জাতীয়
টেলিটকের কাছে পাওনা ১৩ কোটি টাকা চাইলো ডিলাররা
২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৪ সালের চলতি মাস পর্যন্ত ডিলার হাউজের সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ (এসআর), সুপারভাইজার এবং ব্যান্ড প্রোমোটারদের (বিপি) বেতন বাবদ সকল বকেয়া কমপেনসেশন ১৩ কোটি টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করাসহ ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে টেলিটক ডিলারস এসোসিয়েশন বাংলাদেশ।
আজ রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান এসোসিয়েশনের সমন্বয়ক মো. রেজাউল করিম জাহাঙ্গীর।
এসোসিয়েশনের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে- প্রত্যেক ডিলার থেকে নেওয়া পল্লী বিদ্যুৎ/টেলিচার্জ বাবদ অতিরিক্ত সিকিউরিটি ডিপোজিট সাড়ে ৭ কোটি অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে; ডিলার এবং রিটেলারদের পাওনা শতবর্ষ, বর্ণমালা স্বাগতম এবং অপরাজিতা প্যাকেজের ইউজেস কমিশন অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে এবং অপরাজিতা প্যাকেজের এসএএফ কমিশন প্রদান করতে হবে; টেলিটক হতে অব্যাহতি নেওয়া সকল ডিলারদের সিকিউরিটি ডিপোজিটসহ সকল পাওনাদি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে এবং কিছু অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে কমপেনসেশন দেওয়ার আগেই ৩০ শতাংশ টাকা অগ্রিম নিয়ে কম্পেনসেশন দেওয়া হত, সেই ৩০ শতাংশ টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে।
এসোসিয়েশনের সংস্কার মূলক দাবিগুলো হচ্ছে- বিগত সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংস্কার করতে হবে এবং বাংলাদেশ টেলিকমিনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) কর্মকর্তাদের টেলিটক এ নিয়োগ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে; মার্কেটে সিম চাহিদা মোতাবেক প্রদান করতে হবে এবং নতুন প্যাকেজের সিম আনতে হবে; টেলি পে অ্যাপস আপগ্রেড করতে হবে এবং অ্যাপসের যে কোনও সমস্যার সমাধান দ্রুততম সময়ে করতে হবে এবং সিম এক্টিভেশন অ্যাপ আপগ্রেড করতে হবে; সকল টাওয়ারে ব্যাটারি ব্যাকআপ এর ব্যবস্থা করতে হবে; রিটেলারদের বিভিন্ন অফার সেলে এক্সট্রা কমিশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া মাদার সিম থেকে এসআর সিমে টাকা ট্রান্সফার করার পর অবিকৃত টাকা মাদার সিমে ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে; রিটেলারদের এনএমপি করার সুযোগ দিতে হবে এবং প্রত্যেকটা এনএমপি জন্য কমিশন প্রদান করতে হবে; দ্রুততম সময়ে সকল টুজি টাওয়ারকে ফোরজি তে রূপান্তর করতে হবে এবং ডাটা ব্যবহারের জন্য স্পেশাল স্টুডেন্ট সিম প্যাকেজ আনতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, আমাদের মাসিক এসআর, সুপারভাইজার এবং বিপিদের বেতন বাবদ কম্পেনসেশন, বর্তমান জিএম সর্বশেষ অক্টোবর নভেম্বর ও ডিসেম্বর ২০২১ সালে প্রদান করেছেন। কিন্তু জানুয়ারি ২০২২ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রেখেছে। টেলিটক প্রথমে প্রত্যেক ডিলারের কাছ থেকে জামানতস্বরূপ এক লক্ষ টাকা করে নেয় এবং পরবর্তীতে পল্লী বিদ্যুৎ/টেলিচার্জ বাবদ সারা বাংলাদেশের ডিলারদের কাছ থেকে ২০১৯ সালে ডিলার প্রতি ৩ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সিকিউরিটি ডিপোজিট নেয়।
কিন্তু বছর-খানেক পর কিছু অসাধু কর্মকর্তা পল্লীবিদ্যুৎ বিল ও টেলিচার্জ ব্যবসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওয়ার বাই টেলিটক হিসেবে চুক্তি করে। যাহাতে ডিলারদের বিদ্যুৎ বিল ও টেলিচার্জ ব্যবসা কমতে শুরু করে এবং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে আসে। তাহাদের এই কর্মকাণ্ড দেখে আমরা টেলিটককে বাঁচিয়ে রাখতে, টেলিটকের মার্কেটকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে কয়েকবার ম্যানেজমেন্টের সাথে বিভিন্ন সময় আলোচনা করি। কিন্তু তারা আমাদের বিষয়গুলো আমলে নেয়নি।
তিনি বলেন, অনেক ডিলার তাদের স্বোচ্ছাচারিতা সহ্য করতে না পেরে ব্যবসা ছেড়ে চলে গেছেন বা অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় অনেক ডিলারের সাথে এই ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। টেলিটক থেকে অব্যাহতি নেওয়া ডিলারদের জমা করা জামানতের টাকা, বকেয়া কমপেনসেশন, বিভিন্ন সময় পাওনা সিম কমিশনের টাকা চাওয়া হলে টেলিটক ম্যানেজমেন্ট অব্যাহতি নেওয়া ডিলারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বশেষ গত ২১ আগস্ট টেলিটকের এমডি ও জিএম-এর সাথে আমাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে মিটিং করা হলে তিনি কোন আশানুরূপ সমাধান দিতে পারেননি। তাই আমরা ডিলাররা বাধ্য হয়ে আমাদের সমুদয় পাওনাদি এবং টেলিটককে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে আমাদের মূল দাবি এবং সংস্কারমূলক দাবি সমূহ নিম্নে বর্ণনা করতে বাধ্য হলাম।
সংবাদ সম্মেলন থেকে হুঁশিয়ারি করে রেজাউল করিম জাহাঙ্গীর বলেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বর্তমান ও সাবেক ডিলারদের ন্যায্য পাওনা সমূহ আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে প্রদান করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমাদের দাবি সমূহ মেনে না নেওয়া পর্যন্ত সারা বাংলাদেশের সকল ডিলাররা লিফটিং এবং মার্কেটিং বন্ধ রাখবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
রিমান্ড শেষে কারাগারে তৌফিক-ই-ইলাহী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর বাড্ডায় সুমন সিকদারকে (৩১) গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) চারদিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজজামান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, গত ১০ সেপ্টেম্বর দিনগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুন করেন।
গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডা ফুজি টাওয়ারের উত্তর পাশে প্রগতি সরণীতে রাস্তার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন সুমন সিকদার। এ ঘটনায় তার মা মাসুমা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জনকে আসামি করা হয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। এর আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে অবসরে যান তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মার্কিন কর্মকর্তাদের গ্রাফিতি আঁকা আর্টবুক দিলেন ড. ইউনূস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় আঁকা বিভিন্ন গ্রাফিতি নিয়ে একটি আর্টবুক উপহার দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তার সঙ্গে দেখা করার পর সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদলকে গ্রাফিতি আঁকা আর্ট বইটি উপহার দেন।
আর্ট বইটিতে ঢাকা এবং অন্যান্য শহর ও শহরের দেওয়ালে জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় আঁকা কিছু সেরা শিল্পকর্মের ছবি রয়েছে।
গ্রাফিতিগুলোর ঐতিহাসিক তাৎপর্য সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এসব গ্রাফিতিতে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসন এবং তার নৃশংস বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী ছাত্র এবং তরুণদের আবেগ, আশা এবং আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে।
ড. ইউনূস বলেন, আপনাদের ঢাকার দেয়ালের দিকে তাকানোর অনুরোধ করবো। এই গ্রাফিতিগুলো এখনো আছে। শুধু বিপ্লবের পরেই আঁকা হয়নি। জুলাই মাসে বিক্ষোভের সময় ছাত্ররা গ্রাফিতি আঁকার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে, শেখ হাসিনার শাসন ও তার বাহিনীকে অস্বীকার করেছিল।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় তরুণ চিত্রশিল্পীরা ঢাকার দেয়ালগুলোকে শক্তিশালী ক্যানভাসে পরিণত করেছিল এবং ঢাকা বিশ্বের গ্রাফিতি রাজধানী হয়ে ওঠে। তৎকালীন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী বার্তা দিতে তারা স্লোগান এবং কবিতা লিখেছিল। তাদের বার্তাগুলো বিপ্লবের চেতনা এবং বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে।
এসব গ্রাফিতি আঁকার রং-তুলি কিভাবে জোগাড় হয়েছিল সে কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাদের কাছে রং ও ব্রাশ কেনার টাকা ছিল না। সাধারণ জনতা বিভিন্নভাবে তাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান এ প্রতিনিধিদলের দলের নেতৃত্ব দেন। এছাড়া এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ, উপ সহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর এবং মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের পরিচালক জেরোড ম্যাসন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে আগ্রহী: পররাষ্ট্রসচিব
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি বিশেষ অগ্রাধিকারে রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের এ সংস্কার প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজসভার পর পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করছে। তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। বৈঠকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
জসীম উদ্দিন বলেন, বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলেছি। ছাত্র-জনতার চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে সূচিত বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সরকার ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসব পদক্ষেপ সম্পর্কে আমরা প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছি।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। সরকারের সংস্কার পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা জানার আগ্রহ জানিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি এ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রয়েছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে এক মাসের একটু বেশি আগে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও সরকারের সংস্কারের বিষয়ে যেসব ধ্যানধারণা রয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সম্পৃক্ত হতে পারে তা নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে।
এই আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে এই অর্থে যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র একটি সম্যক ধারণা পেয়েছে। পাশাপাশি, সরকার কী করতে চায় সে সম্পর্কেও ধারণা পেলেন তারা। আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থপূর্ণ কর্মকাণ্ডের ভিত্তি তৈরি করেছে এই আলোচনা। পরবর্তিতে বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা এই আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
পাচার হওয়া টাকা ফেরত নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমরা বড় আকারে আর্থিক খাতে সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেছি এবং পাচার হওয়া অর্থসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে বিশেষায়িত জ্ঞান রয়েছে, সেটি হয়তো আমরা ব্যবহার করব, কিন্তু আলাপ-আলোচনা সবে শুরু হয়েছে। এর চূড়ান্ত রূপ পেতে কিছুটা সময় লাগবে।
পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন বলেন, প্রতিনিধিদলের এই সফরে প্রথম যে আশ্বাস, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করতে চায়। সেটারই প্রতিফলন হিসেবে সরকার গঠনের দ্বিতীয় মাসেই যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। দ্বিতীয়ত, আর্থিক সংস্কারের যেসব খাত চিহ্নিত করা হয়েছে, তার সব কটি খাতে তারা সার্বিকভাবে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। শ্রম আইন নিয়ে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো তাদের জানানো হয়েছে এবং এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
প্রতিনিধিদল আজ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গেও বৈঠক করে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা
দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, রবিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সাক্ষাতে এলে ড. ইউনূস এ সহায়তা চান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার স্বৈরশাসনের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদের অর্থ দেশে ফেরত আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতির সাগরে ছিলাম।
অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, তার প্রশাসন অর্থনীতি সংস্কার এবং পুনরায় সচল করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। আর্থিক খাতে সংস্কার এবং বিচার বিভাগ ও পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করার উদ্যোগ নিয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, তার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই ভোট জালিয়াতি প্রতিরোধ, বিচার বিভাগ, পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসন, দেশের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দফতরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, এ সংস্কার এজেন্ডায় সহায়তা করতে পারলে ওয়াশিংটন খুশি হবে।
এ সাক্ষাতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-সহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আর্থিক খাত সংস্কারে ১০০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের আর্থিক খাত সংস্কারে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য জানান।
১০০ কোটি ডলারের মধ্যে পলিসি বেইজড ঋণ হিসেবে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার এবং ইনভেস্টমেন্ট লোন ও গ্যারান্টি ফ্যাসিলিটি হিসেবে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে এ ঋণ অনুমোদন হওয়ার কথা।
ঋণটি পেতে বাংলাদেশকে তিনটি শর্ত পালন করতে হবে। সেগুলো হলো- ১. বেসরকারি খাতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন। ২. আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ। ৩. নতুন গঠিত টাস্কফোর্সের অডিট ফার্মের কার্যবিবরণী বিশ্বব্যাংকে উপস্থাপন করা।
এদিকে, বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তির আওতায় এই অর্থ দেওয়া হবে বলে জানান ঢাকায় সফররত ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে। আমরা সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এর আওতায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই।
কাফি