আন্তর্জাতিক
রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে ইউনিসেফ
রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এ কথা জানিয়েছেন।
সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার সাত বছর পরও রাখাইন প্রদেশে শিশুদের ওপর মারাত্মক হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি একথা জানায়।
এতে বলা হয়, মিয়ানমারে সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে যাওয়ার সাত বছর পর দেশটির পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত রাখাইন প্রদেশে সংঘাত আরও তীব্রতর হয়েছে। ফলে রাখাইনের মংডু শহরে হতাহতের সংখ্যা ও বাস্তুচ্যুতি বেড়েছে এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মানুষ নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করছেন বলে খবর রয়েছে।
ইউনিসেফ এমন উদ্বেগজনক প্রতিবেদনও পেয়েছে যে- বেসামরিক ব্যক্তিরা, বিশেষ করে শিশু এবং পরিবারগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বা তারা সংঘর্ষের ভেতরে আটকা পড়ছেন, যার ফলে মৃত্যু এবং গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। রাখাইনে মানবিক সহায়তার প্রবেশ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের কারণে এই ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতি বেসামরিক কার্যক্রম এবং মানবিক কার্যক্রম উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, মারাত্মক সহিংসতার সাত বছর পর হাজার হাজার পরিবারকে তাদের বাড়িঘর থেকে নিরাপত্তার সন্ধানে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সহিংসতার নতুন এই প্রতিবেদন মিয়ানমারে শিশুদের জন্য অব্যাহত হুমকির বেদনাদায়ক কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রাখাইনে এবং সারা দেশে, শিশু এবং পরিবারগুলো তাদের জীবন, জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে সংঘাতের মূল্য দিয়ে চলেছে। সংঘাতের পক্ষগুলোকে অবশ্যই শিশুদের সুরক্ষার জন্য তাদের দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে হবে।
গত ৫ আগস্ট আর্টিলারি শেলিং এবং ড্রোন হামলায় নাফ নদীর তীরে জড়ো হওয়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশুসহ প্রায় ১৮০ জন নিহত হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারের মধ্যে সীমান্ত এলাকা। হতাহত এসব মানুষ সংঘর্ষ থেকে বাঁচার চেষ্টা করেছিল। এছাড়া একইদিনে মংডু শহরের তিনটি ওয়ার্ড থেকে আনুমানিক ২০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া গত ৬ এবং ১৯ আগস্ট পৃথক ঘটনায় নারী ও শিশুসহ বহু লোককে বহনকারী বেশ কয়েকটি নৌকা নাফ নদীতে ডুবে যায়। এতে হতাহতদের মধ্যে শিশুও ছিল। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের ফলে রাখাইন প্রদেশ এবং চিন প্রদেশের পালেতওয়া শহরে আনুমানিক ৩ লাখ ২৭ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ইউনিসেফ বলছে, মিয়ানমারজুড়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া মানবিক সংকটের দ্রুত অবনতি ঘটছে। শিশুদের প্রতি গুরুতর অধিকার লঙ্ঘন, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবা ব্যবস্থার প্রায় পতনসহ অবিরাম সহিংসতার সবচেয়ে ভারী বোঝা বহন করে চলেছে দেশটি। ক্রমবর্ধমান আক্রমণ এবং সংঘর্ষের ফলে আনুমানিক ৩৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যাদের প্রায় ৪০ শতাংশই শিশু। বর্তমানে ৬০ লাখ শিশুসহ দেশটির রেকর্ড ১ কোটি ৮৬ লাখ লোকের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
এছাড়া ২০১৭ সালে হামলা ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হয়েছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকেই বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে একত্রে বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এর সাত বছর পরে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু বিশ্বের বৃহত্তম এই শরণার্থী শিবিরে বেড়ে উঠছে, তাদের মধ্যে অনেকেরই শরণার্থী হিসাবে জন্ম হয়েছে। শরণার্থী সম্প্রদায় সম্পূর্ণরূপে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে এবং অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে অস্থায়ী আশ্রয়ে তারা বাস করে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং অংশীদারদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে ইউনিসেফ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি ডায়রিয়া নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করেছে, শিশু এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিষেবা প্রদান করছে। সেইসাথে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান ও সুরক্ষা এবং সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সহায়তায়ও কাজ করছে ইউনিসেফ।
ক্যাথরিন রাসেল বলেন, শরণার্থী জনসংখ্যা- বিশেষ করে শিশুদের জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত সহায়তা প্রশংসনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ। গত ১২ মাস ধরে, আমরা শিবিরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং শিশু অধিকার লঙ্ঘনের রিপোর্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি, যাতে এই শিশুরা সুরক্ষিত থাকে এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো পেতে পারে।
অন্যদিকে মিয়ানমারে সংঘাতে লিপ্ত সকল পক্ষকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে বেসামরিক নাগরিকদের, বিশেষ করে শিশুদের সুরক্ষা এবং তাদের নিরাপত্তা ও মঙ্গল নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
এমনকি আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমাদের আর্থিক বাজারের সততা রক্ষার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
অভিযোগ করা হয়েছে, ঘুষকাণ্ড এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেই একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কর্মী সংকটে অতিরিক্ত দুই লাখ ভিসা দেবে জার্মানি
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে কর্মী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনবল সংকট কাটাতে এবার আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
২০২৩ সালে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, চলতি বছর এই ভিসার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানে ভিসাসংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জার্মানিতে বিভিন্ন চাকরিতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার পদ খালি রয়েছে। এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরও বেশি হতে পারতো বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশিরা।
ভাষার দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং কম বয়সের ভিত্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি। এজন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ চালু করেছে দেশটি৷ এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা ও চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষরাও সরাসরি জার্মানিতে যেতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষ কর্মী ভিসার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান সরকার। আগামী ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণ। ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
এমআই