জাতীয়
রাষ্ট্রপতির মন্তব্য প্রসঙ্গে যা বললেন সারজিস আলম
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কোথায় থাকা দরকার তা ছাত্রসমাজ নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মন্তব্যের জেরে এ কথা বলেন তিনি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন এই ছাত্রনেতা।
তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর মতো মানুষ যদি বলেন শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের ডকুমেন্টস তিনি রাখেননি, তাহলে তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া দরকার? তার কোথায় থাকা দরকার তা ছাত্রসমাজ নির্ধারণ করবে।
জাতীয় পার্টি প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, জাতীয় পার্টি হলো একটি বিবেকহীন দল। যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট দিয়েছে। তাদেরকে নিয়ে রাজনৈতিক টেবিলে আলোচনা করার যুক্তি নেই।
সারজিস আলম আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সিস্টেম এখনো সরেনি। বিভিন্ন এজেন্সি ও কুচক্রী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা আবার রাজপথে নামব।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মতিউরের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে ফের নিষেধাজ্ঞা
ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমান তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিদেশ গমনে আবারও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন দুদক উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন ফের তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কামিজ ও ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণবের দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ের জন্য ছয় সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমন রহিত করার জন্য পুনরায় আদেশ দেয়া আবশ্যক।
গত ১৮ আগস্ট কমিশনের পূর্বানুমোদনক্রমে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি মীমাংসিত এবং এ বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আজ সোমবার রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের এক প্রেস রিলিজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের উপপ্রেস সচিব শিপলু জামানের সই করা প্রেস রিলিজে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে প্রচারণা চালানো হয়েছে তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সুস্পস্ট বক্তব্য হলো, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার ওপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪ এ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গত ৮ আগস্টের আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত চাওয়ার প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ এই মতামত দিয়েছিলেন বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
প্রেস রিলিজে আরও বলা হয়, মীমাংসিত এ বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্য রাষ্ট্রপতি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আপিল বিভাগের ওই স্পেশাল রেফারেন্সে বলা হয়েছিল, দেশের বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি গত ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮(৩) অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করা সম্ভবপর নয়।
এতে আরও বলা হয়, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে ৮ আগস্টের একটি চিঠিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত যাচনা করা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শেখ হাসিনাসহ ৩৯১ জনের বিরুদ্ধে সমন্বয়ক মাহিনের মামলা
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে গত ১৫ জুলাই হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান হুকুমের এবং ৩৯১ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এ মামলাটি করেন।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরাফাতকে হামলা উসকে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখার কারণে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ১৫ জুলাই হামলায় সরাসরি জড়িতদের আসামি করা হয়েছে। তাছাড়া, মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে হামলায় অংশ নেওয়া ছাত্রলীগ ও যুবলীগের আরও ৮০০ থেকে ১০০০ নেতাকর্মীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ বহিরাগত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ইট, কাচ, কাচের বোতল, কাঠ, পাইপ, লোহার রড, লাঠি, হকিস্টিক, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদি দেশি ও বিদেশি অস্ত্র দিয়ে দফায় দফায় হামলা চালায়। তারা ককটেল বিস্ফোরণ করে ও হেলমেট পরে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করে।
এজহারে আরও বলা হয়, সন্ত্রাসীরা ওইদিন ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান, যেমন- হল পাড়া (বিজয় ৭১ হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল, কবি জসীম উদ্দীন হল মাঠ, মাস্টারদা সূর্য সেন হল, ইত্যাদি), মল চত্বর, ভিসি চত্বর, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, টিএসসি, শহীদ মিনার, শহীদুল্লাহ হল গেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আঘাত ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করে ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
মামলা গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষে শাহবাগ থানার অভ্যন্তরে একটি সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় মামলার বাদী মাহিন সরকার বলেন, ১৫ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বহিরাগতরা আমাদের বোনদের ওপর হামলা করে। আমাদের বোনদের শ্লীলতাহানি করে। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি আমি। বিপ্লব পরবর্তী এই স্বাধীন বাংলায় ছাত্রলীগের নিঃশ্বাস নেওয়ার অধিকার নেই। তারা নিঃশ্বাস নেবে জেলহাজতে। এ সময় তিনি অন্যদেরও মামলা করার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্রলীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। কেউ নিজ অধিকারের কথা বলতে পারত না। যারা কথা বলত তাদের গণরুম-গেস্টরুমে নির্যাতন করা হতো। নির্যাতন করে শাহবাগ থানায় দিয়ে দেওয়া হতো। হাসিনার গদিকে টিকিয়ে রাখার জন্য হাসিনার লাঠিয়াল বাহিনী সারা দেশের ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ১৫ জুলাইয়ে হাসিনার লাঠিয়াল বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করলে এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্রলীগ ফ্যাসিবাদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করেছে। ছাত্রদের পক্ষে না দাঁড়িয়ে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে ছাত্রলীগ। আমরা চাই, এত রক্ত, এত জীবনের পর এই স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্রলীগ নামে কোনো সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন থাকতে পারবে না। এই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যাদের নামে মামলা হয়েছে তাদের অতিদ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এরই প্রেক্ষিতে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এটি প্রক্রিয়াধীন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক তারিকুল ইসলাম, হামজা মাহবুব ও আব্দুল হান্নানসহ অনেকে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন: আইন উপদেষ্টা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তার কাছে নেই বলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে বক্তব্য দিয়েছেন- তা মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সোমবার (২১ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ, উনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এরপর সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে উনার (রাষ্ট্রপতি) কাছ থেকে আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়- এ পরিস্থিতিতে করণীয় কি আছে? এটার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের যিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন এবং অন্য সব বিচারপতিরা মিলে ১০৬ এর অধীনে একটা মতামত প্রদান করেন রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের ভিত্তিতে। সেটার প্রথম লাইনটি হচ্ছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। তারপর অন্যান্য কথা।’
‘এ রেফারেন্সটিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতির স্বাক্ষর আছে’ বলেন আসিফ নজরুল।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭ (ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সম্প্রতি এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তার কাছে শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।
সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বহুবার পদত্যাগপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। হয়ত তার সময় হয়নি। ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বঙ্গভবনে ফোন আসে, যেখানে বলা হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসবেন। এর পরই বঙ্গভবনে প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যে আরেকটি ফোন আসে যে তিনি (শেখ হাসিনা) আসছেন না। ’
তিনি বলেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না? একই জবাব। শুনেছি, তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় তিনি সময় পাননি জানানোর। ’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে, পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই: হাসনাত
শেখ হাসিনাকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে, তাই তার পদত্যাগপত্রের কোন ভূমিকা নেই বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ এ দাবি করেন।
তিন লিখেছেন, হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে; একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই।
প্রসঙ্গত, তীব্র গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা হয়েছে।
শুরুতে প্রাসঙ্গিকভাবে এ আলোচনা সামনে এলেও পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেখ হাসিনার একটি ফোন রেকর্ড ফাঁসের ও কথিত ‘পদত্যাগপত্র’ ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। অডিও কলে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, দেশ ছাড়ার আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি।
তবে সে সময় সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে কোনো সরকারপ্রধানই ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ করেন না। তারা বেশিরভাগ সময় পালিয়ে যান অথবা গ্রেপ্তার হয়ে থাকেন।
নতুন করে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে আলোচনা সামনে আসে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কথোপকথনে। রাষ্ট্রপতি সেই সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না। যা সত্য তাই আপনাকে বললাম।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, যাই হোক, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না। একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর। সব কিছু যখন নিয়ন্ত্রণে এলো তখন একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এলেন পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে। তাকে বললাম, আমিও খুঁজছি।
কথোপকথনের এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট বললেন, এ নিয়ে আর বিতর্কের কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এটাই সত্য। তারপরও কখনো যাতে এ প্রশ্ন না ওঠে, সেজন্য সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়েছি।