অর্থনীতি
নিত্যপণ্যের দাম আগের বছরের তুলনায় সামান্য কমেছে

অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে, ডিম, মাছ, ব্রয়লার মুরগি, গরুর মাংস, গুঁড়া দুধ, চিনি, আটা, টমেটো ও কাঁচা মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় বর্তমানে কম রয়েছে।
দাম বৃদ্ধির সাম্প্রতিক প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার আমদানি শুল্ক হ্রাস, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অব্যাহতি, বাজার পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা, উন্মুক্ত বাজার বিক্রয় (ওএমএস) এবং রাষ্ট্র পরিচালিত ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র আওতায় বিক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের পদক্ষেপের ফলে বাজারে ডিম, ভোজ্যতেল ও চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে এবং এটি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম রাখতে সহায়তা করছে।
বাজার বিশেষজ্ঞরা সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে জনগণের আরও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে সরকারের মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখা উচিত বলে মত দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, কাঁচা মরিচের দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪০০ টাকার বেশি।
টিসিবি থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, গত বছরের একই দিনের তুলনায় মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) মসুর ডালের দাম ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ কম রয়েছে। গত বছরের একই দিনে মসুর ডালের দাম কেজি প্রতি ১২০ টাকা থেকে কমে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ১১৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। আটার দাম এখন প্রতি কেজি ৪২ টাকা, যা গত বছর ছিল ৪৫ টাকা এবং প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম এখন ৭৫০ টাকা, আগে যা ছিল ৭৮০ টাকা।
গুঁড়া দুধের (ডানো) দাম এখন প্রতি কেজি ৮২০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৮৪০ টাকা এবং গুঁড়া দুধ (ফ্রেশ) এখন প্রতি কেজি ৭৭৫ টাকা, যার দাম গত বছর ছিল ৭৯০ টাকা। এছাড়া মঙ্গলবার চিনির দাম কেজি প্রতি ১২৮ টাকায় নেমে আসে, যা গত বছরের একই দিনে ছিল ১৩৫ টাকা।
বাসসের সাথে আলাপকালে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম বলেন, দেশের ১৩টি জেলায় সাম্প্রতিক ব্যাপক বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও সরকারি পদক্ষেপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ধীরে ধীরে কমছে।
তিনি আরও বলেন, ‘অফ সিজনের কারণে সবজির উৎপাদন এখন কম এবং সাম্প্রতিক বন্যায় ১৩টি জেলায় অনেক সবজি চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার ইতোমধ্যেই বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।’
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে সবজির দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কমেছে।
বাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদরা জানান, ভ্যাট প্রত্যাহার ও শুল্ক হ্রাস বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়িয়েছে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করেছে। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনির ওপর ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তারা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অপরিশোধিত ও পরিশোধিত সয়াবিন তেল, পাম তেল ও অন্যান্য ভোজ্যতেলের স্থানীয় উৎপাদনের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। এছাড়া ভোজ্যতেল আমদানির ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ ভ্যাটও প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান তারা।
তারা উল্লেখ করেছেন, এনবিআর ডিমের আমদানি শুল্ক বিদ্যমান ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করেছে। এছাড়া তেল আমদানিতে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে বলে জানান তারা।
সরকার আরও উদ্যোগ নিলে দেশের নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করবে বলে অভিমত দেন তারা।
ঢাকা শহরের বাসিন্দা আবু সুফিয়ান জানান, তিনি খিলগাঁও তালতলা বাজার থেকে এক ডজন খামারের ডিম ১৫০ টাকায় কিনেছেন, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৮০ টাকায়। সরকারি পদক্ষেপের কারণে ডিমের দাম কমেছে।
সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে তিনি সরকারের মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার আহ্বান জানান।
সম্প্রতি এক বৈঠকে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ওএমএস কর্মসূচির আওতায় সাশ্রয়ী মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি করছে।
প্রাথমিকভাবে রাজধানীর ২০টি স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকার।
স্থানগুলো হলো- খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বসিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা-উত্তর, মুগদা-দক্ষিণ, পলাশীর মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ি, উত্তরখান, দক্ষিণখান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও ঝিগাতলা।
কর্মসূচির আওতায় প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকা, ডিম প্রতি ডজন ১৩০ টাকা, পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭০ টাকা ও সবুজ শাক-সবজি বিভিন্ন প্যাকেজে বিক্রি হচ্ছে।
সালেহউদ্দিন অবশ্য বলেন, টিসিবি, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও আরও কিছু বেসরকারি সংস্থা ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে। তিনি জানান, সরকার টিসিবির অধীনে বিক্রির পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
নয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে ৬৫ হাজার কোটি টাকা

