ শতাংশ হবে, এডিবির পূর্বাভাস

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ করেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। তবে একই সময়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৭ থেকে ১০ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এডিবির ঢাকা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) এপ্রিল ২০২৫’ প্রতিবেদন তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংস্থাটি চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে আগের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। তবে তারা আশা করছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে, ২০২৬ অর্থবছরে তা আবারও বৃদ্ধি পেয়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে।
বাংলাদেশের পোশাক খাতে রপ্তানি বৃদ্ধি সত্ত্বেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, শিল্প-অস্থিরতা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশজ চাহিদা দুর্বল হওয়ায় প্রবৃদ্ধি কমবে। ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিওং বলেন, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে, যা গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে শক্তিশালী করা যেতে পারে। বেসরকারি খাতের উন্নয়নকে উৎসাহিত করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বাইরেও তার অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা উচিত। স্থিতিশীল অবকাঠামো বৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নত করা, আর্থিক খাতের সুশাসন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রতিযোগিতামূলকতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এডিবি জানায়, পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতা, অপর্যাপ্ত বাজার তথ্য, সরবরাহ শৃঙ্খলের সীমাবদ্ধতা এবং টাকার অবমূল্যায়নে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চলতি হিসাবের ঘাটতি ২০২৪ অর্থবছরে জিডিপি ১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি ০ দশমিক ৯ শতাংশ কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ডলার দেবে এনডিবি

চলতি বছর বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে ব্রিকস জোট প্রতিষ্ঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এনডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির কাজবেকভ এ তথ্য জানান।
ভ্লাদিমির কাজবেকভ জানান, সম্প্রসারিত ঢাকা সিটি ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এনডিবি এরই মধ্যে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে। তবে বাংলাদেশের উন্নয়ন চাহিদার প্রেক্ষিতে এ বছর এই ঋণের পরিমাণ তিনগুণেরও বেশি বাড়াতে চান তারা।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নতুন এই বহুপক্ষীয় ঋণদাতা সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, এটি দেশের উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
কাজবেকভ বলেন, বাংলাদেশের গ্যাস খাতের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যও এনডিবি বড় ধরনের সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও জানান, দেশের বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এনডিবি সেখানেও উল্লেখযোগ্য ঋণ প্রদান করতে আগ্রহী।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে হাজার হাজার শ্রমিকের জন্য আবাসন সুবিধা গড়ে তোলার মতো সামাজিক অবকাঠামো খাতে এনডিবির ঋণ গুরুত্বসহকারে দেওয়া উচিত।
কাজবেকভ জানান, এনডিবি এরই মধ্যে মাল্টি-কারেন্সি ঋণ সুবিধা চালু করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য উপকারী হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এনডিবি যেন একটি দেশের কৌশলগত কর্মসূচি প্রণয়ন করে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
বৈঠকে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, অন্তর্বর্তী সরকারের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।