টেলিকম ও প্রযুক্তি
বাংলাদেশে পেপ্যাল কতটা জরুরি, চালু হতে বাধা কোথায়?

কেনাকাটা করতে গেলে অথবা কাউকে টাকা পাঠাতে গেলে বারবার অ্যাকাউন্টের নাম, নম্বর, রাউটিং নম্বর, ক্রেডিট কার্ড হলে কার্ড নম্বর, কার্ডের মেয়াদ ইত্যাদি তথ্য প্রদান শুধু ঝামেলাদায়কই নয়, গুরুত্বপূর্ণ এই আর্থিক ডেটা যেখানে সেখানে সরবরাহ করা অনিরাপদও বটে। ঠিক এ জায়গায় এসেই আর্থিক খাতে বিশ্বব্যাপী নিজেদের অবস্থান পোক্ত করে নিয়েছে পেপ্যালের মতো সেবাগুলো।
একটিমাত্র ই–মেইল ঠিকানার (বা ফোন নম্বর) মাধ্যমে লেনদেনের সুযোগ করে দিয়েছে পেপ্যাল। সে ই–মেইলই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আইডি। অনলাইনে বা অ্যাপের মাধ্যমে পেপ্যাল দিয়ে টাকা পাঠানো, বলতে গেলে জিমেইল ব্যবহার করে ই–মেইল পাঠানোর মতোই সহজ। পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ডের সঙ্গে পেপ্যালকে সংযুক্ত করে নিতে হয়। পরবর্তী সময়ে সে ব্যাংক বা কার্ডের তথ্য বারবার দেওয়া ছাড়াই নিরাপদে করা যায় লেনদেন, পরিশোধ করা যায় পণ্য বা সেবার মূল্য।
বিশ্বের ২০০টির বেশি দেশে পেপ্যালের সার্ভিস চালু আছে এবং লেনদেন হয় ২৫টির বেশি মুদ্রায়। ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সচল পেপ্যাল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩ কোটি। প্রতিদিন পেপ্যালের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় ৪ কোটির বেশিসংখ্যক লেনদেন। অনলাইন লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ বাজারের ৪৩ দশমিক ৮৫ ভাগ রয়েছে পেপ্যালের দখলে। বিশ্বের ১ কোটি ৬৮ লাখের বেশি ওয়েবসাইট পেপ্যালের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করে। ২০২০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা ৭১ ভাগ ই-কমার্স সাইট পেপ্যালের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ রেখেছে।
বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশে পেপাল চালু রয়েছে। তবে বাংলাদেশে সেই সুযোগ নেই। বাংলাদেশ যেখানে অনলাইন কর্মীর দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে; সেখানে বিষয়টি বেশ অদ্ভুতই মনে হয়।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ২০২৩ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ফ্রিল্যান্সিংয়ের শতকরা ১৪ ভাগই বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের দখলে।
পেপাল কেন দরকার?
আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করা ফ্রিল্যান্সাররা প্রাথমিকভাবে দুটি উপায়ে কাজ করে থাকেন। প্রথমত, মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে আর দ্বিতীয়ত স্বাধীনভাবে। এক্ষেত্রে কিছু মার্কেটপ্লেস একচেটিয়াভাবে পেপালের উপর নির্ভর করে। আর অন্যগুলো একাধিক পেমেন্ট পদ্ধতির প্রস্তাব করে।
মামুন নামের একজন বলেন, আমরা বহু মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করতে পারি না। শুধু আমাদের পেপাল সুবিধা নেই বলে। কিছু প্ল্যাটফর্ম শুধু পেপাল ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে একবার যখন আস্থা তৈরি হয়ে যায়, তখন বহু ফ্রিল্যান্সাররাই তার ক্লায়েন্টের সাথে মার্কেটপ্লেসের বাইরে কাজ শুরু করে। এতে করে প্ল্যাটফর্ম ফি এড়িয়ে যাওয়া যায়। যাতে দুপক্ষই লাভবান হয়। কেননা, প্রতিটি পেমেন্ট থেকে মার্কেটপ্লেস মোটা অঙ্কের টাকা কেটে নেয়।
মামুন জানান, পশ্চিমা দেশগুলোর ক্লায়েন্টের জন্য পেপাল সবচেয়ে সুবিধাজনক পেমেন্ট পদ্ধতি। কেননা, ওই দেশগুলোতে এটিই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তারা প্রায়শই অন্য পেমেন্ট পদ্ধতির থেকে পেপালকে এগিয়ে রাখেন।
মীর তৌহিদুল ইসলাম নামের একেজন ফ্রিল্যান্সার বলেন, আমি একজন মার্কিন ক্লায়েন্টের পক্ষ থেকে ফুল টাইম রিমোট জবের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। তবে সেখানে একমাত্র পেমেন্ট অপশন ছিল পেপাল। যেহেতু আমি পেমেন্ট মেথডটি ব্যবহার করতে পারবো না; তাই আমাকে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিতে হয়।
আমরা কি অন্য প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারি?
এ প্রসঙ্গে মামুন বলেন, এক্ষেত্রে হ্যাঁ বা না দুটোই বলা যায়। পেপালের তুলনায় অন্য পেমেন্ট পদ্ধতিতে সাধারণত ট্রানজেকশন ফি বেশি। কিংবা এটি ক্লায়েন্টের জন্য সুবিধাজনক হয় না।
বাংলাদেশে পেওনিয়ার, জুম ও ব্যাংক ট্রান্সফার পদ্ধতি চালু রয়েছে। তবে এগুলো একটিও পেপালের মতো জনপ্রিয় নয়। একইসাথে কিছু কিছু মেথডে অতিরিক্ত ফি আদায়, অল্প সংখ্যক ফিচার থাকা কিংবা আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের কাছে সেগুলো গ্রহণযোগ্য না হওয়ার মতো সমস্যা রয়েছে।
তৌহিদ বলেন, আমি সাধারণত ডোমেইন কেনা ও বিক্রির কাজ করতাম। তবে পেপাল ব্যবহার না করতে পারার কারণে আমাদের অন্য পেমেন্ট মেথডের ওপর নির্ভর করতে হতো। যেগুলো আমার আয়ের ৪০ ভাগ পর্যন্ত কেটে রেখে দিত। অথচ পেপাল ব্যবহার করতে পারলে মাত্র ৫ ভাগেরও কম আয় কাটা হতো।
এ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের ডিরেক্টর প্রফেসর বিএম মইনুল হোসাইন বলেন, পেপালের মূল বিষয়টি হচ্ছে আস্থা। যখন আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি আসে; তখন আস্থাই সব। পেপাল বিশ্বব্যাপী এমন জোড়ালো আস্থা অর্জন করেছে যে, মানুষজন অন্য পেমেন্ট মেথডের তুলনায় এটিকেই ব্যবহার করে থাকেন।
এমন পরিস্থিতিতে ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে কাজ করা কিছু এজেন্সি আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের জন্য পেপালের ব্যবস্থা করে থাকেন। তবে সেটা ভিন্নভাবে। তারা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের একটি ঠিকানা ব্যবহার করে ব্যবসার নিবন্ধন করে। সেখানে একটি স্থানীয়ভাবে ব্যবসার লাইসেন্স নেন। সেই দেশের একটি ফোন নম্বরও রাখা হয়।
মামুন বলেন, একবার এজেন্সিটি বিদেশে নিবন্ধিত হলে সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের একটি ব্যবসা হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ করে। কিন্তু এখানে একটি খরচও আছে। এক্ষেত্রে তাদের ওই দেশের সরকারকে ট্যাক্স ও ফি দিতে হয়৷ যেহেতু ফ্রিল্যান্সারদের পেপালে সরাসরি প্রবেশাধিকার নেই, তাই বাংলাদেশ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে।”
বাধাগুলো কী?
বাংলাদেশে পেপাল চালুর বিষয়টি অনিশ্চিত। ফ্রিল্যান্সার ও ডিজিটাল উদ্যোক্তারা বিষয়টি নিয়ে হতাশ। যদিও কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা নেই।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির এই বিলম্বের পেছনে দুটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন।
তার মতে, পেপালের কাছে বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ বেশ সামান্য মনে হয়। যাতে করে এখানে সার্ভিস চালুর ক্ষেত্রে তারা আগ্রহী নয়। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের রেগুলেশনের সাথে পেপালের পলিসির সামঞ্জস্য নেই।
কবির বর্তমানে মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও ও আয়অল কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছেন। তিনি বলেন, “পেপাল দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে না এলেও ফ্রিল্যান্সাররা পেওনিয়ার ও জুম সার্ভিসের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের কাজ করছে। তবে এই বিকল্পগুলো জটিলতা ও ফি বৃদ্ধির মতো সমস্যা তৈরি করছে।”
আরেকটি বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা বৈধভাবে পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না। অর্থাৎ, তারা বাংলাদেশ থেকে অন্য পেপাল ব্যবহারকারীদেরও পেমেন্ট পাঠাতে পারে না। এক্ষেত্রে অন্য দেশের ফ্রিল্যান্সারদের থেকে সার্ভিস নিতেও বেশ বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।
কবির বলেন, এখানে অর্থ পাচারের মতোও উদ্বেগ রয়েছে। বর্তমানে নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকেরা প্রতি বছর সর্বোচ্চ ১২ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিদেশে পাঠাতে পারেন। যেটি আবার বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটর করে। এক্ষেত্রে এ পেমেন্টগুলো পেপালের মাধ্যমে করা হলে সেটি ট্র্যাক করা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সম্ভব হবে না। যাতে করে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ কী কী উদ্যোগ নিয়েছে?
২০১৭ সাল থেকে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা দেশে পেপাল চালু সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তারা ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, এটি শীঘ্রই চালু হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত বাস্তবে এক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
অধ্যাপক মাইনুল বলেছেন, একাধিক ঘোষণা সত্ত্বেও আমার মনে হয় না যে, পেপালের সাথে আলোচনার জন্য কোন জোড়ালো চেষ্টা করা হয়েছে।
সৈয়দ আলমাস কবিরও এই মন্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, সরকার ও পেপালের মধ্যে কোনও চুক্তি বা বৈঠক হয়নি, অন্তত আমার জানামতে।
পেপালের জন্য বাংলাদেশের বাজার খুবই ছোট এমন ধারণার সাথে একমত নন অধ্যাপক মইনুল। তিনি বলেন, পেপাল ২০০টিরও বেশি দেশে কাজ করে। যার মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশের চেয়েও ছোট। তাদের যদি পেপাল থাকতে পারে তবে আমরা কেন পারবো না?
অধ্যাপক মইনুল অর্থ পাচারের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অন্যান্য দেশগুলিও একই রকম ঝুঁকি মোকাবিলা করে। আমাদের তাদের সমাধানগুলি সম্পর্কে জানতে হবে। সেই অনুযায়ী মানিয়ে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি আশাবাদী যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবে। আমি মনে করি যে, এটির জন্য তাদের সদিচ্ছা রয়েছে।
পেপাল কীভাবে বর্তমানের আর্থিক প্রেক্ষাপটকে প্রভাবিত করতে পারে?
পেপাল বাংলাদেশে কী প্রভাব তৈরি করবে সেটি অনুমান করা কঠিন। তবে এর বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে।
অধ্যাপক মইনুল বলেন, আমি সঠিক সংখ্যা দিতে পারছি না। তবে এটি অবশ্যই আর্থিক খাতকে চাঙ্গা করবে।
কবির মনে করেন যে, বিকাশ বা নাগদের মতো স্থানীয় মোবাইল আর্থিক পরিষেবা (এমএফএস) পেপালের সাথে যুক্ত হতে পারে। এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করবে।
