ব্যাংক
পাঁচ ব্যাংককে ঋণ গ্যারান্টি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো তুলনামূলক ভালো ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে পারবে, যাদের গ্যারান্টি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো কি পরিমাণ তারল্য সহায়তা নিতে পারবে তা-ও ঠিক করে দেবে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। প্রাথমিকভাবে সমস্যায় থাকা এমন পাঁচটি ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ গ্যারান্টি চুক্তি সই করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে নির্ধারিত মেয়াদে বিশেষ ধার পাবে।
চুক্তিতে সই করা ব্যাংকগুলো হলো- বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে রোববার চার ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে আর গত বৃহস্পতিবার চুক্তি করেছিল ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে। যদিও এখন পর্যন্ত বিশেষ ধার চেয়ে আট ব্যাংক চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, যেসব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, তারা এখন আন্তঃব্যাংক বাজার থেকে তহবিল সংগ্রহ করে বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে গ্যারান্টির জন্য পাঠাবে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্যারান্টির আওতায় কোন ব্যাংক কত টাকা নিতে পারবে তা বিবেচনা করে অনুমতি দেবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করা হয়। এগুলোসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নামে-বেনামে ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে পাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা। নামে-বেনামে টাকা বের করে নেয়ায় তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে ব্যাংকগুলোতে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআরআর ও এসএলআর রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাবেও ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। ঋণাত্মক হলেও লেনদেন অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়েছিলেন সাবেক পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। টাকা ছাপিয়ে দেওয়া সেই বিশেষ সুবিধা এখন বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
এ অবস্থায় সাময়িক সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর দুর্বল ব্যাংকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডিমান্ড প্রমিসরি (ডিপি) নোট নিয়ে রাখবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চিন্ময় দাস ইস্যুতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার ও জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি জারি করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার ও জামিন নাকচ করার বিষয়টি আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি। বাংলাদেশে চরমপন্থিদের দ্বারা হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার পরে এই ঘটনা ঘটলো।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি চুরি ও ভাঙচুর, দেবতা এবং মন্দির অবমাননার একাধিক নথিভুক্ত ঘটনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, অন্যদিকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে নিজেদের বৈধ দাবিগুলো তুলে ধরায় একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এতে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ফের উত্তরা ব্যাংক ঘেরাও করলো ছাত্র-জনতা
উত্তরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রবিউল হোসেনকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দোসর দাবি করে তাকে অপসারণের দাবিতে আজও ব্যাংক ঘেরাও করেছে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা। রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকটির প্রধান শাখা ঘেরাও করে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে বসে দেশের জনসাধারণের আমানতের অর্থ লোপাট, পাচারসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ এনে রবিউল হোসেনকে অবিলম্বে প্রত্যাহারসহ তাকে আইনের আওতায় এনে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সৌদি আরবে প্রায় ২০ হাজার প্রবাসী গ্রেপ্তার
সৌদি আরবের বিভিন্ন আইন ভঙ্গের অভিযোগে এক সপ্তাহে ১৯ হাজার ৬৯৬ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির সরকার। তাদের বিরুদ্ধে সৌদির আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১১ হাজার ৩৩৬ জনকে আবাসন আইন ভঙ্গের অভিযোগে, ৫ হাজার ১৭৬ জনকে অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে এবং ৩ হাজার ১৮৪ জনকে শ্রম-সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১ হাজার ৫৪৭ জনকে অবৈধভাবে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টার সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ ইথিওপিয়া, ৩২ শতাংশ ইয়েমেন এবং বাকি ৩ শতাংশ অন্যান্য দেশের নাগরিক। এ ছাড়া তাদের যানবাহন ও আশ্রয় দিয়ে সহায়তার অভিযোগে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ব ইতিহাসে সর্বোচ্চ সম্পদ ইলন মাস্কের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের অর্থ-সম্পদ আরো ফুলেফেঁপে উঠেছে। মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস জানিয়েছে, মাস্কই এখন ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ধনী। সাময়িকীটির ভাষ্য মতে, এর আগে কেউই মাস্কের মতো সম্পদের মালিক হতে পারেননি।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, মাস্কের সম্পদ আসলে ৩৪ হাজার ৭৮০ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশি টাকায় যা ৪১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকার সমান (প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ধরে)। গত ৫ নভেম্বরের ভোটে ট্রাম্পের জয়ের পর মাস্কের মোট সম্পদে আরো ৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলার যুক্ত হয়েছে। গত শুক্রবার প্রকাশ করা ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার তালিকা অনুযায়ী, তিনি এখন বিশ্বের শীর্ষ ধনী। তার সম্পদের পরিমাণ ৩৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক সপ্তাহে এক্সএআইয়ের বাজারমূল্য বেড়ে ৫০ বিলি
য়নে পৌঁছে গেছে। এই কোম্পানিতে মাস্কের ৬০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। স্পেস-এক্সও লাভজনক জায়গায় রয়েছে। তাতে মাস্কের শেয়ার ৪২ শতাংশ। এই কোম্পানির বাজারমূল্য ২১০ বিলিয়ন ডলার। আর টেসলায় ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মাস্কের। এছাড়া টেসলার শেয়ার গত নির্বাচনের পর থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। টেসলার শেয়ারের ব্যাপক বৃদ্ধি এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক সাফল্যের ফলে এই ঐতিহাসিক অর্থনৈতিক মাইলফলক অর্জিত হয়েছে।
এতদিন সর্বকালের সেরা ধনীর তকমা দেওয়া হতো ১৪ শতকে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির শাসক মানসা মুসাকে। কথিত আছে, মালির এই শাসক এতটাই সম্পদশালী ছিলেন যে তার সম্পদের পরিমাণ ধারণাও করতে পারেনি ইতিহাসবিদরা। মানি ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারও পক্ষে যতটা বর্ণনা করা সম্ভব মানসা মুসা এর চেয়েও ধনী ছিলেন।
ক্ষমতায় বসার আগে মালির শাসক ছিলেন তার ভাই মানসা আবু-বকর। ১৩১২ সালে আবু-বকর সিংহাসন ত্যাগ করে একটি অভিযানে বের হন। উত্তরাধিকার সূত্রে মালির শাসনভার গ্রহণ করেন মানসা মুসা। তার শাসনামলে মালি রাজত্বের বিস্তার ঘটতে থাকে। মানসা মুসা তার রাজত্বে আরও ২৪টি শহর যুক্ত করেন। আটলান্টিক মহাসাগর থেকে শুরু করে বর্তমান নাইজার, সেনেগাল, মৌরিতানিয়া, মালি, বুরকিনা ফাসো, গাম্বিয়া, গিনি-বিসাউ, গিনি এবং আইভরি কোস্টের বড় অংশ মানসা মুসার রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এত বড় সাম্রাজ্যের সঙ্গে তার আয়ত্তে আসে স্বর্ণ ও লবণের মতো মূল্যবান খনিজ সম্পদ।
ব্রিটিশ মিউজিয়াম বলছে, মানসা মুসার শাসনামলে তৎকালীন বিশ্বে যে পরিমাণ স্বর্ণের মজুদ ছিল তার অর্ধেকই ছিল মালিতে। আর সেগুলোর সবটারই মালিক ছিলেন মানসা মুসা। শাসক হিসেবে মধ্যযুগের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদটির প্রায় অফুরান জোগান ছিল তার কাছে।
কিন্তু ধর্মপ্রাণ মুসলিম মানসা মুসা সাহারা মরুভূমি এবং মিসর পার হয়ে মক্কায় হজ পালনের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়। বলা হয়ে থাকে, ৬০ হাজার মানুষের একটি দল নিয়ে মালি ত্যাগ করেন মানসা মুসা। তার সেই দলে ছিলেন সম্পূর্ণ মন্ত্রিপরিষদ, কর্মকর্তারা, সৈনিক, কবি, ব্যবসায়ী, উটচালক এবং ১২ হাজার দাস-দাসী। একই সঙ্গে খাবারের জন্য ছিল ছাগল এবং ভেড়ার এক বিশাল বহর। এরপর সেই বহর যখন কায়রো পৌঁছায় তখন ঘটে অভাবনীয় এক ঘটনা। কায়রোতে তিন মাস অবস্থান করেন মানসা মুসা। সে সময় তিনি যে হারে মানুষকে স্বর্ণ দান করেছেন তাতে পরবর্তী ১০ বছর ওই পুরো অঞ্চলে স্বর্ণের দাম তলানিতে গিয়ে পৌঁছায়। ভেঙে পড়ে অর্থনীতি।
১৩৩৭ সালে ৫৭ বছর বয়সে মারা যান মানসা মুসা। তার মৃত্যুর পর মানসা মুসার ছেলেরা আর সেই সাম্রাজ্য ধরে রাখতে পারেননি। ছোট রাজ্যগুলো একে একে বেরিয়ে যেতে থাকে। একসময় পুরো সাম্রাজ্য ধসে পড়ে। পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয়রা ধীরে ধীরে আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করে। ইতিহাসে এক বিস্ময়কর চরিত্র হিসেবে জায়গা পান মুসা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকে সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত
দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে মুক্ত করতে দলীয় নির্বাচনের পরিবর্তে ব্যক্তি নির্বাচনের মত দিয়েছেন ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। একই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠেয় সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত করেন তিনি।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সঙ্গে দেখা করে ৪০ সদস্যের একটি টিম দুই ডিজির পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন। নির্ধারিত সময়ে পদত্যাগ না করলে পরে ব্যাংকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০তলা ভবনে সর্বদলীয় ডাক দিয়েছিলেন। এরপর আবারও গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেন। তখন ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন।
এদিন দুই ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও ড. হাবিবুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে উত্তপ্ত হয় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। এনিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা সকাল থেকে একাধিকবার বৈঠক করে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পদোন্নতি পাওয়া দুজন ডেপুটি গভর্নরকে পদত্যাগের দাবি জানান।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিগত সরকারের সময় যে দুইজন ডেপুটি গভর্নর নিয়োগপ্রাপ্ত তাদেরকে অপসারণ করতে হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে জানানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলেও নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান।
নজরুল ইসলাম বলেন, এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকে আগের সরকারের নিয়োগ দেওয়া দুই ডেপুটি গভর্নর রয়েছেন। তাদের অবিলম্বের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। ডিজি এক ও ডিজি দুইতে পরিবর্তন আনার দাবি জানানো হয়েছিল আমাদের পক্ষ থেকে। গভর্নর বলেছেন এই বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তা এস আলম ও বিভিন্ন গ্রুপকে যারা সহায়তা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
নজরুল ইসলাম জানান, গভর্নর তাদেরকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। কারণ সম্প্রতি সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নির্বাচন নিয়ে যেভাবে কাজ করেছে তাতে সুস্পষ্টভাবে সেই বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে নির্বাচন হচ্ছে তা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলেও গভর্ন তাদেরকে জানিয়েছেন বলেও জানান নজরুল ইসলাম।
গভর্নরের বক্তব্যের কারণেও ব্যাংকিংখাতে এক ধরণের অনাস্থা তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, গভর্নরের বক্তব্যের কারণে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিয়েছেন অনেক গ্রাহকরা। তাই পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন ধরণের স্ট্যাটমেন্ট দেওয়ার আগে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলেও তিনি জানান।
গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর ইসলামী ব্যাংকে আন্দোলনের মাধ্যমে ব্যাংকখাতেও আন্দোলন শুরু হয়। ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের ক্ষমতার বলয় থেকে মুক্ত করার দাবিতে ৬ অগাস্ট ইসলামী ব্যাংকের সামনে আন্দোলন করেন ব্যাংকটির কয়েকশ কর্মী।
বিক্ষোভের হাওয়া লাগে বাংলাদেশ ব্যাংকেও। ৭ অগাস্ট তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, চার ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান ও পলিসি উপদেষ্টার পদত্যাগে উত্তাল হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এরপর ওই সপ্তাহেই গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান, পলিসি উপদেষ্টা ও দুই ডেপুটি গভর্ন পদত্যাগ করেন। সেই সময়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাকি দুই ডেপুটি গভর্ন ছিলেন নুরুন নাহার ও হাবিবুর রহমান। প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য এই দুই ডেপুটি গভর্নরদের পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সে সেসময়।
বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক বায়েজিদ সরকার ছাত্র-জনতা অভূত্যানে নিহত সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ৫ অগাস্টের আগে চুক্তিভিত্তিক ডেপুটি গভর্নর যারা এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন তাদের অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি করেন। ৭ অগাস্টে যে দাবি করা হয়েছিল সেই দাবি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।
বায়েজিদ সরকার বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর ৭ অগাস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে বিক্ষোভ করা হয়। সেই সময় নানা রকমের দাবিও উপস্থাপন করা হয়। সেই দাবির মধ্যে ডেপুটি গভর্নরদের পদত্যাগের বিষয়টি ছিল। তবে এখনও তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে। তাদের এ পদ থেকে চলে যেতে হবে।
পরে বিক্ষুদ্ধ কর্মকর্তাদের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে দুই ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবি তুলে ধরেন। এসময় গভর্নর তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।
গভর্নর বলেন, আর্থিকখাতের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এই মুহূর্তে তাদের চাকরিচ্যুত করা হলে আর্থিকখাতে বড় ধরনের সমস্যার পাশাপাশি বহিঃবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে। এজন্য তাদের পোর্টফোলিও দেখে কাজের পরিধির কমিয়ে আনা হবে বলে জানান।
এ সময় কর্মকর্তারা জানান, মূলত তাদের কারণেই আর্থিকখাতের সংস্কার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জবাবে গভর্নর বলেন, শিগগিরই আমি এ দু’জন ডেপুটি গভর্নরের বিষয়ে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।