জাতীয়
ইউনূসের মেগাফোন কূটনীতিতে ভারতের অস্বস্তি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত অবস্থায় রয়েছে। একদিকে যখন হাসিনার ভারতে থাকার বিষয়টি বাংলাদেশের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকার ভারতকে অবাক করেছে।
বিবিসির আনবারাসান এথিরাজন জানার চেষ্টা করেছেন, এই দুই দেশের সম্পর্ক এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে?
শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবে দেখা হয় এবং তার ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময়টি ভারতের নিরাপত্তার জন্যও সুবিধাজনক ছিল, কারণ শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারত-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দমন করেছিলেন এবং কিছু সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছিলেন।
কিন্তু বর্তমানে ভারতে তার অবস্থান নেয়া এবং তিনি সেখানে কতদিন থাকবেন সে বিষয়টি দুই দেশের দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে। বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে ড. ইউনূসের গত সপ্তাহের এক সাক্ষাৎকারে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ায় দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, দিল্লিতে থাকার সময় শেখ হাসিনাকে যেন রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়। তিনি ওই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায়, তাহলে শর্ত হচ্ছে তাকে চুপ থাকতে হবে।”
শেখ হাসিনা দিল্লিতে যাবার পর যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তা বাংলাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল, ড. ইউনূস হয়তো সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও এরপর থেকে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে আর কোন বিবৃতি দেননি।
জুলাই ও অগাস্টে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য এবং তাকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের ভেতরে দাবি উঠেছে।
ড. ইউনূস সাক্ষাৎকারে আরো বলেছেন যে, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে একসাথে কাজ করতে হবে। দুই দেশের সম্পর্ক এখন ‘নিম্ন পর্যায়ে’ আছে বলেও তিনি বর্ণনা করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি। তবে কর্মকর্তারা ‘হতাশ’ বলে জানা গেছে।
এক ভারতীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “বাংলাদেশে কী ঘটছে সেগুলোর দিকে ভারত নজর রাখছে এবং ঢাকা থেকে সরকার ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কী ধরনের বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছে সেগুলোর দিকে ভারত লক্ষ্য রাখছে”।
ইউনূসের এ ধরণের বক্তব্যকে ভারতের সাবেক কূটনীতিকরা ‘মেগাফোন কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করছেন এবং বিষয়টিকে তারা বিস্মিত হয়েছেন। ড. ইউনূস মিডিয়ার মাধ্যমে বিতর্কিত দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছেন বলেও তারা মনে করেন।
“বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কথা বলার জন্য এবং দুই দেশের সকল উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য ভারত তাদের প্রস্তুতি থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে,” বলছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার ভিনা সিক্রি। অবসরপ্রাপ্ত এই কূটনীতিক বলেছেন, এই সমস্যাগুলো নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনা করা প্রয়োজন এবং কিসের ভিত্তিতে ড. ইউনূস দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ‘নিম্ন পর্যায়ে’ রয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন তা স্পষ্ট নয়।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে।
“ভারতীয় নেতারা কি কোনো মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন না? ড. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তার মতামত প্রকাশ করতে পারেন,” মুকিমুল আহসানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
“আপনি যদি সমালোচনা করতে চান তবে যে কোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন,” বলছিলেন মি. হোসেন।
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ড. ইউনূস টেলিফোনে কথা বললেও এখন পর্যন্ত কোনো মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়নি।
ভারতে একটি বড় ধরণের ঐকমত্য রয়েছে বলে মনে হচ্ছে যে, শেখ হাসিনা যতদিন না অন্য কোন দেশে প্রবেশের অনুমোদন পাচ্ছে, ততদিন তিনি ভারতে থাকতে পারবেন। তবে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বিক্ষোভের সময় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
মি. ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “যেহেতু তাকে বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি করা হয়েছে, আমরা তাকে আইনিভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করব।” তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানালেও শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম।
“তিনি এখানে ভারতের অতিথি হিসেবে অবস্থান করছেন। আমরা যদি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুর প্রতি মৌলিক সৌজন্যতা না করি, তাহলে ভবিষ্যতে কেন কেউ আমাদের বন্ধু হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেবে?” বলেছেন রিভা গাঙ্গুলী দাস, যিনি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার ছিলেন।
মি. ইউনূস তার সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর কাছে না পৌঁছানোর জন্যও দিল্লির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করানো হয়েছে যে সবাই ইসলামপন্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী এবং তারা এই দেশকে আফগানিস্তানে পরিণত করবে। এবং বাংলাদেশ শুধুমাত্র শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ। ভারত এই ব্যাখ্যাতেই বিমোহিত হয়ে আছে।”
কিন্তু ভারতীয় বিশ্লেষকরা ভিন্ন মত পোষণ করেন।
“আমি এই বক্তব্যের সাথে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশে আমাদের হাইকমিশনাররা কোনো লেবেল না দিয়েই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছেন,” ভিনা সিক্রি বলেন।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সময় ঢাকা ও দিল্লির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সেসময় ভারতের উত্তর-পূর্ব থেকে বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঢাকাকে অভিযুক্ত করেছিল দিল্লি। যদিও বিএনপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে বাংলাদেশের অনেকেই উল্লেখ করেছেন যে, ভারতের উচিত বিএনপির সাথে যোগাযোগ করা। সামনে যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন এই দলটি জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
“গত ৫ই অগাস্ট, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে কোনো ভারতীয় কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। আমি কারণ জানি না,” বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উল্টো বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা নিয়মিত বৈঠক করছেন।
শেখ হাসিনার পতনের পরের দিনগুলোয় নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়। এতে সন্দেহভাজন ইসলামপন্থীদের দ্বারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়ে যায়। ভারত ইতোমধ্যে হিন্দুদের ওপর হামলার খবরে বেশ কয়েকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন মাজারে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশে সুন্নি মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, এবং কট্টরপন্থীরা মাজার ও সমাধিকে ‘ইসলাম সম্মত নয়’ বলে মনে করে।
সিরাজগঞ্জ জেলায় আলী খাজা আলী পাগলা পীরের মাজারের তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী তামান্না আক্তার বলেন, “কয়েকদিন আগে একদল লোক এসে আমার শ্বশুরের সমাধি ভাংচুর করে এবং কোনো অনৈসলামিক অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদের সতর্ক করে”।
বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন বলেছেন, যারা ধর্মীয় স্থানকে টার্গেট করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ইসলামী কট্টরপন্থীরা যদি বাংলাদেশে একটি শক্ত অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে সেটা যত ছোটই হোক না কেন, তা দিল্লির জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।
গত কয়েক সপ্তাহে, একজন দণ্ডিত ইসলামী জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে নয়জন সন্দেহভাজন মৌলবাদী গত মাসে জেল ভেঙে পালিয়ে যায় – তাদের মধ্যে চারজনকে পরে গ্রেফতার করা হয়।
নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসিম উদ্দিন রাহমানি গত মাসে জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। শেখ হাসিনার সরকার এই গোষ্ঠীটিকে ২০১৬ সালে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করেছিল।
২০১৫ সালে এক নাস্তিক ব্লগারকে হত্যার অভিযোগে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্যান্য বিচারাধীন মামলার কারণে কারাগারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তিনি কারাগারে ছিলেন।
“গত মাসে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে মুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ভারত চেনে,” প্রাক্তন কূটনীতিক রিভা গাঙ্গুলি দাস একে একটি “গুরুতর বিষয়” বলে অভিহিত করেছেন।
এমআই

জাতীয়
প্রতারকচক্র থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান পুলিশের

প্রতারকচক্র থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। বুধবার (৪ জুন) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ বিষয়টি জানিয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, সম্প্রতি প্রতারকচক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিনব কৌশলে মাইক্রোবাসে যাত্রী তুলে প্রতারণা করছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতারকচক্র যাত্রীদের নির্জন স্থানে নিয়ে জিম্মি করে তাদের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিচ্ছে।
আবার যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের কাছে ফোনকল করিয়ে বিকাশে অর্থ দাবি করছে। এ ধরনের অপরাধী থেকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে যাত্রী সাধারণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। এ ধরনের প্রতারণার কবল থেকে রক্ষা পেতে যাত্রীদের পথিমধ্যে থেকে মাইক্রোবাস বা এ জাতীয় যানবাহনে না উঠার জন্য পুলিশ অনুরোধ জানাচ্ছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, যাত্রাপথে অপরিচিত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো খাবার গ্রহণ না করা এবং অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ প্রতারকচক্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
একাকী ভ্রমণের সময় সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। নিজের অবস্থান এবং গন্তব্য সম্পর্কে পরিবারের সদস্য বা নিকটজনকে অবহিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
কাউকে সন্দেহ হলে বা সন্দেহজনক কোনো গাড়ি বা পরিস্থিতি লক্ষ্য করলে তৎক্ষণাৎ নিকটস্থ পুলিশকে জানান বা ৯৯৯ এ কল করতে বলা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। আজ বুধবার (৪ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে হাইকমিশনার কুক সম্মানজনক কিং চার্লস হারমনি পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।
পুরস্কারের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি একটি মহান সম্মানের বিষয়।’
অধ্যাপক ইউনূস ৯ জুন ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৩ জুন ফিরে আসবেন। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ঊর্ধ্বতন ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, যেমন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান চলাচল সংক্রান্ত সহযোগিতা, অভিবাসন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক উদ্যোগ ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা হাইকমিশনারকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে গঠিত কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা এ সপ্তাহে শুরু হয়েছে এবং শিগগির তা শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের সামুদ্রিক গবেষণা কার্যক্রম আরও উন্নত করতে যুক্তরাজ্যের কারিগরি সহায়তা এবং ব্রিটিশ গবেষকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং ব্রিটিশ উপহাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
আজ রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল

আসছে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা এবং শিডিউল বিপর্যয় নিরসনে আজ বুধবার (৪ জুন) রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল।
ঈদ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, ঈদের আগে ৫ জুন রাত ১২টার পর থেকে ঈদের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কনটেইনার ও জ্বালানী তেলবাহী ট্রেন ছাড়া অন্যান্য সকল গুডস ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
আরও বলা হয়, ঈদুল আজহার দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কতিপয় মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
কাফি
জাতীয়
পদ্মা সেতু নির্মাণে মোবাইলে সারচার্জ বন্ধে আইনি নোটিশ

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মোবাইল ফোনে ব্যয়ের ওপর চলামন ‘সারচার্জ’ কর্তন বন্ধে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দিয়েছে বেসরকারি ভোক্তা অধিকার ‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)।
আজ বুধবার (৪ জুন) ৫ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনবিআর ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং ৪ মোবাইল অপারেটরকে সিসিএস নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসাইন।
নোটিশে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের থেকে মোবাইলে খরচের ওপর ১ শতাংশ সারচার্জ চালু রয়েছে। ২০১৬ সালে ‘সারচার্জ‘ আরোপ করা হয় যা বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে এই সারচার্জের মাধ্যমে ভোক্তাদের থেকে দুই হাজার (২০০০) কোটি টাকার বেশি আদায় করা হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হলেও মোবাইল ফোনে সারচার্জ কর্তন বন্ধ করা হয়নি।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে ভোক্তাদের থেকে সারচার্জ কর্তনের জন্য ২০১৫ সালে ‘উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি (আরোপ ও আদায়) আইন’ করে সরকার। ওই আইনের অধীনে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে ‘সারচার্জ‘ আদায় শুরু করে সরকার। তবে আইনের ৪নং ধারায় বলা হয়েছে, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তৎকর্তৃক আরোপিত শর্তে ও নির্ধারিত মেয়াদে উন্নয়ন সারচার্জ আদায় করতে পারবে। কিন্তু প্রজ্ঞাপনে কোনো মেয়াদ নির্দিষ্ট না করেই সারচার্জ আদায় শুরু হয়। ফলে সারচার্জ আদায় ৯ বছর চললেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই। যা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ায় এবং মেয়াদ নির্দিষ্ট না করে বেআইনিভাবে ‘সারচার্জ‘ আদায়ের মাধ্যমে ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ফলে ভোক্তা অধিকার সংস্থা হিসেবে সিসিএস এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আইনি পদক্ষেপের প্রথম ধাপ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং টেলিটক কর্তৃপক্ষকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আগামী ৭ দিনের মধ্যে মোবাইল ফোনে ব্যয়ের ওপর চলমান ১ শতাংশ ‘সারচার্জ‘ কর্তন বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে সারচার্জ কর্তন বন্ধ করা না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
এক বদলির জন্য এক কোটি টাকা অফার এসেছিল: শিক্ষা উপদেষ্টা

একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। ওই পদে বদলির জন্য এক কোটি টাকা অফার করেছিল বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
বুধবার (৪ জুন) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় শিক্ষাখাতে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে এ কথা জানান তিনি। সভায় আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
শিক্ষাব্যবস্থা স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে অবস্থান করছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা উদাহরণ দেন, ‘একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। তার জন্য প্রথিতযশা একজন বুদ্ধিজীবী তদবির করেছিলেন। পরে তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি তিনি ওই পদের জন্য যোগ্য নন। তখন আমরা তাকে প্রত্যাখ্যান করি। পরবর্তীতে তিনি অন্য মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এবং তিনি আমাকে একটা অ্যামাউন্ট অফার করেন। ’
অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, এক কোটি টাকা অফার করেছিলেন তিনি। তিনি যাকে দিয়ে বলিয়েছিলেন, তিনি আমার পরিচিত। যিনিও একটি প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। আমি আর বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমার সহকর্মী যারা আছেন তারা যেন নৈতিক অবস্থানে স্থির থাকেন। আমি পদে থাকা অবস্থায় কোনো দুর্নীতি সহ্য করব না।
দুর্নীতির কথা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শোনেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে যে পত্রিকাগুলো আসে, সেগুলোর বেশিরভাগ কাটিংয়ে দুর্নীতির খবর থাকে। তবে কোনটা সত্য, কোনটা সত্য না, তা যাচাই করার সব সময় সক্ষমতা আমাদের হাতে থাকে না। তবে যেখানে ঘটনা ঘটে, আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট-জিরো টলারেন্স।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি