জাতীয়
পাচারের অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা। এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব ও চিঠি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে দেশটি।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলাস সাক্ষাৎ করতে এলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে দেশটির সহযোগিতা চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকমিশনার ওই অনুরোধ জানান।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, কানাডাসহ বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, কৃষিখাতে সহযোগিতা, পাচার হওয়া অর্থ ফেরতসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয় উপদেষ্টা হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বাংলাদেশের অনেক বড় বড় অপরাধী বিপুল পরিমাণ অর্থ কানাডায় পাচার করে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে।
হাইকমিশনার এ বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে জানান, অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং ও সময়সাপেক্ষ, কিন্তু অসম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব ও চিঠি প্রেরণের অনুরোধ করেন তিনি।
হাইকমিশনার কানাডাসহ বিদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে বিদেশিদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। আমরা তাদের জন্য পরিপূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে উন্নতি ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে খুব শিগগির আরও সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন মর্মে উপদেষ্টা এসময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে হাইকমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।
তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী মিয়ানমারের নাগরিকসহ সেখানে কাজ করা দেশি-বিদেশি এনজিও কর্মী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সীমিত আর্থিক সামর্থ্যের মধ্যে থেকেও বাংলাদেশ অনেক বছর ধরে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এখন সময় এসেছে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর নিজ দেশে প্রত্যাবাসন ও অন্যদেশে পুনর্বাসন করা। উপদেষ্টা এ সময় কানাডাতে কিছু রোহিঙ্গার পুনর্বাসনের অনুরোধ করেন।
পুলিশ সংস্কারে উপদেষ্টা কানাডার সহায়তা চাইলে হাইকমিশনার বলেন, পুলিশ প্রশিক্ষণে কানাডার সহযোগিতা বিষয়ক একটি প্রকল্প বাংলাদেশে চালু রয়েছে। এটিকে সম্প্রসারণের মাধ্যমে এ বিষয়ে কানাডা আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।
হাইকমিশনার বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তরে কানাডার অর্থায়নে ‘কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নে উপদেষ্টার সহযোগিতা চান। উপদেষ্টা এক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

জাতীয়
করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি সতর্কবার্তা

কোভিড-১৯ সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় সকলকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (০৬ জুন) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় সকলকে মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। বিশেষত বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের এ ধরনের স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। তিনি ঢাকা বিভাগের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। এরপরই শুক্রবার সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা এলো।
জাতীয়
রাত পোহলেই ত্যাগের উৎসব ঈদুল আজহা

রাত পোহালেই আগামীকাল শনিবার (৭ জুন) সারাদেশে উদযাপিত হবে মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এক উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা।
আমাদের দেশে এটি কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। ঈদুল আযহা মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর হয়ে আসছে। আগামীকাল সকালে মুসল্লিরা কাছাকাছি ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
দেশবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব। পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারা।
ঈদের নামাজের জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে ঈদের জামাতে নামাজ পড়বেন। সে জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে।
এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নত বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। ঈদুল আযহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেছেন।
স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী আজ শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদুল আযহা উদযাপিত হচ্ছে। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজিরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করছেন। সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে পৃথিবীর বহু দেশ আজ ঈদুল আযহা উদযাপন করছে।
ঈদুল আযহা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইসলামে বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবেহ সম্পন্ন করেন তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামি শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। ইসলামে কোরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে ঈদুল আযহার ছুটি গতকাল বৃহস্পতিবার ৫ জুন থেকে শুরু হয়েছে। ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
এর আগে গত ৬ মে সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ঈদের আগে দুই শনিবার অফিস চালু রাখারও সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সে অনুযায়ী দুই শনিবার অফিস খোলা ছিল। নির্বাহী আদেশে দু’দিন ছুটির ফলে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সবমিলিয়ে টানা ১০ দিনের ছুটিতে সরকারি চাকরিজীবীরা।
সংবাদ মাধ্যমেও ঈদ উপলক্ষে পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়।
ঈদুল আজহার যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। ঈদের ছুটিতে দেশের সব সিএনজি এবং ফিলিং স্টেশন খোলা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যাত্রী হয়রানি সহ যে কোন ভোগান্তির খবর পেলেই সাথে সাথে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
জাতীয়
আগামীকাল বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫। ‘ফুড সেফটি: সায়েন্স ইন অ্যাকশন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামীকাল ৭ জুন উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫।
এ বছর দিবসটি উপলক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য গবেষণা এবং জ্ঞানের অগ্রগতিতে বিজ্ঞানের ভূমিকার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে শুক্রবার (৬ জুন) এক সংবাদ বিবৃতিতে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস তৈরির মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। বিশেষ করে খাবারে লবণের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি আঁশযুক্ত খাবার ও পরিমিত পরিমাণে শাকসবজি গ্রহণ করা আবশ্যক। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় আইন বা নীতিমালার প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জোরদার করতে হবে।’
সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এমন একটি পুষ্টিজনিত ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে যেখানে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা সংশ্লিষ্ট দীর্ঘস্থায়ী অসংক্রামক রোগ এবং বিপাকজনিত রোগ ক্রমশ প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বে প্রতিবছর এক কোটিরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মারা যায় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই মৃত্যুর অধিকাংশই স্বাস্থ্যকর খাদ্য বিষয়ক নীতির মতো বিভিন্ন ধরনের নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সর্বশেষ ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে, ২০২২’ এর তথ্য অনুযায়ী ৩৭ শতাংশ মানুষ খাবারের সঙ্গে লবণ গ্রহণ করে এবং ১৩ শতাংশ মানুষ মাত্রাতিরিক্ত লবণযুক্ত ফাস্ট ফুড খেয়ে থাকে। এতে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে।
জাতীয়
ঈদের আগের দিন সড়কে ঝরলো ১৮ প্রাণ