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৯ মাস (জুলাই-মার্চ) শেষে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। যেখানে অর্থবছরের আট মাস (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পিছিয়ে ছিল রাজস্ব জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
গত জানুয়ারিতে শতাধিক পণ্যের ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধি কিংবা আয়কর রিটার্ন জমায় জোর প্রচারণার পরও রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রভাব ফেলতে পারেনি।
মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ওই সময়ে এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে পাওয়া তথ্যানুসারে, মার্চ পর্যন্ত গত নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৯.৬২ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এনবিআর। রাজস্ব আহরণে আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
সূত্র জানায়, ৯ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৯ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা কম। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ২.০৯ শতাংশ।
একই সময়ে শুল্ক আদায় হয়েছে ৭৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা কম। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ০.৩৮ শতাংশ।
অন্যদিকে আয়কর আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা কম। আর প্রবৃদ্ধি ৫.৬৭ শতাংশ।
এনবিআর সূত্র বলছে, কেবল মার্চে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৬৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ঘাটতি ৭ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যের তুলনায় ঘাটতি থাকলেও এ সময় রাজস্ব আহরণে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি ৯.৬৪ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থবছরের মাঝপথে এসে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আমদানি মূল্য পরিশোধের নিয়মে পরিবর্তন আনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আমদানি মূল্য পরিশোধের নিয়মে বড় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে যৌক্তিক ত্রুটি থাকলে ত্রুটিপূর্ণ আমদানি বিলের বিপরীতেও মূল্য পরিশোধ করা যাবে। এ নিয়ম চালুর ফলে বিদেশি সরবরাহকারীরা বিলম্বে অর্থ পাওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্ত হবেন বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে।
এতে বলা হয়, আমদানিকারকদের সম্মতিতে যৌক্তিক ত্রুটিসম্পন্ন আমদানি বিল ব্যাংকগুলো গ্রহণ করতে পারবে এবং তার বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করতে পারবে। তবে, পণ্যে যেন কোনো পরিবর্তন না আসে তা নিশ্চিত করতে হবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়, আমদানিকারকদের কাছ থেকে পাওয়া আমদানি বিলের বিপরীতে ডেলিভারি অর্ডার দেওয়ার সময়ও ব্যাংকগুলোকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এক্ষেত্রে ডকুমেন্টে কোনো ত্রুটি থাকছে কি না তা যাচাই করতে হবে।
এর আগে কাস্টমস থেকে পণ্য খালাসের পর বিল অব এন্ট্রি জমা দিলেই কেবল ত্রুটিপূর্ণ আমদানি বিল বা আমদানিকারকের কাছে সরাসরি আসা বিলের বিপরীতে মূল্য পরিশোধ করা যেত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে ত্রুটিপূর্ণ বিলের কারণে পণ্য খালাসে দেরি হতো এবং বিদেশি সরবরাহকারীদের অর্থ পেতে অপেক্ষা করতে হতো। এখন নিয়ম সহজ হওয়ায় তারা সময়মতো মূল্য পাবেন। এতে তাদের ঝুঁকি কমবে।
তাদের মতে, নতুন নিয়ম আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ফলে আমদানি ব্যয় কমবে। কারণ এতে কনফারমেশন চার্জ ও আমদানি ঋণের সুদের হার কমে আসবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
স্বাস্থ্যখাতে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে চীন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশের স্বাস্থখাতের উন্নয়নের জন্য চীন ১৩৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ইউনান শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার ধামরাইতে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের জন্য একটি হাসপাতাল তৈরি করতে সম্মত হয়েছে চীন। এছাড়াও, একটি এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরি নিয়েও দেশটির সাথে আলোচনা চলছে। কোভিডের সময়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি টিকা চীন থেকে কিনেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক চীন সফর সফল হয়েছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশি নাগরিকরা সহজেই উন্নত চিকিৎসার জন্য চীনে যেতে পারবেন। এ ধরনের সহযোগিতা উভয় দেশের জনগণের জন্য উপকারী হবে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে যৌথ উদ্যোগ ও বিনিয়োগ স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
স্মারক স্বর্ণমুদ্রার দাম বাড়লো ১৫ হাজার টাকা

দেশের ইতিহাসে যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে সোনার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৬৭ হাজার ৮৩৩ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে স্মারক স্বর্ণমুদ্রার দাম ফের বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিটি স্মারক স্বর্ণমুদ্রার দাম ১৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এতদিন যা ছিল এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা। স্বর্ণের স্মারক মুদ্রার দাম বাড়লেও রৌপ্যমুদ্রার দাম আগের নির্ধারণ করা ৭ হাজার টাকাই থাকছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এখন থেকে ২২ ক্যারেট সোনা দিয়ে তৈরি করা ১০ গ্রাম ওজনের স্মারক স্বর্ণমুদ্রার (বক্সসহ) প্রতিটি বিক্রি হবে এক লাখ ৫০ হাজার টাকায়। বর্তমানে বাজারে ১১টি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা (ফাইন সিলভার) রয়েছে। রুপার স্মারক মুদ্রার ওজন ২০ গ্রাম থেকে ৩১ দশমিক ৪৭ গ্রাম। রৌপ্যমুদ্রার দাম ৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা আছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
১৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১ হাজার কোটি টাকা

বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্সের এ গতিধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ১৯ দিনেই এসেছে ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২০ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে আসছে ৯ কোটি ডলার বা ১১০৪ কোটি টাকার বেশি।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, হুন্ডির দৌরাত্ম্য কমেছে, বন্ধ হয়েছে অর্থপাচার। এছাড়া খোলা বাজার এবং ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারের একই দাম পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এসব কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ১৯ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। এসময় বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯ কোটি ডলারের বেশি। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৯৯ কোটি ডলার। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
আলোচ্য সময়ে ৮ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
এর আগে সদ্য বিদায়ী মাস মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার) ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা।
তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক দশমিক ৭১ বিলিয়ন বা ১৭১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সদ্য বিদায়ী মার্চে ১৫৮ কোটি ডলার বেশি এসেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল এক হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ৯ মাসে ৪৭০ কোটি ডলার বেশি এসেছে।
গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লো মার্চ মাস। এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করলো প্রবাসী আয়। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স আসে। এরপর আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। এরপর জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
এসএম