জাতীয়
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস আজ
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে।
দিবসটির এ বছরের নির্ধারিত প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘রাষ্ট্রের মূলধারায় তথ্য অধিকারের সংযুক্তি এবং সরকারি খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ’।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ তথ্য কমিশন দেশীয় প্রেক্ষাপটে ‘তথ্য জানার অধিকার দিবস-২০২৪’ এর স্লোগানের শিরোনাম দিয়েছে ‘কর্তৃপক্ষের সকল দ্বার, খুলে দেবে তথ্য অধিকার’।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে শুক্রবার বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়ন সুদৃঢ় করতে সঠিক তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সব বাধা দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
অন্যদিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তথ্য কমিশনকে ঢেলে সাজানো ও বিদ্যমান তথ্য অধিকার আইনের সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বাকস্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ অভিগম্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বপ্নের ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অপরিহার্য হিসেবে গণ্য করে তথ্য কমিশনকে দলীয়করণের সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করে এর আমূল সংস্কার এবং সর্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ ১৩ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
কাজের মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
যার যার অবস্থান থেকে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে এবং কাজের মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) শহীদ এসআই শাহজাহান মিলনায়তনে আয়োজিত কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতে ডিএমপি কমিশনার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দানকারী শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। একইসঙ্গে স্মরণ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী ও আহত পুলিশ সদস্যদের।
মাইনুল হাসান বলেন, একটি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। মুষ্টিমেয় সদস্যদের অপেশাদার কার্যকলাপের কারণে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট তৈরি হয়। এটি পুলিশ বাহিনীর জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি। তবে আমরা দিন-রাত পরিশ্রমের মাধ্যমে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এমন জায়গায় পৌঁছাতে পারবো যেখানে পুলিশ জনগণের আস্থার প্রতীক হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের ওপর যে দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে তা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ভিন্ন। পুলিশ হলো রাষ্ট্রের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। আমরা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করে থাকি। আর স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সার্বিক উন্নয়নের পূর্ব শর্ত।
আজকের কল্যাণ সভায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফোর্সের উদ্দেশে যেসব দিক-নির্দেশনা দেন সেগুলো ধারণ করে প্রত্যেক সদস্যকে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।
এর আগে পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে কল্যাণ সভা শুরু হয়। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন কল্যাণ সভার সভাপতি যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (পিওএম) খন্দকার ফরিদুল ইসলাম।
কল্যাণ সভায় ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার সদস্যরা তাদের সুনির্দিষ্ট কিছু সমস্যা ও চাহিদার কথা ডিএমপি কমিশনারের কাছে পেশ করেন। কমিশনার সবার বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং প্রত্যেকটি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সবাইকে আশ্বস্ত করেন। সভা শেষে ডিএমপি কমিশনার ফোর্সের ব্যারাক ও মেস পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে: রিজওয়ানা
ঢাকার খালগুলো দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। যে খালগুলো এখনো উদ্ধার করা সম্ভব, সেগুলো দিয়ে এ নেটওয়ার্ক করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁও বন ভবনে বিগত ১০০ বছরের ঢাকা শহরের নগর প্রতিবেশ নিয়ে মতবিনিময় কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, অবৈধভাবে দখল হওয়া খাল উদ্ধারে রাজউককে প্রতি সপ্তাহে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। কোনো অন্যায়কে বৈধতা দেয়া যাবে না। অবৈধ খাল উদ্ধারে প্রয়োজনে অভিযান বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ঢাকার উন্মুক্ত মাটিতে ঘাস লাগাতে হবে। এ কাজে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকার নগর পরিকল্পনায় সবুজায়ন, জীববৈচিত্র্য ও জলাভূমি সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পরিবেশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রয়োজন। সবুজ ও জলাভূমি রক্ষায় সকল বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান, রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার এবং বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আমার কথা বলে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে দিন: আসিফ নজরুল
উপদেষ্টাদের কথা বলে চাঁদা, অবৈধ সুবিধা আদায় ও কাউকে হুমকি দেওয়া হলে তাদের পুলিশে ধরিয়ে দেবেন, মামলা করবেন।
এগুলোর সত্যতা মিললে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ফেসবুক লাইফে আইন উপদেষ্টা এ কথা জানান।
আসিফ নজরুল বলেন, আমি সরকারে আসার আগে এবং পরে বহু মানুষ আমার সঙ্গে ছবি তোলার অনুরোধ করেছে ও অনেকেই ছবি তুলেছে। এখন আমাকে অনেকেই জানিয়েছেন এ ছবি দেখিয়ে কেউ কেউ অবৈধ সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন কথা বলে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছেন। আমি এগুলো শুনেছি, সত্য মিথ্যা কিনা আমি জানি না। আমি এগুলোর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি।
তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতে আমার কথা বলে কেউ যদি চাঁদা আদায় বা অবৈধ সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে আপনারা তাদের পুলিশে ধরিয়ে দেবেন, মামলা করবেন। মামলার কপি আমার ফেসবুকে পাঠিয়ে দেবেন। আমি অবশ্যই চেষ্টা করবো এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমি বা আমার সরকারের কেউ কোনো রকমের অবৈধ কাজকে প্রশ্রয় দেবে না।
এ সমস্ত কাজ যারা করার চেষ্টা করছেন বা করেছেন তাদের কঠোর হুঁশিয়ারি জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে কোনো রকম অন্যায় করবেন না। আমাদের কারোর নাম ব্যবহার করবেন না। আমাদের নামে কোনো রকম চাঁদাবাজি, অবৈধ সুবিধা আদায়, কাউকে কোনো রকমের হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ ধরনের কিছু জানতে পারলে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
তরুণ নাগরিকদের পেছনে বিনিয়োগ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
দেশের তরুণদের ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্ব নেতাদেরকে একটি স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গঠনে নিজ দেশের তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনায় বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “বাংলাদেশ গত জুলাই ও আগস্টে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছে, তার জন্য আমি জাতিসংঘের এই সংসদে দাঁড়িয়ে আছি।”
‘জনগণের শক্তি’ বিশেষ করে যুবসমাজ বাংলাদেশিদের স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসন থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছে।
মানবিক মর্যাদা, স্বাধীনতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক চেতনার নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুব নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কৃতিত্বও দেন তিনি।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অধ্যাপক ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, “এই রূপান্তর চ্যালেঞ্জমুক্ত নয়, তবে জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজের সহনশীলতা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের দৃঢ় সংকল্প আরও ন্যায়সঙ্গত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছে।”
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা এবং সকল নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন এবং শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য তার দেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের জনগণ অসাধারণ সাহসিকতার সঙ্গে স্বাধীনতা ও তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে। আজকের তরুণরা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার ও সাম্যের জন্য সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি তার ভাষণে এমন একটি পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান, যেখানে তরুণরা উন্নতি করতে পারে, উদ্ভাবন করতে পারে এবং নেতৃত্ব দিতে পারে।
বৈশ্বিক পর্যায়ে অধ্যাপক ইউনূস তরুণদের ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের তরুণরাই দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈষম্যের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেন্দ্রীভূত।
তিনি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই বিশ্ব তৈরি করতে তাদের তরুণ নাগরিকদের সম্ভাবনায় বিনিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে তরুণদের সক্রিয়তার ঐতিহ্য এবং এর ভবিষ্যৎ গতিপথ তুলে ধরে তার বক্তব্য শেষ করেন।
দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শিক্ষা কীভাবে আজকের যুবকদের কর্ম ও আকাঙ্ক্ষায় প্রতিধ্বনিত হয় তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশ্ব হয়তো দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, তবে আমাদের যুবসমাজ যে মূল্যবোধকে সমর্থন করছে, তা চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের তরুণরা দেখিয়েছে যে, স্বাধীনতা, মর্যাদা ও মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা শুধু উচ্চাকাঙ্খা হয়েই থাকতে পারে না- এটি পদ-ভেদাভেদ নির্বিশেষে সবার প্রাপ্য।”
বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বেশ ব্যস্ত অবস্থান ও ধারাবাহিক বৈঠক শেষে শুক্রবার রাতে ঢাকার উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নিউইয়র্ক সময় রাত সাড়ে ৯টায় জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন এবং শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে (ঢাকা সময়) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে জানান, এখানে চারদিন অবস্থানকালে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রায় ৪০টি বড় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
আলম বলেন, অধ্যাপক ইউনূস ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ১৬টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্তত ১২ জন বিশ্ব নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সবার জন্য স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘নতুন বাংলাদেশ’র সঙ্গে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণে এই আহ্বান জানানো হয়।
‘এটি একটি যুগান্তকারী বক্তব্য ছিল’ উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ভাষণে বাংলাদেশের সমস্যা ছাড়াও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয় উঠে এসেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মালদ্বীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে তারা বৈঠক করেন। বৈঠকে মালদ্বীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ড. ইউনূস। খবর বাসস
এ সময় দুই নেতা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, সার্ক সক্রিয়করণ, জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণা সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা মালদ্বীপের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্কের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুতর প্রভাবসহ অনেক কিছু ভাগ করে নিয়েছে।
জলবায়ু সংকটের কারণে উদ্ভূত বিপদের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের পুরো অস্তিত্বই ঝুঁকির মুখে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট দেশের নির্মাণ ও পর্যটন খাতে বাংলাদেশের শ্রমিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
মোহাম্মদ মুইজু বলেন, দুদেশ পর্যটন, মৎস্যসম্পদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করতে পারে। তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করার আহ্বান জানান।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে তা দুদেশের মানুষের জন্য উপকারী হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি সার্কের সক্রিয়তাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ঘনিষ্ঠ সংহতকরণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখতে চান। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা কাছাকাছি থাকব। আমাদের দূরে থাকা উচিত নয়।
এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বলেছেন জলবায়ু সংকট মোকাবিলার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য শক্তিশালী সম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলায় দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে আমাদের জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তিগুলোর সুবিধা দরকার, বিশেষত কৃষি, পানি বা জনস্বাস্থ্যে, যেখানে পরিমিত সমাধান বা উদ্ভাবন লাখ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সবার জন্য অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই গ্রীষ্মে স্মরণকালের তাপপ্রবাহ বিশ্বকে জলবায়ু-প্ররোচিত পরিবর্তনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো জলবায়ুতে ন্যায়বিচার। যাতে দায়িত্বজ্ঞানহীন পছন্দ বা উদাসীন পদক্ষেপ বা ক্ষতির হিসাব করা হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি চারদিকে অপূরণীয় ক্ষতি করে। আমরা জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছি, রোগজীবাণু পরিবর্তন নতুন রোগের দিকে পরিচালিত করে, চাষাবাদ চাপে পড়ছে, পানিসম্পদের সংকোচন আবাসস্থলের জন্য হুমকিস্বরূপ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও লবণাক্ততা জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংস করছে।