অর্থনীতি
ডিমের বাজারে স্বস্তি, লাফিয়ে বাড়ছে মুরগির দাম
ডিমের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তার সুফলও দেখা যাচ্ছে বাজারে। বাজারে কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম। তবে ডিমের দাম কমলেও এবার অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে মুরগির দাম। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
অন্যদিকে বাজারে কিছুটা কমেছে কাঁচামরিচের ঝাল। পাশাপাশি সামান্য কমলেও সবজির দাম এখনো সাধারণ মানুষের স্বস্তির মধ্যে আসেনি। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল এমন চিত্র।
বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ আলোচনায় ছিল ডিম। বিশেষ করে চলতি সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তবে এ দাম এখন বড়বাজারে ১৫০ টাকায় নেমেছে। যদিও পাড়া-মহল্লায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো ডিম বিক্রি করছেন ১৬০ টাকায়। সরকার এরমধ্যে ডিমের শুল্কছাড়, আমদানির অনুমতি এবং বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। যার সুফল মিলছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নিয়মিত অভিযান এবং খামারি ও করপোরেটদের ডিম সরবরাহ বাড়ানোর কারণে দাম কমে আসছে। তাছাড়া শুল্কছাড়ের সঙ্গে সরকার নতুন করে আরও সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিচ্ছে। এটিও দাম কমার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।
এদিকে একই সময় বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা বাড়তে দেখা গেছে। এ মুরগির দাম আগের সপ্তাহেও বেড়েছিল। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ২০৫ থেকে ২১৫ টাকা পর্যন্ত। যা দুই সপ্তাহ আগে ১৮০ টাকার মধ্যে ছিল। অন্যদিকে অস্বাভাবিকভাবে সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৫০ টাকা বেড়ে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৭০-২৮০ টাকা ছিল।
রামপুরা বাজারে মুরগির বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, হুট করেই সরবরাহ কমিয়ে মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পাইকাররা। ওরা (পাইকারি বিক্রেতারা) জানিয়েছে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে মুরগির সরবরাহ কম।
এদিকে মাসখানেক ধরে উত্তাপ ছড়ানো সবজির বাজারও রয়েছে কমতির দিকে। যদিও এখনকার দাম সাধারণ ক্রেতাদের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। বাজারে শুধু কমদামের সবজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এরপর রয়েছে পটোল, যার দাম কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। এছাড়া ঢ্যাঁড়শ ৮০-৯০, বরবটি ১০০-১২০, গোল বেগুন ১৩০-১৪০, লম্বা বেগুন ১০০-১২০, টমেটো ১৮০-১৯০, ধুন্দল, ঝিঙ্গে ও চিচিঙ্গা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহজুড়ে তেজ ছড়ানো কাঁচামরিচের বাজারও নামতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। যদিও এখনো কিছু কিছু খুচরা দোকানি এখনো প্রতি একপোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা হাঁকছেন। তারা ১০০ গ্রাম বিক্রি করছেন ৪০ টাকায়।
এদিকে চলতি সপ্তাহে তেল ও চিনিতেও শুল্কছাড় দিয়েছে নতুন সরকার। কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, শুল্ক কমানোর খবরে পাইকাররা তেল ও চিনির দরে কিছুটা ছাড় দিচ্ছে। তবে ভোক্তারা শুল্কছাড়ের সুফল পেতে কিছু দিন সময় লাগবে। চিনির দর নতুন করে বাড়েনি। বরং এক সপ্তাহে পাইকারিতে বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০-২০০ টাকার মতো কমেছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে এসব পণ্যের খুচরা দাম কমে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আরও ১ বিলিয়ন ডলার সহায়তার ইঙ্গিত আইএমএফের
চলমান চার দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রকল্পের সঙ্গে আরও নতুন ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার ইঙ্গিত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলারের জন্য কিছু নতুন শর্ত জুড়ে দিয়েছে সংস্থাটি। নতুন ঋণ ছাড়ের জন্য বাড়তি ৬ মাস সময় চেয়েছে আইএমএফ।
সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে দর কষাকষির পর ২০২৬ সালের পরবর্তী ছয় মাসে নতুন ঋণ দিতে সায় দিয়েছে আইএমএফ। তবে অর্থ উপদেষ্টার নতুন করে চাওয়া ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ বিষয়ে আইএমএফ আপাতত আগ্রহ দেখায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, গত ৫ আগস্ট সরকার বদলের পরেই অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আইএমএফের কাছে নতুন করে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণের প্রস্তাব দেন। এই ঋণ নিয়ে আইএমফের ঢাকায় সফররত মিশনের সঙ্গে কথা হয়। তারা চলমান ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের বাইরে নতুন করে ঋণে আগ্রহ দেখায়নি। তবে আইএমএফ প্রাথমিকভাবে এক বিলিয়নের একটি বিকল্প প্রস্তাব দেয়। এতে তারা চলমান ঋণের কিস্তি শেষ হওয়ার পরে বাড়তি ৬ মাস সময় চায়।
একই সঙ্গে নতুন ঋণ ছাড়ের জন্য কিছু নতুন সংস্কার প্রস্তাব দেয়। আইএমএফের চলমান মিশনের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে শর্ত পূরণে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্মতি জ্ঞাপন করে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য রেপ-আপ বৈঠকে এসব বিষয়ে চুক্তি হতে পারে বলে সূত্র নিশ্চিত করে।
অপর একটি সূত্র জানায়, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গত অক্টোবরে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকের ফাঁকে বিদ্যমান ঋণ কর্মসূচির অধীনে ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থার কাছে নতুন করে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চেয়েছিলেন। আলোচনার পর বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ও বিদ্যমান ঋণের চতুর্থ কিস্তির কাঠামোগত সংস্কার শর্ত পালন নিয়ে পর্যালোচনা করতে মাসের শুরুতে ১৩ সদস্যের একটি আইএমএফ মিশন বাংলাদেশে আসে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি মিশনের সঙ্গে আলোচনার পর অতিরিক্ত সংস্কার শর্তের বিনিময়ে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান ঋণ কর্মসূচির অধীনে বাকি চারটি ধাপের প্রতিটিতে ১ বিলিয়ন ডলার করে আসবে।
এর আগে গত বছরের জানুয়ারিতে, আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে। এ পর্যন্ত ৩ কিস্তিতে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন দিয়েছে আইএমএফ। এদিকে আইএমএফ মিশন বিভিন্ন পলিসি ডকুমেন্টস চূড়ান্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়। পলিসি ডকুমেন্টসের মধ্যে রয়েছে- সরকারের অর্থনৈতিক ও আর্থিক নীতির স্মারকলিপি, লেটার অব ইনটেন্ট, টেকনিক্যাল মেমোরেন্ডাম ও সমঝোতা স্মারক। আইএমএফ অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগে সন্তুষ্ট হলেও পরবর্তী ঋণের কিস্তির জন্য নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, এবার আইএমএফ রাজস্ব আদায় বাড়ানো, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সার খাতে ভর্তুকি কমানো এবং ব্যাংকিং খাতের সুশাসনের ওপর জোর দিয়েছে। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরের বাজেটে কর অব্যাহতি সংক্রান্ত সরকারের পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে সংস্থাটি। তাছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পলিসি ও প্রশাসনকে আলাদা করতে এবং একাধিক ভ্যাট হার কমানোর শর্ত আরোপ করতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ব্যাংকিং খাতের ক্ষেত্রে আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ, ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং দেউলিয়া আইন সংশোধনের জন্য বিভিন্ন শর্ত আরোপ করতে পারে। ভর্তুকি কমানো এবং মূল্য সমন্বয়ে সরকারের পরিধি কমিয়ে আনতে শর্তও দিতে পারে আইএমএফ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ঢাকায় সফররত আইএমএফ মিশন চলতি ঋণ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। মিশন অনেক বিষয়ে ইতিবাচক। নতুন করে চাওয়া ৩ বিলিয়ন ঋণের বিষয়ে বলার মতো কিছু ঘটেনি। তবে চলমান ঋণের সঙ্গে নতুন এক বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বুধবার শেষ বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে খোলসা করা জানানো হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আদানি প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে এক তৃতীয়াংশ
