জাতীয়
কারাগারে ডিভিশন পাচ্ছেন যারা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোট ৩৭ জন এমপি-মন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়ে দেশের বিভিন্ন কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে নয়জনকে কারাগারে ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বকশিবাজারে অবস্থিত কারা অধিদপ্তরে কারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
এক প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যেসব বন্দিরা সাজাভোগ করেছেন, তারা রেয়াত পেতে পেতে মুক্তি পেতে পারেন। যখন তারা মুক্তির আওতায় চলে আসেন, তখন তারা মুক্তি পেতে পারেন। যারা মুক্তির আওতায় চলে আসেন, তাদের বিষয়ে প্রস্তাবনা আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠাই। পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বেটিংয়ের পর চূড়ান্তভাবে যদি মাফ করতে হয় সেটি রাষ্ট্রপতি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে মাফ করার অধিকার রাষ্ট্রপতির। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রধান উপদেষ্টাও পারেন। এ রকম অনেক বন্দিদের বিষয়ে প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আছে। এই বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করছি। এই বিষয়ে অতি শিগগিরই একটি বৈঠকের প্রস্তাবনা আছে। যারা অক্ষম চলাফেরা করতে পারে না, অথবা যারা রেয়াত পাওয়ার যোগ্য, তাদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
পলাতক বন্দিদের মধ্যে জঙ্গি কতজন রয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত নয়জন জঙ্গি পালিয়েছে। এছাড়া, বিচারাধীন মামলার অনেক জঙ্গি পালিয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৭০ জন জঙ্গি পলাতক রয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক বন্দিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি পালিয়ে ছিল মোট ৯৮ জন। এদের মধ্যে অনেককে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশের সব কারাগারের ধারণক্ষমতা কত ও বর্তমানে কতজন বন্দি রয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের সব কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজারেরও কিছু বেশি। এই মুহূর্তে আমাদের কারাগারে আছে ৫০ হাজারেরও বেশি বন্দি।
কারাগারে হামলার সময় কত আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগার থেকে ৯৪টি অস্ত্র লুট হয়ে গিয়েছিল। এখনো উদ্ধার করা বাকি আছে ২৯টি অস্ত্র। অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মোট সংখ্যা ৬৫টি।
কারাগারে নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রমের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ম-বহির্ভূত কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলমান রয়েছে। যেসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মোটা দাগে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে আমি অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতা নিচ্ছি। এ বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা শিগগিরই দেখা যাবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে সৎ অফিসারদের আমরা পদায়ন করছি। লম্বা সময় ধরে কিছু লোক একই জায়গায় কাজ করছিল, তাদের সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
৫ আগস্টের পর এখন পর্যন্ত কারাগার থেকে সাধারণ মানুষসহ কতজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বের হয়ে এসেছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এ রকম আলোচিত মোট ৪৩ জন বন্দি এখন পর্যন্ত কারাগার থেকে জামিন পেয়ে মুক্ত হয়েছেন।
বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর কিছু কিছু কারাগারে হামলা হয়। এ সময় সাধারণ মানুষদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। এরা আসলে কারা ছিল। কারা কর্তৃপক্ষ তাদের চিহ্নিত করেছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, তাদের শনাক্ত করার জন্য আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্য নিচ্ছি। ৫ আগস্টের পরে যারা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের চিহ্নিত করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে অনেক সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতেও হামলা হয়েছিল। কারাগার যেহেতু একটি ক্ষোভের জায়গা ছিল, এরই বহিঃপ্রকাশ এসব হামলা।
তিনি বলেন, যেসব কারাগারে বিশৃঙ্খলা হয়েছিল, আমরা প্রতিটিতেই মামলা করেছি। মামলায় আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে আসামি করতে পারিনি। কারণ পরিস্থিতি যেহেতু ভিন্ন ছিল। অজ্ঞাতনামা আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে মূলত মামলা করা হয়েছে। আটটি কারাগারে বিশৃঙ্খলার দায়ে মোট আটটি মামলা দায়ের হয়েছে। আমাদের পাঁচটি কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়েছে, সে সংক্রান্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। তবে, সবমিলিয়ে আমাদের ১৭টি কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
কারাগারের কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্টের বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত আছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যোগদান করার পর মাদকের বিষয়ে ব্যাপক অভিযোগ পাচ্ছি। আসলে এই বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ বন্দিদের বিষয়ে যেমন পাচ্ছি, তেমনি কারারক্ষী এবং কারা কর্মকর্তাদের বিষয়েও পাচ্ছি। এই বিষয়ে আমাদের সবচেয়ে আশঙ্কার জায়গাটি হলো যে, এটিকে আমরা খুঁজে কীভাবে বের করব। কারাগারে যেন মাদক না ঢুকতে পারে, সেই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। মাদকাসক্ত কেউ কারা বিভাগে চাকরিরত অবস্থায় থাকতে পারবে না।
কারাগারে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ বিষয়ে আমরাও আমাদের মতো করে তদন্ত করছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে এই বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গত ১৫ বছরে যে পরিমাণ কাস্টডিয়ালের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, এটা আসলে আইনের একটা বিষয়। রুটিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি কোনো জায়গায় সন্দেহ হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে…। আর কেউ যদি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তাহলে তাদের আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব।
জুলাই ও আগস্টে আন্দোলন চলাকালে যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল, তাদের মধ্যে কতজন বন্দি এখনো কারাগারে আছে, আর কতজন জামিন পেয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্দোলন চলার সময় যেই ধরনের মামলা হয়েছিল এবং গ্রেপ্তার হয়েছিল এ ধরনের বন্দি এখন আমাদের কাছে নেই। সবাই জামিন প্রাপ্ত হয়ে গেছেন এবং জামিনে বের হয়েছেন। আন্দোলনের কতজন বন্দি জামিনে বের হয়ে গেছে তার সঠিক সংখ্যাটা বলা মুশকিল। তবে, সেই সময় আমাদের বন্দি সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার, এখন তা ৫৫ হাজার। তাহলে বলা যায় ওই সময় এসব মামলায় গ্রেপ্তার প্রায় ১৫ হাজার বন্দি ধীরে ধীরে জামিন পেয়ে বের হয়েছেন।
বিদেশি বন্দিদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সাজা ভোগ হওয়ার পরও তাদের অনেকে জেলে থেকে যায়। এখন পর্যন্ত কতজন বিদেশি বন্দি আছে এবং তাদের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বিদেশি বন্দিদের সাজা শেষ হয়ে গেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পরে আমরা তাদের ডি-পোর্ট করি। এখন আমাদের কারাগারে মোট ১৪৩ জন বিদেশি বন্দি রয়েছে। আমরা যদি ক্লিয়ারেন্স পাই, তাহলে আমরা তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।
গত ৫ আগস্টের পরে যেসব মন্ত্রী এবং এমপিরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তারা কারাগারে কোনো ডিভিশন পাচ্ছেন কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি গেজেটেড অফিসাররা কারাগারে আসলে ডিভিশন পেয়ে যান। বাকি যারা বিশিষ্ট ব্যক্তি বা এমপি-মন্ত্রী আছেন, তারা আবেদন করবেন অথবা এ বিষয়ে আদালত বললে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আর যাদের বিষয়ে আদালত বলবে না, তারা যদি আবেদন করেন, তখন সে আবেদনটি আমরা ডিসির কাছে পাঠাবো। ডিসি যদি অনুমতি দেন তাহলে আমরা তাদের ডিভিশন দিতে পারব। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের কাছে বিশেষ বন্দি (এমপি-মন্ত্রী) মোট ৩৭ জন… তাদের মধ্যে নয়জন ডিভিশন পাচ্ছেন, আর বাকিদের বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

জাতীয়
প্রতারকচক্র থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান পুলিশের

প্রতারকচক্র থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। বুধবার (৪ জুন) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ বিষয়টি জানিয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, সম্প্রতি প্রতারকচক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিনব কৌশলে মাইক্রোবাসে যাত্রী তুলে প্রতারণা করছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতারকচক্র যাত্রীদের নির্জন স্থানে নিয়ে জিম্মি করে তাদের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিচ্ছে।
আবার যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের কাছে ফোনকল করিয়ে বিকাশে অর্থ দাবি করছে। এ ধরনের অপরাধী থেকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে যাত্রী সাধারণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। এ ধরনের প্রতারণার কবল থেকে রক্ষা পেতে যাত্রীদের পথিমধ্যে থেকে মাইক্রোবাস বা এ জাতীয় যানবাহনে না উঠার জন্য পুলিশ অনুরোধ জানাচ্ছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, যাত্রাপথে অপরিচিত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো খাবার গ্রহণ না করা এবং অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ প্রতারকচক্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
একাকী ভ্রমণের সময় সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। নিজের অবস্থান এবং গন্তব্য সম্পর্কে পরিবারের সদস্য বা নিকটজনকে অবহিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
কাউকে সন্দেহ হলে বা সন্দেহজনক কোনো গাড়ি বা পরিস্থিতি লক্ষ্য করলে তৎক্ষণাৎ নিকটস্থ পুলিশকে জানান বা ৯৯৯ এ কল করতে বলা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। আজ বুধবার (৪ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে হাইকমিশনার কুক সম্মানজনক কিং চার্লস হারমনি পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।
পুরস্কারের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি একটি মহান সম্মানের বিষয়।’
অধ্যাপক ইউনূস ৯ জুন ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৩ জুন ফিরে আসবেন। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ঊর্ধ্বতন ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, যেমন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান চলাচল সংক্রান্ত সহযোগিতা, অভিবাসন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক উদ্যোগ ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা হাইকমিশনারকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে গঠিত কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা এ সপ্তাহে শুরু হয়েছে এবং শিগগির তা শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের সামুদ্রিক গবেষণা কার্যক্রম আরও উন্নত করতে যুক্তরাজ্যের কারিগরি সহায়তা এবং ব্রিটিশ গবেষকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং ব্রিটিশ উপহাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
আজ রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল

আসছে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা এবং শিডিউল বিপর্যয় নিরসনে আজ বুধবার (৪ জুন) রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল।
ঈদ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, ঈদের আগে ৫ জুন রাত ১২টার পর থেকে ঈদের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কনটেইনার ও জ্বালানী তেলবাহী ট্রেন ছাড়া অন্যান্য সকল গুডস ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
আরও বলা হয়, ঈদুল আজহার দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কতিপয় মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
কাফি
জাতীয়
পদ্মা সেতু নির্মাণে মোবাইলে সারচার্জ বন্ধে আইনি নোটিশ

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মোবাইল ফোনে ব্যয়ের ওপর চলামন ‘সারচার্জ’ কর্তন বন্ধে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দিয়েছে বেসরকারি ভোক্তা অধিকার ‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)।
আজ বুধবার (৪ জুন) ৫ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনবিআর ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং ৪ মোবাইল অপারেটরকে সিসিএস নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসাইন।
নোটিশে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের থেকে মোবাইলে খরচের ওপর ১ শতাংশ সারচার্জ চালু রয়েছে। ২০১৬ সালে ‘সারচার্জ‘ আরোপ করা হয় যা বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে এই সারচার্জের মাধ্যমে ভোক্তাদের থেকে দুই হাজার (২০০০) কোটি টাকার বেশি আদায় করা হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হলেও মোবাইল ফোনে সারচার্জ কর্তন বন্ধ করা হয়নি।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে ভোক্তাদের থেকে সারচার্জ কর্তনের জন্য ২০১৫ সালে ‘উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি (আরোপ ও আদায়) আইন’ করে সরকার। ওই আইনের অধীনে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে ‘সারচার্জ‘ আদায় শুরু করে সরকার। তবে আইনের ৪নং ধারায় বলা হয়েছে, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তৎকর্তৃক আরোপিত শর্তে ও নির্ধারিত মেয়াদে উন্নয়ন সারচার্জ আদায় করতে পারবে। কিন্তু প্রজ্ঞাপনে কোনো মেয়াদ নির্দিষ্ট না করেই সারচার্জ আদায় শুরু হয়। ফলে সারচার্জ আদায় ৯ বছর চললেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই। যা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ায় এবং মেয়াদ নির্দিষ্ট না করে বেআইনিভাবে ‘সারচার্জ‘ আদায়ের মাধ্যমে ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ফলে ভোক্তা অধিকার সংস্থা হিসেবে সিসিএস এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আইনি পদক্ষেপের প্রথম ধাপ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং টেলিটক কর্তৃপক্ষকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আগামী ৭ দিনের মধ্যে মোবাইল ফোনে ব্যয়ের ওপর চলমান ১ শতাংশ ‘সারচার্জ‘ কর্তন বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে সারচার্জ কর্তন বন্ধ করা না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
এক বদলির জন্য এক কোটি টাকা অফার এসেছিল: শিক্ষা উপদেষ্টা

একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। ওই পদে বদলির জন্য এক কোটি টাকা অফার করেছিল বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
বুধবার (৪ জুন) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় শিক্ষাখাতে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে এ কথা জানান তিনি। সভায় আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
শিক্ষাব্যবস্থা স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে অবস্থান করছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা উদাহরণ দেন, ‘একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। তার জন্য প্রথিতযশা একজন বুদ্ধিজীবী তদবির করেছিলেন। পরে তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি তিনি ওই পদের জন্য যোগ্য নন। তখন আমরা তাকে প্রত্যাখ্যান করি। পরবর্তীতে তিনি অন্য মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এবং তিনি আমাকে একটা অ্যামাউন্ট অফার করেন। ’
অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, এক কোটি টাকা অফার করেছিলেন তিনি। তিনি যাকে দিয়ে বলিয়েছিলেন, তিনি আমার পরিচিত। যিনিও একটি প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। আমি আর বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমার সহকর্মী যারা আছেন তারা যেন নৈতিক অবস্থানে স্থির থাকেন। আমি পদে থাকা অবস্থায় কোনো দুর্নীতি সহ্য করব না।
দুর্নীতির কথা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শোনেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে যে পত্রিকাগুলো আসে, সেগুলোর বেশিরভাগ কাটিংয়ে দুর্নীতির খবর থাকে। তবে কোনটা সত্য, কোনটা সত্য না, তা যাচাই করার সব সময় সক্ষমতা আমাদের হাতে থাকে না। তবে যেখানে ঘটনা ঘটে, আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট-জিরো টলারেন্স।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি