অর্থনীতি
১০ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকা
বিতরণ করা ঋণের গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) হিসেবে জমা রাখতে হয় ব্যাংকগুলোকে। তবে চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ১০টি ব্যাংক প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ এসব ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর ভঙ্গুর আর্থিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি উঠে এসেছে।
ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। আর বেসরকারি খাতের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং আইএফআইসি ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বেসরকারি খাতের নানা সমস্যায় জর্জরিত ন্যাশনাল ব্যাংক সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতির মুখে পড়েছে। ব্যাংকটির প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭০৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মতে, ব্যাংকগুলোকে পরিচালন মুনাফার ০.৫ থেকে ৫ শতাংশ সাধারণ ক্যাটাগরির ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রাখতে হয়। আর নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ। কোনো সন্দেহজনক খেলাপি ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ৫০ শতাংশ। তবে মন্দ বা লোকসান ক্যাটাগরির খেলাপি ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি আলাদা রাখতে হবে।
নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতি ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি অশনি সংকেত। এটি ব্যাংকগুলোর দুর্বল আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে। যা মূলত একটি ব্যাংকের উচ্চ খেলাপি ঋণের ফল। জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের সার্বিক প্রভিশন ঘাটতি ছিল ২৪ হাজার ৮১০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা ১০টি ব্যাংকের চেয়ে কম।
খাত সংশ্লিষ্টরা এবিষয়ে বলেন, ব্যাংকের বর্তমান যে অবস্থা তাতে প্রভিশন ঘাটতি হবে। দিন দিন খেলাপি ঋণ বাড়ছে। সম্প্রতি খেলাপি ঋণ ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে বেশি, তাই প্রভিশন ঘাটতি বাড়বে। শতভাগ প্রভিশন রাখা দরকার এখানে। প্রভিশন বাড়তে থাকলে ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রভিশন কমাতে হলে আগে খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। পাশাপাশি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যাছাই-বাছাই করে দিতে হবে, যাতে টাকাগুলো আবার ফেরত আসে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। একই এ সময়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ইসলামী ব্যাংকের অর্ধেকের বেশি টাকা নিছে এস আলম গোষ্ঠী: চেয়ারম্যান
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে নামে-বেনামে মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি নিয়ে গেছে এস আলম গোষ্ঠী। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে নতুন বোর্ডের সভা শেষে ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্যাংকটি ঋণ হিসেবে যত অর্থ বিতরণ করেছে, তার অর্ধেকের বেশি টাকা একাই নিয়েছে সাত বছর ধরে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গোষ্ঠী। এসব ঋণের পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখন বের করা হচ্ছে। এস আলমের ঋণের বিপরীতে যেসব সম্পদ বন্ধক দেওয়া আছে, তারও পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। কারণ, এসব সম্পদের দাম বেশি দেখিয়ে ঋণ বের করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকের ঋণের বিপরীতে বন্ধক দেওয়া হয়নি, এস আলম গোষ্ঠীর এমন সম্পদের খোঁজ নিতে আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ব্যাংকের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, এসব সম্পদ খুঁজে পাওয়ার পর তা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় এখন ‘প্রাণ খুলে’ কথা বলতে পারছেন বলে মন্তব্য করেন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।
ইসলামী ব্যাংক এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার পর আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকটির নতুন পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভা হয়। ওই সভা শেষে চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ব্যাংকের পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
গত ২২ আগস্ট ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকে এবং ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রূপালী ব্যাংকের এমডি ছিলেন তিনি।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারিরর পর সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব পেয়েছিলাম। হলমার্কের ঘটনা আলোচনায় আসার পরও সোনালী ব্যাংকে আমানত বেড়েছিল। ইসলামী ব্যাংকের সমস্যাটি অনেক বড়। এ জন্য আমরা দায়িত্ব নিয়েই পথনকশা প্রণয়ন করেছি। প্রতিদিন ব্যাংকে উপস্থিত থেকে তদারকির চেষ্টা করে যাচ্ছি। চলতি বছর পুরোটাই হবে গ্রাহকের আস্থা ফেরানোর বছর। সামনের বছরেও এ কাজ চলবে। ২০২৬-২৭ সাল হবে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। ২০২৮-৩০ সাল এগিয়ে যাওয়ার বছর।
ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, ২০২২ সাল থেকে ব্যাংকে তারল্যসংকট শুরু হয়। এখন ব্যাংকের গ্রাহক, প্রবাসী আয় পাঠানো গ্রাহক, শেয়ারধারী ও বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান-কেউই ব্যাংকের ওপর আস্থা পাচ্ছেন না। এ জন্য ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ে তিনটি নিরীক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ব্যাংকের ঋণ, বিনিয়োগ ও মানবসম্পদের ওপর নিরীক্ষা করবে। আগে ভালো নিরীক্ষা হয়নি, তাই আজ ব্যাংকের এই পরিণতি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেক্সিমকোর সব সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ
শেয়ারবাজারের বিতর্কিত বিনিয়োগকারী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠানগুলোর কী পরিমাণ বকেয়া ঋণ আছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঋণ পরিশোধে নিয়মবহির্ভূত কী সুবিধা দেয়া হয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজীব, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আলুতে ১৩ ও পেঁয়াজে ৫ শতাংশ শুল্ক কমালো সরকার
বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পেঁয়াজ, আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একইসঙ্গে, কিছু কীটনাশক আমদানিতেও শুল্ক কমানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান এবং এর প্রেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে দেশে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটেছে যা এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। তার ওপর দেশের পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কীটনাশক, আলু ও পেঁয়াজের মতো গুরুত্বপূর্ণ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমানোর ব্যবস্থা নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করে।
এ প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর ছাড়ের মাধ্যমে উল্লিখিত পণ্যগুলোর আমদানি সহজ করে সরবরাহ বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, আলুতে কাস্টমস ডিউটি (সিডি) ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এছাড়া আগে এ পণ্যটির ওপর প্রযোজ্য থাকা ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে পণ্যটিতে মোট শুল্ক কমেছে ১৩ শতাংশ।
এছাড়া কীটনাশকের ওপর প্রযোজ্য ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে ও সমুদয় রেগুলেটরি শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
পেঁয়াজের ওপর প্রযোজ্য ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেও প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এনবিআর জানায়, আলু এবং পেঁয়াজ অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদনের মাধ্যমে যেহেতু দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ মেটানো হয় এবং আমদানি শুল্ক কম থাকলে দেশীয় উৎপাদনের ওপর প্রযোজ্য প্রতিরক্ষণ হ্রাস পায়, এ কারণে কৃষককে আলু ও পেঁয়াজ উৎপাদনে উৎসাহিত করতে উল্লিখিত শুল্ক ছাড় আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
হিলি দিয়ে ফের সজনে ডাঁটা আমদানি
সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধের পর দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় আবারো দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সজনে ডাঁটা আমদানি শুরু হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভারতীয় দুইটি ট্রাকে ১৫ মেট্রিক টন সজনে ডাঁটা আমদানি করা হয়।
হিলি স্থলবন্দর এলাকার ফাতেমা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের নাসিক এলাকা থেকে এসব সজনে ডাঁটা আমদানি করছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানিকারক জানান, দেশের বাজারে সজনে ডাঁটার চাহিদা থাকায় ভারত থেকে আবারো সজনে ডাঁটা আমদানি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে দুটি ট্রাকে ১৫ মেট্রিক টন সজনে ডাঁটা আমদানি করা হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, এরইমধ্যে ভারত থেকে আমদানির জন্য ১০০ মেট্রিকটন সজনে ডাঁটা এলসি করা হয়েছে। এসব সজনে ভারতের নাসিক থেকে আমদানি করা হবে।
হিলি কাস্টমস তথ্যমতে, সর্বশেষ প্রায় পাঁচ মাস আগে এই বন্দর দিয়ে সজনে ডাঁটা আমদানি হয়েছিল।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
খুললো পোশাক কারখানা, কর্মস্থলে ছুটছেন শ্রমিকরা
সরকারের পক্ষে নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে সব কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। গত কয়েক দিনের মতো গতকাল বুধবারও পোশাকশিল্প অধ্যুষিত এলাকায় বিক্ষোভ-ভাঙচুর হলে অন্তত ১৬৭ প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজধানীর উত্তরায় নিজস্ব ভবনে বৈঠকে বসেন বিজিএমইএ নেতারা। এতে সংগঠনের সাবেক ছয় সভাপতি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, শিল্প পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন। বৈঠকে যৌথ বাহিনী বিশৃঙ্খলা রোধে কঠোর অবস্থানের আশ্বাস দিলে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসায়ী নেতারা।
পরে সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী থেকে আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বিশৃঙ্খলাকারীদের গ্রেপ্তার করবে তারা। পোশাক মালিকরা আশ্বস্ত হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে একযোগে সব কারখানা খোলা রাখা হবে। এতদিন শিল্প এলাকায় সেনাবাহিনী টহল দিয়েছে। যৌথ বাহিনী হলেও ছিল না গ্রেপ্তারের ক্ষমতা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারা মতামত দেন, এতদিন যৌথ বাহিনী আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে বিরত রাখার চেষ্টা করেছে। এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা বেড়েছে। বিশৃঙ্খলা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থানের কথা জানানো হয়। ব্যবসায়ী নেতারা নারীর চেয়ে পুরুষ শ্রমিক বেশি নিয়োগের দাবিকে ‘অদ্ভুত’ বলেও মন্তব্য করেন।
এদিকে আজ সকাল থেকে শিল্পনগরী গাজীপুরে দলে দলে কর্মস্থলে যোগ দেন পোশাক শ্রমিকরা। সকালে সরেজমিনে টঙ্গী বিসিক, ভোগরা বাইপাস, বাঘের বাজার ও মাওনা এলাকায় শ্রমিকদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে দেখা যায়। কারখানাগুলোতেও চলছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।
শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদারে মোড়ে মোড়ে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের এসপি সারওয়ার আলম জানান, সকাল থেকে এলাকার পরিবেশে শান্ত রয়েছে। শ্রমিকরা দলে দলে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে এবং আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে জেলা পুলিশ, শিল্প পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, সেনা সদস্য ও বিজিবি সম্মিলিতভাবে কাজ করছে।
এমআই