অর্থনীতি
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন যেভাবে
অন্যান্য বারের মতো এই অর্থবছরেও (২০২৪-২৫) বাসায় বসেই আয়কর রিটার্ন দাখিল করা যাবে। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রতিটি ধাপ কীভাবে পেরোবেন, তা তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে-
যাদের জন্য আয়কর প্রযোজ্য?
বাংলাদেশে ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সময় ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। রিটার্ন দাখিলের আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইট থেকে চলতি অর্থবছরের কর নির্দেশাবলী পড়তে ভুলবেন না।
এনবিআরের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে তাকে আয়কর দিতে হবে। তবে নারী ও ৬৫-ঊর্ধ্ব নাগরিকদের করমুক্ত আয়ের সীমা চার লাখ টাকা। আর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এটি পাঁচ লাখ টাকা।
এছাড়া, পূর্ববর্তী কর মূল্যায়ন, শহরে বাসস্থান, গাড়ির মালিকানা, নির্দিষ্ট কিছু পেশার সদস্যপদ, ব্যবসা পরিচালনা এবং দরপত্র বা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্যও আয়কর পরিশোধ করতে হয়। এটি নিবন্ধিত কোম্পানি ও এনজিওগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আর মনে রাখবেন, করদাতা সনাক্তকরণ নাম্বার (টিআইএন) থাকলে আপনার করযোগ্য আয় থাকুক বা না থাকুক, আপনাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতেই হবে। করযোগ্য আয় না থাকলে শূন্য রিটার্ন দাখিল করা যাবে। সেটা না করলে আইনে শাস্তি ও জরিমানার বিধান আছে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
কর দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র—ইটিআইএন, জাতীয় পরিচয় পত্রের (এনআইডি) ফটোকপি, বিস্তারিত ঠিকানা এবং আগের বছরের রিটার্নের নথি সরবরাহ করুন। একাধিক আয়ের উৎস থাকলে প্রয়োজন মোতাবেক কাগজপত্র সংগ্রহ করুন। বিনিয়োগের বিবরণ, সম্পত্তির তথ্য এবং করমুক্ত আয়ের সার্টিফিকেট অন্তর্ভুক্ত করুন।
যেভাবে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করবেন
টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নাম্বার) সনদধারী প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য প্রতিবছর আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। বয়স ১৮ অতিক্রম করলে টিআইএন সদন নেওয়াও বাধ্যতামূলক। আপনি যখন টিআইএন-এর জন্য আবেদন করবেন, আপনাকে কর দাখিলের জন্য একটি নির্দিষ্ট এলাকা বরাদ্দ করা হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে তখন আপনাকে আয় বিবরণী জমা দিতে হবে। এরপর নিজে গিয়ে অথবা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কর অফিসে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে চাইলে প্রথমে এনবিআরের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করতে, ওয়েবসাইটের ই-রিটার্ন শাখায় ক্লিক করুন। সেখানে ‘সাইন আপ’ অপশনে গিয়ে প্রথম বক্সে আপনার টিআইএন নাম্বার লিখুন। দ্বিতীয় বক্সে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল নাম্বারটি লিখুন (প্রথম শূন্য বাদ দিয়ে)। এরপর ক্যাপচা কোড দিয়ে ‘ভেরিফাই’ বাটনে ক্লিক করুন। ফোনে আসা ওটিপি ব্যবহার করে আপনার ফোন নাম্বারটি নিশ্চিত করুন। সবশেষে ই-রিটার্ন সিস্টেমে লগ ইন করতে একটি পাসওয়ার্ড ঠিক করুন।
ধাপ ১: ই-রিটার্ন সিস্টেমে প্রবেশ
একবার নিবন্ধন করা হয়ে গেলে এরপর আপনি ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার টিআইএন, পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা দিয়ে সাইন ইন করতে পারবেন। এরপর একটি ড্যাশবোর্ড পাবেন। এর বাম দিকে থাকা ‘রিটার্ন সাবমিশন’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ২: কর যাচাইয়ের তথ্য
ই-রিটার্ন ফরমের শুরুতেই থাকবে ‘ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট ইনফরমেশন’। সেখানে আয়কর সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য– রিটার্ন স্কিম, আয়ের সাল ও উৎস দিতে হবে। আপনার আয় যদি করমুক্ত হয়, তাহলে আয়ের পরিমাণের পাশাপাশি ‘রেসিডেন্ট স্ট্যাটাস’ দিতে হবে।
ধাপ ৩: আয়ের বিবরণ
এই পর্যায়ে, ‘হেডস অফ ইনকাম’-এ গিয়ে আপনার বিভিন্ন আয়ের উৎস দিন। এখানে আপনার বেতন, নিরাপত্তা সুদ, বাড়ি-সম্পত্তি থেকে আয়, কৃষি আয়, ব্যবসা থেকে আয়, মূলধন লাভ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আয় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।
যদি আপনার বেতন আপনার আয়ের একমাত্র উৎস হয়, তাহলে ‘স্যালারি’ অপশনে ক্লিক করুন। এর বাইরে আয় থেকে থাকলে ‘ইনকাম ফ্রম আদার সোর্সেস’ অপশনে ক্লিক করুন। সেখানে অন্যান্য যেসব উৎস থেকে আয় করে থাকেন, তাতে ক্লিক করুন।
এরপর ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
ধাপ ৪: অতিরিক্ত তথ্য
এই ধাপে একটি ড্রপডাউন মেনু থেকে আপনার প্রাথমিক আয়ের উৎসের স্থান ঠিক করবেন। সেখানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মতো অনেকগুলো অপশন থাকবে।
আপনি যদি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির আইনি অভিভাবক হয়ে থাকেন, সেটিও এখানে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এছাড়া, বিনিয়োগের জন্য আপনি করমুক্তির দাবিদার কি না এবং আপনি কোনো সংস্থার শেয়ারহোল্ডার পরিচালক কি না, তা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-এর মাধ্যমে উত্তর দেবেন।
ধাপ ৫: আইটি১০বি পূরণ
যদি আপনার সম্পূর্ণ সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকা বা তারচেয়ে বেশি হয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই স্টেটমেন্ট ফর্মের ব্যয় বিভাগটি পূরণ করতে হবে। এজন্য ‘আইটি১০বি ফর্ম’ পূরণ করতে হবে। সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখের কম হলে তা পূরণ করতে হবে না। এক্ষেত্রে, আপনার ও আপনার পরিবারের বার্ষিক খরচের হিসেব দিতে হবে।
এরপর ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
ধাপ ৬: আয়ের বিবরণ
অন্যান্য উৎস থেকে আসা আয়, বৈদেশিক আয় বা কর-অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয়ের বিবরণ দিন। বেতন বা করযোগ্য বিনিয়োগ ছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে আসা আয়ের তথ্য দিতে আপনি ড্রপডাউন মেনুতে বিভিন্ন অপশন পাবেন।
‘এনি আদার ইনকাম’ অপশনে ক্লিক করলে সেখানে আপনার অন্য আয়ের উৎস, অর্থ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ, প্রাপ্ত সর্বশেষ আয়ের তারিখ ও পরিমাণ, এবং সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের হিসেব দিতে হবে। এসব তথ্য দেওয়ার পর আপনার নেট আয়ের হিসেব দেখানো হবে।
আবার ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
ধাপ ৭: বিনিয়োগ বিভাগ
আপনি যদি বর্তমানে জীবন বীমা প্রিমিয়াম, ডিপোজিট প্রিমিয়াম সার্ভিস (ডিপিএস), অনুমোদিত সঞ্চয়পত্র, সাধারণ প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেনেভোলেন্ট ফান্ড, গ্রুপ বীমা প্রিমিয়াম, অনুমোদিত স্টক বা শেয়ার, কিংবা অন্যান্য ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগ করে থাকেন, সেগুলো এখানে উল্লেখ করবেন।
ধরুন আপনি যদি ‘ডিপিএস’ অপশনে ক্লিক করেন, তাহলে সেখানে ব্যাংকের নাম, অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দিতে হবে। এভাবে অন্যান্য অপশনে গেলেও আপনাকে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।
আবার ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
ধাপ ৮: ব্যয়
এই বিভাগে, মোট আয়ের বিপরীতে আপনার মোট ব্যয় পর্যালোচনা করতে পারবেন। এখানে বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের বিভাগ থাকবে। খাদ্য, পোশাক, বাসস্থান (পরিবহন, গৃহস্থালি, ইউটিলিটিসহ), বাচ্চাদের শিক্ষা এবং অন্য কোনো ব্যয়ের খাত থাকলে তা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। এই বিবরণগুলো পূরণ করলে আপনার বকেয়া করের হিসেব দেওয়া হবে।
ধাপ ৯: কর এবং পেমেন্ট
এখানে আপনি ইতোমধ্যে কোনো উৎস কর এবং অগ্রিম কর প্রদান করে থাকলে তার হিসেব দিতে পারবেন। এই হিসেব দেওয়ার পর আপনার মোট প্রদেয় করের পরিমাণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যাবে। আপনার আয়ের উপর কোনো কর বকেয়া না থাকলে আপনার প্রদেয় করের পরিমাণ হবে শূন্য। একে ‘শূন্য রিটার্ন’ বলা হয়।
ধাপ ১০: রিটার্ন ভিউ
‘অনলাইন রিটার্ন’ অপশনে ক্লিক করলে আপনি রিটার্ন ফর্মটি দেখতে পাবেন। তার নিচে ‘ইয়েস’ অপশনে ক্লিক করলেই আপনার রিটার্ন চলে যাবে। কোনো তথ্য নিয়ে সন্দেহ থাকলে আপনি ‘নো’ অপশনে ক্লিক করতে পারেন এবং আবার সব তথ্য দেখে নিতে পারেন।
ধাপ ১১: রসিদ ডাউনলোড করুন
যদি আয়কর রিটার্ন সফলভাবে জমা হয়, তাহলে আপনাকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বার্তা লেখা দেখবেন। সেখানে আপনি একটি রেফারেন্স আইডি ডাউনলোড করার অপশন পাবেন। সেটি ডাউনলোড করে অনলাইনেই আপনি আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। অথবা সেটি প্রিন্ট করে আয়কর অফিসে পাঠাতে পারেন।
এই প্রক্রিয়াটি জটিল মনে হলে আপনি কোনো কর আইনজীবীর দ্বারস্থ হতে পারেন। এছাড়া, বিডিটেক্স এবং শাপলা ট্যাক্সের মতো অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম ও অ্যাপ্লিকেশন আছে, যেগুলো আপনাকে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সাহায্য করবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। রোববার (২৪ নভেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৫ হাজার ৬৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ২১ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২২ নভেম্বর থেকে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে দ্রব্যমূল্য সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো: বাণিজ্য উপদেষ্টা
আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে খাদ্যদ্রব্যসহ জিনিসপত্রের দাম সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউর প্রয়াত সদস্য সন্তানদের শিক্ষা ভাতা দেওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি জানি আপনারা অনেক কষ্টে আছেন। তবে এটাও বলতে চাই যে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, চিনি ও তেলের দাম কিছুটা কমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতীয় মসজিদের খতিব পালিয়ে গেছেন, এমন একটি পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আজকের এ সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য একটি মর্যাদাপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ।
ডিআরইউর সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিআরইউর কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালক ও চেয়ারম্যান (রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটি) এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম শক্তি। এনআরবিসি ব্যাংক অর্থনৈতিক উন্নয়নধর্মী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মানবিক অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।
এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নমূলক অনেক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এনআরবিসি ব্যাংক। ডিআরইউর এ ধরনের বৃত্তিমূলক কাজে সব সময় আমরা পাশে থাকবো।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পতনের পর স্বর্ণের দামে বড় লাফ
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বড় উত্থানের পর যেমন বড় দরপতন হয়েছে, তেমনি বড় দরপতনের পর বড় উত্থানের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববাজারে সোনার দামের অস্থিরতার মধ্যে দেশের বাজারেও দামি এই ধাতুটির দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়া বা কমার ঘটনা ঘটছে। চলতি নভেম্বর মাসে ৬ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।
বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সোনার দামে বড় পতন হয়। পাঁচ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ১২২ ডলার কমে যায়। এমন পতনের পর গত সপ্তাহে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ ডলারের বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার ওপরে।
বিশ্ববাজারে বড় ধরনের উত্থান হওয়ায় বাংলাদেশেও গত সপ্তাহে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে সোনার দাম বাড়ানোর হার বেশ কম। ফলে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম আবার বাড়তে পারে। গত সপ্তাহে দুই দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা। অবশ্য গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে দুই দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা কমানো হয়।
তথ্য পর্যালোচায় দেখা যায়, বিশ্ববাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে গত ৩০ অক্টোবর প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৮৯ ডলারে ওঠে। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে ২০, ২৩ ও ৩১ অক্টোবর টানা তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। ৩১ অক্টোবর সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় এক হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় এক লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরদিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ১০ ডলারে নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে, তেমনই বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম কমানো হয় ৯ হাজার ১৭ টাকা।
অবশ্য এই বড় দরপতনের পর বিশ্ববাজারে সোনার দামে আবার বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর সময় প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৫৬২ দশমিক ৫৪ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১৫ দশমিক ৮৫ ডলারে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ দশমিক ৩১ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকা (এক ডলার ১২০ টাকা ধরে)।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের ২০ ও ২২ নভেম্বর দুই দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ২০ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়ানো হয়। এছাড়া ২২ নভেম্বর বাড়ানো হয় এক হাজার ৯৯৪ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা।
বাজুসের এক সদস্য বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি অনুমান করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক উত্থান হয়েছে। তার আগে বড় দরপতন হয়। বিশ্ববাজারে এমন অস্থিরতা থাকায় দেশের বাজারেও কয়েক দফা সোনার দাম বাড়া-কমার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বিশ্ববাজারের যে চিত্র দেখা গেছে, তাতে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম বাড়তে পারে। কারণ, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৩১ শতাংশ
দেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ২১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩১ শতাংশ কমেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটিতে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, আসল পরিশোধ ও সর্বশেষ স্থিতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের নগদায়নও (ভাঙানো) কমে গেছে। এ কারণে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। এ বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচ কমেছে ১৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা বা প্রায় ৭১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জুলাই-আগস্টে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার। তার বিপরীতে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রি দাঁড়ায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকায়। বিক্রি কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতিও কমেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এর মানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের স্থিতি এক বছরে ১১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা সোয়া ৩ শতাংশের মতো কমেছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই