পুঁজিবাজার
ব্লকে ২২ কোটি টাকার লেনদেন
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ২২ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের। এদিন ব্যাংকটির ৬ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্র্যাক ব্যাংকের ৫ কোটি ৪০ লাখ ৯৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ২ কোটি ১৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
বেক্সিমকো গ্রুপের অর্থ পাচারের অনুসন্ধান শুরু
বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপ এবং এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ–বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো।
সিআইডির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা আছে, বেক্সিমকো গ্রুপ বিগত ১৫ বছরে সাতটি ব্যাংক থেকে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে।
বেক্সিমকো গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে ২১ হাজার ৬৮১ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ২১৮ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ২৯৫ কোটি, সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ৬৭১ কোটি ও এবি ব্যাংক থেকে ৬০৫ কোটি টাকাসহ মোট ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এ ছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপ গত কয়েক বছরে বাজার থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা প্রতারণা ও জাল–জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
সৌদি আরবে যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের বেশিরভাগ অর্থ বাংলাদেশ থেকে ওভার ইনভয়েসিং, আন্ডার ইনভয়েসিং ও হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেক্সিমকো গ্রুপ এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে মানিলন্ডারিং আইন ও বিধি অনুযায়ী অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ডিএসইতে সাত স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিলো বিএসইসি
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭ জন নতুন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯১৮ তম জরুরি কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র ফারহানা ফারুকী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিএসইতে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- মালদ্বীপ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান কে এ এম মাজেদুর রহমান, আর্মি ইনস্টিউট অফ বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডাইরেক্টর জেনারেল ও প্রফেসর মেজর জেনারেল (অবঃ) ডক্টর মো. কামরুজ্জামান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মফিজুল ইসলাম রাশেদ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, ৪৬ ব্রিগেড, বাংলাদেশ আর্মি, সেন্টার অন ইনটিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (সিরডাপ) ডাইরেক্টর রিসার্চ ডক্টর মো. হেলালউদ্দিন, মেটলাইফ বাংলাদেশের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ হাম্মাদুল করীম, এবং বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার ও ডিজাস্টার রিকভারী সাইট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, বাংলাদেশ ব্যাংকের (লিয়েন) চীফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসার মো. ইসহাক মিয়া।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জ এর নমিনেশন অ্যান্ড রেমুনারেশন কমিটি (এনআরসি) কর্তৃক প্রস্তাব দাখিলের প্রেক্ষিতে কমিশন স্টক এক্সচেঞ্জ এর স্বতন্ত্র পরিচালক এর নিয়োগে অনুমোদন প্রদান করে থাকে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক পদত্যাগ করায় বর্তমানে উক্ত এক্সচেঞ্জ এর নমিনেশন অ্যান্ড রেমুনারেশন কমিটি (এনআরসি) নেই।
এতে আরও বলা হয়, তাই এই কমিটি না থাকায়, স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচন বিষয়ে ডিএসই হতে প্রস্তাব কমিশনে দাখিলের সুযোগ নেই। তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিচালক না থাকায়, নমিনেশন অ্যান্ড রেমুনারেশন কমিটি (এনআরসি) গঠনেরও সুযোগ নেই। সে প্রেক্ষিতে বর্তমানে স্বতন্ত্র পরিচালক না থাকায়, ডিএসই এর পরিচালনা পর্ষদ আইন অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকর নয়। পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষার্থে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা অতীব আবশ্যক ও জরুরী। ফলে কমিশন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ইউনিয়ন ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান মো. ফরিদউদ্দীন আহমদ
সাবেক ব্যাংকার মো. ফরীদ উদ্দীন আহমদ ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
মো. ফরীদ উদ্দীন আহমদ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি এক্সিম ব্যাংক পিএলসির উপদেষ্টা এবং মেঘনা ব্যাংক পিএলসির (ইসলামিক ব্যাংকিং) পরামর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ইসলামিক ব্যাংকিং ও ফিন্যান্সে তাঁর রয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। ১৯৮৩ সালের ৩০ মার্চ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি প্রতিষ্ঠার প্রথম লগ্নেই তিনি যোগদান করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে ব্যাংকিং পেশায় প্রবেশ করেন এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও পদ্ধতির উন্নয়নের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি নাইজেরিয়ায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি কর্তৃক মনোনীত ‘জাইজ ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার জন্যও কাজ করেছেন।
মো. ফরীদ বহু ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট সংস্থার শরীয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান/সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। তিনি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সেমিনার ও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ইসলামিক ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সের ওপর গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। ফরিদ বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে অবদানের জন্য সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ড অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠা, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। তিনি একজন ভ্রমণপ্রিয়াসু ব্যক্তি। তিনি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মান, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, জাপান, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, পাকিস্তান, ভারত, সিঙ্গাপুর, হংকং, কেএসএ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, অস্ট্রেলিয়া এবং ম্যাকাও সফর করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডিকে চেয়ারম্যান করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ গঠন
এবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সঙ্গে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পর্ষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নানকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সাক্ষারিত আদেশে বেসরকারি ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। এতদিন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ।
পর্ষদ ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের জন্য নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসাবে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবদুল মান্নানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি ২০১৬ সালের আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির এমডি ছিলেন।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পর্ষদে নিয়োগ দেয়া অন্য পরিচালকরা হলেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, উত্তরা ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি মো. আবদুল কুদ্দুছ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. সাইফুল আলম এবং পেশাদার হিসাববিদ মো. রাগিব আহসান।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন এসেছে। এর মধ্যে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের পর্ষদ নিজেদের উদ্যোগে চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন এনেছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, ন্যাশনাল ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নাফিজ সরাফত ও তার স্ত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু
প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে সিআইডির ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আনজুমান আরা শহীদ এবং হাসান তাহের ইমাম ও তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
সম্প্রতি সিআইডির এক বৈঠকে নাফিজ সরাফাত ও তার স্ত্রীসহ তাদের প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।
জানা গেছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আনজুমান আরা শহীদ ও হাসান তাহের ইমামের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে। নাফিজ সরাফাত ২০০৮ সালে রেইস ম্যানেজমেন্ট নামে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির লাইসেন্স নেন। তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে ছিলেন হাসান তাহের ইমাম।
আরও জানা যায়, রেইসের অধীনে বর্তমানে ১৩টি ফান্ড রয়েছে। ফান্ডের অর্থ ব্যক্তিস্বার্থে বিনিয়োগ করে নাফিজ সরাফাত, আনজুমান আরা শহীদ ও হাসান তাহের ইমাম ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) পরিচালক বনে যান। একই কৌশলে নাফিজ সরাফাত তার স্ত্রীকে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক বানান। তবে এতে ফান্ডের কোনো লাভ হয়নি।
সিআইডি সূত্র জানায়, রেইস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ১০টি মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করে। ফান্ডগুলোর সম্মিলিত আকার প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। ফান্ডের অর্থ দিয়ে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য যে এফডিআর খোলা হয়, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজেশ করে সেই এফডিআরগুলো ভেঙে ফেলা হয়। এর ফলে ফান্ডে বিনিয়োগকারীরা কোটি কোটি টাকার মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আরও জানা গেছে, এসটিডি/এসএনডি অ্যাকাউন্টে মাত্র তিন-চার শতাংশ সুদে ফান্ডের সাড়ে ৬০০ বা ৭০০ কোট টাকা জমা রাখা হয়। সুদের দুই-তিন শতাংশ অর্থ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজেশ করে আত্মসাৎ করা হয়। শেয়ারবাজার থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশের ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগকারীদের মাঝে বণ্টনের নিয়ম থাকলেও রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ নিয়ম মানেনি। বরং লভ্যাংশের বেশিরভাগ টাকাই তারা আত্মসাৎ করেছে।
এছাড়া বিজিআইসি নামে ব্রোকারেজ হাউজে শেয়ার কেনার জন্য যে টাকা নেওয়া হয়, সেই টাকায় ফান্ডের নামে শেয়ার ক্রয় না করে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে শেয়ার ক্রয় করা হয়। এভাবে ফান্ডের বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকার মুনাফা বঞ্চিত করে ওই টাকা তারা আত্মসাৎ করেন
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ১৯৯৯ সালে চাকরিজীবন শুরু করেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। বিদেশি এ ব্যাংকে থাকার সময় হঠাৎ করেই বেসরকারি আইএফআইসি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হন তিনি। এক ব্যাংকে চাকরি আর অন্য ব্যাংকে পরিচালক—এমন প্রশ্ন ওঠার পর তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দেন।
২০০৮ সালে তিনি যোগ দেন আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকে। হন কনজ্যুমার ব্যাংকিংয়ের প্রধান। ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজের পরিচয় ‘এমডি, কনজ্যুমার ব্যাংকিং, আইসিবি গ্লোবাল হোল্ডিংস’ ব্যবহার করতেন।
তার আগেই চৌধুরী নাফিজ সরাফাত একটি মিউচুয়াল ফান্ডের লাইসেন্স নেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে। লাইসেন্সের জন্য প্রথমে নিজের নামে আবেদন করেছিলেন। যেহেতু ব্যক্তির নামে লাইসেন্স দেওয়া হয় না, তাই বিএসইসি সদস্য মোহাম্মদ আলী খানের পরামর্শে পরে তিনি কোম্পানি গঠন করেন। এ কোম্পানিরই নাম বাংলাদেশ রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, যাতে তাঁর মালিকানা ২৫ শতাংশ। বাকি মালিকানা অন্য অংশীদার হাসান ইমামের। বিএসইসিতে তখন থেকে যাঁরা চাকরি করতেন, তাঁরা এসব তথ্য জানিয়েছেন, যা নিশ্চিত করেন নাফিজ সরাফাতও।
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন খাতের অন্যতম প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন নাফিজ সরাফাত। শুরুতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন। পরে তাঁর সখ্য গড়ে ওঠে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সঙ্গে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্কের চিত্র গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। গোপালগঞ্জের এই ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে ‘ফুফু’ বলে সম্বোধন করতেন। আর সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ছিলেন তাঁর ‘চাচা’। গোপালগঞ্জের মানুষ সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে ‘কাজিন’ হিসেবে অন্যদের কাছে পরিচয় দিতেন।
শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে নাফিজ সরাফাতের সম্পর্কের কথা ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের প্রায় সবারই জানা।
মাত্র ১৩ বছরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক, পুঁজিবাজার, বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, গণমাধ্যমসহ আরও কিছু খাতে রহস্যজনক কিন্তু অপ্রতিরোধ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পান নাফিজ সরাফাত।