অর্থনীতি
সংস্কারমূলক কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ গড়তে এনবিআরের ১৪ নির্দেশনা

বিনিয়োগ ও সেবাবান্ধব ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ তৈরীর মাধ্যমে শৃঙ্খলাপূর্ণ, পেশাদারি ও সংস্কারমূলক কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৪ নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের অধীন বিভিন্ন কাস্টমস হাউস, ভ্যাট কমিশনারেট এবং অন্যান্য কাস্টমস ও ভ্যাট সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহকে এসব নির্দেশনা পরিপালন করতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দিয়েছে এনবিআর। এতে সই করেছেন কাস্টমস ও ভ্যাট প্রশাসন কর্মকর্তা ফারজানা আফরোজ।
এতে বলা হয়েছে, কমিশনার ও মহাপরিচালকরা তাদের অধীন অফিসগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের নির্ধারিত সময়ে অফিসে আগমন ও তথায় কার্যকর উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন। পাশাপাশি, বিনা অনুমতিতে কেউ যেন কর্মস্থল ত্যাগ না করে সেটিও নিশ্চিত করবেন।
দপ্তরসমূহ কর্তৃক প্রদত্ত সকল সেবার তালিকা (প্রযোজ্য আইন, বিধিমালা, এসআরও, প্রজ্ঞাপন, স্থায়ী আদেশ, বিশেষ আদেশ, অফিস আদেশ, প্রভৃতি হতে উদ্বৃত) সিটিজেনস চার্টারে অন্তর্ভুক্ত করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্ব-স্ব ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করতে হবে।এছাড়া, সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দপ্তরসমূহে ডি-নথি প্রবর্তনের একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অবহিত করতে হবে।
কাস্টমস অটোমেটেড সিস্টেম (অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড) এবং ভ্যাট অনলাইন সিস্টেমের (আইভাস) আওতার বাইরে যে সকল সেবা ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে ইনোভেশন কার্যক্রমের আওতায় (দাপ্তরিক তহবিল থেকে ব্যয় নির্বাহ করা গেলে তা উল্লেখসহ) অটোমেশনের মাধ্যমে প্রদান করা সম্ভব তার একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রেরণ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আগামী ০১ অক্টোবর থেকে কমিশনার ও মহাপরিচালকরা স্ব-স্ব দপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত সেবাপ্রদান কার্যক্রম গতিশীল করতে দৈনিক রোস্টার ভিত্তিতে ডিউটি অফিসার নিয়োগ করবেন। স্ব-স্ব দপ্তর প্রধান সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে ডিউটি অফিসারের দায়িত্ব ও কার্যাবলী সুনির্দিষ্ট করে অফিস আদেশ জারি করবেন। দপ্তরসমূহে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা বা সভা অনুষ্ঠানের বিদ্যমান কাঠামো অধিকতর জোরদার করতে হবে। একটি কার্যকর অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উদ্যোগী ভূমিকা পালনের পাশাপাশি সেবাগ্রহীতাগণকেও অভিযোগ দায়ের করার মাধ্যমে প্রতিকার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত নীতিমালা, ২০০৯ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত স্মারক নং-০৪,০০,০০০০,৪১৬,৯৯,০০১,২৩.৪৭৫, তারিখ: ০৫ সেপ্টেম্বর যথাযথভাবে অনুসরণপূর্বক দপ্তরসমূহে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সামগ্রীর পরিবর্তে বিকল্প পণ্য সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। সাপ্লাই চেইন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ২৪/৭ কার্যক্রম চলমান রয়েছে এমন কাস্টমস হাউসসমূহ ছাড়াও অন্যান্য দপ্তর এবং এলসি স্টেশনে প্রয়োজনের নিরিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদনক্রমে নির্ধারিত সময়ের বাইরেও পণ্য খালাস সেবা জোরদার করতে হবে।
বিমানবন্দরে গমনাগমনকারী যাত্রী বিশেষ করে অভিবাসী কর্মীগণের সাথে পেশাদারি ও যাত্রীবান্ধব আচরণ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে এনবিআর।
এছাড়াও এবিআরের জারি করা নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- দপ্তরসমূহের বিদ্যমান ওয়েবসাইট আগামী ০১ জানুয়ারির মধ্যে সরকারি ফরমেটে (মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক প্রণীত) প্রবর্তন করতে হবে। কোনো দপ্তরের ওয়েবসাইট না থাকলে সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সরকারি ফরমেটে তা চালু করতে হবে। সেবা গ্রহীতাগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওয়েবসাইটে সকল তথ্য হালনাগাদ করতে হবে। তথ্য হালনাগাদকরণ প্রক্রিয়াটি একটি নিয়মিত কাঠামোর মধ্যে আনতে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
বার্ষিক প্রশিক্ষণ-পঞ্জি প্রণয়ন করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য বিভিন্ন কারিগরি, প্রায়োগিক এবং পেশাগত আচরণ ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক ইন-হাউস প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে। দপ্তরসমূহে মধ্যাহ্ন বিরতির নির্ধারিত সময়সীমা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
কমিশনার ও মহাপরিচালকগণ বা তাঁদের মনোনীত কর্মকর্তা প্রতি মাসে অন্তত একবার অধীনস্ত দপ্তরসমূহ পরিদর্শন করবেন ও সেবার মান উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করবেন বলে নির্দেশনা দিয়েছে এনবিআর।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
২০২৩ সালে কর ফাঁকি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা: সিপিডি

কর ফাঁকির কারণে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ হারিয়েছে করপোরেট কর ফাঁকির কারণে। ২০২৩ সালে আনুমানিক করপোরেট কর ফাঁকির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সাল থেকে কর ফাঁকির পরিমাণ বেড়েছে, ২০১২ সালে ৯৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে তা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকায় পৌঁছায়। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্স অ্যাসোসিয়েট তামিম আহমেদ।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক অবস্থার মতো বাংলাদেশেও করপোরেট কর কমতির দিকে। পোশাক, আইসিটিসহ অনেক খাত কর সুবিধা পেয়ে থাকে। ২ লাখ ৮৮ হাজার কোম্পানি রেজিস্ট্রার্ড, কিন্তু ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিশন করেছে মাত্র ৯ শতাংশ কোম্পানি বা ২৪ হাজার ৩৮১ কোম্পানি। এটা একটা বড় বৈষম্য। যারা কর দিচ্ছে তাদের ওপর করের বোঝা বাড়ছে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আগামী দিনে সরকার যদি উচ্চমাত্রায় রাজস্ব না পান তাহলে ভর্তুকি, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ, দক্ষ জনবল তৈরি করা সরকারের পক্ষে সহজ হবে না। প্রত্যক্ষ কর, অপ্রত্যক্ষ কর ও কর বহির্ভূত আয় এই তিন উৎস থেকে মূল রাজস্ব আদায় করি। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে করপোরেট খাত থেকে। প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত রাজস্ব এখান থেকে আসে। আর ভ্যাট থেকে আসে ৪০ শতাংশ রাজস্ব। এই দুই উৎস থেকে প্রায় ৬০ ভাগ রাজস্ব প্রতিবছর আসছে। এ জন্য করপোরেট কর ও ভ্যাটের সংস্কার নিয়ে আমরা আলোচনা করতে চাই।
তিনি বলেন, প্রতিবছর বাজটে আসলে প্রেশারগ্রুপ সরকারের উপর চাপ দিতে থাকেন তার কর হার কমানোর জন্য। এর ফলে কর নিয়ে সরকারের যে লক্ষ্য তা প্রায়শই বিচ্যুত হয়, এটা খোলস আকারে থেকে যায়। যার পরিণতি ভালো হয়না। কর জিডিপির বাড়ানোর লক্ষ্যে আগামী দিনে একটি কাঠামো প্রণোয়ন করা প্রয়োজন।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমাদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছি, ২০২৩ সালে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি কর ফাঁকি হয়েছে। এনবিআর কি পরিমাণ প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করছে। শুধু যে কর ফাঁকি তা নয়, করজালের বাইরেও অনেক খাত ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাদেরকে করজালের মধ্যে আনা যায়নি। এই বিপুল পরিমাণ ফাঁকি রোধ করতে পারলেও বড় পরিমাণ অর্থ বা রাজস্ব আদায় সম্ভব।
তিনি বলেন, ডিজিটালইজেশন কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। ব্যবসায়ী ও এনবিআরের স্বার্থে এটা করা জরুরি। অথচ এনবিআর ও ব্যবসায়ীদের এক ধরনের অনীহা রয়েছে। বাংলাদেশে যে কোনো লেনদেন একক ডিজিটাল সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যাতে করে যে কোনো লেনদেন ট্রেস ও ট্র্যাক করা যায়। সেটার আলোকে দাখিলকৃত রিটার্নকে ভেরিভাই করা যায়।
ক্রিশ্চিয়ান এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন বলেন, বেশিরভাগে নিম্ন আয়ের দেশ প্রত্যক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল। এটা পরিবর্তন করতে হবে। আমরা যখন এলডিসি গ্রাজুয়েশন করছি প্রত্যক্ষ করের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।
সিপিডি বাংলাদেশের ক্রমাগত কর ফাঁকি সমস্যার পেছনে বেশ কয়েকটি মূল কারণ চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে উচ্চ করের হার, দুর্বল প্রয়োগ, জটিল আইনি কাঠামো এবং কর ব্যবস্থার মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতি।
সিপিডি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, কর ন্যায়বিচারের দৃষ্টিকোণ থেকে, উচ্চ মাত্রার কর ফাঁকি সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করে এবং যারা আইন অনুসরণ করে তাদের ওপর বোঝা বাড়িয়ে দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে ৬৫ হাজার কোটি টাকা

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৯ মাস (জুলাই-মার্চ) শেষে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। যেখানে অর্থবছরের আট মাস (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পিছিয়ে ছিল রাজস্ব জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
গত জানুয়ারিতে শতাধিক পণ্যের ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধি কিংবা আয়কর রিটার্ন জমায় জোর প্রচারণার পরও রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রভাব ফেলতে পারেনি।
মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ওই সময়ে এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে পাওয়া তথ্যানুসারে, মার্চ পর্যন্ত গত নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৯.৬২ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এনবিআর। রাজস্ব আহরণে আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
সূত্র জানায়, ৯ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৯ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা কম। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ২.০৯ শতাংশ।
একই সময়ে শুল্ক আদায় হয়েছে ৭৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা কম। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ০.৩৮ শতাংশ।
অন্যদিকে আয়কর আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা কম। আর প্রবৃদ্ধি ৫.৬৭ শতাংশ।
এনবিআর সূত্র বলছে, কেবল মার্চে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৬৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ঘাটতি ৭ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যের তুলনায় ঘাটতি থাকলেও এ সময় রাজস্ব আহরণে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি ৯.৬৪ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থবছরের মাঝপথে এসে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আমদানি মূল্য পরিশোধের নিয়মে পরিবর্তন আনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আমদানি মূল্য পরিশোধের নিয়মে বড় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে যৌক্তিক ত্রুটি থাকলে ত্রুটিপূর্ণ আমদানি বিলের বিপরীতেও মূল্য পরিশোধ করা যাবে। এ নিয়ম চালুর ফলে বিদেশি সরবরাহকারীরা বিলম্বে অর্থ পাওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্ত হবেন বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে।
এতে বলা হয়, আমদানিকারকদের সম্মতিতে যৌক্তিক ত্রুটিসম্পন্ন আমদানি বিল ব্যাংকগুলো গ্রহণ করতে পারবে এবং তার বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করতে পারবে। তবে, পণ্যে যেন কোনো পরিবর্তন না আসে তা নিশ্চিত করতে হবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়, আমদানিকারকদের কাছ থেকে পাওয়া আমদানি বিলের বিপরীতে ডেলিভারি অর্ডার দেওয়ার সময়ও ব্যাংকগুলোকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এক্ষেত্রে ডকুমেন্টে কোনো ত্রুটি থাকছে কি না তা যাচাই করতে হবে।
এর আগে কাস্টমস থেকে পণ্য খালাসের পর বিল অব এন্ট্রি জমা দিলেই কেবল ত্রুটিপূর্ণ আমদানি বিল বা আমদানিকারকের কাছে সরাসরি আসা বিলের বিপরীতে মূল্য পরিশোধ করা যেত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে ত্রুটিপূর্ণ বিলের কারণে পণ্য খালাসে দেরি হতো এবং বিদেশি সরবরাহকারীদের অর্থ পেতে অপেক্ষা করতে হতো। এখন নিয়ম সহজ হওয়ায় তারা সময়মতো মূল্য পাবেন। এতে তাদের ঝুঁকি কমবে।
তাদের মতে, নতুন নিয়ম আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ফলে আমদানি ব্যয় কমবে। কারণ এতে কনফারমেশন চার্জ ও আমদানি ঋণের সুদের হার কমে আসবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
স্বাস্থ্যখাতে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে চীন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশের স্বাস্থখাতের উন্নয়নের জন্য চীন ১৩৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ইউনান শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার ধামরাইতে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের জন্য একটি হাসপাতাল তৈরি করতে সম্মত হয়েছে চীন। এছাড়াও, একটি এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরি নিয়েও দেশটির সাথে আলোচনা চলছে। কোভিডের সময়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি টিকা চীন থেকে কিনেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক চীন সফর সফল হয়েছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশি নাগরিকরা সহজেই উন্নত চিকিৎসার জন্য চীনে যেতে পারবেন। এ ধরনের সহযোগিতা উভয় দেশের জনগণের জন্য উপকারী হবে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে যৌথ উদ্যোগ ও বিনিয়োগ স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
স্মারক স্বর্ণমুদ্রার দাম বাড়লো ১৫ হাজার টাকা

দেশের ইতিহাসে যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে সোনার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৬৭ হাজার ৮৩৩ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে স্মারক স্বর্ণমুদ্রার দাম ফের বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিটি স্মারক স্বর্ণমুদ্রার দাম ১৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এতদিন যা ছিল এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা। স্বর্ণের স্মারক মুদ্রার দাম বাড়লেও রৌপ্যমুদ্রার দাম আগের নির্ধারণ করা ৭ হাজার টাকাই থাকছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এখন থেকে ২২ ক্যারেট সোনা দিয়ে তৈরি করা ১০ গ্রাম ওজনের স্মারক স্বর্ণমুদ্রার (বক্সসহ) প্রতিটি বিক্রি হবে এক লাখ ৫০ হাজার টাকায়। বর্তমানে বাজারে ১১টি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা (ফাইন সিলভার) রয়েছে। রুপার স্মারক মুদ্রার ওজন ২০ গ্রাম থেকে ৩১ দশমিক ৪৭ গ্রাম। রৌপ্যমুদ্রার দাম ৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা আছে।