অর্থনীতি
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডিসহ ২০ জনকে দুদকে তলব
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মিফতাহ উদ্দিনসহ ২০ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রামভিত্তিক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আনীত অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে বক্তব্য এবং সাক্ষ্য প্রদানের জন্য তাঁদের ২০-২৩ অক্টোবর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর চিঠি দিয়েছেন দুদকের তদন্ত দলের প্রধান এবং উপপরিচালক মো. ইয়াসির আরাফাত। চিঠিতে তলব পাওয়া কর্মকর্তাদের চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের ঋণের যাবতীয় কাগজপত্র এবং নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের সত্যায়িত কপি সঙ্গে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের তলব পাওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন—ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ডিএমডি মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) মিয়া মো. বরকত উল্লাহ, ইভিপি মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী, এসএভিপি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী, ইভিপি মোহাম্মদ সিরাজুল আলম, ভিপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সরকার, চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) খাজা মোহাম্মদ খালেদ, মোহাম্মদ আলী আসগর, এসএভিপি আমান উল্লাহ, এসপিও সরওয়ার কামাল, এসপিও মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, জুনিয়র অফিসার সিরাজ, প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) নাহিদ আঞ্জুমান সুমী, জুনিয়র অফিসার মো. ইসতিয়াক জকি, সিনিয়র অফিসার মো. আশরাফ, সিনিয়র অফিসার জোনায়েদ হোসাইন, সিনিয়র অফিসার সাহাদাত হোসাইন, জুনিয়র অফিসার মো. কলিম উল্লাহ চৌধুরী, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন এবং এসপিও ইফতিখার সাদী রিপন।
উল্লেখিত কর্মকর্তাদের সকাল সাড়ে ১০ থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত থেকে লিখিত বক্তব্য, প্রমাণ এবং অন্যান্য তথ্য অনুসন্ধান দলের সদস্যদের সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এলডিসি উত্তরণের কারণে বাড়বে না ওষুধের দাম
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের কারণে দেশের বাজারে ওষুধের দাম বাড়বে না। তবে ওষুধশিল্পে কাঠামোগত সমস্যার সমাধান না হলে সংকট তৈরি হতে পারে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনে এক অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের ওষুধশিল্পে এলডিসি উত্তরণের প্রভাব ও স্থানীয় বাজারে ওষুধের দাম’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এলডিসি থেকে উত্তরণের কারণে দাম না বাড়ার বিষয়ে একমত হন খাতসংশ্লিষ্টরা। তবে তারা বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম অনেক বাড়ার কারণে দেশের ওষুধশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমছে।
এম এ রাজ্জাক বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর দেশের বাজারে ওষুধের দাম বাড়বে কিনা, এ নিয়ে ওষুধশিল্প-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি তথ্যগত গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ ২০২৩ সালে নতুন যে পেটেন্ট আইন করেছে, সেখানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সুযোগ-সুবিধা ধরে রাখা হয়েছে। ফলে উত্তরণের পর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে যে উদ্বেগ ছিল, তা নিরসন করা সম্ভব হয়েছে। ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কী করা যাবে, তা এ আইনে বলে দেওয়া হয়েছে।
কোন পরিস্থিতিতে কী হতে পারে, তার একটি প্রক্ষেপণ দিয়েছে র্যাপিড। এ প্রসঙ্গে এম এ রাজ্জাক বলেন, যেসব ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি হয় না, সেগুলো আমদানির সঙ্গে এলডিসি থেকে উত্তরণের সম্পর্ক নেই। বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত ৫ থেকে ১০ শতাংশ ওষুধে মেধাস্বত্ব প্রযোজ্য, এগুলোর ক্ষেত্রেও ডব্লিউটিওর বিধান অনুসারে বাংলাদেশ মেধাস্বত্ব দিতে বাধ্য নয়। পেটেন্ট আইনেও বিষয়টি সেভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, অর্থাৎ সেগুলো নিয়েও চিন্তা করতে হবে না।
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর যেসব ওষুধ পেটেন্টের আওতায় আসবে, সেগুলো উৎপাদনের ক্ষেত্রে কী করতে হবে, তা আইনে উল্লেখ আছে। তাতে বলা হয়েছে, এসব ওষুধ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলে ডব্লিউটিওর আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে ৪ শতাংশ লয়্যালটি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে দেশের বাজারে ওষুধের দাম ২ থেকে ৪ শতাংশ বাড়বে।
এম এ রাজ্জাক বলেন, সার্বিকভাবে বলা যায়- শুধু এলডিসি থেকে উত্তরণের কারণে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা একেবারেই কম। তবে অন্যান্য কারণে, যেমন ওষুধ তৈরির অন্যতম কাঁচামাল অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টের (এপিআই) দাম বাড়লে ওষুধের দাম বাড়তে পারে। তবে এখন রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে ওষুধ খাতে যে নগদ প্রণোদনা পায়, এলডিসি উত্তরণের পর তা দেওয়া যাবে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রণোদনা কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে কিছুটা চাপ পড়তে পারে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য ব্যয় অনেক বেশি। এর মূল কারণ, এ খাতে বাজেট বরাদ্দ বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে কম, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। র্যাপিডের সুপারিশ, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির সঙ্গে দরিদ্র ও অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য ক্ষুদ্র স্বাস্থ্য বীমা প্রবর্তন করা হোক।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। রোববার (২৪ নভেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৫ হাজার ৬৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ২১ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২২ নভেম্বর থেকে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে দ্রব্যমূল্য সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো: বাণিজ্য উপদেষ্টা
আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে খাদ্যদ্রব্যসহ জিনিসপত্রের দাম সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউর প্রয়াত সদস্য সন্তানদের শিক্ষা ভাতা দেওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি জানি আপনারা অনেক কষ্টে আছেন। তবে এটাও বলতে চাই যে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, চিনি ও তেলের দাম কিছুটা কমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতীয় মসজিদের খতিব পালিয়ে গেছেন, এমন একটি পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আজকের এ সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য একটি মর্যাদাপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ।
ডিআরইউর সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিআরইউর কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালক ও চেয়ারম্যান (রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটি) এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম শক্তি। এনআরবিসি ব্যাংক অর্থনৈতিক উন্নয়নধর্মী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মানবিক অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।
এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নমূলক অনেক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এনআরবিসি ব্যাংক। ডিআরইউর এ ধরনের বৃত্তিমূলক কাজে সব সময় আমরা পাশে থাকবো।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পতনের পর স্বর্ণের দামে বড় লাফ
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বড় উত্থানের পর যেমন বড় দরপতন হয়েছে, তেমনি বড় দরপতনের পর বড় উত্থানের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববাজারে সোনার দামের অস্থিরতার মধ্যে দেশের বাজারেও দামি এই ধাতুটির দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়া বা কমার ঘটনা ঘটছে। চলতি নভেম্বর মাসে ৬ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।
বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সোনার দামে বড় পতন হয়। পাঁচ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ১২২ ডলার কমে যায়। এমন পতনের পর গত সপ্তাহে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ ডলারের বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার ওপরে।
বিশ্ববাজারে বড় ধরনের উত্থান হওয়ায় বাংলাদেশেও গত সপ্তাহে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে সোনার দাম বাড়ানোর হার বেশ কম। ফলে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম আবার বাড়তে পারে। গত সপ্তাহে দুই দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা। অবশ্য গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে দুই দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা কমানো হয়।
তথ্য পর্যালোচায় দেখা যায়, বিশ্ববাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে গত ৩০ অক্টোবর প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৮৯ ডলারে ওঠে। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে ২০, ২৩ ও ৩১ অক্টোবর টানা তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। ৩১ অক্টোবর সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় এক হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় এক লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরদিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ১০ ডলারে নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে, তেমনই বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম কমানো হয় ৯ হাজার ১৭ টাকা।
অবশ্য এই বড় দরপতনের পর বিশ্ববাজারে সোনার দামে আবার বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর সময় প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৫৬২ দশমিক ৫৪ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১৫ দশমিক ৮৫ ডলারে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ দশমিক ৩১ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকা (এক ডলার ১২০ টাকা ধরে)।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের ২০ ও ২২ নভেম্বর দুই দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ২০ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়ানো হয়। এছাড়া ২২ নভেম্বর বাড়ানো হয় এক হাজার ৯৯৪ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা।
বাজুসের এক সদস্য বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি অনুমান করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক উত্থান হয়েছে। তার আগে বড় দরপতন হয়। বিশ্ববাজারে এমন অস্থিরতা থাকায় দেশের বাজারেও কয়েক দফা সোনার দাম বাড়া-কমার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বিশ্ববাজারের যে চিত্র দেখা গেছে, তাতে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম বাড়তে পারে। কারণ, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৩১ শতাংশ
দেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ২১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩১ শতাংশ কমেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটিতে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, আসল পরিশোধ ও সর্বশেষ স্থিতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের নগদায়নও (ভাঙানো) কমে গেছে। এ কারণে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। এ বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচ কমেছে ১৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা বা প্রায় ৭১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জুলাই-আগস্টে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার। তার বিপরীতে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রি দাঁড়ায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকায়। বিক্রি কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতিও কমেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এর মানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের স্থিতি এক বছরে ১১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা সোয়া ৩ শতাংশের মতো কমেছে।
এসএম