পর্যটন
পর্যটকদের আগামী তিন দিন সাজেক না যাওয়ার পরামর্শ
সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিবেচনায় আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিন রাঙ্গামাটির পর্যটনকেন্দ্র সাজেকে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছে জেলা প্রশাসন। রাঙ্গামাটি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
জেলা প্রশাসক বলেন, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে রাঙ্গামাটির সাজেকে ১ হাজার ৪০০ পর্যটক আটকা পড়েছেন। তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ৩ দিন পর্যটকদের সাজেকে ভ্রমণে যেতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
এ সময় পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন বলেন, সংঘাত সৃষ্টিকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের কাছে অনেক তথ্য, ভিডিও ও ছবি এসেছে, আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি। আপনাদের কাছে যদি কোনো তথ্য, ছবি বা ভিডিও থাকে তাহলে আমাদের জানাবেন। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫
জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার উত্তাল আন্দোলন আর দেড় হাজারেরও বেশি অকুতোভয় মুক্তিকামী মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে নতুন স্বাধীনতা। পরাজিত ও ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকার। ছাত্র-জনতার সেই সফল আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে দেশের তরুণ সমাজ।
সেই তরুণদের লড়াই-সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ও পরিকল্পনায় তারুণ্যের উৎসব করার পরিকল্পনা নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ নামকরণের এক বড়সড় যজ্ঞ শুরু হতে যাচ্ছে চলতি ডিসেম্বর মাস থেকেই। আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিপিএল দিয়ে শুরু হবে সেই ‘তারুন্যের উৎসব ২০২৫।’
যুব, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আজ রোববার স্থানীয় এক পাঁচ তারকা হোটেলে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়সহ ১২টির বেশি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রায় দুই মাস ধরে চলবে তরুণদের উৎসব।
ক্রিকেট ছাড়াও ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স ও বাস্কেটবলের বিভিন্ন ইভেন্ট থাকবে সে উৎসবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে সে তারুণ্যের উৎসব। পুরো আয়োজনে জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থানের বিভিন্ন ছাপ রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআন তেলোয়াত, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠ দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ হিরুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তারপর পর্দায় প্রদর্শিত হয় জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদদের নিয়ে মর্মস্পর্শী প্রামাণ্যচিত্র। পরে আন্দোলনে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।
ওই তারুণ্যের উৎসব ‘২০২৫’-এর মিডিয়া লঞ্চিং উপলক্ষে আজ রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বসেছিল তারার মেলা। ক্রিকেটার, ফুটবলার, বিভিন্ন মহাদেশীয় পর্যায় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনা একঝাঁক ক্রীড়াবীদ উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।
দেশের ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি কায়সার হামিদ, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান, টেবিল টেনিসের রানী জোবেরা রহমান লিনুর পাশে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, জাতীয় ফুটবল অধিনায়ক তপু বর্মণ, নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জোতি, সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন, দেশীয় টেবিল টেনিসের রানী জোবেরা রহমান লিনু, এসএ গেমসে ভারোত্তোলনে স্বর্ণপদক বিজয়ী মাবিয়া আক্তাররা আলো ছড়িয়েছেন আজকের এ অনুষ্ঠানে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এই তারুণ্যের উৎসবের মাধ্যমে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘খেলাধুলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। বিশেষ করে ক্রিকেট আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। ভিন্ন ক্ষেত্রে যত মতবিরোধই থাকুক, খেলার ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাই। জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে এগিয়ে যাওয়াই এই তারুণ্যের উৎসব ২০২৫এর অন্যতম উদ্দেশ্য।’
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হিসেবে একদম শেষে উন্মোচন করা হয় ছেলেদের বিপিএলের ১১তম আসরের মাসকট ও থিম সং। দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের আগের ১০টি আসরে ‘থিম সং থাকলেও কোন মাসকট ছিল না।
নতুন আসরে গত জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্মৃতিকে ধারণ করে মাসকটের নাম রাখা হয়েছে ‘ডানা ৩৬।’ যা মূলত ডানা প্রসারিত করা একটি সাদা পায়রা।
মাসকটের নামের ডানা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে। গত জুলাই-অগাস্টের গণ আন্দোলনের স্মরণীয় ৩৬ দিনের জন্য মাসকটের দুই পাশে ১৮টি করে রাখা হয়েছে মোট ৩৬টি রঙিন পালক। যা প্রতিটি স্বপ্নবাজ, উদ্যমী, অপ্রতিরোধ্য তরুণের নতুন বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা জোগায়।
বিসিবি সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূসের উচ্চারিত শব্দমালা ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ সামনে রেখেই এই থিম সং তৈরি করা হয়েছে। তারুণ্যের উৎসবের প্রতিপাদ্যও এই শব্দমালা।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ পুরো আয়োজন সম্পর্কে একটা ধারণা দেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিপিএল দিয়ে শুরু হলেও ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার, অ্যাথলেটিকস ও বাস্কেটবলের নানান খেলাও থাকবে ঐ তারুণ্যের উৎসবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত
শ্রেয়াস আইয়ারের গড়া রেকর্ড ৩০ মিনিটও টিকল না। সৌদি আরবের জেদ্দায় চলমান আইপিএলের মেগা নিলামে আজ প্রথমে সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড গড়েছিলেন আইয়ার। পরে সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন ঋষভ পান্ত।
ভারতীয় এই উইকেটকিপার ব্যাটারকে ২৭ কোটি রুপিতে দলে ভিড়িয়েছে লখনৌ সুপার জায়ান্টস। যা আইপিএল ইতিহাসে কোনো ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকের রেকর্ড।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দুই দিনব্যাপী মেগা নিলামে ওঠানো হচ্ছে ৫৭৭ জন ক্রিকেটারকে। তবে আজ তোলা হচ্ছে মাত্র ৮৪ জনকে। নিলাম থেকে মোট ২০৪ জন ক্রিকেটারকে কিনতে পারবে ১০টি দল। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭০ জন বিদেশি ক্রিকেটার হতে পারেন।
আজকের মেগা নিলামে প্রথমেই তোলা হয় ভারতীয় পেসার আর্শদীপ সিংকে। ১৮ কোটি রুপিতে এই পেসারকে কিনে নিয়েছে তার পুরোনো দল পাঞ্জাব কিংস। নিলামে ভারতীয় এই পেসারের সর্বোচ্চ দাম তুলেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে ‘রাইট টু ম্যাচ কার্ড’ ব্যবহার করে তাকে কিনেছে পাঞ্জাব।
দিনের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে নিলামে তোলা হয় কাগিসো রাবাদাকে। এই প্রোটিয়াকে ১০ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে কিনেছে গুজরাট টাইটানস।
দিনের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে নিলামে তোলা হয়েছিল শ্রেয়াস আইয়ারকে। এই টপ অর্ডার ব্যাটারকে নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি হয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস ও পাঞ্জাব কিংসের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত ২৬ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে পাঞ্জাব তাকে দলে ভেড়ায়। যা ছিল তখন পর্যন্ত আইপিএল ইতিহাসে কোনো ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক।
এদিকে, ১৫ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে গুজরাট টাইটানসে গেছেন জস বাটলার। ১১ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে দিল্লিতে মিচেল স্টার্ক। গত আসরে তার মূল্য ছিল ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপি। এবার তার দাম কমেছে ১৩ কোটি।
প্রসঙ্গত, আইপিএল নিলামে পান্ত সর্বোচ্চ দাম হাঁকাতে পারেন এমন একটা জল্পনা ছিল। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকেরই বাজির ঘোড়া ছিলেন ভারতীয় এই উইকেটকিপার ব্যাটার। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত তার এই রেকর্ড দাম অক্ষত থাকে কি না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
আইপিএল নিলামের আগে নিষিদ্ধ হলেন দুই ক্রিকেটার
আইপিএলের নিলামের আর একদিনও বাকি নেই। তার আগে বিপদে পড়লেন ভারতের দুই ক্রিকেটার। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের কারণে তাদের নিষিদ্ধ করল বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।
বোর্ডের সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন আরও তিন ক্রিকেটার। নিলামের আগে সব দলকে চিঠি পাঠিয়ে এই ৫ ক্রিকেটারের কথা জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
নিষেধাজ্ঞায় পড়া দুই ক্রিকেটার হলেন মানীশ পান্ডে ও সৃজিত কৃষ্ণ। দুজনেরই বোলিং অ্যাকশনে সমস্যা রয়েছে। তাই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড।
আর সন্দেহজন বোলারের তালিকায় আছেন দীপক হুদা, সৌরভ দুবে এবং কেসি কারিয়াপ্পা। এই তিন জনের বোলিং অ্যাকশনকে সন্দেহজনক তালিকায় রেখেছে বিসিসিআই।
মানীশ, দীপকরা আইপিএলের নিয়মিত মুখ। যদিও এই ৫ ক্রিকেটারের কাউকেই দল রিটেইন করেনি। তবে নিলাম থেকে তাদের দল পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিসিসিআইয়ের এমন খবর জানার পর দলগুলো তাদের দলে ভেড়াতে নিশ্চয় ভাববে।
গতকাল শুক্রবার ভারতীয় বোর্ড জানিয়েছে, আগামী বছর আইপিএল শুরু ১৪ মার্চ থেকে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ফাইনালের দিনও। আসন্ন আইপিএলের ফাইনাল হবে ২৫ মে। শুধু আগামী বছরের নয়, ২০২৭ পর্যন্ত আইপিএলের শুরু এবং ফাইনালের দিন জানিয়ে দিল বিসিসিআই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
পেসারদের তোপে ভাঙল ৭২ বছরের পুরনো রেকর্ড!
পার্থের পেসবান্ধব উইকেটে পেসাররা রাজত্ব করবেন এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে চলমান টেস্টের প্রথম দিনটাতে বেশ বাড়াবাড়ি রকমই নাটাই ঘোরালেন দুই দলের পেসাররা। তাতে চোখে ‘সর্ষে ফুল’ দেখলেন যেন ব্যাটাররা।
হ্যাজলউড-স্টার্কদের তোপে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়াকেও আষ্ঠেপৃষ্টে বেধে ফেলেছে ভারত। বুমরাহদের আগুনে বোলিংয়ে এরই মধ্যে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৬৭ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে স্বাগতিকরা। প্রথম দিনের খেলা শেষে ভারতের চেয়ে এখনো ৮৩ রান পিছিয়ে আছেন প্যাট কামিন্সরা।
পার্থ টেস্টের প্রথম দিনেই উইকেটের পতন হয়েছে ১৭টি। ১৯৫২ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ উইকেট পতনের রেকর্ডও এটি।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জার পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছিল ভারতের জন্য। বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষের খোঁচা টিপ্পনীতো ছিলই, এর মধ্যে নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মাও দলের বাইরে। নতুন অধিনায়ক জসপ্রীত বুমরাহ নামলেন পার্থের বাইশগজে টসের জন্য। কয়েন ভাগ্য ভারতীয় অধিনায়কের পক্ষেই থাকে এদিন।
টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বুমরাহ। এদিন অস্ট্রেলিয়ার পেস ব্যাটারির সামনে কোনো জবাব ছিল না ভারতীয় ব্যাটারদের। নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে গুটিয়ে গেছে ভারত। তাদের ইনিংসের স্থায়িত্ব ছিল কেবল ৪৯ ওভার ৪ বল।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন অভিষিক্ত নীতিশ কুমার রেড্ডি। এ ছাড়া রিশাভ পান্ত ৭৮ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। এ দুই ব্যাটারের ৮৫ বলে ৪৮ রানের জুটিটাই ভারতের রান দেড়শো পর্যন্ত নিয়ে গেছে শেষ পর্যন্ত।
একাই চার উইকেট তুলে নিয়ে ভারতের টপ এবং মিডল অর্ডারে বড় ধাক্কা দেন জশ হ্যাজেলউড। দুটি করে উইকেট যায় বাকি তিন অজি পেসারের ঝুলিতে। সবমিলিয়ে, পার্থের গতি আর বাউন্সে ভারতকে ধরাশায়ী করার পরিকল্পনায় সফল হয় অজিরা।
অস্ট্রেলিয়ার অস্ত্রেই স্বাগতিকদের বেকায়দায় ফেলল ভারত। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন নেতা জশপ্রীত বুমরাহ। অধিনায়কের সঙ্গে দুরন্ত বোলিং করলেন মোহাম্মদ সিরাজ এবং ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নামা হর্ষিত রানা। তিনজন মিলে ২৭ ওভার বল করেন। তাতেই তুলে নিয়েছেন বিপক্ষের সাত উইকেট। ২০ রানও টপকাতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটার।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পর্যটন
১৭৮ দেশ ভ্রমণের বিশ্ব রেকর্ড নাজমুন নাহারের
অস্ট্রেলিয়ার ঠিক উত্তরে এবং ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত পাপুয়া নিউগিনি অপূর্ব সুন্দর একটি দেশ। আমি যখন সলেমোন দ্বীপপুঞ্জ থেকে ফ্লাইটে উঠলাম পাপুয়া নিউগিনি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ওই ফ্লাইটে মাত্র ১২ জন যাত্রী ছিলাম আমরা। আমার জীবনে কখনো এত বড় ফ্লাইটে এত ফাঁকা দেখিনি। তার মধ্যে আমি আর ইংল্যান্ডের মাথিও ছিলাম একমাত্র ট্যুরিস্ট। অনলাইনে ভিসার আবেদন করেছি, ভিসা পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু এই দেশে আসার পূর্বে পথে পথে সবাই আমাকে নিষেধ করেছে। আবার নতুন করে এখানে আসতে আমার অনেক টাকা লাগবে তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও এই যাত্রায় আমি দেশটি কম খরচে ভ্রমণ করে শেষ করতে পারব তাই ভেবে রওনা হয়েছি। আমার সহ-অভিযাত্রী মাথিও হাসতে হাসতে আমাকে বলছে জান নিয়ে ফিরে আসতে পারবো তো? কোভিড মহামারীর পর থেকে নানা ধরনের সিভিল আনরেস্ট দেখা দিয়েছে।
এছাড়া ইতোপূর্বে তাদের প্রাকৃতিক আর্থ কুইকের মত অনেক দুর্যোগ ঘটেছে। সিকিউরিটি ছাড়া কোন নির্দিষ্ট জায়গায় এখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা কিংবা হাঁটাচলা করা টুরিস্টদের জন্য রিস্কি। আমি ভ্রমণ করলাম অপূর্ব রহস্যময়ে এই পাপুয়া নিউগিনি। নিজ চোখে না দেখলে বুঝা যাবে না এই দেশ যে কত সুন্দর। এখানকার রেইন ফরেস্ট, তার পাশে পাহাড়ের ভ্যালি, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ আর তার মাঝে যেতে যেতে বড় বড় ব্ল্যাক স্টোন, বাহারি রঙের গাছ, অপূর্ব সুন্দর পাখি, আর এখানকার আদিবাসীদের মুগ্ধ হওয়া কালচারাল ডান্স দেখলে মনে হবে এখানে নিরাপত্তার ঝুঁকি না থাকলে এই প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্যে আরো বেশ কিছু সময় কাটানো যেত। এবং হেঁটে হেঁটে এখানকার প্রকৃতিকে আরো কাছ থেকে দেখা যেত। তবে শোনা গেছে এখানে পৃথিবীর অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা এসে ছুটি কাটায়। এখানকার সবুজ দেখলে চোখের জ্যোতি বহুবছর ঠিক থাকবে।
যা কিছুই হোক তবে এখানকার সাধারণ মানুষ কিন্তু অনেক ফ্রেন্ডলি। তারা নিজ থেকে কথা বলতে আসলে তাদেরকে ইগনোর করা যাবেনা। এখানকার মানুষ পান সুপারি খেতে খুব পছন্দ করে, এটা ওদের একটা কালচার। যেতে যেতে রাস্তার দিকে তাকালে দেখা যাবে এখানকার প্রতিটা মানুষের ঘাড় থেকে সাইডে ট্রেডিশনাল একটা ক্রস ব্যাগ ঝুলানো থাকে।
এভাবে পাপুয়া নিউগিনি ঘুরতে ঘুরতেতার প্রকৃতিকে দেখি। দক্ষিণ গোলার্ধের প্রশান্ত মহাসাগরের সীমাহীনতায় চোখ মেলি। অসাধারণ পেস্ট কালারের পানির রূপ আর তার চারপাশে ছোট্ট পাহাড়ের ভ্যালি। পাপুয়া নিউগিনির দক্ষিণ গোলার্ধের সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ লোলোটা আমাকে মুগ্ধ করেছে বেশি। ছোট্ট একটা বোটে করে দুলতে দুলতে গিয়েছিলাম সেখানে। এভাবে আমি ছুঁয়েছি পৃথিবীর বিভিন্ন গোলার্ধের শেষ সীমানাগুলো। এটি সমুদ্রের বুকে জেগে থাকা খুবই ছোট্ট একটি দ্বীপ। দিনের বেলায় দেখা যায় চারিদিকে অপূর্ব সুন্দর পানির রং, আর কোরাল লাইফ।
সন্ধ্যা হলে এখানে ঘনিয়ে আসে নিয়ন আলোর স্নিগ্ধতা, আর সমুদ্রের ঢেউয়ের তালে জেগে ওঠা সুর। জোয়ার এলে এখানে সমুদ্রের পানিতে সব ডুবে যায় সন্ধ্যার দিকে আবার যখন ভাটা হয় তখন সমুদ্রের বুকে অনেক দূর হেঁটে চলে যাওয়া যায় সাদা বালির উপর দিয়ে।
আমাদের জীবন ছোট হলেও বিধাতার এই প্রকৃতি অসীম। ছোট্ট এই জীবনের সময়গুলো পথের সংগ্রামের মাঝে কঠিন থাকলেও যখন পৃথিবীকে এভাবে দেখি তখন মনে হয় ভ্রমণ জীবনের এক অপূর্ব প্রাণের স্পন্দন। পৃথিবীর সাথে এই আত্মার কানেকশন আমাকে নিয়ে এসেছে এই দূর দিগন্তের নীচে এমন অপরূপ মহাবিস্ময়কে কাছে পাওয়ার জন্য। এভাবেই যেতে যেতে পোর্ট মোরেসবির এলেবিচ, ডাউন টাউন, বিভিন্ন ছোট-ছোট গ্রাম, পর্বতমালা, ন্যাশনাল পার্কসহ আরো অনেক দর্শনীয় স্থান দেখেছি। পুরো দেশকে দেখার জন্য আবার কখনো আসতে হবে। এই দেশ ভ্রমণ করাও এত সহজ নয়, এখানকার এক প্রদেশ থেকে আরেক প্রদেশে যেতে কোন সড়ক পথে যানবাহন নেই, ফ্লাইটে যেতে হয়।
এক দেখায় এই দেশ শেষ হওয়ার মতো নয়। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দেশের মাঝে পাপুয়া নিউ গিনি। এখানকার আগ্নেয়গির, প্রকৃতি, একই দেশে হাজার রকমের আদিবাসী কালচার, ৮৫০টির বেশি ভাষা, এখানকার জাতীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার মুমু খেলে তার স্বাদ মুখে লেগে থাকবে। মাংস, ফল-মূল, সবুজ শাকসবজি, এবং নারকেল দুধের সংমিশ্রণটি সুন্দরভাবে রান্না করা হয়। সবমিলিয়ে পাপুয়া নিউগিনি পৃথিবীর মাঝে ভিন্ন কালচার এবং প্রকৃতির এক রহস্যপূর্ণ একটি দেশ। এ নিয়ে বিশ্বের মোট ১৭৮টি দেশ ভ্রমণ করা হলো আমার।
এমআই