অর্থনীতি
ক্রেডিট কার্ডসহ বাড়বে সব ধরনের সুদহার
দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরেক দফা নীতি সুদহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। নীতি সুদহার বাড়লে ক্রেডিট কার্ডসহ অন্যান্য সুহারও বেড়ে যাবে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকার্স সভায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এমন আভাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে থাকা একাধিক ব্যাংকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৈঠকে গভর্নর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখতে ১২০ টাকার বেশি ডলার বিক্রি না করার পরামর্শ দেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এই মাসেও যদি বাড়ে, তাহলে চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মুদ্রানীতির বৈঠক করে নীতি সুদ হার আরও বাড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হতে পারে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নীতি সুদহার বাড়াতে থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের এমন সতর্ক বার্তা দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
বৈঠক শেষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের মুদ্রা বাজার এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। তবে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এখনো সম্ভব হয়নি। যতদিন মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকতে, নীতি সুদ হারও বাড়তে থাকবে।
এর আগে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের আমলে সার্কুলারের বাইরে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো এখন আর কার্যকর থাকবে না। সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে সুদের হার নিয়ে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পাবে। অর্থাৎ মৌখিকভাবে বেঁধে দেওয়া ঋণের সুদ হার এখন আর ১৪ শতাংশে আটকে রাখা হবে না। মার্কেট অনুযায়ী ঋণের সুদ হার ঠিক হবে। তবে, এই প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে কেউ যাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় বা অনৈতিকতার আশ্রয় না নেয়, সে বিষয়ে শতর্ক করা হয়েছে।
একই সঙ্গে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময় ক্রেডিট কার্ডের সুদ হার ১৮ শতাংশের বেশি যাতে অতিক্রম না করে সেটি মৌখিক নির্দেশনা ছিল। তা বাতিল করে সাকুর্লার অনুযায়ী সুদ হার নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বাড়বে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার।
সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণে ক্রলিং পেগের ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো এখন ১২০ টাকার মধ্যেই ডলার ক্রয় বিক্রি করতে পারছেন। এই ডলার ক্রয় বিক্রয় যেন কোনোভাবেই ১২০ টাকার উপরে না যায়, সে বিষয়ে ব্যাংকারদের অনুরোধ করেছেন গভর্নর। যদি দর আরও বৃদ্ধির দরকার হয়, মার্কেট বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকই নির্দেশনা দেবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সার্বিক বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ব্যাংকার্স মিটিংয়ে অনেক বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সুদের হারের যেসব মৌখিক ক্যাব ছিল, সেগুলো আর থাকবে না। আর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নীতি সুদ হার বাড়তে থাকবে বলেও উল্লেখ করেছেন গভর্নর। এছাড়া, ব্যাংকগুলোকে ১২০ টাকার মধ্যে ডলার কেনাবেচা করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুখ থুবড়ে পড়েছে এডিপি বাস্তবায়ন, একযুগে সর্বনিম্ন
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাস জুলাই-অক্টোবরে সর্বনিম্ন অর্থছাড় হয়েছে। এতে গত এক যুগের মধ্যে আলোচ্য সময়ে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এডিপি থেকে সরকার বড় ধরনের কাটছাঁট করতে চায়। তারই প্রভাব পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও কাটছাঁটের প্রভাব পড়েনি বড় বরাদ্দ পাওয়া এলজিইডি ও সড়ক খাতে। তবে বরাবরের মতোই উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত।
রোববার (২৪ নভেম্বর) চার মাসের এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে আইএমইডি।
এতে দেখা যায়, চার মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। গত এক যুগে এর চেয়ে কম এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটে নেই। সে আলোকে বলা যায়, গত এক যুগে এত কম এডিপি বাস্তবায়ন হয়নি।
গত চার মাসে ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা অর্থছাড় হয়েছে, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের পর সর্বনিম্ন। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩১ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা ছাড় হয়েছিল এই সময়ে। তার আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছাড় হয়েছিল ৩২ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা। মাস হিসেবে শুধু গত অক্টোবরে অর্থছাড় হয়েছে ৮ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। যেখানে আগের অর্থবছরের অক্টোবর মাসে ছাড় হয়েছিল ১১ হাজার ৮২ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) থেকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা কাটছাঁট হতে পারে। এ কারণে বেশি প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোতে অর্থছাড় করা হচ্ছে। প্রকল্পের অগ্রাধিকার যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার ধরা হয় ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোন প্রকল্প বেশি প্রয়োজনীয়, কোনটির প্রয়োজনীয়তা কম তা যাচাই বাছাই চলছে। প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি সংকটের মধ্যে আছে। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হচ্ছে। ফলে সরকারকে ব্যয় কমাতে হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে অপচয়মূলক ব্যয় কমানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে খরচ কমানোর বড় জায়গা হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
উন্নয়নশীল দেশের জন্য ৩০ হাজার কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি
আজারবাইজানে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলার পাওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এই চুক্তি ২০৩৫ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। দুই সপ্তাহের দর-কষাকষির পর বাকুতে কপ ২৯ এর প্রতিনিধিরা শনিবার সমঝোতায় পৌঁছান। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও অভিযোজন ব্যয় বাবদ উচ্চ কার্বন নির্গমনকারী উন্নত দেশগুলো বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলার ব্যয়ের আশ্বাস দিয়েছে। যদিও এই অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। চুক্তিতে বার্ষিক এক দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ডলারের বিস্তৃত জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্য অর্জনের কথাও রাখা হয়েছে।
এরমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি দুই তহবিলই থাকছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ মোকাবিলার জন্য এই অর্থ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। কপ ২৯ এর আসর শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু তহবিল নিয়ে ২০০ দেশ সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় সময় আরো বাড়ানো হয়। এক পর্যায়ে উন্নয়নশীল ও দ্বীপদেশগুলোর প্রতিনিধিরা হতাশা ব্যক্ত করে সম্মেলন থেকে ওয়াকআউট করেন৷ জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো চুক্তি দুর্বল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এর আগের চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়নে দরিদ্র দেশগুলোকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল উন্নত দেশগুলো। তবে তা দুই বছর পর ২০২২ সালে গিয়ে বাস্তবায়িত হয়। এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালে। নতুন সমঝোতায় তহবিলের অঙ্ক বাড়লেও তা যথেষ্ট নয় বলে সমালোচনা করেছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সায়মন স্টিল এই চুক্তিকে মানবতার বীমা বলে অভিহিত করেছে।
তিনি বলেন, এই যাত্রা কঠিন হলেও আমরা একটি চুক্তি সরবরাহ করতে পেরেছি। তার আশা চুক্তির মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির বিকাশ এবং শতাধিক মানুষের জীবন রক্ষা পাবে। নতুন কর্মসংস্থান, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং সবার জন্য সস্তা ও পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির দুয়ার উন্মোচন হবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।
তবে বলেছেন, যেকোনো বিমা পলিসির মতই এটা তখনই কাজ করবে যদি প্রিমিয়াম সবটা এবং সময়মত পরিশোধ করা হয়। অল্প কয়েকজনের প্রতিরোধ জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, এটা ঠিক যে কারো কারো প্রতিরোধের কারণে আজকে রাতের এই চুক্তিটি যথেষ্ট হয়নি। যারা এখানে অগ্রযাত্রা থামাতে, জলবায়ু ন্যায্যতাকে রুখতে এবং আমাদের জাতিসংঘের বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে এসেছিলেন তারা খুবই বাজেভাবে হেরে গেছেন। ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে তারা ত্যাগ করেননি বলে জানান বেয়ারবক। তার মতে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলারের চুক্তিটি কেবল সূচনা।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ঐতিহাসিক দায় কেউ ভুলে যায়নি৷ তরুণ প্রজন্মের সদস্য হিসেবে এটা পরিষ্কার: আমরা অতীতের সমাধান দিয়ে ভবিষ্যতের জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবো না৷ আমরা জানি আজকে শুধু আমাদের সিদ্ধান্ত দিয়ে সব প্রয়োজন মেটানো যাবে না৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোর হতাশা প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ নিয়ে সবাই খুশি নয়।
ভারতের প্রতিনিধি চাঁদনি রায়না বলেছেন, এশিয়ান দেশগুলো এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি বলেন, আমরা এই ফলাফলে হতাশ৷ কারণ উন্নত দেশের দলগুলো স্পষ্টতই তাদের দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছা প্রকাশ করছে।
তিনি আরো বলেন, আমি দুঃখের সাথে বলতে চাই এই নথিটি একটি বিভ্রম ছাড়া আর কিছু না। আমরা যে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি তার সমাধান এটি করবে না। তাই, এই নথি গ্রহণে বিরোধিতা করছি আমরা।
অন্যদিকে, দ্বীপদেশ মালাওয়ির কূটনীতিক এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জোট এলডিসির প্রধান বলেছেন, আমরা কী আশা করছি তা পাওয়া এখানে লক্ষ্য নয়। কয়েক বছরের আলোচনার পর আমরা আর এই নিয়ে উচ্চাভিলাষী নই। নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু কমিশনার ভপকে হুকস্ট্রা মনে করেন, তহবিলের অঙ্ক ট্রিলিয়ন ডলার না হলেও তা প্রথম পদক্ষেপ মেটানোর মতো।
তিনি বলেন, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এই তহবিল এবং কাঠামো দিয়ে এক দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ডলারের (লক্ষ্যমাত্রায়) পৌঁছাতে পারবো। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস আশা করছেন, এই চুক্তি মেনে আরো বাস্তবতার দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, আমি আরো উচ্চাভিলাষী ফলাফল আশা করেছি। …কিন্তু এই চুক্তিটি নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর দিয়েছে। এটি অবশ্যই সম্পূর্ণ এবং সময়মতো বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিশ্রুতিগুলো দ্রুত নগদায়ন করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
২৬ সাংবাদিকসহ ২৯ জনের ব্যাংক হিসাব তলব
দেশের ২৬ সাংবাদিকসহ ২৯ জনের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একইসঙ্গে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (২৪ নভেম্বর) বিএফআইইউয়ের সংশ্লিষ্ট একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দুটি পৃথক চিঠির মাধ্যমে তলবের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রথম চিঠি অনুযায়ী যাদের হিসাব তলব করা হয়েছে তারা হলেন— দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান, টিভি টুডে প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ওয়াশিংটনের সাবেক প্রেস মিনিস্টার সাজ্জাদ হোসেন সবুজ, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর নাজনীন মুন্নি, ইনডিপেনডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশীষ ঘোষ সৈকত, গাজী টিভির এডিটর (রিসার্চ) অঞ্জন রায়, সময় টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ কমল দে, দৈনিক আমার সময়ের প্রধান সম্পাদক আব্দুল গাফফার খান, যুগান্তরের সাবেক নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি রাজু আহমেদ এবং এক্সিম ব্যাংকের হেড অব পিআরও সঞ্জীব চ্যাটার্জী।
হিসাব তলব করা ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তি মালিকানা ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের সব ধরনের লেনদেন আগামী ৩০ দিন বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এ সময় বাড়ানো হবে।
বিএফআইইউয়ের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যেসব হিসাব তলব করা হয়েছে তাদের হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল, যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী যাবতীয় তথ্য চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠাতে হবে।
অপর চিঠি অনুযায়ী তলব করা ব্যক্তিরা হলেন- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদল, ঢাকা ট্রিবিউন ও নিউইয়র্ক টাইমস বাংলাদেশ প্রতিনিধি জুলফিকার আলি মানিক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি, দ্য ডেইলি অবজারবারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডিবিসি নিউজের সাবেক ডিরেক্টর মো. শহীদুল আহসান চেয়ারম্যান, ঢাকা বাংলা মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশনস লিমিটেডের পরিচালক রাহনুমা আহসান, এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান নুরুল আমিন (প্রভাষ), ঢাকা বাংলা মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশনস লিমিটেডের পরিচালক মাহবুবা হেলেন, ঢাকা বাংলা মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশনস লিমিটেডের পরিচালক শাহ মোহাম্মদ শফিকুল আহছান, ঢাকা বাংলা মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশনস লিমিটেডের পরিচালক মো. সালাউদ্দিন চৌধুরি, একাত্তর টিভির কাউন্সেলর মোবাশ্বিরা ফারজানা মিথিলা, দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের ও ইকবাল সোবহান চৌধুরীর মেয়ে সাবরিনা মাহজাবীন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্রতিষ্ঠিত সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিএফআইইউ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ -এর ২৩(১) (গ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সূচনা ফাউন্ডেশনের পরিচালিত সব হিসাবের লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিতকরণের নির্দেশনা দেওয়া হলো। প্রয়োজনে এটি বাড়ানো হতে পারে।
এতে আরও বলা হয়, সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে পরিচালিত সব হিসাবের হিসাব সংক্রান্ত তথ্যাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ফরম, শুরু হতে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী) সংযোজিত এক্সেল শিট আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে এ ইউনিটে পাঠানোর অনুরোধ করা যাচ্ছে।
নির্দেশনার আওতায় লেনদেন স্থগিত করা হিসাবগুলোর ক্ষেত্রে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ -এর বিধি ২৬(২) প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।
পুতুল, মুজহারুল মান্নান এবং জয়ন বারী রিজভী এ ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি। সূচনা ফাউন্ডেশন মানসিক অক্ষমতা, স্নায়বিক অক্ষমতা, অটিজম এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করতে কাজ করে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
দশ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একইসঙ্গে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে বিএফআইইউ।
হিসাব জব্দ করা ব্যক্তিরা হলেন- দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান, টিভি টুডে প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ওয়াশিংটনের সাবেক প্রেস মিনিস্টার সাজ্জাদ হোসেন সবুজ, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর নাজনীন নাহার মুন্নি, ইনডিপেনডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশীষ ঘোষ সৈকত, গাজী টিভির এডিটর (রিসার্চ) অঞ্জন রায়, সময় টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ কমল দে, দৈনিক আমার সময়ের প্রধান সম্পাদক আব্দুল গাফফার খান, যুগান্তরের সাবেক নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি রাজু আহমেদ এবং এক্সিম ব্যাংকের হেড অব পিআরও সঞ্জীব চ্যাটার্জী।
হিসাব জব্দ করা ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তি মালিকানা ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের সব ধরনের লেনদেন আগামী ৩০ দিন বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এ সময় বাড়ানো হবে।
লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে আলোচিত ব্যক্তিদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বিএফআইইউয়ের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যেসব হিসাব স্থগিত করা হয়েছে, তাদের হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী যাবতীয় তথ্য চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠাতে হবে।