অর্থনীতি
কর্ণফুলী টানেলে দৈনিক আয় ১০ লাখ, ব্যয় ৩৭ লাখ
গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন সংযোগ হিসেবে কাজে লাগানোর জন্য নির্মিত হয়েছিল কর্ণফুলী টানেল। কিন্তু প্রত্যাশিত মাত্রায় ব্যবহার না হওয়ায় এবং চড়া রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের কারণে টানেলটি বড় লোকসান দিচ্ছে। চালু হওয়ার প্রায় এক বছর পর বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে এই টানেল দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২০ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ হচ্ছে, আনোয়ারা প্রান্তে প্রত্যাশিত শিল্প উন্নয়ন এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
এ টানেল দিয়ে প্রতিদিন ২০ হাজারের বেশি গাড়ি চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা ছিল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু বর্তমানে টানেল দিয়ে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪ হাজার যানবাহন চলাচল করেছে। এতে তৈরি হয়েছে বড় আর্থিক সংকট।
কর্তৃপক্ষের হিসাবমতে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ১১ অক্টোবর পর্যন্ত কর্ণফুলী টানেল দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ৯৩৪টি গাড়ি চলাচল করেছে। এসব গাড়ি থেকে দৈনিক টোল আদায় হয়েছে গড়ে প্রায় ১০ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
অথচ এই টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণসহ আনুষঙ্গিক কাজে প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে গড়ে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতিদিনের ব্যয়ের বিপরীতে টোল আদায় থেকে উঠে আসছে মাত্র ৩০ শতাংশ। সেই হিসাবে উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত ব্যয়ের তুলনায় টোল আদায় থেকে ৯০ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। আর দৈনিক লোকসান হচ্ছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকায় নির্মিত টানেল প্রকল্পটি কেবল উচ্চাভিলাষীই নয়, বরং অদূরদর্শিতার প্রতিফলনও। টানেল নির্মানের পর এটি রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে কেমন খরচ হবে, নিয়ে কোনো অভিজ্ঞতাই ছিলো না সংশ্লিষ্টদের। দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রভাব পুরোপুরি বিবেচনা না করেই শুধু ‘স্ট্যাটাস সিম্বলের’ জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্প কতটুকু বাস্তবসম্মত, সে প্রশ্ন তুলে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহসভাপতি সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে টানেল পার হয়ে আমরা আনোয়ারা প্রান্তে কেন যাব, সেটিই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আনোয়ারা, বাঁশখালীসহ সাগর উপকূলে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার যে পরিল্পনা করা হচ্ছে, সেটি কত বছরের মধ্যে তার কোনো টাইম লাইন নেই।
‘এই প্রকল্প নির্মাণের আগে বিশেষজ্ঞ টিমকে একাধিকবার বলেছি, দক্ষিণ প্রান্তে কারখানা গড়ে উঠবে, তার ওপর অনুমান করে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে টানেল নির্মাণ করে ফেলা হবে—এর কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।’
এ প্রকল্প গ্রহণের আগে কেউ পরামর্শ দিলে বা সমালোচনা করলে, তাকে ‘উন্নয়নবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সুভাষ চন্দ্র।
টানেল নির্মাণের আগে করা এক সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৫ সাল নাগাদ ২৮ হাজার ৩০৫টি ও ২০৩০ সাল নাগাদ ৩৭ হাজার ৯৪৬টি যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছিল।
কিন্তু ২০২৫ সালে টানেল দিয়ে ৫ হাজার গাড়িও চলাচল করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের নাগরিকরা।
টানেল সাইট অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আনোয়ারায় চায়না ইকোনমিক জোনসহ ওই অঞ্চলে প্রত্যাশিত বিকাশমান শিল্পকারখানার ওপর ভিত্তি করে টানেলে দৈনিক গাড়ি চলাচলের হিসাব ধরা হয়েছিল।
‘চায়না ইকোনোমিক জোন এবং শিল্পকারখানা এখনও সেই অনুযায়ী গড়ে ওঠেনি। এগুলো যখন গড়ে উঠবে, টানেলে যান চলাচল এবং টোল আদায় বাড়বে,’ বলেন তিনি।
যমুনা সেতুর প্রসঙ্গ টেনে আবুল কালাম আজাদ বলেন, সেখানে ইন্টারনাল রোড কানেক্টিভিটি তৈরি হয়ে গাড়ি চলাচল বাড়তে কয়েক বছর সময় লেগেছিল। কর্ণফুলী টানেলেও যান চলাচল বাড়তে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে।
অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কর্ণফুলী টানেল
‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ ধারণায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত হয়েছিলে কর্ণফুলী টানেল। এ টানেল চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ টানেল দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের মতো ‘লোকাল ট্রাফিক’ পারাপার হতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে এখনও তেমন কোনো শিল্পকারখানাই হয়নি। ফলে যান চলাচল বাড়ছে না।
এছাড়া পরিকল্পনাধীন বে টার্মিনালও নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল পুরোপুরি চালু হয়নি। যতদিন এসব অবকাঠামো না হবে, ততদিনে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প থেকে কোনো সুফল পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
২০১৪ সালে জাপান ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে দ্য বে অভ বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রায়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি) ধারণার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বিগ-বির আলোকে এ অঞ্চলে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি হাব, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা ও শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
কক্সাবাজার জেলা ছাড়াও বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী ফেনীর সোনাগাজী, চট্টগ্রামের মিরসরাই-সীতাকুণ্ডের সমুদ্রপাড়ে ৩০ হাজার একর জায়গায় নির্মিত হচ্ছে বৃহৎ শিল্পনগর।
তবে নানা সংকটে এ প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১০টির মতো কারখানা উৎপাদনে যেতে পেরেছে। বাঁশখালীর গন্ডামারা এলাকায় স্থাপিত হয়েছে এস আলম গ্রুপ ও চীনের সেপকো থ্রির যৌথ মালিকানাধীন ১,৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
আনোয়ারায় ৭৭৮ একর এলাকাজুড়ে চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন (সিইআইজেড) নির্মাণ এখনও প্রক্রিয়াধীন। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে না।
এমন পরিস্থিতিতে অনুমানের ওপর ভিত্তি করে টানেল নির্মাণ করা মোটেও উচিত হয়নি বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, এই টানেলের ব্যয় দিয়ে অন্তত ১০টি সেতু নির্মাণ করা যেত। তিনি বলেন, ‘মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে টাকা লুটপাটের জন্য। প্রকল্প নেওয়ার আগে এসব বিষয় বিবেচনায় আনা হয়নি। এখন প্রতিদিন যে লোকসান হচ্ছে, এর দায়ভার কে নেবে?
‘টানেল নির্মাণ করে জনগণের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এই টানেল এখন বিষফোঁড়া হয়ে ফাঁড়িয়েছে।’
টোলহার অনেক বেশি
সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কর্ণফুলী টানেল অতিক্রম করতে যানবাহনের ধরনভেদে ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত টোল দিতে হয়। ‘টানেল নির্মাণ কতটা দূরদর্শী সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক টানেল প্রকল্পটিকে অদূরদর্শী পরিকল্পনা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এ গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, কর্ণফুলী টানেলের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে শাহ আমানত সেতু। এ সেতুর তুলনায় কর্ণফুলী টানেলের টোলহার যানবাহন ভেদে আড়াই থেকে ৬ গুণ পর্যন্ত বেশি। টোল হারের এ পার্থক্য টানেলে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম বন্দর, সিইপিজেড, কেইপিজেড, নির্মাণাধীন বে-টার্মিনাল ও বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, চট্টগ্রাম মহানগরের অধিকাংশ অঞ্চল, চট্টগ্রাম জেলার উত্তর অংশ এবং রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যানবাহন চলাচলে এই টানেল ব্যবহার হওয়ার কথা ছিল। আবার অপরপ্রান্তে, অর্থাৎ আনোয়ারা প্রান্তের টানেল মুখসংলগ্ন সিইউএফএল, কাফকো, কেইপিজেড, চায়না ইপিজেড, পারকি বিচ, কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি টার্মিনাল, কক্সবাজার-টেকনাফ-সেন্টমার্টিনের পর্যটকসহ পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করার কথা ছিল।
তবে সরেজমিনে দেখা যায়, এ টানেল দিয়ে যাতায়াত করা যানবাহনের বেশিরভাগই কার, মাইক্রোবাস ও ট্যুরিস্ট বাস।
অর্থাৎ ঢাকা কিংবা সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাণিজ্যিক যানবাহন ও ভারী পণ্যবাহী যানবাহনের পরিবর্তে টানেল দেখতে যাওয়া দর্শনার্থীর যানবাহনই টানেলে প্রবেশ করেছে সবচেয়ে বেশি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব
ঋণের নামে ইসলামী ব্যাংকের ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাতের সই করা এক চিঠিতে এ তলব করেন।
চট্টগ্রামের মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. গোলাম সরওয়ার চৌধুরী ও অন্য ব্যবসায়ী গ্রুপ জাল-জালিয়াতি করে ওই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়। দুদক সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে। ১৭ কর্মকর্তার বিষয়ে ও অভিযোগ সম্পর্কে তথ্য চেয়ে উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত স্বাক্ষরিত চিঠি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে ওইসব কর্মকর্তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি পাঠাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ, জুবিলী রোড শাখার গ্রাহক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টসের ঋণ পরিদর্শন বা মনিটরিং নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভূমিকার যৌক্তিকতা সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত ১১ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওইসব কর্মকর্তাদেরকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিলো। তারা ওইদিন হাজির না হওয়ায় তাদেরেক দুদকে হাজির হয়ে ঋণ-সংক্রান্ত পরিদর্শন রেকর্ডপত্র ও লিখিত বক্তব্য জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ওই ১৭ কর্মকর্তা হলেন- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের উপপরিচালক মে. জুবাইর যেসেন, উপপরিচালক খোরশেদুল আলম, রুবেল চৌধুরী, দেবাশীষ বিশ্বাস, মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বাবলু, যুগ্ম পরিচালক সুনির্বাণ বড়ুয়া, অনিক তালুকদার, কোল হোসেন, সৈয়দ মু আরিফ-উন-নবী, অতিরিক্ত পরিচালক ছলিমা বেগম, শংকর কান্তি ঘোষ, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও মো. সোয়াইব চৌধুরী।
বাংলাদেশ ব্যাংক ঢাকা অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আব্দুর রউফ, উপপরিচালক লেনিন আজাদ পলাশ, পরিদর্শন দলের নেতা ও অতিরিক্ত পরিচালক মো. মঞ্জুর হোসেন খান।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
খেজুরের আমদানিতে কমলো শুল্ক, থাকছে না অগ্রিম কর
রমজানে দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে খেজুর আমদানিতে আমদানি শুল্ক ও সমুদয় অগ্রিম কর কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নতুন ওই সুবিধা ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পবিত্র রমজান মাসে খেজুরকে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য খেজুর আমদানির ওপর বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৩ শতাংশ এবং বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে অর্থাৎ মোট করভার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ হতে হ্রাস করে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।
এর আগে ১৭ নভেম্বর খেজুর আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) কমানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুর আমদানিতে আগাম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ, আগাম কর ৫ শতাংশ পুরোপুরি বাতিল এবং আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করে ট্যারিফ কমিশন।
এনবিআর মনে করে, খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক-কর হ্রাস করার ফলে মানভেদে প্রতি কেজি খেজুরের আমদানি ব্যয় প্রায় ৬০ টাকা হতে ১০০ টাকা হ্রাস পেতে পারে। আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর হ্রাসের ফলে খেজুরের আমদানি বৃদ্ধি পাবে, বাজারে খেজুরের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং খেজুরের বিক্রয় মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
দেশের বাজারে আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে এবার সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দাম বাড়ানোর ফলে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে এক লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীকাল (২২ নভেম্বর) থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জুস-ড্রিংকস রপ্তানিতে মিলবে নগদ প্রণোদনা
কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তার জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে দেশে উৎপাদিত ফলজাত পাল্প থেকে প্রস্তুত করা জুস ফ্রুটবার, ড্রিংকস জাতীয় পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারকরা। বর্তমানে এ খাতের রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয় সরকার।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, কৃষিপণ্য (শাক-সবজি ও ফলমূল) এবং প্রক্রিয়াজাত (অ্যাগ্রো প্রসেসিং) কৃষিপণ্য রপ্তানিতে রপ্তানি প্রণোদনা নগদ সহায়তা প্রদান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে জারি করা এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলারে ফল ও সবজি থেকে উৎপাদিত সব ধরনের পেস্ট, ফ্রুটবার, টিনজাত সামগ্রী, ডিহাইড্রেটেড সামগ্রী, জুস, ড্রিংকস রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। এর সঙ্গে সরকারি সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করা বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত সহযোগী বা ভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলজাত পাল্প থেকে প্রস্তুত করা জুস এবং ড্রিংক্স ইত্যাদি রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পাবে।
কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত আগের জারি করা অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ডলার
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার বেড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ ছয় কোটি ১০ লাখ বেড়ে এক হাজার ৮৪৯ কোটি কোটি ৪০ লাখ ডলারে দাঁড়াল। বর্তমানে বিভিন্ন তহবিলসহ গঠিত মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৪২৭ কোটি ডলার।
আগের সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দুই মাসের বিল পরিশোধের পর নভেম্বরের মাঝামাঝি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।
আকু হলো আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। এর সদস্যদেশ হলো বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সম্প্রতি এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা।
আকুর বিল পরিশোধ ছাড়াও রিজার্ভ থেকে দৈনন্দিন ভিত্তিতে বিদেশি ঋণ ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। সরকারের জরুরি আমদানি ব্যয় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিও করতে হয়।
অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ, অনুদান, প্রবাসী আয়ের নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ হিসেবে জমা হয়।
কাফি