অর্থনীতি
ব্যাংক নোট থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে শেখ মুজিবের ছবি

দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোট থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দেওয়া হতে পারে বলে বাংলাদেশে ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে। সব ধরনের ব্যাংক নোটের নতুন ডিজাইন চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন নকশার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি বাদ যেতে পারে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থবিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের উপসচিব এলিশ শরমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে নতুন নোটের জন্য নির্দিষ্ট নকশার প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ করেছে।
অনুরোধে নতুন মুদ্রার নকশা প্রবর্তনের তত্ত্বাবধানকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সরকার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি রাখতে চাইলে নতুন ডিজাইনের নোট ছাপানোর কোনো প্রয়োজন হতো না।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘নতুন ডিজাইন ও বৈশিষ্ট্যের নোট প্রচলনে কী ধরনের ডিজাইন করা সমীচীন হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির সুপারিশ গ্রহণপূর্বক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থবিভাগে প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
বর্তমানে বাংলাদেশের ২ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রয়েছে। কোনো কোনো নোটের দুপাশে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। এছাড়া ধাতব মুদ্রাগুলোতেও তার ছবি রয়েছে।
নতুন ডিজাইনের এ প্রবর্তনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে প্রতিষ্ঠিত মুদ্রামান থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার মাত্র দুদিন আগে ৫০০ ও ১০০০ টাকার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি আরও বেশি স্পষ্ট করে ছাপাতে নতুন দুটি ডিজাইন এবং ২০ টাকা ও ১০০ টাকার নোটের মুদ্রণ পদ্ধতি পরিবর্তন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়।
হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর বিভিন্ন নোটের নতুন ডিজাইন করে সরকারের কাছে তা জমা দিতে ছয় মাস সময় চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির নির্দেশিকা অনুসারে প্রতিটি নোটের জন্য চারটি ভিন্ন ডিজাইন তৈরি করা হবে।
পরে এ কমিটির অনুমোদন নিয়ে ডিজাইনগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে। তবে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসতে ২০ থেকে ২২ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান এক কর্মকর্তা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শেখ মুজিবের ছবি-সম্বলিত নোট পরিবর্তন করা হবে কি না — সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
নকশার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই নতুন নোটের জন্য সুপারিশ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি নোটের চারটি ডিজাইনের মধ্যে অন্তত একটি ডিজাইনে শেখ মুজিবের ছবি যুক্ত করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের ছবিযুক্ত নোটগুলো অনুমোদন করেছিলেন।
নতুন নোটের অনুমোদন প্রক্রিয়া একই পদ্ধতিতে হবে। চারটি নকশা তৈরি করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এটির ডেপুটি গভর্নর-১-এর নেতৃত্বে মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির কাছে নকশাগুলো জমা দেবে।
এ কমিটিতে উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এবং চিত্রশিল্পীরা থাকেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার আগে নকশাগুলো তারা পর্যালোচনা করবেন।
মন্ত্রণালয় তারপর নকশাগুলো পর্যালোচনা করবে এবং অনুমোদন পাওয়ার পর একটি আন্তর্জাতিক দরপত্র বা সরাসরি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে কোনো বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে নোটগুলোর জন্য নতুন প্লেট তৈরি করা হবে।
প্লেট তৈরির প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা জটিলতার কারণে নতুন নোট প্রবর্তনের পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন নোটের ছাপার তদারকি করবে সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এটির উচ্চ মূল্যমান নোটের (১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা) বর্তমান কাগজের মজুত ও আমদানিতব্য কাগজ দ্বারা আনুমানিক ১৩ মাস মুদ্রণ কার্যক্রম চলমান রাখা যাবে।
এর ফলে নতুন ডিজাইন চূড়ান্ত এবং প্রস্তুত করার সময় বর্তমান ডিজাইনের নোটগুলো বাজারে প্রচলিত থাকবে।
১৮ সেপ্টেম্বর অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ‘অনুমোদিত ১০০০, ৫০০, ১০০ ও ২০ টাকার নোটের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নের কার্যাবলী প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে [হাসিনা সরকারের পতন] উক্ত অনুমোদন মোতাবেক বাস্তবায়নাধীন কার্যক্রম চলমান রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে আপনাদের মতামত প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হলো।’
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এটি নতুন সরকারি নির্দেশিকাগুলোর ওপর ভিত্তি করে নকশার কাজ চালিয়ে যাবে, যার মধ্যে নোট থেকে শেখ মুজিবের ছবি সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
ব্যাংক নোটের নতুন এ সিরিজ অনুমোদিত হলে, বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করবে যে, কাগজের বর্তমান স্টক এবং উচ্চ মূল্যমান নোটগুলো পর্যায়ক্রমে পরবর্তী কয়েক বছরে নতুন ডিজাইন করা নোটগুলির সঙ্গে যেন প্রতিস্থাপন করা হয়।
ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশি মুদ্রায় শেখ মুজিবের ছবি একটি বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্য। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো ১, ৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হয়। এসব নোটের প্রত্যেকটিতেই শেখ মুজিবের ছবি ছিল।
তবে পরবর্তী বিভিন্ন সরকারের সময়ে নতুন নতুন নোট প্রচলনের পাশাপাশি পুরোনো নোটগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি সম্বলিত ১০ ও ৫০০ টাকার নোট ছাপে। আর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ মুজিবের ছবিযুক্ত ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন চালু করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।
এরপর সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব কাগুজে নোটেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে ২০১১ সালের ১১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ২, ৫, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কাফি

অর্থনীতি
জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এলো ৩০ হাজার কোটি টাকা

নতুন অর্থবছরের শুরুতেই সুখবর পাওয়া গেল রেমিট্যান্স প্রবাহে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম অর্থাৎ জুলাই মাসে দেশে ২৪৮ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে হিসাব)।
রোববার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের একই মাসের তুলনায় এবারের আয় ২৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯১ কোটি ডলার।
গত বছরের জুলাইয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয় দেশে। এর জেরে ভাটা পড়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। কিন্তু, আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে ফের বাড়তে থাকে এই প্রবাহ।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে পাঠানো এই অর্থ সরাসরি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কর্মকর্তারা বলছেন, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের নানা উদ্যোগ, রেমিট্যান্সে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং সেবার উন্নয়নের কারণে এই ধারাবাহিকতা তৈরি হয়েছে।
এর আগে, গত জুন মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২৮২ কোটি মার্কিন ডলার, যা তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। গেল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অংক এক অর্থবছরে দেশে আসা সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। প্রবাসী আয়ের এমন ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও ডলারের জোগানে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
কাফি
অর্থনীতি
আয়কর রিটার্ন ছাড়া ২৪টি সেবা বন্ধ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে নতুন একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। একই সাথে ব্যাংক ঋণ, আমানত ও সঞ্চয়পত্রসহ ২৪টি সেবায় আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকারের এ নির্দেশনা মেনে ঋণ, আমানত ও সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি সার্কুলারের মাধ্যমে সব তফসিলি ব্যাংককে জানানো হয়েছে, এখন থেকে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের আগে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে গ্রাহকদেরকে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কেউ যদি ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত রাখেন বা ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই আয়কর রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে রিটার্ন বাধ্যতামূলক। শুধু এই তিনটি নয়, মোট ২৪টি ব্যাংক সেবার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এর আগে, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি গেজেট প্রকাশ করেছে। গেজেট অনুযায়ী, এসব আর্থিক লেনদেন ও কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে, তা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ সেবা দিতে বাধ্য থাকবে না।
গেজেটে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি যদি ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের মেয়াদি আমানত খুলতে চান বা তা চালু রাখতে চান, তাহলে তাকে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। একইভাবে ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে।
এছাড়া বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র কেনা, কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হওয়া, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স বা পেশাজীবী লাইসেন্স নবায়ন, জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমেও রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে ড্রাগ লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, অগ্নিনির্বাপণ ছাড়পত্র, ট্রলার ও নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট, এমনকি স্কুলে শিশুর ভর্তি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স গ্রহণের মতো ক্ষেত্রেও রিটার্ন দাখিলের প্রয়োজন হবে।
আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার এই উদ্যোগের মাধ্যমে করজালের আওতা বাড়ানো, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে দেশীয় আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
নতুন এই নিয়মের ফলে অধিক সংখ্যক নাগরিক আয়কর রিটার্ন দাখিলে আগ্রহী হবেন এবং দেশে কর সচেতনতা বাড়বে বলে আশা করছে সরকার।
কাফি
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ১৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি

কারিগরি, বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উন্নত করতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বাংলাদেশ সরকার ১৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এডিবির এ অর্থ কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্যয় হবে।
রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং নিজ নিজ পক্ষে ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং সম্প্রতি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ কর্মসূচি পাঁচটি মূল প্রযুক্তি খাতকে লক্ষ্য করে কাজ করবে। এই খাতগুলো হলো– যান্ত্রিক, ইলেকট্রনিক্স ও বৈদ্যুতিক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, নাগরিক (সিভিল) এবং খাদ্য ও কৃষি।
জিয়ং আরও বলেন, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টির অগ্রাধিকারমূলক এজেন্ডাকে জোরালোভাবে সমর্থন করবে। এটি দারিদ্র্য ও সামাজিক বঞ্চনার মতো বিষয়গুলো মোকাবিলায় সহায়ক হবে এবং সরকারের সমন্বিত টিভিইটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশন প্ল্যানের সঙ্গে সংগতি রেখে বৈশ্বিক বাজারে মানসম্মত কর্মসংস্থান ও প্রতিযোগিতার সুযোগ বৃদ্ধি করবে।
এডিবি জানায়, বাংলাদেশজুড়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) শিক্ষকদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়াতে একটি নতুন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য হলো ঢাকার বাইরের সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলের শিক্ষকদের কাছে উন্নত প্রশিক্ষণ পৌঁছে দেওয়া। এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষকদের শিক্ষাগত ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে। বিশেষ করে উদীয়মান প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়া হবে। এর ফলে শিক্ষক উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা ও প্রতিবেদনের ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।
সংস্থাটি জানায়, কর্মসূচিটি শেষ হওয়ার পর কমপক্ষে ১০ হাজার নতুন ও বিদ্যমান টিভিইটি শিক্ষক তাদের দক্ষতা বাড়াতে পারবেন, যা ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ কর্মসূচি বাংলাদেশে টিভিইটির টেকসই মান ও প্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিত করতে দেশব্যাপী একটি ধারাবাহিক পেশাদার উন্নয়ন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।
কাফি
অর্থনীতি
এলপি গ্যাসের দাম কমলো

ভোক্তাপর্যায়ে এলপিজির নতুন বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৯১ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি অটোগ্যাসের দাম ৪ টাকা ১৮ পয়সা কমে ৫৮ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার (৩ আগস্ট) নতুন এ মূল্যের ঘোষণা করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে গত ২ জুলাই ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১ টাকা ৮৪ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬২ টাকা ৪৬ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
অর্থনীতি
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করলো সরকার

আয়কর রিটার্ন জমা অনলাইনে বাধ্যতামূলক করলো সরকার। রবিবার (৩ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা বিশেষ আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে প্রবাসী বাংলাদেশি, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ ব্যক্তি, সনদপত্র দাখিল সাপেক্ষে শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি ও মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি এই নিয়মের বাইরে থাকবেন। এই চার শ্রেণির করদাতা চাইলে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
এনবিআর জানায়, অনলাইন রিটার্ন দাখিলের সময় কোনো সমস্যা হলে কল সেন্টার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা পাওয়া যাবে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, ই-রিটার্ন সিস্টেমে কারিগরি সমস্যার কারণে যদি কোনো সাধারণ করদাতা রিটার্ন জমা দিতে না পারেন, তাহলে তাকে আগামী ৩১ অক্টোবর ২০২৫-এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে যুক্তিসঙ্গত কারণ জানিয়ে আবেদন করতে হবে। অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদন সাপেক্ষে তারা কাগজে (পেপার রিটার্ন) রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
আয়কর আইন ২০২৪ এর ধারা ৩২৮ এর উপ ধারা (চ) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ আদেশ দ্বারা ৪ আগস্ট থেকে কিছু ক্ষেত্র ব্যতীত সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার অনলাইনে (www.ctaxnbf.gov.bd) আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হলো।
গত বছর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের সব সরকারি কর্মকর্তা, সব তফসিলি ব্যাংক ও কিছু বড় কোম্পানির কর্মকর্তাদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এ বছরের মাঝামাঝি সবার জন্য অনলাইন রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানিয়েছিল এনবিআর।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে ১ কোটি ৪৫ লাখ টিআইএনধারীর মধ্যে মাত্র ৪৫ লাখ রিটার্ন জমা দিয়েছেন।