অর্থনীতি
বিমা উন্নয়ন প্রকল্পের ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে পাচার করলেন নাফিসা

সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মেয়ে নাফিসা কামালের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে স্মার্ট টেকনোলজিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিমা উন্নয়ন প্রকল্পের ৬৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা) হাতিয়ে নিয়ে পাচার করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) প্রযুক্তিগত উন্নয়নের প্রায় ১০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সরকার। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পেয়েছিল নাফিসা কামালের এনকে সফট, স্মার্ট টেকনোলজি, চীনের সিনোসফট, সিএনএস, ইএসএল, শামীম আহসান ই-জেনারেশন। নাফিসা কামালের সঙ্গে স্মার্ট টেকনোলজির সম্পর্কের কারণে এসব প্রকল্পের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারেনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। অর্থমন্ত্রীর মেয়ের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তখন মুখ খোলার সাহস পাননি প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান। তিনিও কাজ করেছেন সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে।
প্রকল্পের নথি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, যেসব প্রতিষ্ঠান বিমা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পেয়েছে সবগুলোতে অর্থমন্ত্রীর মেয়ের মালিকানা রয়েছে। ফলে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সহজে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রকল্পগুলোর অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমিতে একটি গবেষণা কেন্দ্র ও সার্ভার রুম উন্নয়নে ২০২৩ সালের ২২ মে ১ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি শামীম আহসানের ই-জেনারেশন এবং এনকে সফটের চুক্তি অনুমোদন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান। ডলারের পাশাপাশি ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়। মিলিয়ন ডলারের গবেষণা কেন্দ্রের খোঁজে মহাখালীতে ইন্স্যুরেন্স একাডেমিতে গিয়ে কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্মার্ট টেকনোলজির আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ
২০২২ সালের ৩০ মার্চ আইটি অ্যান্ড সাপোর্টিং নেটওয়ার্ক ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিস্টেম, সার্ভার ও স্টোরেজ সরবরাহের জন্য দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা (এল-ও) হলেও ১০ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারের কাজ দেওয়া হয় স্মার্ট টেকনোলজিকে। আওয়ামী লীগের প্রশ্রয়ে গড়ে ওঠা স্মার্ট টেকনোলজিকে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত আরও ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন কামরুজ্জামান।
কাজ না করেই টাকা তুলে নিয়েছে স্মার্ট টেকনোলজি
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ), সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং জীবন বিমা করপোরেশনের আইটি সাপোর্টিং পাওয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচারের নামে ৯ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলারের আরও একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দেওয়া হয় স্মার্ট টেকনোলজিকে। এ প্রকল্পের সর্বনিম্ন দ্বিতীয় দরদাতা (এল-২) ছিল স্মার্ট টেকনোলজি।
জানা গেছে, এই প্রকল্পের ২০ শতাংশ কাজও করেনি অথচ বরাদ্দের পুরো অর্থ তুলে নিয়েছে স্মার্ট টেকনোলজি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ সময়ে গত ২০ জুন তাড়াহুড়ো করে স্মার্ট টেকনোলজির ঠিকানায় এনকে সফট এবং সিনোসফটের জয়েন্ট ভেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৪ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ডলার ছাড় করে নাফিসা কামালের নিয়ন্ত্রিত প্রকল্প পরিচালক। ডলারের পাশাপাশি অতিরিক্ত ২ কোটি ৩১ লাখ টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয় এ প্রতিষ্ঠানকে।
চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোসফটকে প্রকল্পের ওয়েবসাইট, কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট এবং কল সেন্টার উন্নয়নের জন্য ১১ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয় ২০২২ সালের ২১ আগস্ট। বিমা ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার উন্নয়নের জন্য একই দিন আলাদা চিঠিতে চীনের সিনোসফট, রেজটেককে দেওয়া হয় ৯ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালের ৩১ মে আরেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে (সিএনএস) একটি এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) সফটওয়্যার ও ইমেইল ব্যবস্থাপনার জন্য ২৩ কোটি ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের আসল লাইসেন্স দেয়নি সিএনএস। তার এক সপ্তাহ আগে ২৪ মে ভারতের জেরক্স ইন্ডিয়া এবং আইওই বাংলাদেশ নামে প্রতিষ্ঠানে জয়েন্ট ভেঞ্চারকে ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সরবরাহের জন্য ৩ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি অনুমোদন করা হয়। এই ধাপে ১৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকার অতিরিক্ত বরাদ্দ পায় সিন্ডিকেটটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিমা প্রকল্পের এই অর্থ পুঁজিবাজারভুক্ত ই-জেনারেশনে বিনিয়োগ করেছেন সালমান এফ রহমানের আশীর্বাদপুষ্ট শামীম আহসান। যিনি বেসিসের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালকও হয়েছিলেন।
প্রকল্পের নথি থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর নাফিসা কামালের এনকে সলিউশনস, এক্সপ্রেস সিস্টেমস এবং আসপায়ার টেক সার্ভিসেসের জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানকে ২৮ দিনের মধ্যে সাইবার সিকিউরিটি, রানসমওয়্যার এবং এন্ডপয়েন্ট পণ্য সরবরাহের জন্য ১ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি অনুমোদন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান। প্রকল্পের এ ধাপে, ডলারের পাশাপাশি বাংলাদেশি টাকায় ৫৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা আলাদাভাবে বরাদ্দ পায় নাফিসা কামালের সিন্ডিকেট।
কাগজপত্রে সংখ্যাটা কম পাওয়া গেলেও অনুসন্ধান বলছে, এ প্রকল্প থেকে ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্মার্ট টেকনোলজি এবং নাফিসা কামালের এনকে সফট। আইডিআরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন বছরের জন্য বিমা উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হলেও আর্থিক সুরক্ষা খাতের অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সপরিবারে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমিয়েছেন লোটাস কামাল এবং তার মেয়ে নাফিসা কামাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) এক সাবেক সভাপতি বলেন, বিমা উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের অগ্রগতি না হলেও অর্থ তুলে নেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। আরেকটা বিষয় হলো এখানে কয়েকটি বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানির অংশগ্রহণ। ফলে বিদেশের টাকা বিদেশেই চলে গেছে। বিমা উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সাপোর্ট সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজ দেশি প্রতিষ্ঠান করলে ৩০ কোটি টাকা সমমানের ডলার সাশ্রয় হতো বলে মনে করেন তিনি।
সার্বিক বিষয়ে নাফিসা কামাল এবং স্মার্ট টেকনোলজিসের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলামের বক্তব্য জানার চেষ্টা করলে তারা মোবাইল ফোনের কল রিসিভ করেননি। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি, সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং জীবন বিমা করপোরেশনের পেশাদারিত্ব এবং প্রযুক্তিগতভাবে আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিমা খাত উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় বিশ্বব্যাংক।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু

ঈদের ছুটি শেষে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বন্দরটির আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হওয়ার বিষয়টি জানান সোনা মসজিদ স্থলবন্দর পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার মাঈনুল ইসলাম।
তিনি জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। আজকে ঈদের ছুটি শেষে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যথারীতি বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সকাল থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করছে।
সোনা মসজিদ ইমিগ্রেশন ইনচার্জ (উপপরিদর্শক) মো. জামিরুল ইসলাম জানান, ঈদের ছুটিতে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মার্কিন শুল্কারোপের প্রভাব সামাল দেয়া কঠিন নয়: অর্থ উপদেষ্টা

ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে বালাদেশি পণ্য প্রবেশের ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছে, সেটি সামলে নেয়া খুব বেশি কঠিন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, নতুন শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের (সমঝোতা) উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভালো কিছু হবে বলে আশাবাদী।
রোববার (৬ এপ্রিল) ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রমজান ও ঈদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা গেছে, মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, রিজার্ভ বেড়েছে। এবার ঈদে পণ্যের দাম কম ছিল। ঈদ ভালো কেটেছে।
এত দিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। ২ এপ্রিল নতুন করে আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বড় বাজারটিতে পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকেরা। বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।
শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক বসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণা নিয়ে বিবিসি, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমসসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশ্বনেতাদের ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা। অস্ট্রেলিয়া বলেছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বন্ধুসুলভ নয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, নিঃসন্দেহে এই ঘটনার অর্থনৈতিক প্রভাব অনুভূত হবে। চীন বলেছে, তারা এই ঘটনার প্রতিশোধ নেবে। অর্থাৎ ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের জবাবে তারাও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করে দিলেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক শুরু আজ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২৩৯ কোটি ডলার কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আর এই অর্থ ছাড়ের আগে বিভিন্ন শর্ত পর্যালোচনা করতে আইএমএফের প্রতিনিধিদল গতকাল (০৫ এপ্রিল) ঢাকায় এসেছে। প্রতিনিধিদলটি ৬ এপ্রিল থেকে টানা দুই সপ্তাহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, এ সফরে আইএমএফের দলটির সঙ্গে অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠক শেষে ১৭ এপ্রিল প্রেস ব্রিফিং করবে সফররত আইএমএফের দল। দলটি প্রথম দিন ৬ এপ্রিল এবং শেষ দিন ১৭ এপ্রিল বৈঠক করবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর তিনটি কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পায়। একই বছরের ডিসেম্বরে পেয়েছে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। আর ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। বিপত্তি দেখা দেয় চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে।
সম্প্রতি এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাজেট সহায়তার জন্যই আইএমএফের ঋণ লাগবে। এ কারণেই বাংলাদেশ সরকার ও আইএমএফ যৌথভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইএমএফের ঋণের দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পেতে বাংলাদেশের সামনে মোটাদাগে তিনটি বাধা রয়েছে। এগুলো হলো মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায় ও এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইএমএফকে জানানো হয়েছে, এসব শর্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করার পদক্ষেপ ছাড়া বাকি দুটির বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। তবে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হচ্ছে। যার কারণে হঠাৎ ডলারের দাম খুব বেশি বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ পদ্ধতিতে ডলারের দাম ১২২ টাকায় স্থিতিশীল আছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঈদের ছুটি শেষে আজ খুলেছে ব্যাংক-বিমা-পুঁজিবাজার

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিনের দীর্ঘ ছুটি শেষে আজ রোববার (৬ এপ্রিল) খুলেছে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শেয়ারবাজারসহ সব ধরনের অফিস। রমজান মাস শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের অফিস ও লেনদেনের সময়সূচি আবার আগের অবস্থায় ফিরেছে।
এর আগে গত ২৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ব্যাংক-বিমা ও শেয়ারবাজারের সর্বশেষ কার্যদিবসের লেনদেন হয়। এরপর পবিত্র ঈদুল ফিতর, বিশেষ ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে শনিবার (৫ এপ্রিল) পর্যন্ত বন্ধ থাকে কার্যক্রম।
ছুটি শেষে আজ থেকে ব্যাংক লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে ব্যাংকের অফিস সূচি হবে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বাকি সময় লেনদেন পরবর্তী ব্যাংকের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনা হবে। তবে রমজান মাসে ব্যাংক লেনদেন হয়েছিল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। আর ব্যাংক খোলা ছিল বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে, রমজানে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়েছে সকাল ১০ থেকে দুপুর ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত। আর ১টা ৪০ মিনিট থেকে ১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ১০ মিনিট পোস্ট ক্লোজিং সেশন ছিল।
তবে ঈদের ছুটি শেষে রোববার থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হবে সকাল ১০টায়, যা চলবে দুপুর ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত। নিয়মিত লেনদেন শেষে ১০ মিনিট অর্থাৎ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পোস্ট ক্লোজিং সেশন থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ পালিত হয় মুসলমান ধর্মালম্বীদের বৃহৎ উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ উপলক্ষে গত ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল নির্ধারিত হয় সরকারি ছুটি। এর সঙ্গে নির্বাহী আদেশে ৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পাশাপাশি যুক্ত হয় ২৮ ও ২৯ মার্চ এবং ৪ ও ৫ এপ্রিলের সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে এবার টানা ৯ দিনের ছুটি কাটালেন বেশিরভাগ কর্মজীবীরা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ছুটি শেষে বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

ঈদ উপলক্ষে টানা আট দিনের ছুটি শেষে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে শুরু হয়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। শনিবার (৫ এপ্রিল) সকালে থেকে দেশের অন্যতম এই স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়।
ছুটি চলাকালীন ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক ছিল।
বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। আজ দুপুর থেকেই শুরু হয় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। ফলে বন্দর এলাকায় দেখা দিয়েছে যানজট। বেনাপোলের মতোই পেট্রাপোল বন্দরেও যানজট রয়েছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ইব্রাহিম আহম্মেদ জানান, ঈদে টানা আটদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিল। ভারত-বাংলাদেশ ভিসা কার্যক্রম সীমিত থাকায় এ সময় যাত্রীদের চাপ ছিল না। যাতায়াতকৃত যাত্রীদের যেন দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছিল।
আমদানি-রপ্তানি শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। আজ সকাল থেকে পুনরায় এ স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয়েছে আমদানি-রপ্তানি।