প্রবাসীদের দেশে থাকা পরিবারগুলো বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দারা তখন এমএফএস সাভিসের মাধ্যমে টাকা পেতে পারবে। ফলে প্রক্রিয়াটি আরও নির্বিঘ্ন হবে।
পেপাল চালু হলে ফ্রিল্যান্সাররাও উপকৃত হবে। তারা বিশ্বব্যাপী আরও প্রজেক্টে যুক্ত হতে পারবে। এতে করে তাদের আয়ের সম্ভাবনা বাড়বে। একইসাথে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ বৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদানের পাশাপাশি আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।

টেলিকম ও প্রযুক্তি
বাড়ির বিদ্যুৎ খরচ কমাতে যা করবেন

দৈনন্দিন ঘরের কাজ সহজ করতে আমরা অনেক বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করি। টিভি, ফ্রিজ, ওভেন, টোস্টার, ইস্ত্রি, গিজার, হিটার মেশিনসহ আরও অনেক কিছু। তবে এগুলো ব্যবহারে কাজ সহজ হলেও মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল দেখে মাথায় হাত পরে যায়।
তবে আপনি বাড়ির বিদ্যুৎ খরচ কমাতে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ খরচ কিছুটা কমাতে পারেন-
>> অনেক পুরোনো ডিভাইসগুলো বদলে নিতে পারেন। পুরোনো ডিভাইসগুলোতে বিদ্যুৎ খরচ তুলনামূলক বেশি হয়। বাড়ির ফ্যান, লাইট, ফ্রিজ, এসি ধীরে ধীরে বদলে নিন।
>> সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ পোড়ে বাল্ব বা টিউবলাইটে। লাইটের ক্ষেত্রে এলইডি লাইট ব্যবহার করতে পারেন। এটি কম ওয়াটেও বেশি আলো পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়।
>> এসি যত্নে রাখুন, প্রতি পনেরো দিনে একবার এসির কনডেনসার কয়েল পরিষ্কার করলে বিদ্যুৎ খরচ অনেকটাই কমে। তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখলে অতিরিক্ত লোড পড়ে না।
>> এসির হিটিং, ভেন্টিলেশন এবং এয়ার কন্ডিশনার সিস্টেমের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফিল্টার বদলানো থেকে শুরু করে বছরে একবার সার্ভিসিং, অনেকটা বিদ্যুৎ খরচ বাঁচিয়ে দিতে পারে।
>> আধুনিক ফ্রিজ আর টিভির জন্য ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারের প্রয়োজন নেই, অথচ এগুলো মাসে ৩০-৪৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ টেনে নিতে পারে।
>> চার্জার, সেট-টপ বক্স বা টিভি প্লাগে লাগিয়ে রাখলে প্রতিমাসে ৫-১০ ইউনিট পর্যন্ত খরচ হয়। অনেকেই ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্টের স্যুইচ অফ করেন কিন্তু প্লাগ লাগানোই থাকে। এই অবস্থাতেও বিদ্যুৎ খরচ হয়। একে ‘ফ্যান্টম’ বা ‘স্ট্যান্ডবাই’ বলে। প্লাগ থেকে সুইচ অফ করে রাখলে কিছুটা খরচ বাঁচানো সম্ভব।
>> ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হতে পারে। পাশাপাশি ফুল লোডে চালানো হচ্ছে কি না সেটা দেখাও গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে জামাকাপড় শুকনোর জন্য ড্রায়ার ব্যবহার না করে রোদে মেলে দিলেও অনেক বিদ্যুৎ বাঁচবে।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
স্মার্টফোনে আড়িপাতা আছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

সাইবার অপরাধীরা আইফোন বা অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনে আড়ি পাততে সক্ষম অ্যাপ বা স্পাইওয়্যার যুক্ত করে দূর থেকে তার টার্গেটকৃত ব্যক্তির অনলাইন বা দৈনন্দিন কার্যক্রম নজরদারি করে থাকে। শুধু তা-ই নয়, স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে স্মার্টফোনে সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সংগ্রহ করে তারা। ফলে তথ্য বেহাত হওয়ার পাশাপাশি অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন, এমনকি বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ব্ল্যাকমেলের মুখোমুখি হতে হয়। স্পাইওয়্যারগুলো গোপনে স্মার্টফোনে প্রবেশ করানোর কারণে অনেকে জানতেই পারেন না তাদের অনলাইন বা অফলাইন কার্যক্রমে নজরদারি করা হচ্ছে। তবে বেশ কিছু লক্ষণ দেখে স্মার্টফোনে স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়।
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন ট্যাপ করাটা খুব একটা কঠিন নয়। অনেকেই ভাবছেন কীভাবে সহজে এ কাজ করতে পারে? তাদের প্রশ্নের উত্তর হলো- এ কাজের জন্য সেলফোন নেটওয়ার্ক হ্যাক করার প্রয়োজন নেই। আপনার ফোনের ভালনেরাবিলিটি বা দুর্বলতা খুঁজে বের করে সহজেই আপনার ফোনকে ট্যাপিং ডিভাইসে পরিণত করা সম্ভব।
সে যা-ই হোক কেউ যদি আপনার ফোনে আড়ি পেতে কথোপকথন শোনে তাহলে আপনি কীভাবে তা বুঝবেন এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরঘুর করছে। তাদের জন্য কয়েকটি কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হলো, যা খেয়াল করলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে।
মোবাইল ডেটার অস্বাভাবিক ব্যবহার
স্পাইওয়্যার অ্যাপগুলো ফোনের পটভূমিতে চালু থাকার পাশাপাশি সংগ্রহ করা তথ্য নিয়মিত ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠাতে থাকে। ফলে ব্যবহারকারীদের অজান্তেই মোবাইল ডেটার পরিমাণ কমে যায়। কোনো অ্যাপ ব্যবহার না করলেও যদি মোবাইল ডেটা কমতে থাকে, তবে বুঝতে হবে ফোনে স্পাইওয়্যার রয়েছে।
বিভিন্ন সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা বন্ধ
ফোন ব্যবহারের সময় বারবার চালু হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সুবিধা চালু বা বন্ধসহ অনলাইন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন ফাইল নামতে থাকলে বুঝতে হবে ফোনে স্পাইওয়্যার রয়েছে।
ব্যাটারির চার্জ দ্রুত কমার পাশাপাশি ফোন গরম হওয়া
স্পাইওয়্যার অ্যাপগুলো সব সময় ফোনের পটভূমিতে চালু থাকে। আর তাই ফোনের ব্যাটারি নিয়মিত খরচ হতে থাকে। এ জন্য অল্প কিছু সময় ফোন ব্যবহার করলেই ব্যাটারির চার্জ দ্রুত কমে যাওয়ার পাশাপাশি ফোনও গরম হয়ে যায়।
গোপনে এসএমএস পাঠানো
এসএমএস না পাঠালেও যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে আপনার ফোন থেকে এসএমএস যায়, তবে বুঝতে হবে ফোনে স্পাইওয়্যার রয়েছে।
অপরিচিত অ্যাপের সন্ধান
ফোনের সেটিংস অপশন থেকে নামানো অ্যাপের তালিকা পর্যালোচনা করেও অনেক সময় স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তালিকায় অপরিচিত অ্যাপের নাম দেখলেই বুঝতে হবে, এটি স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যার। বিভিন্ন অ্যাপের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অনুমতি তালিকা দেখেও স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব।
স্পাইওয়্যার মুছে ফেলতে যা করতে হবে
ফোনে স্পাইওয়্যার থাকার সম্ভাবনা থাকলে প্রথমেই ফোনে অ্যান্টি-স্পাইওয়্যার অ্যাপ নামিয়ে স্ক্যান করে সেগুলো মুছে ফেলতে হবে। এর পাশাপাশি আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের হালনাগাদ সংস্করণ ব্যবহারের পাশাপাশি ফোনে থাকা অপরিচিত অ্যাপগুলো মুছে ফেলতে হবে। এরপরও স্পাইওয়্যার মুছে না গেলে ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করতে হবে।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
৬৮ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করলো হোয়াটসঅ্যাপ

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। বিশ্বের প্রায় সব শহরেই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন কয়েকশ কোটি মানুষ। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০ বিলিয়নের বেশি মেসেজ আদান-প্রদান হয়হোয়াটসঅ্যাপে। এর মধ্যে শুধু ছবি আদান-প্রদানের সংখ্যা ৭০০ মিলিয়ন এবং ভিডিও আদান-প্রদানের সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।
হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২.৯৫ বিলিয়নেরও বেশি। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৩৫.৮ মিলিয়ন ব্যবহারকারী আছে ভারতে। এই বিশাল সংখ্যক ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার ব্যাপারে তাইতো অনেকবেশি সচেতন। এজন্য একেবারেই ছাড় দেয় না মেটার মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্মটি। এবার ৬৮ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ।
‘স্ক্যাম সেন্টার’ বা প্রতারক চক্রের সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন সন্দেহে অ্যাকাউন্টগুলো ‘ব্যান’ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ২০২৫ সালের প্রথম অর্ধে এই কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছে মূল সংস্থা মেটা। সাইবার অপরাধীরা নানানভাবে তাদের প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বর্বশান্ত করছে ব্যবহারকারীদের।
মেটার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘অনেকক্ষেত্রেই অপরাধচক্র এই ধরনের প্রতারণা চক্র চালাত। অনেক সময়ে চাপ তৈরি করে ফোর্সড লেবার-এর মাধ্যমে মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই ধরনের অপরাধ চক্র চলত।’
এই চক্রগুলো পরপর জালিয়াতির ফাঁদ পাতত। ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে বিপুল রিটার্ন দেওয়ার মতো লোভ দেখানো হতো। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ব্যক্তিকে লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করার চেষ্টা করা হতো।
মেটা জানিয়েছে, টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে প্রথমে যোগাযোগ করা হতো টের্গেট ব্যবহারকারীর সঙ্গে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রাইভেট মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা হতো। টার্গেট করা ব্যক্তি যাতে লোভে পা দেন, তার জন্য সাফল্যের নাম করে বিভিন্ন উদাহরণও সামনে রাখতো অপরাধ চক্রগুলো।
কোনো প্রতারণার ঘটনায় অপরাধীরা একাধিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে টার্গেটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। এর ফলে কোনো একটি সংস্থার পক্ষে প্রতারণার পুরো চিত্র সামনে আনার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হতো বলে জানিয়েছে মেটা।
মেটা এই প্রতারণা থেকে ব্যবহারকারীদের বাঁচতে করণীয় কী হতে পারে সেই ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছে। পরিচিত নন বা কন্ট্যাক্ট লিস্টে নেই এমন নম্বর গ্রুপে অ্যাড করবেন না। অপরিচিত নম্বর থেকে আসা লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
যুক্তরাজ্যের ভোক্তা আইন বিশেষজ্ঞ লিসা ওয়েব বলেন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা ভুয়া বিনিয়োগের সুযোগ থেকে শুরু করে ছলনাময়ী পণ্য এবং অস্তিত্বহীন চাকরির অফার পর্যন্ত সবকিছুর জন্য প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনে প্লাবিত হচ্ছে। তাই মেটাকেও আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ

এবার আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ দিলো ট্রুকলার অ্যাপ। অপরিচিত নম্বরগুলো শনাক্ত করার জন্য ট্রুকলার অ্যাপ জনপ্রিয়। কোনো অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলে ট্রুকলারের মাধ্যমে সহজেই সেই কলারের পরিচয় জেনে নেওয়া যায়।
ব্যবহারকারীদের অ্যাপ ব্যবহারের অভিজ্ঞতা ভালো করতে নানান ফিচার যুক্ত করে প্ল্যাটফর্মটি। আবার অনেক ফিচার বন্ধও করে দেয়। এবার আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য একটি আপডেট চালু করছে। সেই আপডেটের ফলেই আইওএসে কল রেকর্ডিং ফিচারটি বন্ধ হতে চলেছে। অর্থাৎ আইফোনে ট্রুকলার অ্যাপ ব্যবহার করে আর কল রেকর্ড করা যাবে না।
ট্রুকলার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে তারা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে আইওএসে কল রেকর্ডিং ফিচারটি বন্ধ করছে। মাত্র দুই বছর আগে আইওএস প্ল্যাটফর্মে কোম্পানিটি এই ফিচারটি চালু করে।
আইফোনে কল রেকর্ডিং ফিচারটি একেবারে শুরুর দিন থেকেই ট্রুকলারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। অ্যাপলের কল রেকর্ডিং প্রক্রিয়া অ্যান্ড্রয়েডের তুলনায় অনেক বেশি কঠিন এবং সীমিত, কারণ অ্যাপলের গোপনীয়তা নীতিগুলো খুবই কঠোর এবং থার্ড পার্টি অ্যাপগুলোকে সরাসরি কল রেকর্ড করার অনুমতি দেয় না।
এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার জন্য ট্রুকলার একটি সমাধান ব্যবহার করেছে। এটি কল রেকর্ডিংয়ের জন্য একটি মার্জড ‘রেকর্ডিং লাইন’ ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে কলটিকে অন্য একটি লাইনের সঙ্গে মার্জ করার প্রক্রিয়া জড়িত রয়েছে।
ট্রুকলারের আইওএস প্রধান নকুল কাবরা বলেন যে কোম্পানি এখন তার মূল বৈশিষ্ট্যগুলোতে মনোনিবেশ করতে চায়, যেমন লাইভ কলার আইডি এবং স্বয়ংক্রিয় স্প্যাম ব্লকিং। এটিই ট্রুকলারের আসল শক্তি এবং কোম্পানি এখন এই পরিষেবাগুলো উন্নত করার দিকে মনোনিবেশ করছে।
আইফোনে কল রেকর্ডিং ফিচারটি সরিয়ে ফেলার অর্থ এই নয় যে ব্যবহারকারীদের পুরোনো রেকর্ডিং মুছে ফেলা হবে। কোম্পানি ব্যবহারকারীদের তাদের রেকর্ডিং ডাউনলোড করার, ই-মেইল, হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য অ্যাপের মাধ্যমে শেয়ার করার বা আইক্লাউডে সংরক্ষণ করার বিকল্প দিয়েছে। এই পরিবর্তনটি সহজে বোঝার করার জন্য ট্রুকলার একটি হেল্প পেজও চালু করেছে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো অ্যাপলের নিজস্ব কল রেকর্ডিং সিস্টেম। আইওএস ১৮.১ আপডেটের মাধ্যমে অ্যাপল তার আইফোনগুলোতে ইনবিল্ট কল রেকর্ডিং এবং ট্রান্সক্রিপশন (টেক্সটে রূপান্তর) যুক্ত করেছে। ফলে ফিচারটি সরাসরি আইওএস সিস্টেমে কাজ করে এবং ব্যবহারকারীর কোনো থার্ড পার্টি অ্যাপের প্রয়োজন হবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
এআই উন্নয়নে ২০০ কোটি ডলারের সম্পদ বিক্রি করবে মেটা

বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিস্তারে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মেটা। ঘোষণা দিয়েছে, তাদের বিশাল এআই অবকাঠামোর ব্যয়ভার ভাগ করে নিতে ২.০৪ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলারের ডেটা সেন্টার সংক্রান্ত সম্পদ বিক্রি করবে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেটা প্ল্যাটফর্মস তাদের চলমান ডেটা সেন্টার প্রকল্পগুলোর কিছু সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে আর্থিক অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত কোয়ার্টারলি ফাইলিং-এ এই পরিকল্পনার বিস্তারিত উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি।
মেটা জানায়, গত জুনে তারা এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। এর আওতায় ২.০৪ বিলিয়ন ডলারের জমি ও নির্মাণাধীন সম্পদকে “হেল্ড-ফর-সেল” হিসেবে শ্রেণিকরণ করা হয়েছে। অর্থাৎ এগুলো আগামী ১২ মাসের মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষকে হস্তান্তর করা হবে। যারা ডেটা সেন্টার যৌথভাবে উন্নয়নে অংশ নেবে।
মেটার ফাইলিং অনুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত তাদের মোট হেল্ড-ফর-সেল সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.২৬ বিলিয়ন ডলার। তবে এই সম্পদ বিক্রিতে কোনো ক্ষতি দেখায়নি প্রতিষ্ঠানটি। বরং ‘বুক ভ্যালু’ ও ‘মার্কেট ভ্যালু’র মধ্যে যেটা কম, সেটার ভিত্তিতে তা মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপ প্রযুক্তি জগতের একটি নতুন বাস্তবতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যেখানে আগে গুগল, অ্যামাজনের মতো কোম্পানিগুলো নিজেদের সব অবকাঠামো নিজস্ব অর্থে নির্মাণ করত, সেখানে এখন তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ডেটা সেন্টার তৈরির বিপুল ব্যয় মাথায় রেখে আর্থিক অংশীদার খুঁজছে।
মেটার চিফ ফিনান্স অফিসার সুসান লি এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা আর্থিক অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে ডেটা সেন্টার উন্নয়নের উপায় খুঁজছি। যদিও আমরা অধিকাংশ ব্যয় নিজেরাই বহন করবো। কিছু প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য বাহ্যিক অর্থায়ন যুক্ত হতে পারে। যা ভবিষ্যতের পরিবর্তিত অবকাঠামো চাহিদা অনুযায়ী সুযোগ দেবে।”
মেটা সিইও মার্ক জুকারবার্গ আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, এআই এবং সুপারইন্টেলিজেন্স-এর জন্য তারা সুপারক্লাস্টার নামে অনেক বড় ডেটা সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, “এই সুপারক্লাস্টারগুলোর একটি পুরো ম্যানহাটনের বড় অংশের সমান।”
এই ঘোষণার পাশাপাশি মেটা তাদের বার্ষিক মূলধন ব্যয়ের পূর্বাভাস ২ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে ৬৬ থেকে ৭২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে। এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞাপন আয়ে চমকপ্রদ বৃদ্ধি। যা এআই নির্ভর কনটেন্ট ডেলিভারি ও টার্গেটিংয়ের উন্নতির কারণে সম্ভব হয়েছে।
এই বৃদ্ধি, মেটার দীর্ঘমেয়াদী এআই ইনফ্রাস্ট্রাকচারের ব্যয় কিছুটা হলেও ভারসাম্য করতে সাহায্য করেছে।