সারাদেশে একদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গাইবান্ধায় আটজন, ময়মনসিংহে চারজন, ঝিনাইদহে দুজন, কিশোরগঞ্জে দুজন ও টাঙ্গাইলে দুজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন।
গাইবান্ধা
জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পলাশবাড়ীতে তিনজন, গোবিন্দগঞ্জে পাঁচজন হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও একজন। তারা হলেন, পলাশবাড়ী উপজেলার খামার নড়াইল গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে লিয়াকত (১৮), ওয়াদুদ প্রাণের ছেলে ইমরুল (২০) ও নছুর উদ্দিনের ছেলে অটো চালক গনি মিয়া (৪০)। বাকিরা হলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রইচ উদ্দিন (৬০), আনোয়ার হোসেন (৩০) ও তার স্ত্রী শারমিন আকতার (২৬)। বাকি দুজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ময়মনসিংহ
পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২ জন। তারা হলেন, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় গ্রামের মো. পারভেজ মিয়া (৩৫), তার ছেলে মো. হাসান মিয়া (৮), ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার পিঠাসুটা গ্রামের মো. মন্নাছ মিয়ার ছেলে মো. শরীফ মিয়া (২৫) ও একই উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে হাবিবুর রহমান হবি (৪৫)।
ঝিনাইদহ
পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় কাজল হোসেন (১৮) নামে এক কলেজছাত্র ও আদনান (১০) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। এসময় আরও দুজন আহত হয়েছেন। তাদের কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ
জেলার উল্লাপাড়ায় বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এতে মাইক্রোবাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে গেছে। তবে কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি।
টাঙ্গাইল
ঈদযাত্রায় টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ট্রেন ও বাসের ছাদ থেকে ছিটকে পড়ে দুজন নিহত হয়েছেন। বাসের ছাদ থেকে পড়ে নিহতের নাম রানা। অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি।
কিশোরগঞ্জ
জেলার পাকুন্দিয়ায় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। নিহতরা হলেন, পান্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরটেকি গ্রামের দুলাল মিয়া (৪৫) ও একই ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের শাহাব উদ্দিন (৫৫)।
জাতীয়
এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো একদিন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ভাষণের শুরুতে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, বয়স্ক, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাইকে সালাম জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি সবাইকে হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত দেশ গড়ার আহ্বান জানান।
পরে নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি জানি, আগামী জাতীয় নির্বাচন কখন হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানার জন্য রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে বিপুল আগ্রহ রয়েছে। আমি বারবার বলেছি, এই নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ের মধ্যে দেশে নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যা যা করা দরকার, সরকার তাই করছে।
তিনি বলেন, এখানে মনে রাখা জরুরি, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে যতবার গভীর সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে তার সবগুলোরই প্রধান কারণ ছিল ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বারবার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল বর্বর ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছিল। এই ধরনের নির্বাচন যারা আয়োজন করে তারা জাতির কাছে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। এমন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে দল ক্ষমতায় আসে তারাও জনগণের কাছে ঘৃণিত হয়ে থাকে।
‘এ সরকারের একটি বড় দায়িত্ব হলো একটি পরিচ্ছন্ন, উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ, বিপুলভাবে অংশগ্রহণের পরিবেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করা যাতে করে দেশ ভবিষ্যতে নতুন সংকটে না পড়ে। এজন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। যেই প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত সেগুলোতে যদি সুশাসন নিশ্চিত করা না যায় তাহলে ছাত্র-জনতার সকল আত্মত্যাগ বিফলে যাবে।’
‘সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। সে বিবেচনায় আগামী রোজার ঈদের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছাতে পারব বলে বিশ্বাস করি। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার—যা কিনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি আমাদের সম্মিলিত দায়—সে বিষয়ে আমরা দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পারব। এতে আমাদের ওপর আপনাদের অর্পিত ম্যান্ডেট ন্যূনতম হলেও বাস্তবায়ন করে যেতে পারব। সে বিবেচনায় ও ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সকল পক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। পাশাপাশি, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন সংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আমি আজ দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করছি যে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে আপনাদের কাছে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে।’
তিনি বলেন, আমরা এমন নির্বাচন চাই যা দেখে অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা তৃপ্তি পাবে, তাদের আত্মা শান্তি পাবে। আমরা চাই আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোটার, সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ও দল অংশ নিক। এটা সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকুক।