জাতীয়
গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যোগ দিলো বাংলাদেশ

দেশের নাগরিকদের গুম থেকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক কনভেনশনে সাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) আন্তর্জাতিক কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পার্সনস ফ্রম ফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স সনদে সাক্ষর করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় উপদেষ্টাদের করতালির মধ্যে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের আগের দিন আমাদের পদক্ষেপ একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর তার স্বৈরাচারী শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
এর আগে, বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকটি শেষ হবে দুপুর আড়াইটায়। এরপর সভা শেষে যমুনার সামনেই সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে সাত শর বেশি মানুষ গুম হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সরকারের গোপন কারাগার থেকে বেশ কয়েকজনকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই কারাগার ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক গুমবিরোধী সনদ গৃহীত হয়।

জাতীয়
সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রাজধানীর মগবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিবি পুলিশের একটি দল আজ দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে গত ২২ জুন মামলা করে বিএনপি। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন (মামলা নম্বর-১১)। মামলার মোট ২৪ জন আসামির মধ্যে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নামও রয়েছে।
এর আগে গত রোববার (২২ জুন) রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
জাতীয়
আশুরার তারিখ নির্ধারণে চাঁদ দেখা কমিটির সভা আগামীকাল

১৪৪৭ হিজরি সনের পবিত্র মুহাররম মাসের চাঁদ দেখা এবং পবিত্র আশুরার তারিখ নির্ধারণে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র মুহাররম মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা নিম্নোক্ত টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
টেলিফোন নম্বর: ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬, ০২-৪১০৫০৯১৭
জাতীয়
পাঁচ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন

রাষ্ট্রের মূলনীতি, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন কাঠামোসহ পাঁচ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ৬ষ্ঠ দিনের আলোচনা বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বুধবার (২৫ জুন) বেলা ১১টায় রাজধানীর বেইলী রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির ‘দোয়েল মাল্টিপাস হলে’ এই বৈঠক শুরু হয়েছে।
সংলাপের শুরুতে রাষ্ট্রের মূলনীতি, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ (উচ্চ কক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি), জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন কাঠামো, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি ও নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। কমিশনের সদস্যদের মধ্যে আছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন। ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে আছেন।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় আমরা অগ্রগতির একদম শেষে, ক্ষেত্র বিশেষে আলোচনা অগ্রগতি কতটুকু, মতপার্থক্য আছে, তারপরেও আমরা আলোচনা করছি। এটার একটা ইতিবাচক দিক যে, বিভিন্ন সময়ে আনুষ্ঠানিক অনানুষ্ঠানিক এই প্রক্রিয়াকে অগ্রসর করার জন্য আপনারা সবাই বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। যেসব বিষয় অমিমাংসিত সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আজকে আলোচনায় বসছি। আমরা আশা করছি ঐ বিষয়গুলোতে ঐকমত্য অর্জন করা যাবে। অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হলে, অন্য বিষয় আলোচনায় যুক্ত করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, রক্তের উপর দিয়ে আমাদের এখানে বসতে হয়েছে, বহু প্রাণের বিনিময়ে আমরা এখানে এসেছি, একদিনের সংগ্রামে আসেনি। ১৬ বছর ধরে অব্যাহত সংগ্রাম, ৫৩ বছর ধরে বিভিন্নভাবে গ্রণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম, একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম তারই একটা পর্যায়ে আমরা এখানে বসতে পেরেছি। ফলে রাষ্ট্রের স্বার্থ জাতির স্বার্থকে বুকে রেখে সবাই মিলে আমরা যেন অগ্রসর হতে পারি সেটা বিবেচনা করবেন।
‘আমি বারবার বলেছি, আপনাদের খানিকটা ছাড় দিতে হবে, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকেও আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি যে কোন কোন জায়গায় পরিবর্তন পরিবর্ধন সংশোধনের মধ্য দিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বা জাতীয় ঐকমত্যে পৌছতে পারবো।’
আল রীয়াজ বলেন, সবাই জান বাজি রেখে লড়াই করতে পারলে এটা পারবো না কেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ব্যতিক্রম ঘটনাগুলো ঘটেছে, তার মধ্যে একটা হচ্ছে এখানে সবাই মিলে পরস্পরের কথা শুনছি। সহনশীলতা প্রদর্শন করছি।
কোরবানির ঈদের আগে প্রথম ধাপের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য গত ২ জুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসেছিল ঐকমত্য কমিশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। আর ঈদের ছুটির পর গত মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিন ধরে চলছে দ্বিতীয় পর্বের এই আলোচনা।
জাতীয়
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে: স্বাধীন তদন্ত কমিশন

বিডিআর বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কারও নাম বলতে পারছি না।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম নতুন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন তদন্ত কমিটি চরম অবহেলা করেছে জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, গণমাধ্যমও বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার কাজ করেছে। সময়মতো সামরিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে হত্যাকাণ্ড কমানো যেত।
তিনি আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ইতোমধ্যে ১৫৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৫০ জনের সাক্ষ্য এখনও বাকি।
কমিশন সভাপতি বলেন, পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজম ও জাহাঙ্গীর কবীর নানক পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লিখিত সাক্ষ্য দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
জাতীয়
পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য আমরা আসামি: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য যারা দায়ী তারা আমরা সবাই এখানে হাজির। আমরা আসামি।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস এবং পরিবেশ ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের পুরোনো কবিরা বলে গেছেন, সাগরের সব পানি যদি কালি হত, বনের সব গাছ যদি কলম হতো, তাহলে এই অপরাধের বর্ণনা শেষ করা যেত না। একই অপরাধ আমরা করে যাচ্ছি প্রতিদিন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজকের পৃথিবী বিভিন্ন ধরনের সংকটে জড়িত। যুদ্ধবিগ্রহ, প্রযুক্তির অপব্যবহার আমাদের সামনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু যে চ্যালেঞ্জটা আমরা এখনো অনেকে উপলব্ধি করতে পারছি না, সেটা হলো প্রকৃতির বিধ্বংসী-রূপ। এটা প্রকৃতির দোষ না, আমাদের দোষ। আমরা মানুষ যারা এখানে বসবাস করি, প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কথা। কিন্তু তাল মিলিয়ে না চলে উল্টো পথে চলি। দোষটা প্রকৃতির না, দোষটা হলো প্রকৃতি-বিধ্বংসী এক জীব, যার নাম মানুষ।
তিনি বলেন, আমাদের সামনে দৈত্যাকারে হাজির হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জলবায়ু সংকট। সে ক্রমাগত হুঙ্কার দিচ্ছে, হয় আমরা থাকবো, না হয় তোমরা থাকবে। দুইজন একসঙ্গে থাকতে পারবে না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার পৃথিবীতে তিন ধরনের সংকট বাড়িয়ে দিয়েছে। জলবায়ুগত সংকট, প্রকৃতিগত সংকট, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি। এটা শুধু প্লাস্টিকের জন্য। আরো বহু জিনিস আছে। প্লাস্টিক ক্রমাগত হুঙ্কার দিচ্ছে, হয় আমরা থাকবো, না হয় তোমরা থাকবে। দুইজন একসঙ্গে থাকতে পারবে না। তাদের জয়যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে আর আমাদের অসহায়ত্ব দেখছে। আমাদের উদ্যোগের অভাব দেখছে। আমরা সব জয় করে নিলাম তোমরা কিছুই করতে পারলে না। এই অসহায়ত্বের মধ্যে আমরা ২০২৫ সালে এই দিবস পালন করছি।
তিনি বলেন, প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাক না থাকায়, পৃথিবীর জলাশয়গুলো পলিথিন ও প্লাস্টিকে ছেয়ে গেছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়ছে। প্লাস্টিক এমন এক জিনিস, যার জন্ম আছে মৃত্যু নেই। পৃথিবীর সব কিছুর মৃত্যু আছে, তার মৃত্যু নেই। এসব ক্রমাগত বাড়ে, ফলে তা সবকিছু জয় করে ফেলে। আমরা দিবস উদযাপন করে ঘরে ফিরে যাব, যথারীতি প্লাস্টিক ব্যবহার করব।
আমরা যদি আমাদের লাইফস্টাইল পরিবর্তন না করি, এই যুদ্ধে সামগ্রিকভাবে মানুষের পরাজয় অবধারিত। সেজন্য এর থেকে কীভাবে আমরা বের হবো সেটা হলো আজকের আলোচ্য বিষয়, বলেন প্রধান উপদেষ্টা।