ভারতীয় ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি পাওয়ার থেকে গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি প্রায় এক তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ভারতের সরকারি এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানা গেছে বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বকেয়া সংক্রান্ত বিরোধ।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদী একটি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষর করে আদানি পাওয়ার। গড্ডায় অবস্থিত আদানির এই কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ রপ্তানি করা হয়, তা দেশটির মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ।
বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি আদানিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ মূল্য পুনর্বিবেচনা করতে বলছে বাংলাদেশ। দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা অন্যান্য সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাঝে আদানির বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ।
ভারতের ইস্টার্ন রিজিওনাল পাওয়ার কমিটির তথ্য অনুসারে, গত নভেম্বর মাসে গড্ডা প্ল্যান্ট বাংলাদেশে ৪৫০ মিলিয়ন কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুৎ রপ্তানি করেছে। যা বার্ষিক হিসাবের তুলনায় ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ কম। এই পতন মাসিক বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে গত বছরের ডিসেম্বরের পর সর্বনিম্ন।
শীতের মৌসুম শুরু হওয়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুতের ব্যবহার ও চাহিদা কম থাকলেও বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আদানির কাছ থেকে আমদানি কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের বার্ষিক চাহিদা মেটাতে জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার গত নভেম্বরে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। টানা ২১ মাস ধরে হ্রাস পাওয়ার পর পরপর তিন মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি ঘটেছে।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চালন প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, টানা পাঁচ মাস পতনের পর গত নভেম্বরে প্রাকৃতিক গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে, কয়লা-চালিত বিদ্যুতের উৎপাদন টানা তৃতীয় মাসের মতো হ্রাস পেয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টানা তৃতীয়বার সিডিপির সদস্য হলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসিতে (সিডিপি) টানা তৃতীয়বারের মতো নিয়োগ পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সিডিপিতে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের তৃতীয় দফা নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে। ২০১৮ সালে প্রথম ড. দেবপ্রিয় সিডিপিতে নিয়োগ পান।
কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) হলো জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশে দেশে উন্নয়নের ঝুঁকি নিরসনে সরকারকে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়ে থাকে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জন করতে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে আসছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ক্ষেত্রেও এ প্রতিষ্ঠান অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণের ক্ষেত্রে প্রদত্ত শর্তাবলি পরিপালন করছে কি না তাও দেখবে সিডিপি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দামে নতুন রেকর্ড
নতুন রেকর্ড গড়েছে ক্রিপ্টোমুদ্রা বিটকয়েন। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মূল্যবৃদ্ধির যে ধারা শুরু হয়েছে, তা এখনো অব্যাহত আছে। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার বিটকয়েনের দাম কিছু সময়ের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ডলারে উঠে যায়।
গত ৫ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনের পর এ নিয়ে ক্রিপ্টোমুদ্রা বিটকয়েনের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এই দৌড় কোথায় গিয়ে থামবে, সে কথা এখন কেউ ভাবতেও পারছেন না। গতকাল বিটকয়েনের দাম নতুন রেকর্ড গড়ার পর কিছুটা কমেছে—আজ সোমবার সকালে এশিয়ার বাজারে বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ৪ হাজার ৫০০ ডলারে নেমে আসে।
ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর বিটকয়েনের এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে সবাই এখন কমবেশি অবগত। সেটা হলো, বাইডেন প্রশাসনের তুলনায় ট্রাম্প অনেক বিটকয়েনবান্ধব। এমনকি তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র হবে বিটকয়েনের রাজধানী; সেই সঙ্গে তাঁর প্রশাসনে আছেন বিটকয়েনপ্রেমী ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন এক ঘোষণা দিয়েছেন। সেটা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত তেল রিজার্ভের মতো ডিজিটাল মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তুলবেন তিনি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প সিলিকন ভ্যালির উদ্যোক্তা ও পেপলের সাবেক নির্বাহী ডেভিড স্যাক্সকে ক্রিপ্টোমুদ্রা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই স্যাক্স শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের বেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এ ছাড়া ট্রাম্প সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের প্রধান হিসেবে ক্রিপ্টোমুদ্রাবান্ধব পল অ্যাটকিন্সকে নিয়োগ দেবেন।
এদিকে গত মিসে এসইসির বর্তমান প্রধান গ্যারি জেন্সলার বলেছেন, ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প যেদিন শপথ নেবেন, সেদিন তিনি পদত্যাগ করবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ধন্যবাদ; এই পদে থাকাকালে এসইসি ভয়ভীতি ছাড়াই আইন প্রয়োগ করেছে।’
এর আগে অবশ্য ট্রাম্প বলেছিলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রথম দিনেই তিনি জেন্সলারকে বরখাস্ত করবেন। কারণ আর কিছু নয়, সেটা হলো, জেন্সলার ক্রিপ্টো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে ভোজ্য তেলের দাম কমাতে কর অব্যাহতি
পবিত্র মাহে রমজানে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য সহনীয় রাখার লক্ষ্যে ভোজ্যতেলের ওপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক পুনরায় শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পাম ওয়েল আমদানিতে বিদ্যমান সকল আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি এবং অগ্রিম আয়কর আগামী ৩১ মার্চ,২০২৫ পর্যন্ত সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) এনবিআরের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পাম ওয়েল আমদানিতে বিদ্যমান সকল আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি এবং অগ্রিম আয়কর আগামী ৩১ মার্চ,২০২৫ পর্যন্ত সম্পূর্ণ অব্যাহতি দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পৃথক ৩টি প্রজ্ঞাপন জারী করেছে। এসকল প্রজ্ঞাপনে সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পাম ওয়েল বিক্রয়ের ওপর স্থানীয় পর্যায়ে প্রদেয় মূল্য সংযোজন কর উল্লিখিত সময়কাল পর্যন্ত সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া, এসকল পন্যের আমদানি পর্যায়ে প্রদেয় মূসক ১৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এসকল পন্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূসক ব্যতিত অন্য কোন শুল্ক-করাদি অবশিষ্ট থাকবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোপূর্বে গত ১৭ অক্টোবর এবং ১৯ নভেম্বর তারিখে জারীকৃত শুল্ক-করাদি অব্যাহতির প্রজ্ঞাপন দুটি সয়াবিন ও পাম ওয়েলের ক্ষেত্রে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রযোজ্য ছিল। ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং ভোক্তাসাধারণের জন্য ভোজ্য তেলের মূল্য সহনীয় রাখার উদ্দেশ্যে সয়াবিন ও পামতেলের পাশাপাশি এবার অপরিশোধিত/পরিশোধিত সানফ্লাওয়ার তেল ও ক্যানোলা তেলের আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক-কর ও মুসক হ্রাস করা হয়েছে। সয়াবিন ও পামতেলের সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বাজারে উর্ধ্বমুখী দর বিবেচনায় নিয়ে পবিত্র রমযান মাসে পণ্যটির সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন তিনটির মেয়াদ আগামী ৩১ মার্চ, ২০২৫ পর্যন্ত বলবৎ রাখা হয়েছে।
সানফ্লাওয়ার তেল ও কেনোলা তেলের কাস্টমস ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি, আগাম কর ও অগ্রিম আয়কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করায় এবং মূল্য সংযোজন কর হ্রাস করার ফলে এ সকল তেলের আমদানি ব্যয় লিটার প্রতি ৪০-৫০ টাকা হ্রাস পাবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক গৃহীত এ সকল ব্যবস্থার ফলে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং এর ফলে বাজার মূল্য সর্বসাধারণের জন্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা যাবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এসএম